শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান জারি করা হল সুনামি সতর্কতা

জাপানে ৬.৭ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রোববার (৯ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর দেশটির উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে ছোট ছোট সুনামির ঢেউ দেখা দিয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, প্রশাসনিক অঞ্চল ইওয়াতের উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সতর্কবার্তায় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেকোনো মুহূর্তে ঢেউ উপকূলে আসতে পারে। এদিকে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.৮ পরিমাপ করেছে।
ভূমিকম্পের তীব্রতা ও আফটারশক
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, মূল ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পরেও ৫.৩ থেকে ৬.৩ মাত্রার কয়েকটি আফটারশকও আঘাত হেনেছে।
এর আগে, আজ সকালের দিকেও ইওয়াতে অঞ্চলে ৪.৮ থেকে ৫.৮ মাত্রার ছয়টি উপকূলীয় ভূমিকম্প অনুভূত হয়, তবে সেগুলো ভূমিতে খুব বেশি অনুভূত হয়নি। এই অঞ্চলটি এখনো ২০১১ সালে সমুদ্রের তলদেশে ৯.০ মাত্রার বিশাল ভূমিকম্পের স্মৃতি বহন করে চলেছে, যার ফলে সৃষ্ট সুনামির তাণ্ডবে প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ মারা যায় বা নিখোঁজ হয়েছিল।
টেকটোনিক সক্রিয়তা
ভূগোলবিদদের মতে, জাপান প্রশান্ত মহাসাগরের 'রিং অফ ফায়ার'-এর পশ্চিম প্রান্তে চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের ওপরে অবস্থিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে টেকটোনিকভাবে সক্রিয় দেশগুলোর মধ্যে একটি। প্রায় ১২৫ মিলিয়ন মানুষের এই দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৫০০টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
এক ভিসায় জিসিসি'র ছয় দেশ ভ্রমণ, চালু হচ্ছে 'গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'
উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা জিসিসি আগামী বছর থেকে বহুল প্রতীক্ষিত একক পর্যটন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পর্যটকরা একটিমাত্র ভিসা দিয়েই ছয়টি সদস্য রাষ্ট্র ভ্রমণ করার সুযোগ পাবেন। এই ছয়টি দেশ হলো—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত এবং ওমান।
সৌদি আরবের পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতিব জানিয়েছেন, চার বছরের যৌথ পরিকল্পনা ও দীর্ঘ প্রস্তুতির পর এই উদ্যোগটি এখন বাস্তবায়নের শেষ ধাপে পৌঁছেছে।
এক ভিসায় ছয় দেশের ভ্রমণ
নতুন এই ভিসার নাম হবে 'জিসিসি গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'। একবার অনুমোদন পেলে এটি পর্যটকদের সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত ও ওমান—এই ছয়টি দেশ একসঙ্গে ভ্রমণ করার সুযোগ দেবে। প্রাথমিকভাবে এটি কেবল পর্যটন এবং পারিবারিক ভ্রমণের জন্য প্রযোজ্য হবে।
ভিসার আবেদন অনলাইনে করা যাবে। পর্যটকরা চাইলে একক দেশ অথবা ছয়টি দেশ একসঙ্গে বেছে নিতে পারবেন।
ভিসার মেয়াদ এক মাস থেকে শুরু করে তিন মাস পর্যন্ত হতে পারে। আশা করা হচ্ছে, পৃথক পৃথক ভিসা নেওয়ার তুলনায় এই একক ভিসা খরচও কমাবে।
ভিসার জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী পাসপোর্ট, আবাসনের তথ্য, পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ভ্রমণ বিমা, আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ এবং ফেরার বা পরবর্তী গন্তব্যের টিকিট জমা দিতে হবে।
আঞ্চলিক যোগাযোগ ও ভ্রমণের সম্ভাবনা
আল-খাতিব জানিয়েছেন, উপসাগরীয় অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান বিমান যোগাযোগ এবং অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের ব্যাপক সম্ভাবনা এই একক ভিসা উদ্যোগকে সহজ ও কার্যকর করবে। গত বছর উপসাগরীয় চারটি বৃহৎ এয়ারলাইনস প্রায় ১৫ কোটি যাত্রী পরিবহন করেছে, যার মধ্যে ৭ কোটি ভ্রমণ করেছে উপসাগরীয় দেশগুলোর ভেতরে।
জিসিসি কর্মকর্তারা আশা করছেন, একক ভিসা চালু হলে পর্যটকদের এই অঞ্চলে অবস্থানকাল বাড়বে, একাধিক শহরে ভ্রমণ বৃদ্ধি পাবে এবং ভ্রমণ ব্যয়ও সব সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়বে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই উদ্যোগের আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে এবং আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই আবেদন পোর্টালটি চালু হবে।
তথ্যসূত্র: এএফপি
গাজায় পানির সংকট তীব্র নিকাশি ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানিও দূষিত, নেই কোনো বিকল্প
ইসরায়েলের সামরিক হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পুরো এলাকা ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবারগুলো বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো তছনছ হয়ে গেলেও, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রভাব দেখা দিয়েছে মাটি ও পানির ওপর, যা স্থানীয়দের জীবনধারণের প্রধান উৎস। চার সপ্তাহের এক ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চলমান থাকলেও, এই পরিবেশগত ক্ষতির চিত্র ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। যদিও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিন এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় আগে যেখানে একটি জীবনোজ্জ্বল সম্প্রদায় বসবাস করত, আজ সেখানে ধ্বংসস্তূপ আর দূষিত জল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।
একসময় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য তৈরি হওয়া শেখ রাদওয়ান পুকুরটি এখন ময়লা এবং ফ্লুয়ের নোংরা পানিতে ভরে গেছে। বহু পরিবার নিরুপায় হয়ে এই পুকুরকে ঘিরে আশ্রয় নিলেও এটি তাদের জীবন বিপন্ন করছে।
প্রসূত মহিলা উম্ম হিশাম তার সন্তানদের সঙ্গে দূষিত পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। তিনি জানান, "আমরা শেখ রাদওয়ান পুকুরের আশেপাশে আশ্রয় নিয়েছি। মশা, দূষিত পানি, চারপাশের ধ্বংস—সবই আমাদের জীবন ও সন্তানদের জীবনের জন্য বিপজ্জনক।"
পুকুরটি মূলত বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং সাগরে ছাড়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের বিমান হামলায় পাম্পগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় এখন সেখানে কাঁচা ময়লা ও নোংরা পানি জমছে। বিদ্যুৎ ও নিকাশি ব্যবস্থাও ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ায় পানির স্তর ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে এবং আশেপাশের ঘর ও তাঁবুগুলো ডুবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজা সিটি মিউনিসিপ্যাল কর্মকর্তা মাহের সালেম জানান, "দূষিত পানি ছড়িয়ে দিচ্ছে দুর্গন্ধ, পোকামাকড় ও মশা। পানি ৬ মিটার পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, বেড়া ধ্বংসপ্রাপ্ত। কোনো শিশু, নারী বা বৃদ্ধও পুকুরে পড়ে যেতে পারে।"
আল জাজিরার হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, "পরিবারগুলো জানে যে কূপ, জলবাহী ট্রাক বা পাত্রের পানি দূষিত, কিন্তু অন্য কোনো বিকল্প নেই।" স্থানীয় কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, স্থির জল সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে।
পানির অব্যবস্থাপনা ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামোতে আরও একটি উদ্বেগজনক বিষয় যোগ হয়েছে। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত COP30 জলবায়ু সম্মেলনে প্যালেস্টাইন দূত ইব্রাহিম আল-জেবেন বলেন, "গাজায় পরিবেশগত দুর্যোগ চলছে, যা ইসরায়েলের গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় ২.৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের পরিমাণ ৬১ মিলিয়ন টনের বেশি, যার অনেক অংশে হুমকিস্বরূপ বর্জ্য রয়েছে।"
তিনি আরও জানান, স্যানিটেশন ও পানির নেটওয়ার্ক ধ্বংস হওয়ায় ভূ-জল ও উপকূলীয় পানি দূষিত হয়েছে, ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ইসরায়েলের হামলায় গাজার কৃষিজমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা সেখানে খাদ্য নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় মিঠাপানি সরবরাহ সীমিত এবং বাকি অনেকটাই দূষিত।
শেখ রাদওয়ানে ফিরে দেখা যায়, বাতাসে ঘোর বিষাদ ও দুর্গন্ধ ভাসছে। আল জাজিরার মাহমুদ বলেন, "প্রতিদিন পানি, খাবার ও রুটি খুঁজে বের করার জন্য লড়াই করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা দ্বিতীয় পর্যায়ে চলে আসে।"
দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির নায়ক ট্রাম্প- পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন, যিনি সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করে “একটি বড় যুদ্ধ রোধ করেছেন” বলে দাবি করেছেন। শনিবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের প্যারেডে ভাষণ দিতে গিয়ে শাহবাজ বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাহসী ও দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। তার কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ লাখো মানুষের জীবন রক্ষা করেছে এবং অঞ্চলটিতে আপাত শান্তি ফিরিয়ে এনেছে।”
শাহবাজ শরিফ আরও বলেন, “যুদ্ধ কখনোই সমাধান নয়। আমাদের প্রয়োজন কূটনৈতিক সংলাপ ও আস্থার পরিবেশ। ট্রাম্পের পদক্ষেপ প্রমাণ করেছে, সাহসী নেতৃত্ব চাইলে সংঘাত রোধ করা সম্ভব।” তার বক্তব্যে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
এর আগে ১০ মে ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান ‘পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, “উভয় দেশই যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, এবং এটি দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।” এরপর থেকেই পাকিস্তান প্রকাশ্যে একাধিকবার ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করে আসছে।
তবে ভারত শুরু থেকেই এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। নয়াদিল্লি বলেছে, মে মাসের সংঘর্ষের অবসানে কোনো তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা ছিল না এবং যুদ্ধবিরতি এসেছে দ্বিপাক্ষিক সামরিক আলোচনার ফলেই। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা কখনোই আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা গ্রহণ করিনি, আমাদের অবস্থান স্পষ্ট কাশ্মীরসহ সব বিষয়ই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক হামলায় ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। সেই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে ৭ মে ভারত শুরু করে ‘অপারেশন সিন্দুর’, যা পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়। টানা চার দিন স্থল ও আকাশপথে সংঘর্ষ চলার পর উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
সূত্র:ডন,দ্য ইকোনমিক টাইমস
পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আফগানিস্তানের বার্তা
আফগানিস্তানের তালেবান সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলেও বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে। শনিবার কাবুলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ কাতার ও তুরস্ককে মধ্যস্থতা করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। তাদের প্রচেষ্টার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। যদিও আলোচনা প্রত্যাশিত ফল দেয়নি, তবে পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্বে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে।”
মুজাহিদ আলোচনার ব্যর্থতার জন্য ইসলামাবাদের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অসহযোগিতামূলক’ মনোভাবকে দায়ী করেন। তার ভাষায়, “আমরা সংযম দেখিয়েছি, কিন্তু পাকিস্তান বারবার প্ররোচনামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের এই আচরণই আলোচনার ব্যর্থতার মূল কারণ।” সংবাদ সম্মেলনে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, এটি বহাল থাকবে।”
অন্যদিকে ইসলামাবাদ ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো এখনো আলোচনার ব্যর্থতা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ অক্টোবর কাতারের দোহায় তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় আফগানিস্তান ও পাকিস্তান একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায়। সেই চুক্তির চূড়ান্ত পর্যালোচনার জন্য দুই দেশ ৬ নভেম্বর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বৈঠক করে, কিন্তু বৈঠকটি ব্যর্থ হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ব্যর্থতা দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা নতুন করে বাড়াতে পারে।
আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে রয়েছে প্রায় ২,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সংবেদনশীল ভূরাজনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এই সীমান্তে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বারবার সংঘর্ষ, গোলাবর্ষণ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তানের ভূখণ্ড থেকে জঙ্গি সংগঠনগুলো, বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), পাকিস্তানে হামলা চালায়। তবে তালেবান সরকার এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে আসছে।
মুজাহিদ বলেন, “আমরা কখনোই প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে কোনো জঙ্গি কার্যক্রমকে সমর্থন দিইনি এবং ভবিষ্যতেও দেব না। ইসলামাবাদের উদ্বেগ যদি বাস্তব হয়, তবে তা সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত, সংঘাতের মাধ্যমে নয়।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তালেবানের এই অবস্থান মূলত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আঞ্চলিক গ্রহণযোগ্যতা রক্ষার কৌশল। তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতা অব্যাহত থাকলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা কমতে পারে বলে তারা আশা করছেন।
-শরিফুল
বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চাই না: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে সতর্ক থাকার বার্তা রাজনাথ সিংয়ের
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরনের উত্তেজনা চায় না। তবে একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তাঁর বিবৃতির শব্দ চয়ন নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
শুক্রবার ভারতীয় সাংবাদিক এবং নেটওয়ার্ক ১৮ গ্রুপের শীর্ষ সম্পাদক রাহুল জোশিকে দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে রাজনাথ সিং এই মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারে ভারত ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ও সতর্কবার্তা
সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চাই না। তবে ইউনূসের উচিত হবে নিজের বিবৃতির শব্দ চয়ন নিয়ে সতর্ক থাকা।"
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ভারত যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম। তবে এরপরও ভারতের মূল লক্ষ্য হলো প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুরু থেকেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এক ধরনের টানাপোড়েন চলছে।
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা এই টানাপোড়েনকে আরও দীর্ঘায়িত করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফস কমিটি (সিজিসিএসসি)-এর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা এবং তুরস্কের পার্লামেন্টের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক। উভয় দেশের সঙ্গেই ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে শীতল।
তুর্কি পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন তুরস্কের এমপি মেহমেত আকিফ ইলমাজ। গত সপ্তাহের শুরুর দিকে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান। সাক্ষাৎ শেষে তিনি তুর্কি প্রতিনিধিদলের সব সদস্যকে এক কপি করে ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামের একটি বই উপহার দিয়েছেন। ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ বইটি মূলত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময়কার বিভিন্ন ছবি ও গ্রাফিতির সংকলন।
সূত্র: ফার্স্টপোস্ট
ব্লাড ব্যাংকের রক্তে এইচআইভি: সরকারি হাসপাতালের রক্ত নিয়ে আক্রান্ত হলো ৫ শিশু
ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নেওয়ার পর পাঁচজন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর দেহে এইচআইভি পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এই পাঁচ শিশুর সকলের বয়স আট বছরের নিচে। নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের জন্য তাদের হাসপাতালে যেতে হতো, কিন্তু এই মারাত্মক ভুলের কারণে ভুক্তভোগী শিশু ও তাদের পরিবারগুলো এখন গভীর দুশ্চিন্তা আর হতাশায় ভুগছে।
শনিবার (০৮ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানানো হয়েছে।
ভুল শনাক্ত ও বরখাস্তের নির্দেশ
পশ্চিম সিংভূম জেলা সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নেওয়ার পরই এই শিশুরা সংক্রমিত হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর চাইবাসার সিভিল সার্জন, এইচআইভি ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট টেকনিশিয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ইতোমধ্যে প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
তদন্তে জানা গেছে, রক্ত পরীক্ষার সময় পুরনো 'প্রি-কিট' ব্যবহারের কারণেই সংক্রমণটি শনাক্ত করা যায়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ সচিব ডা. নেহা অরোরা জানিয়েছেন, এখন থেকে এই ধরনের কিট ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পরিবারগুলোর দুর্ভোগ ও ক্ষোভ
পশ্চিম সিংভূমের মঞ্ঝরি ব্লকের সাত বছর বয়সী শশাঙ্ক (ছদ্মনাম) সংক্রমিত রক্ত পাওয়ার পর এইচআইভি আক্রান্ত হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই তাদের বাড়িওয়ালা পরিবারটিকে বাসা খালি করার নির্দেশ দেন। শশাঙ্কের বাবা দশরথ (ছদ্মনাম) বলেন, "আমি অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু বাড়িওয়ালা রাজি হননি। শেষে গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছি।" বর্তমানে এই পরিবারটিকে মাসে দুইবার চিকিৎসার জন্য ২৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। দশরথের অভিযোগ, সরকারি ভুলের কারণে এখন তাঁর ছেলেকে থ্যালাসেমিয়া আর এইচআইভি—দুই রোগের সঙ্গেই লড়াই করতে হবে।
একইভাবে হাটগামহারিয়া ব্লকের সাত বছরের দিব্যা (ছদ্মনাম) সংক্রমিত রক্ত সঞ্চালনের ফলে এইচআইভি পজিটিভ হয়েছে। তার মা সুনীতা (ছদ্মনাম) বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে হাসপাতালের নার্সরা দিব্যাকে ছোঁয়া এড়িয়ে চলছিলেন এবং ডাক্তাররা গ্লাভস পরে দূর থেকে পরীক্ষা করছিলেন। তখনই তাঁর সন্দেহ হয়। অক্টোবরে হাসপাতাল থেকে তাদের জানানো হয়, ভুলবশত সংক্রমিত রক্ত দেওয়া হয়েছিল।
সুনীতা বলেন, "শুরুতে আমি বুঝিনি, পরে বুঝেছি এই রোগ কত ভয়ঙ্কর। এখন আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি আতঙ্কে আছি।" ঝিকপানি ব্লকের শ্রেয়া (ছদ্মনাম) নামের এক শিশু ও তার মা শ্রদ্ধাও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শ্রদ্ধা বলেন, "হাসপাতালের ভুলে আমার মেয়ে এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে। এর জন্য আমি দুই লাখ টাকার চেক পেয়েছি, কিন্তু একটা শিশুর জীবনের মূল্য কি এতটুকু?"
দশরথ আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "মন্ত্রীদের ছেলেদের জন্য কোটি টাকা বরাদ্দ হয়, আর আমাদের বাচ্চাদের জন্য দুই লাখ! একটা শিশুর জীবনের মূল্য কি এতটুকু?"
মাননিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ও আদালতের উদ্বেগ
জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ওই জেলায় মোট ২৫৯ জন রক্তদাতা রক্ত দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৪ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে চারজন এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, রাজ্যের নয়টি ব্লাড ব্যাংকের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলেও সেগুলোতে কার্যক্রম চালু ছিল। এ বিষয়ে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট ইতোমধ্যে রাজ্য সরকারকে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে। মানবাধিকারকর্মী অতুল গেরা বলেন, লাইসেন্স নবায়ন ও মান নিয়ন্ত্রণের অভাবই এই বিপর্যয়ের মূল কারণ। তিনি জানান, ঝাড়খণ্ডে পাঁচ হাজারেরও বেশি থ্যালাসেমিয়া রোগী আছে, কিন্তু চিকিৎসার জন্য পুরো রাজ্যে মাত্র একজন হেমাটোলজিস্ট রয়েছেন।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কুমার অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, আবাসন, রেশন, শৌচালয়সহ সব সরকারি সুবিধা দেওয়া হবে।
পাকিস্তান-আফগানিস্তান আলোচনা স্থগিত: চুক্তি না হওয়ায় যুদ্ধবিরতি অনির্দিষ্ট ধাপে
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে চলমান শান্তি আলোচনা স্থগিত হয়েছে এবং নতুন করে আলোচনার জন্য কোনো তারিখ বা কর্মসূচি এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, দুই দেশের আলোচনা বর্তমানে পুরোপুরি অচলাবস্থা বা অনির্দিষ্ট ধাপে প্রবেশ করেছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জিও নিউজ এবং ডন-এর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে খাজা আসিফ এই আলোচনার অচলাবস্থার কথা জানান।
লিখিত চুক্তিতে অনীহা
গত মাসে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি প্রাণঘাতী হামলার পর উত্তেজনা নিরসনে কয়েক দফায় আলোচনা চলছিল। বৃহস্পতিবার ইস্তান্বুলে ছিল দুই দেশের প্রতিনিধির মধ্যে তৃতীয় দফার আলোচনা। তবে শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষই কোনো ধরনের চুক্তিতে সম্মত হতে পারেনি।
খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান কেবল একটি আনুষ্ঠানিক, লিখিত চুক্তি গ্রহণ করবে। কিন্তু আফগানিস্তানের প্রতিনিধিরা মৌখিক আশ্বাস গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন, যা আন্তর্জাতিক আলোচনায় সম্ভব নয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, "মধ্যস্থতাকারীরা তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে, কিন্তু শেষপর্যন্ত তারাও আশা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের যদি সামান্য আশাবাদ থাকত, তাহলে তারা আমাদের থাকতে বলতো।" তিনি মনে করেন, এভাবে পাকিস্তানের খালি হাতে ফিরে আসা দেখে মধ্যস্থতাকারীরাও কাবুলের উপর হাল ছেড়ে দিয়েছে।
একমাত্র দাবি পাকিস্তানের
খাজা আসিফ জানান, পাকিস্তানের অবস্থান দৃঢ় এবং স্পষ্ট। "আমাদের একমাত্র দাবি হলো আফগানিস্তানকে নিশ্চিত করতে হবে—তার মাটি পাকিস্তানে হামলার জন্য ব্যবহার করা হবে না।"
তিনি এই আলোচনার মধ্যস্থতা করে দেওয়ার জন্য তুরস্ক ও কাতারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, এই দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ পাকিস্তানের অবস্থানকে সমর্থন করেছেন, এমনকি আফগানিস্তানের প্রতিনিধিরাও এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে একমত ছিলেন, তবে তারা লিখিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত ছিলেন না।
আলোচনা স্থগিত হওয়ায় সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জম্মু হত্যাকাণ্ড ১৯৪৭: নির্বিচারে মুসলিমদের হত্যার ভয়াবহ চিত্র, যা তুলে ধরল গবেষণা
ভারত বিভাজনের সময় ১৯৪৭ সালে কাশ্মীর উপত্যকার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জম্মু প্রদেশে পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। ৯৩ দশমিক ৭ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীর উপত্যকার বিপরীতে, জম্মুতে দেখা গিয়েছিল এক নজিরবিহীন সহিংসতা ও গণহত্যা। জম্মুর রাজনৈতিক কর্মী এবং দৈনিক কাশ্মীর টাইমসের প্রতিষ্ঠাতা বেদ ভাসিনের লেখা গবেষণা পত্রে সেই সময়কালের জম্মুর ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
প্রয়াত বেদ ভাসিন ২০০৩ সালে জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘বিভাজনের অভিজ্ঞতা: জম্মু ১৯৪৭’ শিরোনামের একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেছিলেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, মাউন্টব্যাটেনের ভারত বিভাজনের পরিকল্পনা ঘোষণার পরপরই জম্মুতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে।
পুঞ্চের অসাম্প্রদায়িক আন্দোলন ও সাম্প্রদায়িক রূপ
পুঞ্চে মহারাজা হরি সিংয়ের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ এবং কিছু কর আরোপের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে initially এক ধরনের অসাম্প্রদায়িক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তবে মহারাজার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের নির্মম বল প্রয়োগ মানুষের আবেগকে উস্কে দেয় এবং এই আন্দোলন দ্রুতই অসাম্প্রদায়িক থেকে সাম্প্রদায়িক রূপ নেয়।
বেদ ভাসিন তার গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেছেন, মহারাজার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন শুধু মুসলিমদের আত্মসমর্পণ করতে বলেনি, ডোগরা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক মুসলিম সৈন্য এবং মুসলিম পুলিশ অফিসারদেরও ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল, যাদের আনুগত্য সম্পর্কে প্রশাসনের সন্দেহ ছিল।
সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও হত্যাকাণ্ডের চিত্র
জম্মুতে তীব্র সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে ভাসিন লিখেছেন, গুজব ছড়ানো হয়েছিল যে মুসলিমরা সাম্প্রদায়িক হত্যাযজ্ঞকে ন্যায্য প্রমাণ করতে অস্ত্র হাতে তুলে নেবে এবং তারা হিন্দুদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বিসনা, আরএসপুরা, আখনুরের মতো সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ পাকিস্তানের শিয়ালকোট অঞ্চলে চলে গিয়েছিলেন।
উধমপুর জেলায়, বিশেষত উধমপুর, চেনানি, রামনগর এবং রিয়াসি অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক মুসলিমকে হত্যা করা হয়। এমনকি উধমপুর থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভাদেরওয়াহতেও বহু মুসলিম ব্যক্তি সাম্প্রদায়িকতার শিকার হন। ভাসিনের মতে, এই হত্যাকাণ্ডে আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ)-এর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং তাদের সাহায্য করেছিল সশস্ত্র শিখ শরণার্থীরা, যারা হাতে তলোয়ার নিয়ে জম্মুর রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল।
ছাম্ব, দেবা বাটালা, মানুসার এবং আখনুরের অন্যান্য অংশে বসবাসকারী মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের হত্যার খবর পাওয়া গিয়েছিল, যাদের অনেকেই জম্মুর বিভিন্ন অঞ্চলে পালিয়ে গিয়েছিলেন। কাঠুয়া জেলায় মুসলিমদের গণহত্যা এবং নারীদের অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
প্রশাসনের ভূমিকা ও গণহত্যার প্রমাণ
বেদ ভাসিনের মতে, সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে শান্তির পরিবেশ গড়ে তোলার পরিবর্তে মহারাজার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সাম্প্রদায়িক গুন্ডাদের সাহায্য করেছে এবং তাদের অস্ত্র দিয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকার বাইরে বসবাসরত বহু মুসলিম ব্যক্তিকে দাঙ্গাকারীরা নৃশংসভাবে হত্যা করে। শহরে সরকারিভাবে কারফিউ জারি থাকা সত্ত্বেও দাঙ্গায় সামিল এই লোকজন অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে অবাধে গাড়িতে চলাচল করছিল। ভাসিনের দাবি, মুসলিমদের চলাচলে বাধা দেওয়ার জন্যই এই কারফিউ জারি করা হয়েছিল।
এরপর তালাব খাতিকান এলাকায় মুসলিমদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। তাদের প্রথমে যোগী গেট পুলিশ লাইনে স্থানান্তরিত করা হয়। নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে প্রশাসন তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য পাকিস্তানে চলে যেতে বলে। প্রথম ব্যাচে প্রায় ৬০টা লরিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষকে বোঝাই করে শিয়ালকোটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। জম্মু শিয়ালকোট রোডের চাট্টায় পৌঁছানোর পর বিপুল সংখ্যক আরএসএস-এর লোক এবং শিখ উদ্বাস্তুরা গাড়িগুলো নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেয়। সেখানে গাড়িতে সওয়ার ব্যক্তিদের টেনে বের করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই সময় সৈন্যরা হয় হত্যাকাণ্ডে যোগ দিয়েছিল বা দর্শকের ভূমিকায় ছিল। একইভাবে পরের দিন অন্যান্য পরিবারগুলোও একই পরিণতি বরণ করে।
এই হত্যাকাণ্ডে হতাহতের সঠিক সংখ্যা জানা নেই, তবে বিভিন্ন অনুমান অনুযায়ী এই সংখ্যা ২০ হাজার থেকে দুই লাখ ৩৭ হাজার। এই সময়ে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের কিছু অংশে চলে যান।
জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ও ষড়যন্ত্র
১৯৪১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, জম্মু প্রদেশের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১ দশমিক ২ মিলিয়নেরও বেশি, যা প্রদেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ ছিল। রাজধানী জম্মুর জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৫০ হাজার, যার মধ্যে মুসলিম ছিলেন ১৬ হাজার। জম্মু জেলার মোট জনসংখ্যা ছিল ৪ দশমিক ৫ লাখ, যার মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১ দশমিক ৭ লাখ।
কাশ্মীর টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক অনুরাধা জামওয়াল বলেন, জম্মু প্রদেশের ঘটনাবলী থেকে বোঝা যায় যে দেশভাগের সময় জনতাত্ত্বিক গঠন পরিবর্তনের সমন্বিত চেষ্টা করা হয়েছিল। ১৯৪১ সালে মোট জনসংখ্যা চার লাখ ২৮ হাজার ৭১৯ জনের ৩৭ শতাংশ ছিল মুসলিম সম্প্রদায়। কিন্তু ১৯৬১ সালে মোট জনসংখ্যা পাঁচ লাখ ১৬ হাজার ৯৩২-এর মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৫১ হাজার ৬৯৩ জন, অর্থাৎ মাত্র ১০ শতাংশ।
'ক্যালকাটা স্টেটসম্যান’-এর সম্পাদক ইয়ান স্টিফেন্স তার বই ‘পাকিস্তান’-এ লিখেছেন, আগস্ট থেকে ১১ সপ্তাহ ধরে পূর্ব পাঞ্জাব, পাতিয়ালা এবং কাপুরথালায় শুরু হওয়া পদ্ধতিগত নৃশংসতা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল।
তৎকালীন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা ভাসিনকে সতর্ক করে বলেছিলেন, "এখন শান্তি কমিটি গঠন করে শান্তির প্রতিষ্ঠার কাজ করার সময় নয়... আমরা ইতিমধ্যে এক হিন্দু-শিখ ডিফেন্স কমিটি গঠন করেছি।" ওই কর্মকর্তা ভাসিন ও তার সঙ্গীদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথাও বলেছিলেন। ওই কর্মকর্তা ভাসিনের সঙ্গীকে বলেছিলেন, তারা রেহারি এলাকায় হিন্দু ও শিখ ছেলেদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং আরএসএস-এর যুবা সদস্যরা ৩০৩ রাইফেল ব্যবহারের জন্য সৈন্যদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
‘দ্য হিস্টোরিক্যাল রিয়েলিটি অফ দ্য কাশ্মীর ডিসপিউট’ বইয়ের লেখক পিজি রসুলের মতে, জওহরলাল নেহরু ও শেখ আবদুল্লাহ যখন জম্মুতে মুসলিমদের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেন, তখন তাদের এই 'মর্মান্তিক ঘটনা' সম্পর্কে জানানো হলেও তারা নীরব ছিলেন। রসুল বলেছেন, তারা হয়তো ভেবেছিলেন কাশ্মীর হারালেও জম্মু তাদের হাতে থাকা উচিত এবং এর একমাত্র উপায় হলো সেখানে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠতা তৈরি করা।
জম্মু হত্যাকাণ্ডের পরিণতি
জম্মু হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন পরে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ (বর্তমানে খাইবার পাখতুনখোয়া) থেকে উপজাতি মিলিশিয়ারা কাশ্মীর আক্রমণ করে। এই সংঘাত প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সূত্রপাত করে। ১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে দিল্লি এবং ইসলামাবাদ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় এবং সেই সময় জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য দুই দেশের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দুই দিকের কাশ্মীরিরাই ছয়ই নভেম্বর এই হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করে থাকেন।
গণহত্যার অভিযোগে নেতানিয়াহুসহ ৩৭ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযানের নামে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ তাঁর সরকারের মোট ৩৭ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক।
শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের শীর্ষ সরকারি কৌঁসুলির দপ্তর থেকে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে বার্তাসংস্থা সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ছাড়াও যেসব ইসরায়েলি কর্মকর্তার নামে এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ, জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গিভর এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়া’আল জামির।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় গাজায় গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গত সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক ত্রাণ বিতরণকারী জোট ফ্লোটিলার ত্রাণের বহরকে আটকে দেওয়াকে মূল অভিযোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিক্রিয়া
পরোয়ানা জারির কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদন সা’র এক প্রতিক্রিয়ায় এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের 'পিআর কৌশল' বা জনসংযোগ কৌশল বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, এরদোয়ান তুরস্কের বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মুখ বন্ধ রাখতে এবং ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক, বিচারক ও মেয়রদের বন্দি করার কাজে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।
অন্যদিকে, গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস তুরস্কের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। শুক্রবার এক বার্তায় গোষ্ঠীটির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজা ইস্যুতে তুরস্কের জনগণ ও তাদের নেতৃত্বের আদর্শগত অবস্থান এই পরোয়ানা আরও একবার নিশ্চিত করল।
পাঠকের মতামত:
- ঢাকায় একরাতে চার্চে চার বিস্ফোরণ: আতঙ্কে খ্রিস্টান সম্প্রদায়!
- অ্যান্ড্রয়েড ১৫-ভিত্তিক HyperOS 3 নিয়ে চুপিসারে বড় আপডেট আনছে শাওমি!
- শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান জারি করা হল সুনামি সতর্কতা
- সাধারণ মানুষ ভোট চায়, চাপানো গণভোট বা সনদ নয়: মির্জা ফখরুল
- বেতন বাড়বে না আন্দোলন চলবে? শিক্ষকদের দাবিতে নতুন মোড়
- নির্বাচন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন উপদেষ্টা আসিফ: দিলেন পদত্যাগের ইঙ্গিতও
- নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি সরকার: রাশেদ খান
- ক্ষত সারাতে লাগবে না অস্ত্রোপচার: শরীর নিজেই গজাবে নতুন টিস্যু, যুগান্তকারী আবিষ্কার
- নতুন পে কমিশনের সিদ্ধান্ত নেবে আগামী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
- ০৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ০৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ০৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- এক ভিসায় জিসিসি'র ছয় দেশ ভ্রমণ, চালু হচ্ছে 'গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'
- দল নিবন্ধনে অনড়: ইসি’র গেটে ১২৩ ঘণ্টা ধরে অনশনে তারেক রহমান
- ইংল্যান্ড প্রবাসী কিউবা মিচেল: অবশেষে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেলেন
- দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে শহীদ মিনারে প্রাথমিকের শিক্ষকরা: শুরু হলো দেশব্যাপী কর্মবিরতি
- সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে জামিন দিলেন হাইকোর্ট
- গাজায় পানির সংকট তীব্র নিকাশি ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানিও দূষিত, নেই কোনো বিকল্প
- এটা আমার শেষ নির্বাচন: ঠাকুরগাঁওয়ে ভোট চেয়ে আবেগঘন আবেদন মির্জা ফখরুলের
- কুমিল্লার বদলে ধানমন্ডি থানার ভোটার হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
- ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে
- বিরোধী আসনে জামায়াতকে ঠেলতে আ.লীগের নতুন পরিকল্পনা!
- ডিএসইর নির্দেশনা অনুযায়ী বোর্ড সভার তারিখ প্রকাশ
- দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির নায়ক ট্রাম্প- পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী
- শেষ বাঁশির আগেই বদলে গেল গল্প- টটেনহ্যাম বনাম ম্যান ইউ
- বাংলাদেশ–ভারত ফুটবল ম্যাচের টিকিটের দাম প্রকাশ
- পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আফগানিস্তানের বার্তা
- বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে বিদেশি মুদ্রার সর্বশেষ বিনিময় হার প্রকাশ
- মাটিন স্পিনিংয়ের প্রথম প্রান্তিকের ফলাফল প্রকাশ
- ফার্মা এইডের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- মুনাফায় রেকর্ড গড়ল ফাইন ফুডস লিমিটেড
- হাক্কানি পাল্পের প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা ইতিবাচক
- ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের Q3 প্রতিবেদন প্রকাশ
- আজকের নামাজের সময়সূচি ও নামাজের ফজিলত
- ভোটার তালিকা ও এনআইডি ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন
- ১ কোটি টাকার বদলে ১৮ লাখ টাকার লিফট! দুর্নীতির মহোৎসব
- রবিবার ঢাকায় বন্ধ থাকবে যেসব মার্কেট ও এলাকা
- তেজাবি স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজারে নতুন সমন্বয়, জানুন আজকের রেট
- কেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া জানুন
- ১৭ বছর কষ্ট করেছি, ৩০০ আসনেই প্রার্থী চাই: রুমিন ফারহানা
- রাজধানীতে ডিএমপি'র 'বড় মহড়া': যমুনা, সচিবালয়সহ ১৪২ স্পটে সাত হাজার পুলিশ সদস্যের তৎপরতা
- মঞ্জু বনাম হেলাল: খুলনার রাজনীতিতে দুই পরীক্ষিত নেতার লড়াই, কে এগিয়ে এই কঠিন সমীকরণে?
- আওয়ামী লীগের লকডাউন ঘোষণা 'পাগলের প্রলাপ':সালাহউদ্দিন আহমেদ
- ঐক্যের বার্তা মির্জা ফখরুলের: হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই, ধানের শীষে ভোট চাই
- কারো দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান
- নাটোরে প্রকৃতির বিস্ময়! এক কাণ্ডে ১৩ মাথাওয়ালা নারকেল গাছ
- গণভোট ইস্যুতে স্পষ্ট অবস্থান জানালেন আমীর খসরু
- তাহসান কি রাজনীতিতে আসছেন? শোবিজে জোর গুঞ্জন!
- রোদে ভিটামিন ডি পাওয়ার সঠিক কৌশল জেনে নিন
- পরিবর্তনের ইঙ্গিত: তাপমাত্রা ও কুয়াশা নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
- ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক সংলাপ: জ্ঞানচর্চায় উপনিবেশের ছায়া কাটাতে আহ্বান বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানীর
- গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত
- শেয়ারবাজারে শীর্ষ বিশ শেয়ারের তালিকা প্রকাশ
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ
- ৫ ও ৬ নভেম্বর বন্ধ থাকবে ২ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ড
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ঢাকার আজকের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি এক নজরে
- গ্রিন সিগন্যাল কী পেল মান্না, নুর, পার্থসহ ১২ জোটনেতা
- ইসরায়েলের নেতাদের জন্মনাম ও পরিচয় পরিবর্তনের যত কারণ
- রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প
- ১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা
- দেউলিয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত
- ড. ইউনুস বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী মুসলিমের মধ্যে ৫০তম
- ইন্টারন্যাশনাল স্পেশালাইজড নিট লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিক আর্থিক ফলাফল প্রকাশ








