জঙ্গি হামলার ৯ বছর পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ: হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে যা উঠে এলো

ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে সংঘটিত ইতিহাসের ভয়াবহতম জঙ্গি হামলার ঘটনায় দণ্ডিত সাত আসামির মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্ট আমৃত্যু কারাদণ্ডে রূপান্তর করেছে। দুই বছর আগে দেওয়া এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০২৫ সালের ১৭ জুন সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়েরকৃত মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সাতজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। তবে, ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে এই সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন।
রায়ের বিবরণ ও বিচারিক প্রক্রিয়াহাইকোর্ট বেঞ্চের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ২২৯ পৃষ্ঠার এই রায় লিখেছেন, যেখানে সহমত দিয়েছেন বিচারপতি সহিদুল করিম। মামলার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শুরু হয় ২০২৩ সালের শুরুতে এবং তা শেষ হয় ১১ অক্টোবর। এরপর একই বছরের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে।ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুসারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেই সূত্রে বিচারিক আদালতের রায় হাইকোর্টে পাঠানো হয় ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরারাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, হাদিসুর রহমান,আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন, শরিফুল ইসলাম খালেদ
জঙ্গি হামলার পটভূমি২০১৬ সালের ১ জুলাই, রমজানের শেষপ্রান্তে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে অবস্থিত হলি আর্টিজান বেকারিতে পাঁচ তরুণ জঙ্গি বর্বর হামলা চালায়। তারা পিস্তল, সাব-মেশিনগান ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়েন রেস্তোরাঁয় এবং ১৭ জন বিদেশিসহ ২০ জন নিরপরাধ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেন।এ সময় প্রাণ হারান পুলিশের দুই সাহসী কর্মকর্তা— বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের হুমায়ুন কবির ও ওসি সালাউদ্দিন।পরে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে হামলাকারী পাঁচ জঙ্গি ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
রায়ের উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়—“নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) অতি উগ্র অংশ নব্য জেএমবি পরিচয়ে এই বর্বর হামলা চালায়। রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল সরাসরি হত্যাযজ্ঞে অংশ নেন।”
এই পাঁচ জঙ্গি হামলার সময় ঘটনাস্থলেই নিহত হন। রায়ে আরও বলা হয়—“প্রসিকিউশনের উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ, ফরেনসিক রিপোর্ট, ব্যালিস্টিক, ডিএনএ ও ইমিগ্রেশন রিপোর্টে অভিযুক্তদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তারা বেঁচে থাকলে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(অ) ধারায় মৃত্যুদণ্ডের উপযুক্ত হতেন।”
—আশিক নিউজ ডেস্ক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান