চ্যাটজিপিটিতে যেসব তথ্য শেয়ার নয়!

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২১ ১১:৫৮:৪৭
চ্যাটজিপিটিতে যেসব তথ্য শেয়ার নয়!

প্রযুক্তির এই যুগে চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অভাবনীয়ভাবে জায়গা করে নিয়েছে। অফিসের রিপোর্ট লেখা, শিক্ষার্থীদের রিসার্চ সহায়তা, ক্যাপশন লেখা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও এটি এক নির্ভরযোগ্য ‘ডিজিটাল সহচর’ হয়ে উঠেছে।

তবে প্রযুক্তির প্রতিটি আশীর্বাদের সঙ্গে লুকিয়ে থাকে কিছু আশঙ্কাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চ্যাটজিপিটির মতো এআই চ্যাটবট ব্যবহারে যতটা সুবিধা, ঠিক ততটাই প্রয়োজন সচেতনতা বিশেষ করে তথ্য নিরাপত্তার দিক থেকে।

কোন তথ্য চ্যাটজিপিটিতে শেয়ার করা একেবারেই অনুচিত?

১. ব্যক্তিগত শনাক্তকরণ তথ্য (Personally Identifiable Information - PII)

পূর্ণ নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (NID), ফোন নম্বর বা ই–মেইল ঠিকানা এসব তথ্য এআইয়ের সঙ্গে শেয়ার করলে তা পরিচয় চুরির পথ খুলে দিতে পারে। যদিও চ্যাটজিপিটি এসব সংরক্ষণ করে না, তবুও সাইবার হ্যাকারদের আক্রমণে অনিচ্ছাকৃতভাবে এসব ফাঁস হয়ে যেতে পারে।

২. আর্থিক ও ব্যাংকিং তথ্য

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ক্রেডিট কার্ড তথ্য, বিকাশ/নগদের পিন বা পেমেন্ট গেটওয়ের বিবরণ দেওয়া চূড়ান্ত নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে। এই ধরনের তথ্য চুরি হলে ব্যক্তি দেউলিয়াত্বের মুখে পড়তে পারেন।

৩. পাসওয়ার্ড ও লগইন সংক্রান্ত তথ্য

যেকোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মের পাসওয়ার্ড বা ইউজারনেম চ্যাটজিপিটিতে দেওয়া মানে হলো নিজের ডিজিটাল চাবি অন্যের হাতে তুলে দেওয়া। টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন থাকলেও ঝুঁকি থেকেই যায়।

৪. গোপনীয় পারিবারিক বা ব্যক্তিগত তথ্য

পরিবারিক সমস্যা, সম্পর্কজনিত তথ্য বা ব্যক্তিগত ট্রমার মতো সংবেদনশীল বিষয় শেয়ার করলে তা ডেটা ট্রেনিং প্রসেসে অনিচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহৃত হয়ে যেতে পারে। ফল হতে পারে মানসিক, সামাজিক ও আইনি ক্ষতি।

৫. মেধাস্বত্ব ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি (Intellectual Property)

ব্যবসায়িক ধারণা, কোড, গবেষণা, শিল্পকর্ম বা যেকোনো স্বত্বাধিকারযুক্ত তথ্য চ্যাটজিপিটিতে শেয়ার করলে তা ব্যবহারের ঝুঁকি থেকে যায়। ভবিষ্যতে অন্য কেউ তা ব্যবহার করে আইনগত অধিকার দাবি করতে পারে।

একটি গ্লোবাল সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট তথ্য হ্যাক হয়ে ডার্ক ওয়েবে বিক্রি হয়েছে। এ ঘটনাটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে সতর্কতা না রাখার চরম উদাহরণ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে কিছু জরুরি নির্দেশনা:

- সর্বদা সচেতন থাকুন আপনি কী তথ্য দিচ্ছেন।

- অফিসিয়াল বা ব্যক্তিগত তথ্য না দিয়ে কেবল সাধারণ প্রশ্ন করুন।

- এআইকে কখনোই নিজের বা অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য, পাসওয়ার্ড, ব্যাংক সংক্রান্ত ডেটা দেবেন না।

- প্রয়োজনে এনক্রিপটেড কমিউনিকেশন প্ল্যাটফর্ম বা সিকিউর চ্যানেল ব্যবহার করুন।

চ্যাটজিপিটি ও অন্যান্য এআই টুল মানবিক বুদ্ধিমত্তার বিকল্প নয় এরা কেবল তথ্যের ভিত্তিতে সহায়ক সিদ্ধান্ত বা পরামর্শ দেয়। তাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও তথ্য-সচেতন ব্যবহারই পারে আপনাকে এই আধুনিক যুগে সুরক্ষিত রাখতে।

তথ্যই এখন সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তাই প্রযুক্তিকে বন্ধু বানান, তবে সতর্ক থাকুন তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে।

সূত্র: অ্যাজাইলব্লু

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত