জুলাই সনদ জট রাজনৈতিক দলগুলো অটল অবস্থানে অনিশ্চয়তা কাটাতে সরকারের শেষ চেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১১ ১০:০১:৫০
জুলাই সনদ জট রাজনৈতিক দলগুলো অটল অবস্থানে অনিশ্চয়তা কাটাতে সরকারের শেষ চেষ্টা
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে দলগুলোকে সাত দিনের যে সময় দেওয়া হয়েছিল, গতকাল সোমবার সে সময় শেষ হলেও বড় দুই দলই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের সময় নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানে অটল। এ বিষয়ে সৃষ্ট জট খুলতে সরকারের শেষ চেষ্টা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে সংশয় রয়ে গেছে।

সরকারের পদক্ষেপ ও সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত

সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সাত দিনের সময় দিয়েছিল। এখন ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ভিত্তি ধরে একটি সিদ্ধান্ত দেবে সরকার। দলগুলোও সরকারের এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে।

উপদেষ্টাদের বৈঠক: সরকারের সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে উপদেষ্টারা নিজেরা নিয়মিত আলোচনা করছেন। আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করতে পারেন।

খসড়া চূড়ান্তের চেষ্টা: সূত্রমতে, সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে একটি খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করেছে সরকার। আগামী বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার কথা। সরকার ১৫ নভেম্বরের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে চায়।

সমন্বয়ের উদ্যোগ: রাজনৈতিক দলগুলোর দাবিদাওয়ার মধ্যে কিছুটা সমন্বয় করে সমাধান বের করার চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে সংসদ নির্বাচন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট একই দিনে করা এবং সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে চায় সরকার।

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ

৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ৬টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। এর মধ্যে ৪৮টি প্রস্তাব সংবিধান-সম্পর্কিত। সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর অন্তত ৩৬টিতে কোনো না কোনো দলের ভিন্নমত রয়েছে।

ঐকমত্য কমিশন গত ২৭ অক্টোবর প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দুটি বিকল্প সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেয়। সুপারিশে বলা হয়েছে:

প্রথমে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’ জারি করা হবে।

এরপর ওই আদেশ ও ৪৮টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে হবে গণভোট।

গণভোটে 'হ্যাঁ' জয়ী হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।

বিকল্প সুপারিশে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে সংসদ সংবিধান সংস্কারে ব্যর্থ হলে প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে।

বিএনপির অনমনীয় অবস্থান

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারের এই উদ্যোগকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না বিএনপি। পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনসহ যেসব সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপির ভিন্নমত আছে, সেগুলো নিয়ে নতুন করে আর আলোচনার সুযোগ আছে বলেও মনে করে না দলটি। বিএনপির সূত্র জানায়, তারা মনে করে, সংস্কার বা সনদ নিয়ে আলোচনার ‘চ্যাপ্টার ক্লোজড’।

গণভোট ও নির্বাচন: বিএনপির পূর্ণ মনোযোগ এখন ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের দিকে। তারা জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোটের দাবিতে অনড়। তারা মনে করে, এটি হলে আগামী সংসদকে আলাদা কোনো ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না এবং সনদ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হবে।

ভিন্নমত: সনদে ভিন্নমতের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। বিএনপি মনে করে, কোনো দল বা জোট নির্বাচনী ইশতেহারে ভিন্নমত উল্লেখ করে ম্যান্ডেট পেলে তারা সেইমতো ব্যবস্থা নিতে পারবে। এই অবস্থান থেকে তারা সরছে না।

আদেশ জারি নিয়ে আপত্তি: সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আদেশ জারি নিয়ে বিএনপির আপত্তি আছে। তারা ক্ষমতায় গেলে নিজেদের ভিন্নমত অনুসারে সংবিধান সংস্কার করতে চায়।

জামায়াতের রাজপথের কর্মসূচি

ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে, তার সঙ্গে একমত জামায়াতে ইসলামী। তবে দলটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট করার দাবিতে অটল।

রাজপথে আন্দোলন: আদেশ জারি, আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করেছে জামায়াতসহ আট দল। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে বড় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ এই আট দল।

মৌলিক পরিবর্তন: জামায়াতে ইসলামী চায়, ঐকমত্য কমিশন যেভাবে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে, সেভাবেই তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এখানে দলগুলোর ভিন্নমত গুরুত্ব পাবে না। তারা পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন ও সাংবিধানিক পদগুলোয় নিয়োগের বিধান সংবিধানে যুক্ত করার মতো মৌলিক পরিবর্তনে ছাড় দেওয়ার পক্ষে নয়।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জুলাই সনদে হাত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে সনদের বাস্তবায়ন বিষয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকট উত্তরণের রাস্তা বের করে আনা উচিত।

এনসিপি-এর আহ্বান

জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি সহ আরও কিছু দল মনে করে, সনদ বাস্তবায়নে সরকারকে সবচেয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সাহসী সিদ্ধান্ত: এনসিপি-এর সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, সরকার সংস্কারের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তাই জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা তাদের কর্তব্য। তিনি মনে করেন, সরকার যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে রাজনৈতিক সংকট এবং নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাবে।

কমিশনের সুপারিশ: এনসিপি কমিশনের সুপারিশ ইতিবাচকভাবে নিলেও দলগুলোকে আলোচনার আহ্বানে সরকারের গা বাঁচানোর মনোভাব দেখছে তারা। তারা গণভোটের সময় নিয়ে কঠোর অবস্থানে নেই।

সূত্র: প্রথম আলো


ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে তিন আসামি আদালতে সব সত্য ফাঁস করলেন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ১৮:২৪:০৯
ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে তিন আসামি আদালতে সব সত্য ফাঁস করলেন
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি

রাজধানীর পল্টনে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আটক হওয়া প্রধান আসামির স্ত্রী ও তাঁর সহযোগীরা আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ৯ দিনের দীর্ঘ রিমান্ড শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তাঁরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এই মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ এবং দাউদের বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা এই তিনজনের জবানবন্দি পৃথকভাবে রেকর্ড করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

জবানবন্দি রেকর্ড করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনায়েদ এবং কামাল উদ্দীন। জবানবন্দি শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার পল্টন থানার আদালত সাধারণ নিবন্ধন শাখার পুলিশের উপ-পরিদর্শক রোকনুজ্জামান বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর পল্টন বক্স কালভার্ট রোড দিয়ে যাওয়ার সময় মোটরবাইকে আসা দুষ্কৃতিকারীরা ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল এবং পরে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ জানিয়েছে যে জবানবন্দিতে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন। ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবেরের করা হত্যাচেষ্টা মামলাটি ওসমান হাদির মৃত্যুর পর এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন যে জুমার নামাজের পর প্রচারণার কাজ শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে তাঁকে অনুসরণ করে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল দাউদ এই হামলা চালায়। ঘটনার পরপরই আসামিরা পালিয়ে গেলেও সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।

আসামিরা দফায় দফায় রিমান্ডে থাকলেও শেষ পর্যন্ত আদালতের কাছে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন। বিশেষ করে রাহুল দাউদের বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমার জবানবন্দিতে এই ষড়যন্ত্রের আরও গভীর কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানা গেছে। পুলিশ এখন পলাতক থাকা প্রধান আসামি রাহুল দাউদ ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ইনকিলাব মঞ্চের এই তরুণ নেতার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল, আসামিদের এই স্বীকারোক্তির পর মামলার বিচারে তা বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।


নিকোটিন পাউচ ও ই-সিগারেটের দিন শেষ আসছে নতুন আইন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ১২:৩৭:১৪
নিকোটিন পাউচ ও ই-সিগারেটের দিন শেষ আসছে নতুন আইন
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ভেপিং ও ই-সিগারেটের আসক্তি বন্ধে এবং তামাকজনিত অসংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন এই অধ্যাদেশের ফলে এখন থেকে দেশে সব ধরনের ই-সিগারেট, ভ্যাপ এবং উত্তপ্ত তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার, উৎপাদন ও বিপণন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটে বিদ্যমান ৫০ শতাংশ সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার পরিবর্তে এখন থেকে ৭৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে সতর্কবাণী মুদ্রণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তথ্যবিবরণী অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। এই বিশাল মৃত্যুঝুঁকি মোকাবিলায় ২০০৫ সালের বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটিকে আরও যুগোপযোগী ও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নতুন সংশোধনীতে তামাকজাত দ্রব্যের সংজ্ঞায় ‘নিকোটিন পাউচ’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ইন্টারনেটসহ যেকোনো প্রচারমাধ্যমে তামাকের বিজ্ঞাপন এবং খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট সাজিয়ে রাখা বা প্রদর্শন করার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিল যা তরুণদের তামাকের প্রতি আকর্ষণ কমাতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন এই অধ্যাদেশে পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনের সংজ্ঞাকে আরও বিস্তৃত করা হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। আগে বিভিন্ন স্থানে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ) রাখার সুযোগ থাকলেও এখন থেকে তা সরকারের কঠোর নির্দেশনার শর্তাধীন করা হয়েছে। তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো রাজস্ব হারানোর অজুহাত দেখিয়ে এই আইনের বিরোধিতা করলেও সরকার জনস্বাস্থ্যের গুরুত্ব বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য যে গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তামাক খাত থেকে প্রায় ৪০ হাজার ৪১১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় রাষ্ট্রের এর চেয়েও বড় অংকের অর্থ ব্যয় হয় বলে বিশেষজ্ঞদের মত।

অধ্যাদেশটি চূড়ান্তভাবে জারির লক্ষ্যে বর্তমানে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। তামাকের প্রচার ও প্রসারের পথ স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে যা তামাক নিয়ন্ত্রণে একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে আইনটি পর্যালোচনার জন্য গঠিত বিশেষ কমিটির দীর্ঘ কার্যক্রম শেষে এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে। সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন আরও সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


যিশু খ্রিষ্টের মানবমুক্তির বার্তা সবার অনুপ্রেরণা: উপদেষ্টা ড. ইউনূস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ০৯:৫৪:৪৬
যিশু খ্রিষ্টের মানবমুক্তির বার্তা সবার অনুপ্রেরণা: উপদেষ্টা ড. ইউনূস
ছবি : সংগৃহীত

নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশপ্রেম ও মানবতার মহান আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীসহ দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ২৫ ডিসেম্বর ‘বড়দিন’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি উল্লেখ করেন যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবার জন্য একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বৃহত্তম এই ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে তিনি দেশ বিদেশের সকল অনুসারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে যিশু খ্রিষ্টের জীবন ও দর্শনের কথা স্মরণ করে বলেন যে মহান এই পুরুষ পৃথিবীতে শান্তি, ন্যায় এবং মানবমুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন। মানবজাতিকে সত্য ও কল্যাণের পথে পরিচালিত করাই ছিল তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য। ড. ইউনূস উল্লেখ করেন যে যিশু খ্রিষ্ট আমৃত্যু বিপন্ন ও অবহেলিত মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন এবং ক্ষমা ও ভালোবাসার যে মহিমা তিনি প্রচার করেছেন তা আজও বিশ্ববাসীর জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। তাঁর মহৎ চারিত্রিক গুণাবলি ধারণ করেই সুন্দর সমাজ গড়া সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক ইউনূস দৃঢ়তার সাথে বলেন যে বাংলাদেশ দীর্ঘকাল ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রয়েছে। আবহমানকাল ধরে এদেশের মানুষ একে অপরের ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে। তিনি প্রত্যাশা করেন যে যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপন এই সম্প্রীতির বন্ধনকে ভবিষ্যতে আরও সুদৃঢ় করবে। বাণীর শেষ অংশে তিনি খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীসহ দেশের সকল মানুষের উত্তরোত্তর শান্তি, সমৃদ্ধি ও সার্বিক কল্যাণ কামনা করেন।

বর্তমানে দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং নতুন প্রশাসনিক সংস্কারের যে প্রক্রিয়া চলছে সেখানে সকল সম্প্রদায়ের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ জরুরি বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা। বড়দিনের এই আনন্দ উৎসব যেন সকল ভেদাভেদ ভুলে মানুষকে এক সুতোয় বাঁধতে পারে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।


তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে যানজট এড়াতে যেসব রাস্তা পরিহার করবেন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ০৯:১১:২৯
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে যানজট এড়াতে যেসব রাস্তা পরিহার করবেন
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে বিশেষ ট্রাফিক ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটে লন্ডন থেকে আসা একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন তিনি। বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফিট) এবং এভারকেয়ার হাসপাতাল হয়ে তিনি গুলশানের বাসভবনে পৌঁছাবেন। এই দীর্ঘ পথে ব্যাপক জনসমাগম ও যানজটের আশঙ্কা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বড় ধরণের পরিবর্তন আনা হয়েছে।

ডিএমপির নির্দেশনায় জানানো হয়েছে যে মহাখালী থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং কুড়িল থেকে মস্তুল পর্যন্ত পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে সাধারণ যানবাহনের জন্য এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। উত্তরা ও মিরপুর এলাকার যাত্রীদের এয়ারপোর্ট সড়ক পরিহার করে বিকল্প পথ ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। গুলশান, বাড্ডা ও প্রগতি সরণি এলাকার যাত্রীরা কাকলী ও কামাল আতাতুর্ক সড়কের পরিবর্তে গুলশান–১, পুলিশ প্লাজা ও মহাখালী রুট ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলগামী বাসগুলোকে মিরপুর–গাবতলী সড়ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কাঞ্চন ব্রিজ হয়ে আসা যানবাহনগুলো বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভেতর দিয়ে মাদানী অ্যাভিনিউ হয়ে চলাচল করতে পারবে।

অভ্যর্থনায় আসা নেতাকর্মীদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করেছে পুলিশ। জানানো হয়েছে যে কেউ কোনো ধরণের ব্যাগ, লাঠি বা সন্দেহজনক বস্তু বহন করতে পারবেন না। তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো মোটরসাইকেল বা বহিরাগত গাড়ি তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িবহরে যুক্ত হতে পারবে না। গুলশান ও বনানী থেকে এয়ারপোর্ট অভিমুখে মোটরসাইকেল চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশগামী যাত্রী এবং হজযাত্রীদের যানজট এড়াতে পর্যাপ্ত সময় হাতে রেখে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি। মিরপুর ও উত্তরা এলাকার যাত্রীদের জন্য মেট্রোরেলকে সবচেয়ে সুবিধাজনক বিকল্প হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের মতো জরুরি সেবার গাড়িগুলো এই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকবে।

নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য টঙ্গী ইজতেমা মাঠ, পূর্বাচল নীলা মার্কেট, বাণিজ্য মেলা মাঠ, আগারগাঁও পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠ এবং মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে ডিএমপি। কমিশনার স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে ট্রাফিক আইন ও এই বিশেষ নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে রাজধানীতে এক ধরণের উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও জানমালের নিরাপত্তা এবং ট্রাফিক শৃঙ্খলা বজায় রাখাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে প্রশাসন।


সরকারি পদ ছেড়ে ভোটের ময়দানে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ২১:০৬:২২
সরকারি পদ ছেড়ে ভোটের ময়দানে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান
মো. আসাদুজ্জামান

বাংলাদেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা বা অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান তাঁর পদ থেকে পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) তিনি গণমাধ্যমকে জানান যে আগামী ২৭ ডিসেম্বর তিনি এই পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। মূলত আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিকভাবে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত থেকেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর তিনি ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দলীয় সূত্রমতে ইতিমধ্যে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামানের এই পদত্যাগ কেবল আইনি বাধ্যবাধকতা নয় বরং তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। গত ২৩ ডিসেম্বর শৈলকূপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারীর কাছ থেকে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। আসাদুজ্জামান এর আগেও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ৮ আগস্ট তিনি দেশের ১৭তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান।

দায়িত্ব গ্রহণের সময় আসাদুজ্জামান নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর মেয়াদকালে তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেছেন যার মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত আপিল শুনানি অন্যতম। তবে দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে তিনি পুনরায় সরাসরি ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২৭ ডিসেম্বর পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তাঁর সরকারি আমলাতান্ত্রিক দায়িত্বের অবসান ঘটবে।

ঝিনাইদহ-১ আসনটি মূলত একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত যেখানে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে আসাদুজ্জামানের মতো একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর অংশগ্রহণ এই আসনে নির্বাচনী লড়াইকে বেশ জমজমাট করে তুলবে। তিনি নিজে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এবং মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতেই তিনি সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। এখন ২৭ ডিসেম্বর পদত্যাগের পর তিনি পুরোপুরিভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় মনোযোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।


আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কড়া বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ১৮:৫৫:৩২
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কড়া বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়ার কোনো পথ আর খোলা নেই। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্পষ্ট করে বলেন যে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে এবং এ কারণে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব নয়। সরকারের এই অবস্থান অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট এবং দলটির পুনর্বাসনের কোনো সুযোগ নেই বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসন আমলের পর আওয়ামী লীগ বিহীন এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার পথে হাঁটছে বাংলাদেশ।

ব্রিফিংয়ে ময়মনসিংহের ভালুকায় দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন যে এই নির্মম ঘটনাকে সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছে। ভিডিও এবং ভিজ্যুয়াল ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ইতিমধ্যে অন্তত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রেস সচিব জানান যে এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে এটি ‘দ্রুত বিচার আইনে’ পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইন উপদেষ্টা। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে এবং যেকোনো ধর্মীয় উৎসবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৃহস্পতিবারের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন যে সরকার তাঁর ফিরে আসাকে ইতিবাচকভাবে স্বাগত জানাচ্ছে। তাঁর প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত আলাপ-আলোচনা চলছে এবং তাঁরা যতটুকু নিরাপত্তা বা সহযোগিতা চেয়েছেন সরকার তা সরবরাহ করছে। তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সম্প্রতি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। শফিকুল আলম জানান যে ভিডিও ফুটেজ দেখে এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অনেকের কাছ থেকে অপরাধের আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় তাঁদের প্রতিশ্রুতিরই বহিঃপ্রকাশ বলে তিনি উল্লেখ করেন। অপরাধী যেই হোক না কেন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে তিনি সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন।


৪৬তম বিসিএসের ভাইভার সময়সূচি প্রকাশ, জানুন বিস্তারিত

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ১৭:২৩:৪৯
৪৬তম বিসিএসের ভাইভার সময়সূচি প্রকাশ, জানুন বিস্তারিত
ছবি: সংগৃহীত

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়িকভাবে সফল প্রার্থীদের একটি বড় অংশের জন্য মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) বিস্তারিত সময়সূচি প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। বুধবার প্রকাশিত এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন জানায়, এই ধাপে সাধারণ ক্যাডারের ১ হাজার ৩৬৭ জন এবং সাধারণ ও কারিগরি বা পেশাগত উভয় ক্যাডারের ৭৩৫ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

পিএসসি জানায়, নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে এবং পরীক্ষার তারিখ ও সময় সংক্রান্ত সব তথ্য কমিশনের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে। বিশেষ কোনো যুক্তিসংগত কারণ দেখা দিলে এই সময়সূচিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন বা পরিবর্তন আনার অধিকার কমিশন সংরক্ষণ করে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

মৌখিক পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সূচি ও সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা পিএসসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.bpsc.gov.bd এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েবসাইট bpsc.teletalk.com.bd–এ পাওয়া যাবে। প্রার্থীদের নিয়মিতভাবে এসব ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে যেকোনো হালনাগাদ তথ্য দ্রুত জানা যায়।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৭ নভেম্বর ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন। ওই ফলাফলে মোট ৪ হাজার ৪২ জন প্রার্থী সাময়িকভাবে উত্তীর্ণ হন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকেই ধাপে ধাপে মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রার্থীদের ডাকা হচ্ছে, যা ৪৬তম বিসিএসের চূড়ান্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

-রফিক


নতুন বছরে কত দিন ছুটি? জানাল সরকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ১৩:৩৯:০৩
নতুন বছরে কত দিন ছুটি? জানাল সরকার
ছবি: সংগৃহীত

সরকার ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির ক্যালেন্ডার চূড়ান্ত করেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আগামী বছর সাধারণ ছুটি থাকবে মোট ১৪ দিন। তবে ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে নির্বাহী আদেশে অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণার ফলে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘ অবকাশের সুযোগ পাবেন। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরে টানা ৮ দিন এবং ঈদুল আজহায় ৬ দিনের ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় কর্মজীবীদের জন্য স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ছুটির ক্যালেন্ডারে এবার একটি নতুন জাতীয় দিবস যুক্ত হয়েছে। ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে সরকারি ছুটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ২০২৬ সালের ছুটির সূচিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এই দিনটি জাতীয় পর্যায়ে পালন করা হবে।

মাসভিত্তিক ছুটির হিসাবে দেখা যায়, ২০২৬ সালের প্রথম সরকারি ছুটি শুরু হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাসে। ৪ ফেব্রুয়ারি পবিত্র শব-ই-বরাত এবং ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ছুটি থাকবে। মার্চ মাসে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ছুটি, যার কেন্দ্রবিন্দু ঈদুল ফিতর। ১৭ মার্চ শব-ই-কদর, ২০ মার্চ জুমাতুল বিদা এবং ২১ থেকে ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে ঈদুল ফিতরের টানা ছুটির পাশাপাশি ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হবে।

এপ্রিল মাসে বাংলা সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ দুটি দিন চৈত্র সংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ছুটি নির্ধারিত হয়েছে। মে ও জুন মাসে মহান মে দিবস, বুদ্ধ পূর্ণিমা এবং ঈদুল আজহা উপলক্ষে ধারাবাহিক ছুটি থাকবে। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হবে ২৮ মে থেকে, যা নির্বাহী আদেশে টানা ২ জুন পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে। এ ছাড়া ২৬ জুন পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ছুটি থাকবে।

আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ধর্মীয় ও জাতীয় দিবস মিলিয়ে বেশ কয়েকটি ছুটি রয়েছে। এর মধ্যে ৫ আগস্ট নতুন সংযোজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস, ২৬ আগস্ট ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এবং ৪ সেপ্টেম্বর শুভ জন্মাষ্টমী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বছরের শেষভাগে অক্টোবর মাসে দুর্গাপূজার নবমী ও দশমী উপলক্ষে দুই দিনের ছুটি এবং ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবস ও বড়দিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শব-ই-বরাত, শব-ই-কদর, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো ইসলামি ধর্মীয় ছুটিগুলো চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় প্রয়োজনে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে। তবুও পূর্ণাঙ্গ ছুটির তালিকা প্রকাশ পাওয়ায় সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন থেকেই ব্যক্তিগত ভ্রমণ, পারিবারিক আয়োজন ও অন্যান্য পরিকল্পনা আগাম নির্ধারণ করতে পারবেন।

-রফিক


বাংলাদেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হলেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৪ ১১:২৩:২৯
বাংলাদেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হলেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ অভিভাবক বা ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাঁর এই নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ আগামী শনিবার অবসরে যাচ্ছেন এবং তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। আইন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী আগামী রোববার নতুন প্রধান বিচারপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ১৯৬১ সালের ১৮ মে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা প্রয়াত এ এফ এম আবদুর রহমান চৌধুরীও সুপ্রিম কোর্টের একজন খ্যাতিমান বিচারক ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর যুক্তরাজ্যের লণ্ডন থেকে আন্তর্জাতিক আইনের ওপর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন। পৈতৃক ধারাবাহিকতা এবং নিজস্ব মেধার সমন্বয়ে তিনি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।

কর্মজীবনে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ১৯৮৫ সালে জেলা জজ আদালতে এবং ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তাঁর বিচারিক দক্ষতা এবং নিষ্ঠার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট তিনি হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর তাঁর নিয়োগ স্থায়ী করা হয়। দীর্ঘ বিচারিক জীবনে তিনি অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক মামলার রায় প্রদান করেছেন যা দেশের বিচার ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করেছে।

উল্লেখ্য যে বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত বছর ১১ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক ছুটি থাকায় গত বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর শেষ কার্যদিবস এবং রীতি অনুযায়ী অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও আইনজীবী সমিতি থেকে তাঁকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নিয়োগ বিচার বিভাগের ধারাবাহিকতা এবং আইনগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞরা। দেশের সাধারণ মানুষের বিচারিক অধিকার রক্ষা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুসংহত করতে তাঁর ভূমিকা এখন সময়ের দাবি।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত