হজের খুতবায় মুসলিম ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ শায়খ সালেহ বিন হুমাইদের

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৫ ১৬:২৭:৫৭
হজের খুতবায় মুসলিম ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ শায়খ সালেহ বিন হুমাইদের

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্ব আরাফায় অবস্থান উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৮ জিলহজ, ৫ জুন) মসজিদে নামিরায় প্রদত্ত হজের খুতবায় মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য, সংহতি ও তাকওয়া বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেম শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ।

তিনি বলেন, “তাকওয়া একজন মুমিনের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য। আল্লাহকে ভয় করা ও তাঁর নির্দেশ পালনে আত্মনিয়োগ করাই আমাদের কাম্য হওয়া উচিত।” একইসঙ্গে তিনি মুসলমানদের শয়তানের প্ররোচনা থেকে সতর্ক থাকতে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে দ্বন্দ্ব নয় বরং সহমর্মিতা ও ক্ষমার মাধ্যমে সুদৃঢ় করতে উৎসাহিত করেন।

খুতবায় তিনি আরও বলেন,

“ইসলামের তিনটি স্তর রয়েছে—ইসলাম, ঈমান এবং সর্বোচ্চ স্তর হলো ‘ইহসান’। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করো যেন তুমি তাঁকে দেখছ।’ হায়া (লজ্জাশীলতা) হলো ঈমানের একটি অংশ। পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার, প্রতিশ্রুতি পালন ও নম্রতা প্রদর্শনও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন।”

তিনি বলেন,

“যদি তুমি তোমার শত্রুকে ক্ষমা করো, তবে আল্লাহ তোমাকে তাঁর বন্ধু বানিয়ে নেবেন।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “সৎকর্ম পাপসমূহকে মুছে দেয়, তাই আমাদের উচিত অধিক সংখ্যায় নেক আমল করা।”

শায়খ সালেহ বিন আবদুল্লাহ বলেন, হজের সময়ে সর্বাধিক আল্লাহর জিকির, দোয়া ও কল্যাণ কামনায় মগ্ন থাকা উচিত। তিনি কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “নেক কাজে একে অপরকে সাহায্য করো, আর পাপ ও সীমালঙ্ঘনে সহযোগিতা কোরো না।”

এই দিন আরাফায় অবস্থান হজের মূল ফরজ। ভোর থেকেই হাজিরা জাবালে রহমতের পাদদেশ ও আশপাশে অবস্থান নিতে শুরু করেন। সৌদি কর্তৃপক্ষ হাজিদের স্বাস্থ্য রক্ষায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদে বাইরে না থাকার অনুরোধ জানিয়েছে।

সূর্যাস্তের পর হাজিরা মুজদালিফা রওনা হবেন, যেখানে তারা রাত্রিযাপন করবেন এবং শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের জন্য কঙ্কর সংগ্রহ করবেন। পরদিন ১০ জিলহজ বড় শয়তানকে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ, পশু কোরবানি ও চুল ছেঁটে ইহরাম মুক্ত হবেন। ১১, ১২ এবং ১৩ জিলহজ পর্যন্ত চলবে বাকি রমি (শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ), তাওয়াফে জিয়ারত ও সাঈ সম্পন্ন করার আনুষ্ঠানিকতা।

আরাফার এই ময়দানেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায়ী হজের ভাষণ প্রদান করেন, যেখানে তিনি মুসলিম উম্মাহর সমানাধিকার, নারী-পুরুষের দায়িত্ব এবং সম্প্রীতির শিক্ষা তুলে ধরেছিলেন। বিশ্ব মুসলিমদের কাছে এই দিনটি আত্মশুদ্ধি, ক্ষমা প্রার্থনা এবং আল্লাহর কাছে আরজির জন্য এক মহামূল্যবান উপলক্ষ।

সূত্র: সৌদি প্রেস এজেন্সি, আল-আরাবিয়া

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ