লন্ডনের কমনওয়েলথ ফেয়ারে বাংলাদেশ: ঐতিহ্যের রঙে মুগ্ধ বিশ্ব

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১১:২৬:৫০
লন্ডনের কমনওয়েলথ ফেয়ারে বাংলাদেশ: ঐতিহ্যের রঙে মুগ্ধ বিশ্ব
ছবিঃ বি এস এস

লন্ডনের কেনসিংটন টাউন হলে আয়োজিত কমনওয়েলথ ফেয়ার ২০২৫-এ বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও হস্তশিল্প ঐতিহ্য ঝলমল করে উঠেছে। কমনওয়েলথ কান্ট্রিজ লীগ (CCL)-এর শতবর্ষ উদযাপন এবং ৫৬টি সদস্যদেশের সংস্কৃতি ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আয়োজিত এই মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্যাভিলিয়ন বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করে।

শনিবার অনুষ্ঠিত এই উৎসবে বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত হয় দেশীয় কারুশিল্পের নান্দনিক সংগ্রহ—হাতে তৈরি পাটজাত ও টেক্সটাইল পণ্য, চামড়াজাত দ্রব্য এবং সুনিপুণ মুক্তার অলংকার। প্রতিটি প্রদর্শনী বাংলাদেশের ঐতিহ্য, শিল্পকুশলতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল। দর্শনার্থীরা প্রশংসা করেন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পরুচি, সৃজনশীলতা ও পরিবেশবান্ধব হস্তশিল্পের প্রতি সরকারের সমর্থনকে।

শুধু প্রদর্শনীই নয়, মেলায় আগত অতিথিরা উপভোগ করেন আসল বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ—বিরিয়ানি, সামুচা, পিঠা ও মিষ্টান্নে ভরপুর ছিল রুচিকর আয়োজন। এ সুযোগে কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা একে অপরের সংস্কৃতি, খাবার ও ঐতিহ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হন, যা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়কে আরও জোরদার করে।

মেলার আয়োজক কমনওয়েলথ কান্ট্রিজ লীগ (CCL) জানায়, এ বছরের অনুষ্ঠানটি তাদের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। মেলা থেকে প্রাপ্ত আয় প্রদান করা হবে কমনওয়েলথ গার্লস এডুকেশন ফান্ড (CGEF)-এ—যা কমনওয়েলথভুক্ত দেশের অনগ্রসর মেয়েদের শিক্ষা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বলেন, এই মেলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কারুশিল্প ও খাদ্য ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি নারী শিক্ষা ও মানবিক উদ্যোগে অবদান রাখার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এমন আয়োজন শুধু বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকেই উজ্জ্বল করে না, বরং কমনওয়েলথ পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধনকেও আরও দৃঢ় করে।

-আলমগীর হোসেন


রোহিঙ্গা সহায়তায় কোরিয়ার নতুন চাল অনুদান: বাংলাদেশের পাশে সিউল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১১:১৭:১৪
রোহিঙ্গা সহায়তায় কোরিয়ার নতুন চাল অনুদান: বাংলাদেশের পাশে সিউল
ছবিঃ বি এস এস

বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন চাল অনুদানকে স্বাগত জানিয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঢাকায় সিউলের অব্যাহত সংহতি ও মানবিক দায়িত্ববোধের পুনঃপ্রতিশ্রুতি দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

চট্টগ্রামের আলংকার গুদামঘরে মঙ্গলবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই চাল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণসচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইয়ং সিক পার্ক এবং ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেলি। অনুষ্ঠানে কোরিয়ান কৃষকদের শ্রম ও অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়—কারণ তাঁদের কঠোর পরিশ্রমেই এই মানবিক সহায়তা সম্ভব হয়েছে।

এটি দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো রোহিঙ্গা সহায়তায় চাল অনুদান। দেশটি তাদের কৃষি, খাদ্য ও গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (MAFRA)-এর মাধ্যমে এবার ২০ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টন চাল দিয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালে তারা ১৫ হাজার মেট্রিক টন চাল অনুদান দিয়েছিল।

শুধু চালই নয়, এবার কোরিয়া পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফর্টিফায়েড রাইস কার্নেলও সরবরাহ করেছে, যাতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি১, বি১২, জিঙ্ক, আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিডের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। স্থানীয়ভাবে এই কার্নেলগুলো ১:১০০ অনুপাতে সাধারণ চালের সঙ্গে মিশিয়ে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে বিতরণের আগে প্রস্তুত করা হবে।

ডব্লিউএফপির তথ্য অনুযায়ী, এই অনুদানটি ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে প্রায় দুই মাস পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা দিতে সক্ষম হবে। এটি কোরিয়ার বৈশ্বিক মানবিক সহায়তার অংশ—যার আওতায় দেশটি ১৭টি দেশে মোট ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল দিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ইয়ং সিক পার্ক বলেন, “রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান মানবিক চাহিদা মোকাবিলায় আমরা বাংলাদেশ সরকার ও ডব্লিউএফপির সঙ্গে একযোগে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

রোহিঙ্গা সংকট নবম বছরে প্রবেশ করেছে। এখনো কক্সবাজারে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। ২০২৪ সালের শুরুর দিক থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ায় আরও এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসেছে।

২০২৫ সালের ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (IPC) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৪ লাখ ৪৬ হাজার রোহিঙ্গা—অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ—তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার মানুষ জরুরি পর্যায়ের খাদ্য অনিরাপত্তায় ভুগছে।

ডব্লিউএফপি সতর্ক করেছে যে, আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে গেলে ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকেই রোহিঙ্গাদের জন্য জীবনরক্ষাকারী খাদ্য সরবরাহ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

রোহিঙ্গা সংকটের মানবিক মাত্রা যতই জটিল হচ্ছে, ততই বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও মানবিক প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তা অপরিহার্য হয়ে উঠছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এ ধারাবাহিক সহযোগিতা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মানবিক প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

-নাজমুল হাসান


ইউনেস্কোর সভাপতি নির্বাচিত হওয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের বড় অর্জন: শিক্ষা উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ২১:৩০:০৫
ইউনেস্কোর সভাপতি নির্বাচিত হওয়া আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের বড় অর্জন: শিক্ষা উপদেষ্টা

জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থার বা ইউনেস্কো ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হওয়াকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অর্জন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর চৌধুরী রফিকুল আবরার।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে বা বাসস দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

শক্তিশালী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিজয়

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, জাপানের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির টানাপোড়নে ইউনেস্কোর মতো জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের অর্জন।

তিনি জানান, সম্মেলনে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও ডেলিগেশন প্রধান, যাদের অনেকেই মন্ত্রী পর্যায়ের, তারা বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আফ্রিকান ও আরব দেশ ছাড়াও পশ্চিমা দেশগুলোও বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে।

অধ্যাপক রফিকুল আবরার মনে করেন, এই নেতৃত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সফট পাওয়ার এবং নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, সবকিছু মিলিয়ে সেখানে বাংলাদেশের একটা অবস্থান তৈরি হয়েছে।

নির্বাচন ও সম্মেলনের তথ্য

গত ৭ অক্টোবর প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর নির্বাহী বোর্ডের ২২২তম অধিবেশনে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করা হয়।

এতে জাপানের বিপক্ষে ৩০-২৭ ভোটে জয়লাভ করে বাংলাদেশ। এই পদে দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতেরও প্রার্থী ছিল, কিন্তু পরে দেশ দুটি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়।

এই জয়কে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্য ও সাংস্কৃতিক মর্যাদার বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলন বিশ্বের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের বড় মঞ্চ। এটির সভাপতিত্বের দায়িত্ব পাওয়া যেকোনো দেশের জন্য মর্যাদাপূর্ণ অর্জন।

উজবেকিস্তানের সামারকান্দ শহরের সিল্ক রোড কনফারেন্স সেন্টারে গত ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কোর ৪৩তম সম্মেলন শুরু হয় এবং চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর চৌধুরী রফিকুল আবরার।

এর আগে ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো ইউনেস্কোর সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিল বাংলাদেশ।

সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে গত ৭ নভেম্বর দেশে ফেরেন শিক্ষা উপদেষ্টা। ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।


সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয় সব সংস্কার এখনই করা সম্ভব না আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৯:২০:৫৪
সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয় সব সংস্কার এখনই করা সম্ভব না আসিফ নজরুল
ছবিঃ সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত সব রাজনৈতিক দল মেনে নেবে।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীতে এক মতবিনিময়সভায় তিনি এসব তথ্য জানান।

সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের অবস্থান

দেশের সংস্কারপ্রক্রিয়া নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিতর্ক এবং কিছু দলের দ্রুত সংস্কারের দাবির জবাবে আইন উপদেষ্টা সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

তিনি বলেন, "রাতারাতি সব সংস্কার শেষ করা সম্ভব নয়। বাস্তবে এত বড় ধরনের সংস্কার করা সহজসাধ্য নয়। ক্রমান্বয়ে সংস্কার করলে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারব।"

তিনি স্বীকার করেন, "সবাই মনে করেন সব সংস্কার এখনই করে ফেলতে হবে। বিষয়টা এত সহজ নয়। আমরা যখন অ্যাকটিভিজম করেছি তখন ভেবেছি কত সহজ, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি কত কঠিন।"

তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, "সব সংস্কার যেন সংবিধানে আটকে গেছে। অন্য কোনো সংস্কার কারো চোখেই পড়ে না।"

সংবিধান ম্যাজিক নয়

আসিফ নজরুল মনে করেন, সংবিধান বা আইনি পরিবর্তন সমস্যার একমাত্র সমাধান নয়। জনগণের অভ্যাস ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না।

"সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয়, যে লিখে দিলেই সমাধান হয়ে গেল। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, জনগণের অভ্যাস বাদ না দিলে কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না।"

সাংবিধানিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, "সংবিধানে তো লেখা আছে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। কখনো কি হয়েছে?"

বিচার বিভাগ সংস্কারের অগ্রগতি

বিচার বিভাগ সংস্কার প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা জানান, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া বেশির ভাগ প্রস্তাবই ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।

তিনি দাবি করেন বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া ৭০-৮০ ভাগ সংস্কার প্রস্তাব ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। অথচ অপপ্রচার করে বলা হয় কোথায় সংস্কার, কোথায় সংস্কার?

ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে অনুরোধ

আইন উপদেষ্টা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের কাছে সংস্কারগুলো ধরে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমাদের একটা ভীতি কাজ করে যে নির্বাচিত সরকার আসবে তারা এটা ধরে রাখবে কি না।"

তিনি নতুন সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যারা আসবেন, তারা যেন সংস্কারগুলো ধরে রাখেন এবং আরও শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান।


নির্বাচন সামনে বিশেষ ক্ষমতা পেলেন সামরিক কর্মকর্তারা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৬:৩২:১৫
নির্বাচন সামনে বিশেষ ক্ষমতা পেলেন সামরিক কর্মকর্তারা
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তার চেয়ে ঊর্ধ্বতন সমপদমর্যাদার কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (কোস্টগার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই বর্ধিত সময়সীমা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।

আজ মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে জারি করা এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা ও সময়সীমা

এই বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব সমপদমর্যাদার কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের। কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাও এই ক্ষমতার অধিকারী হবেন।

কার্যকর সময়সীমা: ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

কোন কোন ধারায় ক্ষমতা প্রয়োগ

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ফৌজদারি কার্যবিধির নিম্নলিখিত ধারার অধীন অপরাধগুলো আমলে নিতে পারবেন:

ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫ (২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২।

ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপট

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয় এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। দেশে উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবেলায় গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সশস্ত্র বাহিনীকে (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী) বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়।

এর পর থেকে এই ক্ষমতার মেয়াদ সরকার প্রতিবার দুই মাস করে বাড়িয়ে আসছিল। এবার একবারে দীর্ঘ সময়ের জন্য, অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা বাড়ানো হলো।


আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে: প্রেস সচিব

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১৪:৩৬:৪৪
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে: প্রেস সচিব
ছবি : কালবেলা

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অভিযোগ করেছেন যে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি দেশে জ্বালাও-পোড়াও চালিয়ে প্রমাণ করছে তাদের নেশাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং দেশি-বিদেশি কোনো শক্তিই এই নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না।

মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর সকাল ১১টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রমাণ

শফিকুল আলম আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের কার্যক্রমের প্রমাণ হিসেবে সাম্প্রতিক সহিংসতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন:

"১৩ নভেম্বরকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ এক ধরনের বিশৃঙ্খলা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার চেষ্টা করছে।"

"এখন পর্যন্ত সারা দেশে সাতটি বাসে আগুন দিয়েছে। আমাদের ধারণা, এটা আওয়ামী লীগের লোকজন করেছে।"

"একজনকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে ডেমরা এলাকা। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে।"

"এছাড়াও ময়মনসিংহে একজন বাস চালককে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে। সব নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কাজ।"

তিনি মন্তব্য করেন, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে কেন তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ একটি টেরোরিস্ট দল। পুলিশ এই বিষয়ে খুবই সতর্ক অবস্থানে আছে বলেও তিনি জানান।

নির্বাচনের সময় ও প্রস্তুতি

প্রেস সচিব নিশ্চিত করেন যে সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত।

"নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে। তিন মাসের মধ্যেই কিংবা কমের মধ্যেও নির্বাচন হতে পারে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন।"

"প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস প্রমিজ করেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসের বেস্ট ইলেকশন হবে।"

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকতে পারে, তবে সবাই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। "এরই মধ্যে বিএনপি ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে, জামায়াতে ইসলামীও তাদের মতো করে প্রার্থী দিচ্ছে। বড় দলগুলো নির্বাচনমুখী।"

উৎসবমুখর নির্বাচনের প্রত্যাশা

শফিকুল আলম বলেন, মতপার্থক্য থাকলেও সবাই একটি উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাইছে।

"খুব সুন্দর একটা ইলেকশন দেখতে পাবেন। যেটা ফ্রি, ফেয়ার ও এক্সক্লুসিভ হবে। সমস্ত জনগণ যেখানে অংশগ্রহণ করবে। খুবই উৎসবমুখর পরিবেশে ইলেকশন হবে।"

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের যখন খুবই ভালো নির্বাচন হয়েছে বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের কয়েকটি নির্বাচন, তখন ছেলে-মেয়ে, বাবা-মা সবাই একসঙ্গে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়েছে।

রাজনৈতিক মতবিরোধ গুরুত্বহীন

রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, রাজনৈতিক দল থাকলে মতভেদ থাকবেই। এটাকে সরকার সিরিয়াস কিছু হিসেবে নিচ্ছে না। তিনি মনে করেন:

"তারা পলিটিক্যাল পার্টি, তারা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছেন। নয় মাস ধরে খুব সুন্দরভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ইতিহাসের সবচেয়ে বৃহত্তম আলোচনা করেছে।"

তিনি আশা করেন, কিছু কিছু বিষয়ে যে মতবিরোধ সেটা কিছু সময়ের মধ্যে ঐক্যে পরিণত হবে।

ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিতি

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে কুলিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মজুমদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল হোসেন, ওসি মো. হিলাল উদ্দিন এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা।


জুলাই সনদ জট রাজনৈতিক দলগুলো অটল অবস্থানে অনিশ্চয়তা কাটাতে সরকারের শেষ চেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১০:০১:৫০
জুলাই সনদ জট রাজনৈতিক দলগুলো অটল অবস্থানে অনিশ্চয়তা কাটাতে সরকারের শেষ চেষ্টা
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে দলগুলোকে সাত দিনের যে সময় দেওয়া হয়েছিল, গতকাল সোমবার সে সময় শেষ হলেও বড় দুই দলই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের সময় নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে অটল। এ বিষয়ে সৃষ্ট জট খুলতে সরকারের শেষ চেষ্টা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে সংশয় রয়ে গেছে।

সরকারের পদক্ষেপ ও সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত

সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সাত দিনের সময় দিয়েছিল। এখন ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ভিত্তি ধরে একটি সিদ্ধান্ত দেবে সরকার। দলগুলোও সরকারের এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

উপদেষ্টাদের বৈঠক: সরকারের সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে উপদেষ্টারা নিজেরা নিয়মিত আলোচনা করছেন। আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করতে পারেন।

খসড়া চূড়ান্তের চেষ্টা: সূত্রমতে, সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে একটি খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করেছে সরকার। আগামী বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার কথা। সরকার ১৫ নভেম্বরের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে চায়।

সমন্বয়ের উদ্যোগ: রাজনৈতিক দলগুলোর দাবিদাওয়ার মধ্যে কিছুটা সমন্বয় করে সমাধান বের করার চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে সংসদ নির্বাচন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট একই দিনে করা এবং সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে চায় সরকার।

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ

৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ৬টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। এর মধ্যে ৪৮টি প্রস্তাব সংবিধান-সম্পর্কিত। সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর অন্তত ৩৬টিতে কোনো না কোনো দলের ভিন্নমত রয়েছে।

ঐকমত্য কমিশন গত ২৭ অক্টোবর প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দুটি বিকল্প সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেয়। সুপারিশে বলা হয়েছে:

প্রথমে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’ জারি করা হবে।

এরপর ওই আদেশ ও ৪৮টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে হবে গণভোট।

গণভোটে 'হ্যাঁ' জয়ী হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।

বিকল্প সুপারিশে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে সংসদ সংবিধান সংস্কারে ব্যর্থ হলে প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে।

বিএনপির অনমনীয় অবস্থান

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারের এই উদ্যোগকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না বিএনপি। পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনসহ যেসব সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপির ভিন্নমত আছে, সেগুলো নিয়ে নতুন করে আর আলোচনার সুযোগ আছে বলেও মনে করে না দলটি। বিএনপির সূত্র জানায়, তারা মনে করে, সংস্কার বা সনদ নিয়ে আলোচনার ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’।

গণভোট ও নির্বাচন: বিএনপির পূর্ণ মনোযোগ এখন ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের দিকে। তারা জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোটের দাবিতে অনড়। তারা মনে করে, এটি হলে আগামী সংসদকে আলাদা কোনো ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না এবং সনদ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হবে।

ভিন্নমত: সনদে ভিন্নমতের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। বিএনপি মনে করে, কোনো দল বা জোট নির্বাচনী ইশতেহারে ভিন্নমত উল্লেখ করে ম্যান্ডেট পেলে তারা সেইমতো ব্যবস্থা নিতে পারবে। এই অবস্থান থেকে তারা সরছে না।

আদেশ জারি নিয়ে আপত্তি: সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আদেশ জারি নিয়ে বিএনপির আপত্তি আছে। তারা ক্ষমতায় গেলে নিজেদের ভিন্নমত অনুসারে সংবিধান সংস্কার করতে চায়।

জামায়াতের রাজপথের কর্মসূচি

ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে, তার সঙ্গে একমত জামায়াতে ইসলামী। তবে দলটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট করার দাবিতে অটল।

রাজপথে আন্দোলন: আদেশ জারি, আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করেছে জামায়াতসহ আট দল। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে বড় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ এই আট দল।

মৌলিক পরিবর্তন: জামায়াতে ইসলামী চায়, ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এখানে দলগুলোর ভিন্নমত গুরুত্ব পাবে না। তারা পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন ও সাংবিধানিক পদগুলোয় নিয়োগের বিধান সংবিধানে যুক্ত করার মতো মৌলিক পরিবর্তনে ছাড় দেওয়ার পক্ষে নয়।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জুলাই সনদে হাত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে সনদের বাস্তবায়ন বিষয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকট উত্তরণের রাস্তা বের করে আনা উচিত।

এনসিপি-এর আহ্বান

জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি সহ আরও কিছু দল মনে করে, সনদ বাস্তবায়নে সরকারকে সবচেয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সাহসী সিদ্ধান্ত: এনসিপি-এর সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, সরকার সংস্কারের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তাই জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা তাদের কর্তব্য। তিনি মনে করেন, সরকার যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে রাজনৈতিক সংকট এবং নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাবে।

কমিশনের সুপারিশ: এনসিপি কমিশনের সুপারিশ ইতিবাচকভাবে নিলেও দলগুলোকে আলোচনার আহ্বানে সরকারের গা বাঁচানোর মনোভাব দেখছে তারা। তারা গণভোটের সময় নিয়ে কঠোর অবস্থানে নেই।

সূত্র: প্রথম আলো


আসন পুনর্বিন্যাস বাতিল: বাগেরহাটে ৪টি আসনই বহাল রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ১৮:২৬:০১
আসন পুনর্বিন্যাস বাতিল: বাগেরহাটে ৪টি আসনই বহাল রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
ছবিঃ সংগৃহীত

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনকে কমিয়ে তিনটি করার এবং গাজীপুরের আসন পুনর্বিন্যাস করে গেজেট প্রকাশের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এই রায়ের ফলে বাগেরহাটে চারটি এবং গাজীপুরে পাঁচটি সংসদীয় আসনই বহাল থাকবে।

সোমবার বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।

আসন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। যদিও বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জেলা ট্রাক মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে।

গণমানুষের দাবি উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। এরপরই সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি আসন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতাল, অবরোধসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে আসছিল।

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে হাইকোর্টে দুটি রিট দায়ের করা হয়েছিল। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেছিল।

রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট বিপ্লব কুমার পোদ্দার, অ্যাডভোকেট ফয়সাল মোস্তফা, অ্যাডভোকেট রাজিয়া সুলতানা, ব্যারিস্টার কাজী সামান্তা এনাম, অ্যাডভোকেট আমিনুজ্জামান সোহাগ, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান এবং অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইকরামুল কবির।

পুরনো আসন বহাল

হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে বাগেরহাটে ১৯৬৯ সাল থেকে চলে আসা চারটি সংসদীয় আসনই বহাল রইল। গেজেট অনুযায়ী, বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ গঠিত হয়েছিল। কিন্তু এই রায় বাতিল হওয়ায় আগের মতোই বাগেরহাট-১ চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট, বাগেরহাট-২ বাগেরহাট সদর-কচুয়া, বাগেরহাট-৩ রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৪ মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা আসন বহাল থাকবে।


ডিএমপি'তে রদবদল: পাঁচ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে বদলি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ১৭:১১:১৬
ডিএমপি'তে রদবদল: পাঁচ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে বদলি
ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাঁচজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে এডিসি বদলি করা হয়েছে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সোমবার ১০ নভেম্বর তাঁদের এই বদলি করা হয়।

বদলি হওয়া কর্মকর্তারা

কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে রদবদল আনা হয়েছে। বদলি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন:

ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড অ্যানালাইসিস বিভাগের মো. নাজিম উদ্দিন আল আজাদকে লালবাগ বিভাগে।

মোহাম্মদ আবু তাহেরকে ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগে।

এস্টেট বিভাগের মো. শওকত আলীকে রমনা বিভাগে।

ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের মো. জাহিদ হোসেনকে মতিঝিল বিভাগে।

প্রটেকশন বিভাগের কে এইচ এম এরশাদকে উত্তরা বিভাগে।


সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জিহাদ ঘোষণা করেছে ইসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১০ ১৬:৫৬:০০
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জিহাদ ঘোষণা করেছে ইসি
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার মন্তব্য করেছেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আসন্ন নির্বাচনের ওপর এবং একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন 'জিহাদ ঘোষণা করেছে'। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে কাউকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

সোমবার (১০ নভেম্বর) কুমিল্লা বার্ডের একটি অডিটোরিয়ামে 'নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জসমূহ নিরুপণ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, "অতীতে আমরা বহুবার কলঙ্কিত হয়েছি, এবার সেই কলঙ্ক মুছে দিতে হবে।" তিনি ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর করার জন্য কমিশন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আর মাত্র ৮০ থেকে ৯০ দিন বাকি। এরপরও কারও মনে যদি সন্দেহ থাকে যে নির্বাচন হবে না, তাহলে সেটি ভুল ধারণা। তিনি নিশ্চিত করেন, নির্বাচন হবেই এবং তা হবে অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্মসচিব মো. আব্দুল হালিম খান, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপপ্রধান ও প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা হাসান।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!

মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!

কল্পনা করুন এমন একটি প্রাইভেট কোম্পানির কথা, যা এতটাই শক্তিশালী যে সে তার গ্রাহকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে, দেশ... বিস্তারিত

এনার্জিপ্যাকের প্রথম প্রান্তিক ফলাফল প্রকাশ

এনার্জিপ্যাকের প্রথম প্রান্তিক ফলাফল প্রকাশ

শক্তি ও বিদ্যুৎ খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড (EGEN) চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর ২০২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক ফলাফল... বিস্তারিত