১০ বছরের মধ্যে এনসিপি ক্ষমতায় যাবে: হান্নান মাসউদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ দাবি করেছেন, আগামী দশ বছরের মধ্যে এনসিপি ক্ষমতায় যাবে। তিনি শিক্ষকদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণ করা হবে।
শনিবার (০৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
একক নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ক্ষমতা দখলের লক্ষ্য
এনসিপি'র সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, এনসিপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে এককভাবে অংশগ্রহণ করবে। আর আগামী দশ বছরের মধ্যে এনসিপি ক্ষমতায় যাবে। ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলো পূরণ করা হবে।
শিক্ষা খাত সংস্কারের বিষয়ে এই নেতা বলেন, শিক্ষা খাত সংস্কার না করা এবং শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্য নিরসন না করা হলো 'জুলাইয়ের সঙ্গে গাদ্দারি'। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হোক। তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, "হাসিনার মতো আর কোনো শিক্ষকের গায়ে হাত তুলবেন না।"
সহকারী শিক্ষকদের অসন্তোষ ও আন্দোলন
এই দিন সকালে কাঙ্ক্ষিত গ্রেড বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা আবারও আন্দোলনে নেমেছেন। শিক্ষকরা মূলত তিনটি প্রধান দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন:
১. দশম গ্রেডে বেতন বাস্তবায়ন।
২. চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন।
৩. শিক্ষকদের জন্য শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।
উল্লেখ্য, গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২৪ এপ্রিল এক আদেশে ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার কথা জানায়। তবে সহকারী শিক্ষকরা এই গ্রেড পরিবর্তনে সন্তুষ্ট নন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকরাও।
মিশর সফরে সারজিস আলম: রাফা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াবেন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণে এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় গতকাল শনিবার (০৭ নভেম্বর) মিশরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই সফরের অংশ হিসেবে প্রথম তিন দিন তিনি সৌদি আরবে এবং পরবর্তীতে তিন দিন মিশরে অবস্থান করবেন।
সফরের উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম
এনসিপি নেতা সারজিস আলম তাঁর সফরের মূল উদ্দেশ্যগুলো তুলে ধরেন। তিনি জানান, এই সময়ে তিনি দুই দেশের প্রবাসী ভাইবোন, গণঅভ্যুত্থানের সহযোদ্ধা এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। পাশাপাশি, আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করবেন।
এছাড়াও, সারজিস আলম মিশরের রাফা সীমান্তে শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত ফিলিস্তিনিদের জন্য স্বেচ্ছাসেবামূলক কিছু কাজে অংশগ্রহণ করারও পরিকল্পনা করেছেন। এই সফরের জন্য তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
দেশের পরিবর্তনে দলগুলোর ভূমিকা দেখেই জোটের সিদ্ধান্ত নেবে গণঅধিকার পরিষদ
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তার দল কারও সঙ্গে নির্বাচনী জোট করেনি। তিনি বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও দেশের পরিবর্তনের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা বিবেচনা করার পরই জোট গঠনের বিষয়ে ভাবা হবে। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য তরুণদের স্বপ্ন দেখতে হবে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের আয়োজনে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিবিরোধী এক তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা
নুরুল হক নুর নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজনীতির সমালোচনা করে বলেন, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন কলকারখানা ও শিল্প মালিকদের কাছ থেকে আগে শামীম ওসমানদের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকেরা চাঁদা নিত। তিনি অভিযোগ করেন, "এখনও কেউ না কেউ চাঁদা নিচ্ছে।"
তিনি বলেন, চাঁদাবাজি, দখলবাজি এবং সন্ত্রাস বন্ধে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট দরকার। কিন্তু কোনো দলই সেটি চায় না, কারণ সবাই ভোটকেন্দ্র দখল করা, গুন্ডামি ও মাস্তানি করার জন্য তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে চায়। তিনি অভিযোগ করেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাদকের ব্যবসা-বাণিজ্য চলে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়। ফলে শুধু ব্যক্তি পাল্টায়, দৃশ্যপট পাল্টায় না।
আগামীর জনপ্রতিনিধি হবেন তরুণরা
নুর বলেন, নারায়ণগঞ্জে অসংখ্য সংগ্রামী ও সাহসী তরুণ রয়েছে, যারা শামীম ওসমানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে হাসিনা সরকারের পতনের জন্য লড়াই করেছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, মানুষের সমর্থন পেলে তারাই আগামীর জনপ্রতিনিধি হবে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে 'গুরুত্বপূর্ণ' উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামীতে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে এবং কীভাবে পরিচালিত হবে, তার ফয়সালা হবে এই নির্বাচনের মাধ্যমেই।
যুব অধিকার পরিষদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি শেখ সাব্বিরের সভাপতিত্বে এবং ছাত্র অধিকারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান রাজের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।
পরাজয়ের ভয়ে গণভোটের বিরোধিতা করছে বিএনপি: ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) পরাজয়ের ভয়ে নির্বাচনের আগে গণভোটের বিরোধিতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বিএনপির মতোই জামায়াত এখন একটি বড় দল। তিনি অভিযোগ করেন, আজকের বিএনপি জিয়াউর রহমানের সেই মূল আদর্শ থেকে সরে গেছে।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
গণভোট ও স্থানীয় নির্বাচনের ভয়
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে ডা. তাহের বলেন, "জাতীয় নির্বাচনের আগে যারা গণভোট চায় না, তারা ডাকসু নির্বাচনে ভয় পেয়েছে।" তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ), জাকসু (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ), চাকসু (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) ও রাকসু (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) বন্ধে কত ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, তা দেশবাসীও দেখেছে।
তিনি মনে করেন, বিএনপি বুঝতে পারছে যে জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়, তাহলে তাদের ভরাডুবি হবে। আর এই কারণেই তারা স্থানীয় নির্বাচনের মতো করেই গণভোটেরও বিরোধিতা করছে।
বিপ্লব, আদর্শ এবং জামায়াতের অবস্থান
ডা. তাহের বলেন, সিপাহি-জনতার বিপ্লব (৭ নভেম্বর) আর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান (৫ আগস্ট) একই সূত্রে গাঁথা। তিনি উল্লেখ করেন, সিপাহি-জনতার বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান দেশে জাতীয় ঐক্যের একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, জনগণের আস্থা ফিরে পেতে বিএনপিকে অবশ্যই জিয়াউর রহমানের সেই আদর্শের বিএনপি হতে হবে। তাঁর দাবি, জিয়াউর রহমানের বিএনপি একসময় বড় দল ছিল, কিন্তু আজ সেই জায়গা নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
আলোচনা সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন দক্ষিণের নায়েবে আমির হেলাল উদ্দিন এবং বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালাম।
জুলাই সনদে নতুন সংকট: মুখোমুখি বিএনপি ও জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট ইস্যুতে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। মূলধারার দুই ইসলামপন্থী ও জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এবার পরস্পরের বিপরীত অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে সনদ বাস্তবায়ন ঘিরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নতুন সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পরামর্শ দিতে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল, তবে সেই সময়সীমা প্রায় শেষ হয়ে আসছে। এই সময়েই বৃহস্পতিবার দুপুরে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করে জুলাই সনদ ও গণভোট ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রস্তাব দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডা. তাহের বলেন, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে চাচ্ছি। উপদেষ্টা পরিষদ সেই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। আমি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছেন এবং বলেছেন, দলীয় দায়িত্বশীলদের সঙ্গে পরামর্শ করে আমাদের জানাবেন।”
অন্যদিকে, বিএনপি মহাসচিব শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছি। গতকাল স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেটিই আমাদের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য।”
বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জামায়াতের আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে দলটির নীতিনির্ধারকরা স্পষ্ট অবস্থান নেন যে, জুলাই সনদে যে বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য হয়েছে, সেটির আইনানুগ বাস্তবায়ন এবং সময়মতো জাতীয় নির্বাচন আয়োজনই এখন প্রধান অগ্রাধিকার।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে দীর্ঘ আলোচনার পর ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় যে সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, বিএনপি তার অংশীদার। আমরা সংবিধান ও প্রচলিত আইনের আলোকে সনদ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিএনপি শহীদ ও আহতদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। নতুন কোনো প্রশ্ন তুলে বা জটিলতা সৃষ্টি করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করার কোনো প্রচেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।”
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. তাহের বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি ঠিক করা যায় কিনা। আলোচনা শুরু হলে নির্বাচনের পথও সুগম হবে। সময় খুব কম, তাই দ্রুত সংলাপ প্রয়োজন।”
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে নয়টি রাজনৈতিক দল অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে। “যদি বিএনপি ইতিবাচক সাড়া দেয়, তাহলে আমরা সরাসরি তাদের সঙ্গে বসতে চাই,” যোগ করেন তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুটি এখন দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াত উভয় দলই ২০২৪ সালের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু এখন তাদের মধ্যে নীতি ও কৌশলগত মতভেদ নতুন রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সোমবার দলগুলোকে সাত দিনের মধ্যে ঐকমত্য জানাতে আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত কোনো দলই আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসেনি। ফলে সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই অনিশ্চয়তা ঘনীভূত হচ্ছে।
৭ নভেম্বরের বিপ্লব: জিয়াউর রহমানের প্রতি সমর্থনের গল্প শোনালেন মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার ঘোষক এবং একজন নিষ্কলুষ সাহসী সৈনিক হিসেবে জিয়াউর রহমানের প্রতি সামরিক বাহিনী ও জনগণের ব্যাপক সমর্থন ছিল। এই গণসমর্থনের কারণেই জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বরের বিপ্লবে মহানায়কে পরিণত হন। শুক্রবার 'জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস' উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে তিনি দেশবাসীসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনও জানিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনে এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। তিনি মনে করেন, ৭ নভেম্বরের সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানে সেদিন রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হয়েছিল। এই বিপ্লবের মূল চরিত্র ছিল জিয়াউর রহমানের প্রতি সেনাবাহিনী ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সিপাহী-জনতার এই বিপ্লবের সম্মিলিত প্রয়াসে জনগণ নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠে। ৭ নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই বাংলাদেশ বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছিল। এই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই আইনের শাসন, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সামাজিক শান্তি ফিরে এসেছিল।
তিনি বলেন, দেশ, জনগণ, স্বাধিকারসহ জাতীয় স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী সুগভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লবের মাধ্যমেই বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানকে সমর্থন করে সামরিক বাহিনী এবং তাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছিল।
জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী রাজনীতির উন্মেষ ঘটিয়ে জাতিকে উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠিয়েছিলেন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আর সেজন্যই জাতীয় জীবনে ৭ নভেম্বরের বিপ্লবের গুরুত্ব অপরিসীম।
তিনি দেশবাসীসহ সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশে এখনও নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হয়নি, তাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশবাসী কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। ন্যায়বিচার, জবাবদিহি ও সুশাসনের অঙ্গীকার এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, এখনও দেশের বিভিন্ন জনপদে বিচারবহির্ভূত হত্যায় মানুষের প্রাণ যাচ্ছে এবং আইনি প্রতিকার থেকে অসহায় মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে পদানত করার জন্য কুচক্রীমহল অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তাই যে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া হয়েছিল, সেই একই চেতনা বুকে ধারণ করে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা, সাম্য, ন্যায় ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা এবং দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে চিরতরে বিদায় করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
জোট বাদ দিয়ে নতুন যে কৌশল নিচ্ছে জামায়াত: উদ্দেশ্য একাধিক দলের অংশগ্রহণ বাড়ানো
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে সমমনা ইসলামি দলগুলোর একটি আনুষ্ঠানিক জোট হওয়ার কথা থাকলেও, সেই জোট হচ্ছে না। এর পরিবর্তে সমমনা দল ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন করবে জামায়াত। দলগুলোর মধ্যে শরিয়াহ আইন চালুর বিষয়ে পদ্ধতিগত ঐকমত্য না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
বুধবার সিলেটে এক বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "আমরা কোনো জোট করছি না। নির্বাচনি সমঝোতার ভিত্তিতে এগোব। প্রতিটি জায়গায় একটি বাক্স থাকবে, এই নীতিতেই আমরা কাজ করছি।" তবে তিনি এই বিষয়ে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবিসিকে বলেছেন, তারা প্রচলিত কাঠামোগত জোট করছেন না। তিনি বলেন, সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বসে তারা এটি নিশ্চিত করবেন যেন একই আসনে একাধিক প্রার্থী না থাকে। জামায়াত ও সমমনাদের মধ্যে আসনভিত্তিক সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে।
জামায়াতে ইসলামীর প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের যুগান্তরকে বলেন, প্রচলিত জোট বলতে যা বোঝায়, তেমন কোনো জোট হবে না। আসনভিত্তিক সমঝোতা হবে। যে আসনে সমমনাদের এক দলের প্রার্থী থাকবে, সে আসনে অন্য দলের প্রার্থী থাকবে না। শুধু দল নয়, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকেও এক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে। অন্যান্য দল এবং ব্যক্তির জন্য জামায়াত কত আসন ছাড়বে, সে বিষয়ে তিনি জানান, "এখনো সে সময় আসেনি।"
শরিয়াহ আইন ও কৌশলগত কারণ
সমমনা অন্য একটি ইসলামী দলের দায়িত্বশীল সূত্র দাবি করেছে যে, শরিয়াহ আইন চালুর বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে পদ্ধতিগত মতপার্থক্য রয়েছে। জামায়াত মনে করে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং ইসলামী আইনের শাসন পর্যায়ক্রমে চালু করতে হবে। অন্যান্য দল কিছুটা কট্টর হলেও একবারে সম্ভব নয় বলে তারা বিশ্বাস করে।
জোটের পরিবর্তে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনের আরেকটি কৌশলগত কারণ হলো, আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচন কতটা অংশগ্রহণমূলক হলো, তা বহির্বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। সবাই আলাদা আলাদা নির্বাচন করলে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা হবে বেশি, যা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সহায়তা করবে।
সংশোধিত আরপিও অনুসারে, জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও প্রার্থীরা একটি দলের প্রতীকে অতীতের মতো নির্বাচন করতে পারবে না, বরং নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। এই কারণেও জামায়াতসহ সমমনারা আসন সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন করার পথে হাঁটছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ইসলামপন্থি দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার চেষ্টা করছিল জামায়াত। এর ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াত ও আরও সাতটি সমমনা দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে একযোগে কর্মসূচি পালন করেছে।
এনসিপি'র বার্তা: বিএনপি-জামায়াত যে কারো সঙ্গে জোটে যেতে পারি, শর্ত একটাই
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অথবা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জোট হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তবে তিনি এর জন্য একটি সুনির্দিষ্ট শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এনসিপি'র অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এই সম্ভাবনার কথা জানান।
এনসিপি'র মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশ একটি সংকটকালীন মুহূর্তে রয়েছে।" তিনি বলেন, এই সংকট মোকাবিলায় বিএনপি ও জামায়াত যদি সংস্কার প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে একমত পোষণ করে এবং তা ভবিষ্যতে বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে বিএনপি অথবা জামায়াত—যে কারও সঙ্গেই এনসিপি'র জোট হতে পারে।
তিনি সেই সঙ্গে জানান, তাদের দাবি অনুযায়ী বিচার ও সংস্কারের প্রাথমিক শর্ত যদি পূরণ না হয়, তাহলে এনসিপি কারও সঙ্গে জোটে যাবে না।
এনসিপি'র নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এনসিপি মনোনয়নের জন্য আবেদন ফরম বিতরণ শুরু করেছে।
প্রতিটি ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।
তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধা এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এই মূল্য দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করা হবে এবং ১৫ নভেম্বর দলের প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণা করা হবে।
বিএনপিকে অবজ্ঞা করলে ফল ভালো হবে না: উপদেষ্টাদের প্রতি মির্জা ফখরুলের হুঁশিয়ারি
বিএনপিকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্য করলে এর ফল ভালো হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা রাজনৈতিক দলগুলোকে হাতের খেলনা মনে করছেন। বিএনপি মহাসচিব দাবি করেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) যশোরের টাউন হল ময়দানে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক প্রভাবশালী সদস্য এবং প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের শক্তি ও ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, "বিএনপি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতার ঘোষক মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের দল। বিএনপি আপসহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের জন্য জীবনবাজি রেখে সংগ্রাম করা বেগম খালেদা জিয়ার দল।"
তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "সুতরাং বিএনপিকে ভয় দেখাবেন না। বিএনপি কোনো ভেসে আসা দল না।" তিনি উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম, খুন ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, "আমরা যদি রাজপথে নামি, তাহলে ষড়যন্ত্রকারীদের রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে।"
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন দিয়ে দেশকে সকল সংকট থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করুন। এই সংকটের আশু সমাধান করে দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কি সম্ভব? যা আছে আইআরআইর আট দফার সুপারিশে
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করতে আটটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণতন্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)। গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসি থেকে প্রকাশিত তাদের প্রাক্-নির্বাচনী মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ সুপারিশগুলো উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ গতি-প্রকৃতি, নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম, রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা, এবং নাগরিক অংশগ্রহণের মাত্রা বিশ্লেষণ করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যেই আসন্ন নির্বাচনের জন্য বেশ কিছু ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনকালীন আচরণবিধি প্রণয়ন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা, এবং ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ। তবে এসব উদ্যোগ সত্ত্বেও আইআরআই মনে করছে, বর্তমান প্রাক্-নির্বাচনী পরিবেশ এখনো ভঙ্গুর ও আস্থাহীনতার মধ্যে রয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতার বিচ্ছিন্ন ঘটনা, স্থানীয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক, নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থার ঘাটতি সব মিলিয়ে নির্বাচনী আস্থা পুনর্গঠনে প্রয়োজন আরও স্বচ্ছতা ও সংলাপ।
আইআরআইয়ের প্রাক্-নির্বাচনী মূল্যায়ন মিশনের কার্যক্রম
প্রাক্-নির্বাচনী এই মূল্যায়ন মিশনে অংশ নেন একদল আন্তর্জাতিক নীতি, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও গণতান্ত্রিক প্রশাসন বিশেষজ্ঞ। তাঁরা ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করেন এবং রাজধানী ঢাকাসহ একাধিক জেলায় মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। সফরের সময় তাঁরা নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের সদস্যদের সঙ্গে মোট ২১টি আনুষ্ঠানিক বৈঠকে ৫৯ জন অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।মিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু ইতিবাচক রূপান্তর দেখা যাচ্ছে। বিশেষত, তরুণ নেতৃত্বের উত্থান, নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর আবির্ভাব, এবং বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সক্রিয় রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে। পাশাপাশি, প্রথমবারের মতো বিপুলসংখ্যক তরুণ ভোটারের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রজন্মগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের একটি নতুন অধ্যায় সূচিত করতে পারে।
তবে প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার ঘাটতি, নারীর সীমিত অংশগ্রহণ, উগ্রপন্থী রাজনীতির পুনরুত্থান এবং অসহিষ্ণু রাজনৈতিক বক্তব্যের প্রসার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করতে পারে। আইআরআই মনে করছে, এই চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণ বাস্তবায়নে আন্তরিক ও দায়বদ্ধ হতে হবে।
জুলাই সনদ: গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের নীলনকশা
আইআরআই প্রতিবেদনে জুলাই জাতীয় সনদকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের একটি “রূপরেখা দলিল” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এই সনদ বাস্তবায়ন হলে নির্বাচনী ব্যবস্থার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, দলীয় সংস্কারে অগ্রগতি, এবং সংসদীয় জবাবদিহি আরও জোরদার হবে। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ও সংসদের কার্যকর ভূমিকার ওপর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সনদের সময়মতো বাস্তবায়ন, দলীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্তি, এবং সংলাপ-ভিত্তিক সংস্কার প্রক্রিয়াই নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা পুনর্গঠনের পথ খুলে দিতে পারে। আইআরআই উল্লেখ করে, গণতন্ত্র তখনই কার্যকর হয়, যখন প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের প্রতি সহিষ্ণু থাকে এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখে।
নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ: এখনো সীমিত পরিসরে
আইআরআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো কাঠামোগতভাবে সীমিত। সংরক্ষিত আসনের বাইরে নারীরা খুব কমই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান বা সিদ্ধান্তগ্রহণের পর্যায়ে আসতে পারেন। আইআরআই পরামর্শ দিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোকে নারীর নেতৃত্ব বিকাশে প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি চালু, মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় সমঅধিকার নিশ্চিত, এবং প্রচারণার সময় নিরাপত্তা সুরক্ষা জোরদার করতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নারী প্রার্থী ও প্রচারকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও সহিংসতার ঘটনা গণতন্ত্রের অন্তর্ভুক্তিমূলক চরিত্রকে ব্যাহত করে। তাই নারী রাজনীতিবিদদের জন্য নিরাপদ রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে আইআরআই।
শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইআরআইয়ের আট দফা সুপারিশ
১. জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন:
রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ ও প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। গণতান্ত্রিক সংস্কার ও বিতর্কিত বিষয়গুলোর সমাধানে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।২. গণভোটের কাঠামো নির্ধারণ:
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে যৌথভাবে গণভোটের জন্য আইনি ও প্রশাসনিক কাঠামো প্রণয়ন করতে হবে। গণভোটের উদ্দেশ্য, প্রক্রিয়া এবং জনগণের অংশগ্রহণের বিষয়টি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
৩. নাগরিক সচেতনতা ও শিক্ষা কর্মসূচি:
জুলাই সনদ ও সাংবিধানিক সংস্কার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের বোঝাপড়া বাড়াতে দেশব্যাপী নাগরিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে হবে। বিশেষ করে তরুণ, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৪. নারীর অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা:
রাজনৈতিক দলগুলোকে নারীদের নেতৃত্বে আনতে, মনোনয়নে অগ্রাধিকার দিতে এবং নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত করতে উদ্যোগ নিতে হবে।
৫. প্রার্থী বাছাইয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা:
দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়া যেন গণতান্ত্রিক ও জবরদস্তিমুক্ত থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে প্রার্থী ও প্রচারকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. নিরাপত্তা সমন্বয় ও সহিংসতা প্রতিরোধ:
নির্বাচন কমিশনকে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রাখতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে উত্তেজনা প্রশমনে সক্রিয় নজরদারি চালাতে হবে।
৭. নাগরিক পর্যবেক্ষণে স্বচ্ছতা:
নির্বাচন কমিশনকে নাগরিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর যোগ্যতার মানদণ্ড নির্ধারণ এবং প্রত্যাখ্যানের কারণ লিখিতভাবে জানানো বাধ্যতামূলক করতে হবে। অনুমোদিত সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিয়মিত তথ্য বিনিময় করতে হবে।
৮. রাজনৈতিক অর্থায়নে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা:
রাজনৈতিক দলগুলোর তহবিল সংগ্রহ, ব্যয় ও দাতাদের তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। আর্থিক অনিয়ম বা ভুল তথ্য প্রদানে কঠোর শাস্তির বিধান রাখতে হবে এবং স্বাধীন নিরীক্ষা উৎসাহিত করতে হবে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও তথ্যের স্বচ্ছতা
প্রতিবেদনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আইআরআই বলেছে, সাংবাদিকদের এমন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে যেখানে তারা রাজনৈতিক চাপ, ভয়ভীতি বা অর্থনৈতিক প্রভাব ছাড়াই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ব্যাহত হলে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
এছাড়া নির্বাচন কমিশন ও নাগরিক সমাজের যৌথ প্রচেষ্টায় ভোটারদের ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শনাক্ত করার সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। আইআরআই সতর্ক করেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য বা সংগঠিত অপপ্রচার নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করতে পারে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য বড় হুমকি।
সর্বশেষে, আইআরআই বলেছে, বাংলাদেশ এখন এক সংবেদনশীল গণতান্ত্রিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। নির্বাচনের সাফল্য নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর সহনশীলতা, সংলাপ, স্বচ্ছতা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ওপর। যদি এসব শর্ত পূরণ হয়, তবে ২০২৬ সালের নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে।
পাঠকের মতামত:
- ১০ বছরের মধ্যে এনসিপি ক্ষমতায় যাবে: হান্নান মাসউদ
- মিশর সফরে সারজিস আলম: রাফা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াবেন
- সারা দেশে নির্বাচনের জোয়ার বইছে: প্রেস সচিব
- তুলার গুদামে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট, নিয়ন্ত্রণে আসেনি এখনো
- এবার সামনে এলো বাবলা হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য: কিলিং মিশনে জড়িত ৪ জন শনাক্ত
- বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চাই না: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে সতর্ক থাকার বার্তা রাজনাথ সিংয়ের
- আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের রাজশাহী সফর: নির্বাচনের প্রসঙ্গ এড়িয়ে টিটিসি পরিদর্শন
- হরর সিনেমা হতে পারে থেরাপি, জানেন কী এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি?
- ১.৫৫ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি: বিশ্বব্যাংকের ঋণের প্রকল্পে লুটপাটের মহোৎসব
- দেশের পরিবর্তনে দলগুলোর ভূমিকা দেখেই জোটের সিদ্ধান্ত নেবে গণঅধিকার পরিষদ
- জন্মভূমিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন: সরকারের পট পরিবর্তনের পর প্রথম সফর
- ব্লাড ব্যাংকের রক্তে এইচআইভি: সরকারি হাসপাতালের রক্ত নিয়ে আক্রান্ত হলো ৫ শিশু
- ত্বক মসৃণ ও রোগমুক্ত রাখতে চান? প্রতিদিনের রুটিনে অ্যালোভেরা জেল রাখার ৫টি উপকারিতা
- পাকিস্তান-আফগানিস্তান আলোচনা স্থগিত: চুক্তি না হওয়ায় যুদ্ধবিরতি অনির্দিষ্ট ধাপে
- কাঁচকলার জাদু: ৫টি পরিবর্তনে শরীরকে সুস্থ রাখতে সেদ্ধ কাঁচকলা খান
- জম্মু হত্যাকাণ্ড ১৯৪৭: নির্বিচারে মুসলিমদের হত্যার ভয়াবহ চিত্র, যা তুলে ধরল গবেষণা
- গণহত্যার অভিযোগে নেতানিয়াহুসহ ৩৭ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
- পরাজয়ের ভয়ে গণভোটের বিরোধিতা করছে বিএনপি: ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের
- গাজায় শান্তি ফেরাতে আন্তর্জাতিক বাহিন মোতায়েনের ঘোষণা দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
- জাহানারা আলমের অভিযোগ 'ভিত্তিহীন': মুখ খুললেন সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল মঞ্জু
- আর্থিক খাতের রক্তক্ষরণ: আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাটের মাশুল গুনছে ২৪টি ব্যাংক
- পাকিস্তান-বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠতা:'চিকেনস নেক' সুরক্ষিত করতে সীমান্তে ভারতের নতুন সেনাঘাঁটি
- কালো মুরগি কেন এত দামি: জেনেটিক বিস্ময়, ঐতিহ্য ও বিলাসিতার এক অনন্য সংমিশ্রণ
- বঙ্গোপসাগরে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা, জানুন বিস্তারিত
- ঘরে বসেই বানান ডিজিটাল NID: সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া জানুন ধাপে ধাপে
- ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী ছেলে না থাকলে সম্পত্তি বণ্টনের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা
- জেনে নিন ভাপা পিঠা বানানোর সহজ রেসিপি
- আফগান–পাক উত্তেজনা ফের চরমে
- ১২ দিনের যুদ্ধের পর বরফ গলছে কি ইরান–মার্কিন সম্পর্কে?
- জুলাই সনদে নতুন সংকট: মুখোমুখি বিএনপি ও জামায়াত
- জানা গেল জাতীয় নির্বাচনের সময়
- ৭ নভেম্বরের বিপ্লব: জিয়াউর রহমানের প্রতি সমর্থনের গল্প শোনালেন মির্জা ফখরুল
- জোট বাদ দিয়ে নতুন যে কৌশল নিচ্ছে জামায়াত: উদ্দেশ্য একাধিক দলের অংশগ্রহণ বাড়ানো
- নির্বাচন নিয়ে ইসি'র চূড়ান্ত বার্তা: প্রস্তুত শতভাগ, ভোট ফেব্রুয়ারিতে
- ব্রিটিশ প্রতিনিধির হুঁশিয়ারি: বাংলাদেশের নির্বাচনে 'অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়'
- ট্রাম্পের ভারত সফর আসন্ন? মোদিকে 'মহান ব্যক্তি' বলে প্রশংসা
- যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই আফগানিস্তানে গোলাবর্ষণ পাকিস্তানের; উত্তেজনা চরমে
- শুক্রবার থেকে শনিবার ২২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
- এনসিপি'র বার্তা: বিএনপি-জামায়াত যে কারো সঙ্গে জোটে যেতে পারি, শর্ত একটাই
- পাক-ভারত সংঘাতে বিমান বিধ্বস্ত: ট্রাম্পের নতুন দাবি
- মবের ভয় কেন? যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলেন, ভয় তাদেরই: প্রেস সচিব
- বিএনপিকে অবজ্ঞা করলে ফল ভালো হবে না: উপদেষ্টাদের প্রতি মির্জা ফখরুলের হুঁশিয়ারি
- হাউসকা দুর্গের ভূগর্ভ আর ‘শয়তানের বাইবেল’ কোডেক্স গিগাস: কিংবদন্তি, ইতিহাস ও ভয়ের মনস্তত্ত্ব
- বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সয়াবিন চুক্তি: কি কারণে ভারতের বাজার হারানোর শঙ্কা তৈরি হলো?
- শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কি সম্ভব? যা আছে আইআরআইর আট দফার সুপারিশে
- ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা পাস, মোট ছুটি যতদিন
- ০৬ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ০৬ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ০৬ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ইতালি: সভ্যতার সূতিকাগার, শিল্পের রাজধানী ও আধুনিক ইউরোপের আত্মা
- ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক সংলাপ: জ্ঞানচর্চায় উপনিবেশের ছায়া কাটাতে আহ্বান বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানীর
- গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত
- ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
- চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আবারও পর্দায় পূজা চেরি
- শেয়ারবাজারে শীর্ষ বিশ শেয়ারের তালিকা প্রকাশ
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ
- ৫ ও ৬ নভেম্বর বন্ধ থাকবে ২ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ড
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- গ্রিন সিগন্যাল কী পেল মান্না, নুর, পার্থসহ ১২ জোটনেতা
- ঢাকার আজকের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি এক নজরে
- ইসরায়েলের নেতাদের জন্মনাম ও পরিচয় পরিবর্তনের যত কারণ
- ১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা
- ড. ইউনুস বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী মুসলিমের মধ্যে ৫০তম
- রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প








