জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে করণীয়

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২১ ১১:০১:২১
জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে করণীয়

বাংলাদেশে নাগরিক পরিচয়ের অন্যতম প্রমাণপত্র জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)। এটি শুধু ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যম নয়, বরং ব্যাংকিং, পাসপোর্ট, মোবাইল সিম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, ভূমি রেজিস্ট্রি, চাকরির আবেদনসহ প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি সেবার জন্য অপরিহার্য নথি হয়ে উঠেছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট হারিয়ে গেলে নাগরিকরা পড়েন জটিল বিড়ম্বনায়।

তবে আতঙ্কিত না হয়ে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেই দ্রুত ও সহজেই এনআইডি কার্ড ফিরে পাওয়া সম্ভব। নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইং ইতিমধ্যে অনলাইনভিত্তিক একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করেছে, যার মাধ্যমে ঘরে বসেই নতুন করে কার্ড তোলার বা সংশোধনের আবেদন করা যায়।

এনআইডি হারালে প্রথম করণীয় কী?

প্রথমেই জানা জরুরি, এনআইডি হারিয়ে গেলে এটি চুরি বা অপব্যবহার হবার আশঙ্কা থাকে। তাই দ্রুত অনলাইন পুনর্মুদ্রণ (Reissue) আবেদন করার পরামর্শ দেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

পদ্ধতি:

১. জাতীয় পরিচয়পত্র ওয়েবসাইটে (https://services.nidw.gov.bd/) প্রবেশ করুন২. লগইন করে ‘Reissue NID’ অপশনে ক্লিক করুন3. প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করুন৪. নির্ধারিত ফি প্রদান করুন৫. আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে মোবাইলে এসএমএস পাবেন৬. এরপর আপনি অনলাইন থেকেই আপনার ডিজিটাল এনআইডি কপি ডাউনলোড করতে পারবেন

রিইস্যুর জন্য কত টাকা ফি লাগে?

এনআইডি রিইস্যু করার জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ২৩০ টাকা ফি রয়েছে (সাধারণ ডেলিভারির ক্ষেত্রে)।তবে আপনি যদি জরুরি ভিত্তিতে স্মার্টকার্ড রিইস্যু করতে চান, সেক্ষেত্রে ফি ভিন্ন হতে পারে। ফি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে।

ফি প্রদান করা যায় বিকাশ, নগদ, রকেট ও অন্যান্য মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে।

একসাথে সংশোধন ও হারানো এনআইডি উত্তোলন করা যায় কি?

না। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, একসাথে এনআইডি উত্তোলন এবং তথ্য সংশোধন সম্ভব নয়।প্রথমে আপনাকে হারানো এনআইডি পুনরুদ্ধার করতে হবে, পরে প্রয়োজন হলে আলাদা ভাবে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে।

অনলাইনেই তথ্য সংশোধন সম্ভব?

হ্যাঁ, এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এনআইডির তথ্য সংশোধনের আবেদন অনলাইনে করা যায়।এজন্য প্রয়োজন হবে

যথাযথ ডকুমেন্টারি প্রমাণ (যেমন জন্মসনদ, শিক্ষাগত সনদ, পিতামাতার এনআইডি)

সংশোধনের নির্দিষ্ট কারণ ব্যাখ্যা

পোর্টালে সংশোধনের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর তা অনুমোদিত হলে আপনি আবার ডিজিটাল কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।

যেসব কাজে এনআইডি অপরিহার্য

ব্যাংক একাউন্ট খোলা

পাসপোর্টের আবেদন

ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ

মোবাইল ব্যাংকিং ও মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন

জমি রেজিস্ট্রি ও দলিল সম্পাদন

চাকরি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন

এছাড়া এখন বিভিন্ন সরকারী ভর্তুকি ও ডিজিটাল সেবা নিতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এনআইডি হারালে সবচেয়ে বড় শঙ্কা হলো এটি কোনো অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার হওয়া। তাই হারিয়ে গেলে শুধু নতুন কার্ড তোলাই নয়, বরং দ্রুত নির্বাচন কমিশনে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো এবং জিডি (জেনারেল ডায়েরি) করা উচিত।

জাতীয় পরিচয়পত্র এখন শুধু পরিচয়পত্র নয় বরং একজন নাগরিকের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ডিজিটাল জীবনের প্রবেশপত্র। এটি হারিয়ে গেলে যেন নাগরিকেরা ভোগান্তির শিকার না হন, সেজন্য ই-গভর্ন্যান্স ভিত্তিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এনআইডি সেবা প্রদান করে আসছে নির্বাচন কমিশন।

তবে জনগণের মাঝে সচেতনতা, তথ্য জানা এবং যথাযথ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখাই পারে এই গুরুত্বপূর্ণ নথি হারালে ঝামেলা ছাড়াই দ্রুত তা ফেরত পাওয়ার পথ করে দিতে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত