আরাফার দিনে কি করলে মাফ হয় দুই বছরের পাপ

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৩ ২০:০৪:৫৩
আরাফার দিনে কি করলে মাফ হয় দুই বছরের পাপ

পবিত্র হজের মহান দিন ৯ জিলহজ বিশ্বের মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ দিন, যেটিকে বলা হয় ইয়াওমে আরাফা। এ দিনটি শুধুমাত্র হজ পালনকারীদের জন্যই নয়, বরং বিশ্বের সব মুসলমানের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ও পুরস্কারপূর্ণ সময়।

২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ইয়াওমে আরাফা হবে ৬ জুন, শুক্রবার। এদিনের অন্যতম সেরা ইবাদত হলো রোজা রাখা, যা পাপ মোচনের এক বিশাল সুযোগ এনে দেয়।

হাদিস শরিফে এসেছে, আরাফার দিনের রোজার মাধ্যমে অতীত ও ভবিষ্যতের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেন আল্লাহ। নবী করিম (সা.) বলেছেন:

“আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, তিনি আরাফার দিনের রোজার বদৌলতে আগের ও পরের এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন।” — (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১১৬২)

তাই এই মহামূল্যবান দিনটিকে অবহেলা না করে রোজা রাখার প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।

বাংলাদেশে ৬ জুন শুক্রবার আরাফার রোজা রাখতে হলে সেহরি খেতে হবে বৃহস্পতিবার রাতে, সর্বশেষ সময় ভোর ৩টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত। রোজা রাখার পাশাপাশি তাসবিহ, তাহলিল, কোরআন তিলাওয়াত ও বেশি বেশি দোয়া করার তাগিদ দিয়েছেন ইসলামি বিশেষজ্ঞরা।

শুধু আরাফা নয়, জিলহজের প্রথম দশ দিনও রয়েছে ইসলামে অনন্য মর্যাদায়। নবীজি (সা.) এ দশকের আমল কখনো ছাড়তেন না। হযরত হাফসা (রা.) বলেন:

“নবীজি কখনো চারটি আমল ছাড়তেন না: আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা, প্রতিমাসের তিন দিন রোজা এবং ফজরের আগের দুই রাকাত সুন্নত।” — (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৪১৫)

অনেকেই জিলহজের শুরু থেকে বিশেষ আমলে মনোযোগী হতে পারেননি। তবে ইসলাম সবার জন্য মুক্তির দ্বার খোলা রেখেছে। আরাফার দিন সেই সুযোগের চূড়ান্ত সময়। এই দিনে মানুষের জন্য রয়েছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ।

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত:

“আরাফার দিনে যে পরিমাণ মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়, অন্য কোনো দিন এত বেশি মুক্তি দেওয়া হয় না।”— (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৪৮)

নবীজি (সা.) আরও বলেন:

“আরাফার দিন শয়তান সবচেয়ে বেশি অসহায়, অপমানিত ও রাগান্বিত থাকে। কারণ, সে আল্লাহর রহমতের বারিধারা দেখে এবং বিপুল সংখ্যক মানুষকে মাফ হতে দেখে।” — (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস : ৯৪০)

এই দিন যেন হয় আমাদের পাপমুক্ত হবার, আত্মা পরিশুদ্ধ করার, ও আল্লাহর রহমত অর্জনের দিন।

আরাফার রোজা শুধু রোজা নয়, এটি এক আশার আলো, ক্ষমার সুযোগ এবং জান্নাতের দিকে এক ধাপ অগ্রসর হওয়া। আসুন, আমরা সবাই এই দিনটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পালন করি, নিজেদের জন্য, পরিবারের জন্য এবং গোটা উম্মাহর জন্য দোয়া করি।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ