যুদ্ধবিরতির পথে নতুন বাধা: গাজায় তুর্কি বাহিনীর উপস্থিতির বিরোধিতা ইসরায়েলের

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে যুদ্ধ শেষ করার মার্কিন পরিকল্পনার অধীনে গাজায় তুর্কি সশস্ত্র বাহিনীর উপস্থিতি মেনে নেবে না ইসরায়েল। সোমবার (২৭ অক্টোবর) জায়নবাদী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার এই কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন।
তুরস্কের প্রতি অনাস্থা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজায় একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে, যা ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। কিন্তু ইসরায়েল এই বাহিনীতে তুরস্কের অংশগ্রহণের তীব্র বিরোধী।
হাঙ্গেরিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি মন্ত্রী গিডিয়ন সার বলেন:
“এরদোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্ক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিকূল মনোভাব পোষণ করেছে। তাই তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করতে দেওয়া আমাদের পক্ষে যুক্তিসঙ্গত নয় এবং আমরা এতে একমত হব না। আমরা আমাদের আমেরিকান বন্ধুদের কাছে এটি বলেছি।”
তিনি আরও বলেন, “যেসব দেশ সশস্ত্র বাহিনী পাঠাতে চায় বা পাঠাতে প্রস্তুত, তাদের অন্তত ইসরায়েলের প্রতি ন্যায্য আচরণ করা উচিত।”
মার্কিন পরিকল্পনা ও নেতানিয়াহুর অবস্থান
রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন গাজায় মার্কিন সৈন্য পাঠানোর বিষয়টি নাকচ করে দিলেও, বহুজাতিক বাহিনীতে অবদান রাখার জন্য ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, কাতার, তুরস্ক এবং আজারবাইজানের সঙ্গে কথা বলছে।
ইসরায়েলের ভেটো: গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তিনি গাজায় তুর্কি নিরাপত্তা বাহিনীর যেকোনো ভূমিকার তীব্র বিরোধিতা করবেন। তিনি বলেন, গাজায় কোন বিদেশি বাহিনীকে অনুমতি দেওয়া হবে, তা ইসরায়েল সিদ্ধান্ত নেবে।
গাজায় মানবিক পরিস্থিতি
প্রসঙ্গত, গাজা অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে যাচ্ছে, যা দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি আরও কঠিন করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু এবং তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
রাশিয়ার অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক অস্ত্র পসাইডন ইউরোপের নিরাপত্তায় নতুন হুমকি
রাশিয়া সফলভাবে 'পসাইডন' নামের একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার এই ঘোষণা দেন। গ্রিক পুরাণের সমুদ্রদেবতা পসাইডনের নামে নামকরণ করা এই অস্ত্র সমুদ্রের নিচে ভয়াবহ তেজস্ক্রিয় ঢেউ সৃষ্টি করে উপকূলীয় অঞ্চল ধ্বংস করার সক্ষমতা রাখে বলে দাবি করা হচ্ছে।
বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। পুতিনের দাবি, এ ধরনের বিধ্বংসী অস্ত্র বিশ্বের আর কোনো দেশের কাছে নেই। রুশ পার্লামেন্টের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য এই টর্পেডোকে ড্রোন ও পারমাণবিক টর্পেডোর সংমিশ্রণ বলে অভিহিত করেছেন; তার দাবি, এটি পুরো একটি রাষ্ট্রকে অচল করে দিতে সক্ষম।
পসাইডনের কথা প্রথমবার প্রকাশ্যে আসে ২০১৮ সালে; তখন বলা হয়েছিল এটি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে এবং পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম, যা একে আটকানো প্রায় অসম্ভব করে তোলে।
এর আগে ২১ অক্টোবর রাশিয়া 'বুরেভেস্তনিক' নামের পারমাণবিক চালিত নতুন এক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষারও ঘোষণা দেয়; রাশিয়ার দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের যে কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করতে পারে। ন্যাটো এই অস্ত্রটিকে 'এসএসসি-এক্স-৯ স্কাইফল' নামে চিহ্নিত করেছে। পসাইডন ও বুরেভেস্তনিক ছিল ২০১৮ সালে পুতিনের প্রকাশিত 'অজেয় অস্ত্রের' তালিকারই অংশ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার এসব ঘোষণা মূলত একটি রাজনৈতিক প্রচারণা। ব্রিটিশ রাশিয়া-বিশেষজ্ঞ মার্ক গ্যালিওটি বিবিসিকে বলেন, পসাইডন ও বুরেভেস্তনিক মূলত 'আর্মাগেডন অস্ত্র'—এগুলো ব্যবহারের অর্থ হবে পৃথিবী ধ্বংস। তিনি মনে করেন, এসব অস্ত্র 'সেকেন্ড-স্ট্রাইক' বা প্রতিশোধমূলক হামলার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
অনেকে রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ২০১৯ সালে একটি রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণে পাঁচ রুশ পারমাণবিক প্রকৌশলী নিহত হয়েছিলেন; ধারণা করা হয়, সেই বিস্ফোরণ বুরেভেস্তনিক প্রকল্পেরই অংশ ছিল। আন্তর্জাতিক কৌশল গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইএসএস জানিয়েছে, পারমাণবিক প্রোপালশন প্রযুক্তিতে রাশিয়ার এখনো বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি সংলাপ ভেস্তে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে; তারই পরপর পুতিনের এই অস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা আসে। বিশ্লেষক গ্যালিওটির মতে, পুতিনের লক্ষ্য হলো ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং নিজের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করা।
উপহার নিয়ে তোলপাড় ভারতে বাংলাদেশের 'বিকৃত' মানচিত্র প্রসঙ্গে দিল্লির জবাব
পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার বাংলাদেশ সফরকালে তাকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি উপহার নিয়ে ভারতে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারতের কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছে, ড. ইউনূস জেনারেল মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন, যাতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাংলাদেশের মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত করে 'বিকৃত মানচিত্র' ব্যবহার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে ভারতীয় সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানতে চান, কূটনৈতিক প্রোটোকলের আওতাভুক্ত এমন একটি বিকৃত মানচিত্র সংবলিত গ্রাফিতি উপহার দেওয়াকে ভারত সমর্থন করে কি না।
এই প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "আমরা জেনেছি যে, 'আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ' নামের ওই বইটি জুলাই ২০২৪ সালের ঘটনা নিয়ে বানানো, সেখানে কিছু গ্রাফিতি আছে।" তিনি ইঙ্গিত দেন, এই বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে একটি ব্যাখ্যাও চলে এসেছে।
মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর ফেসবুকের অফিশিয়াল ফ্যাক্ট চেক পেজে দেওয়া একটি বিবৃতির দিকে ইঙ্গিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং তাদের বিবৃতিতে এই দাবিকে 'সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত' বলে উল্লেখ করেছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, "প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতি চিত্রের একটি সংকলন 'দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ' বইটি উপহার দিয়েছেন পাকিস্তানের জেনারেলকে।" বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বইটিতে কোনো বিকৃত মানচিত্র নেই।
ট্রাম্পের ৭,৫০০ শরণার্থী সীমা: যুক্তরাষ্ট্রের সীমাবদ্ধ অভিবাসন নীতির পুনরাবৃত্তি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, ২০২৬ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হিসেবে প্রবেশের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৭,৫০০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এটি ১৯৮০ সালের ‘রিফিউজি অ্যাক্ট’-এর পর থেকে সর্বনিম্ন সংখ্যা। ওই আইন অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে প্রতি বছর ৫০,০০০ শরণার্থী প্রবেশের অনুমতি থাকলেও পরে তা পরিবর্তনযোগ্য। ১৯৮০ সালে দেশটির শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু হয়। উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে সর্বশেষ অনুমোদিত শরণার্থী সংখ্যা ১,২৫,০০০ জন।
ট্রাম্প প্রশাসন আরও জানিয়েছে, এই নতুন সীমার মধ্যে প্রাধান্য দেওয়া হবে শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের, যা আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
শরণার্থী হিসেবে কে প্রবেশ করতে পারবেন?
নতুন নীতি অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৭,৫০০ জন শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অনুমোদিত করা হবে। তাদের কঠোর নিরাপত্তা ও প্রমাণ যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। স্টেট সেক্রেটারি এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অনুমোদন ছাড়া কেউ দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে না। জুন ২০২৫-এ ট্রাম্প একটি প্রেসব্রিফিংয়ে ঘোষণা করেন, “যদি কোনো বিদেশী নাগরিকের প্রবেশ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে, তবে তাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।”
কেন ট্রাম্প শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রাধান্য দিচ্ছেন?
ট্রাম্পের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানরা “গণহত্যার” ঝুঁকিতে রয়েছেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ‘এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১৪২০৪’ স্বাক্ষর করেন, যা দক্ষিণ আফ্রিকার ২০২৪ সালের ‘এক্সপ্রোপিয়েশন অ্যাক্ট ১৩’ এর পরিপ্রেক্ষিতে। আইনটি আফ্রিকার ভূমি পুনর্বণ্টনকে বৈধতা দেয়, কখনও কখনও ক্ষতিপূরণ ছাড়া। ট্রাম্পের অভিযোগ, এই আইনের ফলে শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের ভূমি অবৈধভাবে সংক্ষেপ করা হচ্ছে। মে মাসে ৫৯ জন শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকান যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ শরণার্থী প্রোগ্রামের মাধ্যমে আসেন।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসা ট্রাম্পকে জানিয়েছেন যে, দেশটিতে সহিংসতা সব নাগরিকের বিরুদ্ধে ঘটছে, শুধুমাত্র শ্বেতাঙ্গদের নয়। ইতিহাসবিদ সাউল ডুবো বলেছেন, “দক্ষিণ আফ্রিকা একটি সহিংস দেশ, তবে এটি রাজনৈতিক নয়, বরং অপরাধজনিত সহিংসতা। ট্রাম্পের ‘শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা’ দাবি ভিত্তিহীন।” বিশেষজ্ঞরা আরও মন্তব্য করেছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থাকতে পারে, যেমন আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা।
যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতি ও ইতিহাস
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শরণার্থী নীতির ইতিহাসে বহুবার সীমাবদ্ধতা ও বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে।
১৭৯০: ন্যাচারালাইজেশন অ্যাক্ট, যা শুধুমাত্র মুক্ত শ্বেতাঙ্গদের নাগরিকত্বের অনুমতি দেয়।
১৮৭৫: পেজ অ্যাক্ট, মূলত এশীয় নারী শ্রমিক ও যৌনকর্মীদের লক্ষ্য করে প্রবর্তিত।
১৮৮২: চীনা এক্সক্লুশন অ্যাক্ট, চীনা শ্রমিকদের ১০ বছরের জন্য আমেরিকা প্রবেশ বন্ধ করে এবং নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করে।
১৯০৭: জেন্টলমেনস্ অ্যাগ্রিমেন্ট, জাপানি শ্রমিকদের প্রবেশ সীমিত করলেও শিক্ষার্থী কিছু অনুমতি পায়।
১৯১৭: এশিয়াটিক ব্যারড জোন অ্যাক্ট, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
১৯২৪: জনসন-রিড অ্যাক্ট, জাতীয় উৎস অনুযায়ী কোটা নির্ধারণ এবং এশীয়দের সম্পূর্ণভাবে প্রেরণ নিষিদ্ধ।
২০১৭: ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ‘মুসলিম ব্যান’, সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের প্রবেশ ৯০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় এবং শরণার্থী প্রোগ্রাম স্থগিত থাকে। ২০২১ সালে বাইডেন এটি প্রত্যাহার করেন।
২০২৫ সালে ট্রাম্প আবারও ১২টি দেশের নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে আফ্রিকার কিছু দেশও রয়েছে। এছাড়া আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। সংবাদের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প এই তালিকাকে ৩৬টি দেশ পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে পারেন, যার ২৬টি আফ্রিকান দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতির প্রভাব
নতুন সীমা ৭,৫০০ জন, যা ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এটি সংখ্যাগতভাবে ও নীতিগতভাবে বৈষম্যমূলক। ট্রাম্পের শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রাধান্য দেওয়ার নীতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফট পাওয়ার এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রযুক্তি ও আশা
আশার আলো দেখা দিয়েছে ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে মাইক্রোচিপে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করা হয়, যা জালিয়াতি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে, তবে কেবল প্রযুক্তি যথেষ্ট নয়; আন্তর্জাতিক আস্থা ও বৈধ কূটনৈতিক সম্পর্কই দীর্ঘমেয়াদে পাসপোর্টের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতি ক্রমশ কঠোর হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ শুধু সংখ্যাগতভাবে সীমিত নয়, বরং নির্দিষ্ট জাতি ও দেশের নাগরিকদের জন্য বৈষম্যমূলক। ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর এবং বৈষম্যমূলক অভিবাসন নীতি যা চীনা শ্রমিক, এশীয় নারী ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর প্রভাব ফেলেছে তার ধারাবাহিকতা ২০২৫ সালে পুনরায় স্পষ্ট হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি বহন করছে।
ফিলিস্তিনি বন্দির ওপর নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস,শীর্ষ ইসরাইলি জেনারেলের পদত্যাগ
ফিলিস্তিনের এক বন্দির ওপর ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনার জেরে পদত্যাগ করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান আইনি কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ইফাত টোমার-ইয়েরুশালমি। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) তিনি পদত্যাগ করেন এবং স্বীকার করেন যে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ওই ভিডিও প্রকাশের অনুমতি তিনিই দিয়েছিলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়।
এই ঘটনা ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিশেষ করে দেশটির ডানপন্থি রাজনীতিকরা এই তদন্তের কঠোর সমালোচনা করেন। এমনকি সেনা সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যখন তদন্তকারীরা সামরিক ঘাঁটিতে প্রবেশ করেন, তখন বিক্ষোভকারীরা দুটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন সশস্ত্র সেনা একজন বন্দিকে এক পাশে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যদিও এরপর ভেতরে কী ঘটছে, তা ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছিল না।
গত বুধবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেছিলেন, ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় ফৌজদারি তদন্ত চলছে এবং টোমার-ইয়েরুশালমিকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে টোমার-ইয়েরুশালমি বলেছেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আইনবহির্ভূত কিছু করেননি; বরং তিনি সেনাবাহিনীর আইনি বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, যুদ্ধ চলাকালে তার বিভাগটি 'ভিত্তিহীন অপপ্রচারের লক্ষ্যবস্তুতে' পরিণত হয়েছিল।
বিশ্ব পাসপোর্ট র্যাংকিংয়ে ভারতের বড় ধস
বিশ্ব পাসপোর্ট র্যাংকিংয়ে ভারতের অবস্থান আরও নিম্নমুখী হয়েছে। হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সের ২০২৫ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি হিসেবে পরিচিত দেশটি এবার নেমে গেছে ৮৫তম স্থানে, যা গত বছরের তুলনায় পাঁচ ধাপ নিচে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পতন ভারতের কূটনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দক্ষতা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক বিশ্লেষণে জানিয়েছে, বিশ্বের তুলনামূলকভাবে ছোট অর্থনীতি রুয়ান্ডা (৭৮তম), ঘানা (৭৪তম) এবং আজারবাইজান (৭২তম) পর্যন্ত ভারতের ওপরে অবস্থান করছে। অথচ ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং নিজেকে ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করছে। এ অবস্থানকে ভারতের বৈশ্বিক প্রভাবের সঙ্গে বেমানান বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যেও এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক জনপ্রিয় ট্রাভেল ইনফ্লুয়েন্সার সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের প্রতিবেশী ভুটান ও শ্রীলঙ্কা ভারতীয়দের স্বাগত জানালেও ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলো এখনো ভিসা দিতে অনীহা প্রকাশ করে।” সেই হতাশা হেনলি ইনডেক্সের র্যাংকিংয়েও প্রতিফলিত হয়েছে। বর্তমানে ভারতীয় পাসপোর্টধারীরা মাত্র ৫৭টি দেশে ভিসামুক্তভাবে ভ্রমণ করতে পারেন, যেখানে সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা ১৯৩টি, দক্ষিণ কোরিয়ার ১৯০টি এবং জাপানের ১৮৯টি দেশে প্রবেশাধিকার পান। এশিয়ার এই তিন দেশই ধারাবাহিকভাবে শীর্ষে রয়েছে।
গত এক দশক ধরেই ভারতীয় পাসপোর্টের অবস্থান ৮০-এর ঘরেই স্থবির। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় আসার সময় ভারতীয়রা ৫২টি দেশে ভিসামুক্তভাবে যেতে পারতেন এবং দেশের অবস্থান ছিল ৭৬তম। যদিও পরবর্তী বছরই তা নেমে আসে ৮৫তম স্থানে। মাঝে কিছুটা উন্নতি হলেও ২০২৫ সালে আবারও পতন ঘটেছে। ফলে ভারতের পাসপোর্ট আন্তর্জাতিকভাবে স্থবির ও দুর্বল অবস্থায় রয়ে গেছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূল কারণ কূটনৈতিক ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ঘাটতি। সাবেক রাষ্ট্রদূত আচল মালহোত্রা বলেন, “পাসপোর্টের শক্তি শুধু অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রতিফলন নয়; এটি একটি দেশের আন্তর্জাতিক আস্থা, কূটনৈতিক দক্ষতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতিচ্ছবি।” তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট একসময় শীর্ষ ১০–এ ছিল, এখন তা ১২তম স্থানে। ভারতের ক্ষেত্রেও অনুরূপ একঘরে নীতি ও সীমিত কূটনৈতিক সক্রিয়তাই পতনের কারণ।”ঐতিহাসিকভাবে ভারতীয় পাসপোর্ট একসময় অনেক শক্তিশালী ছিল। ১৯৭০-এর দশকে ভারতীয়রা পশ্চিমা বহু দেশে ভিসামুক্তভাবে ভ্রমণ করতে পারতেন। কিন্তু ১৯৮০-এর দশকে খালিস্তান আন্দোলন ও পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা ভারতের নিরাপত্তা ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পশ্চিমা দেশগুলো ভারতের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়ে। ২০২৪ সালে দিল্লি পুলিশ ভিসা ও পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে, যা আন্তর্জাতিক আস্থার ওপর আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দেখা যাচ্ছে। ভারতের ই-পাসপোর্ট প্রকল্পকে বিশেষজ্ঞরা স্বাগত জানিয়েছেন। এই পাসপোর্টে মাইক্রোচিপে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে জালিয়াতি প্রতিরোধ করা যাবে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মালহোত্রা বলেন, “ই-পাসপোর্ট প্রযুক্তি ভারতের ভিসা প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও নিরাপদ করবে, তবে কেবল প্রযুক্তিই যথেষ্ট নয়; দরকার নতুন কূটনৈতিক চুক্তি ও আস্থা পুনর্গঠন।”
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পাসপোর্ট র্যাংকিং শুধু ভ্রমণ সুবিধার সূচক নয়, বরং একটি দেশের সফট পাওয়ার ও বৈশ্বিক প্রভাবের পরিমাপ। শক্তিশালী পাসপোর্ট মানে বাড়তি ব্যবসায়িক সুযোগ, আন্তর্জাতিক শিক্ষা ও বিনিয়োগে অগ্রাধিকার; আর দুর্বল পাসপোর্ট মানে সীমিত চলাচল, জটিল ভিসা প্রক্রিয়া ও কম আস্থা। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়েও ভারত সফট পাওয়ারে পিছিয়ে পড়ছে, যা তার বৈশ্বিক অবস্থান ও নাগরিকদের আন্তর্জাতিক চলাচল—উভয় ক্ষেত্রেই বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ নেপাল শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিবর্তন কেন হলো বিশ্লেষণ করলেন ভারতের এনএসএ
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল মন্তব্য করেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে সরকার পতনের পেছনে দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো এবং শাসন ব্যবস্থার ঘাটতি অনেকাংশে দায়ী। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ এই অঞ্চলের কয়েকটি দেশে অনানুষ্ঠানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামোর প্রভাব দেখা গেছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, রাষ্ট্রীয় ঐক্য দিবসের অনুষ্ঠানে দেওয়া (৩১ অক্টোবর) বক্তব্যে অজিত দোভাল বলেন, একটি রাষ্ট্রের গঠন ও নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু রাষ্ট্রের লক্ষ্য পূরণেই সাহায্য করে না, সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্যও জরুরি।
জনসাধারণের প্রত্যাশা
দোভাল বলেন, বর্তমান প্রশাসনের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট রাখা। তিনি উল্লেখ করেন, "সাধারণ মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও বেশি প্রত্যাশা রাখে। তাই রাষ্ট্রেরও তাদের সন্তুষ্টির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।"
তিনি জোর দিয়ে বলেন, "একটি জাতির শক্তি নিহিত থাকে তার শাসন ব্যবস্থায়।" তার মতে, সরকার যখন প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কাজ করে, তখন জাতি গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সেই ব্যক্তিরা, যারা এসব প্রতিষ্ঠান তৈরি ও লালন করেন।
ভারতের শাসন মডেল ও নারীর ক্ষমতায়ন
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসন মডেলের প্রশংসা করে অজিত দোভাল বলেন, ভারত এখন এক নতুন কক্ষপথে প্রবেশ করছে—একটি নতুন ধরনের শাসনব্যবস্থা, সমাজ কাঠামো এবং বৈশ্বিক অবস্থানে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার প্রশাসনিক দুর্নীতি দমনে যে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন এনেছে, তা সমাজে গভীর প্রভাব ফেলছে এবং সামনে আরও পদক্ষেপ আসতে পারে।
ভালো শাসনের অংশ হিসেবে দোভাল নারীর সুরক্ষা, সমতা ও ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, "নারীর ক্ষমতায়ন আধুনিক শাসনব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ। শুধু ভালো আইন বা কাঠামো থাকলেই হবে না, এগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করাই সবচেয়ে জরুরি।"
প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়েও গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এমন প্রযুক্তি কাজে লাগাতে হবে যা শাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনসেবার দক্ষতা বাড়ায়। তবে একইসঙ্গে সাইবার হামলার মতো প্রযুক্তিনির্ভর হুমকি থেকেও সমাজকে রক্ষা করার বিষয়ে তিনি সতর্ক করেন।
বাংলাদেশকে নিয়ে অজিত দোভালের করা মন্তব্যে তোলপাড়
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকার পতনের পেছনে প্রধান কারণ হলো দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো ও অদক্ষ শাসনব্যবস্থা। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে জাতীয় একতা দিবস উপলক্ষে এক বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
দোভাল বলেন, “একটি জাতি গঠনে, তাকে সুরক্ষিত রাখতে, তার লক্ষ্য পূরণে এবং সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে প্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।” তিনি ব্যাখ্যা করেন, আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শাসনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো ক্রমবর্ধমানভাবে সচেতন জনগণকে সন্তুষ্ট রাখা এবং তাদের আস্থা বজায় রাখা।
তার মতে, সাধারণ নাগরিক এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রত্যাশার মাত্রাও বেড়ে গেছে। ফলে রাষ্ট্রের দায়িত্বও বেড়েছে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা প্রদান ও তাদের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে।
দক্ষিণ এশিয়ার উদাহরণ টেনে অজিত দোভাল বলেন, “বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন ও সরকার পতনের ঘটনাগুলো আমাদের সামনে একটিই শিক্ষা দেয়—দুর্বল প্রশাসন ও অদক্ষ শাসনব্যবস্থা একটি দেশের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়।” তিনি আরও বলেন, এসব দেশে কখনও কখনও অসাংবিধানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তনের ঘটনাও ঘটেছে, যা কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থার অভাবের দিকেই ইঙ্গিত করে।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে তার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে দোভাল বলেন, “একটি জাতির প্রকৃত শক্তি নিহিত থাকে তার প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যেই। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই হলো জাতি গঠনের মূল স্তম্ভ, আর যারা এই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলেন ও পরিচালনা করেন, তারাই রাষ্ট্রের প্রকৃত চালিকাশক্তি।”
তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসনব্যবস্থা মডেলের প্রশংসা করে বলেন, “ভারত আজ একটি নির্দিষ্ট ধরণের প্রশাসনিক ও সামাজিক কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে বৈশ্বিক পরিসরে নতুন অবস্থান তৈরি করছে। মোদীর নেতৃত্বে ভারত এখন এমন এক ধরণের প্রশাসনিক সংস্কৃতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যা নীতি, দিকনির্দেশনা ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধিক কার্যকর।”
পরিবর্তনের সময় নেতৃত্বের দৃঢ়তা ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপরও গুরুত্ব দেন দোভাল। তিনি বলেন, “যখন পরিবর্তন আসে, তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লক্ষ্য পরিষ্কার রাখা। ঝড়-ঝাপটা, ভয় কিংবা বিভ্রান্তির মধ্যেও যেন দৃষ্টি না হারায় সেটিই প্রকৃত নেতৃত্বের পরিচয়।”
ভালো শাসনের অন্যতম ভিত্তি হিসেবে নারীর ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেন তিনি। দোভালের মতে, “নারীর নিরাপত্তা, সমতা ও ক্ষমতায়ন আধুনিক শাসনব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। কেবল আইন বা কাঠামো প্রণয়ন করলেই হবে না, সেগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করাই আসল চ্যালেঞ্জ।”
প্রযুক্তিনির্ভর শাসনব্যবস্থার গুরুত্ব নিয়েও বক্তব্য রাখেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনসেবার দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রযুক্তির ব্যবহার এখন অপরিহার্য। তবে তিনি একইসঙ্গে সতর্ক করেন, প্রযুক্তিনির্ভর শাসন ব্যবস্থায় নতুন হুমকি যেমন সাইবার আক্রমণ বা তথ্য চুরির ঝুঁকিও তৈরি হয় যা থেকে রাষ্ট্র ও সমাজকে সুরক্ষিত রাখা জরুরি।
ট্রাম্পের দেওয়া রুপার নেকলেস নিজের কাছে রাখতে মূল্য পরিশোধ করলেন কিয়ার স্টারমার
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের ব্যক্তিগতভাবে নকশা করা একটি রুপার নেকলেস নিজের কাছে রাখার জন্য মূল্য পরিশোধ করেছেন। দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প দম্পতির দ্বিতীয় সফরের সময় স্টারমার এই উপহারটি পান এবং এটিই ছিল সেই সফর থেকে একমাত্র উপহার যা তিনি ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
ট্রাম্প দম্পতি স্টারমারকে আরও দুটি ব্যক্তিগতভাবে খোদাই করা উপহার দিয়েছিলেন—একটি গল্ফ ক্লাব এবং একটি রুপার কাফলিংক সেট। তবে এই দুটি এবং স্টারমারের স্ত্রী ভিক্টোরিয়ার জন্য দেওয়া একজোড়া কাউবয় বুট সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্যাবিনেট অফিসের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো মন্ত্রীর কাছে যদি ১৪০ পাউন্ডের বেশি মূল্যের সরকারি উপহার আসে, তবে তিনি সেটি নিজের কাছে রাখতে চাইলে উপহারের প্রকৃত মূল্যের সঙ্গে ১৪০ পাউন্ড বাদ দিয়ে বাকি অর্থ সরকারকে পরিশোধ করতে হয়। তবে নেকলেসটির মূল্য কত ছিল তা প্রকাশ করা হয়নি এবং ডাউনিং স্ট্রিটও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এই রাষ্ট্রীয় সফরে ট্রাম্প দম্পতিকে আতিথ্য দেওয়া হয় উইন্ডসর ক্যাসেলে। স্টারমার ট্রাম্পকে উপহার দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সিয়াল সিল ও পদবি-সংবলিত একটি মন্ত্রিসভার লাল বাক্স এবং মেলানিয়া ট্রাম্পকে ইউক্রেনীয় শিশুদের নকশা করা একটি রেশমের ওড়না।
যদিও রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে উপহার বিনিময় মূলত প্রতীকী, অতীতে যুক্তরাজ্য ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে এমন কিছু উপহার বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। যেমন, ২০০৯ সালে গর্ডন ব্রাউন ওয়াশিংটনে বারাক ওবামাকে দাসপ্রথা-বিরোধী জাহাজ এইচএমএস গ্যানেট-এর কাঠ দিয়ে তৈরি একটি শৈল্পিক কলমদানি উপহার দেন। কিন্তু ওবামার উপহার হিসেবে দেওয়া ২৫টি আমেরিকান ক্লাসিক চলচ্চিত্রের একটি সাধারণ ডিভিডি সেট কূটনৈতিক ভুল হিসেবে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল।
এছাড়াও, কাতারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে দেওয়া ৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭ বিমানকে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় উপহার হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। রাজনীতিতে আসার আগে নকল গয়না উপহার দেওয়ার অভিযোগও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রয়েছে। অভিনেতা চার্লি শিন দাবি করেছিলেন, ট্রাম্প একবার তার বিয়েতে যে হীরা ও প্লাটিনামের কাফলিংকস উপহার দিয়েছিলেন, তা পরে নকল প্রমাণিত হয়।
১৯৯২ সালের পর নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের নির্দেশনায় বাড়ল বৈশ্বিক পারমাণবিক ঝুঁকি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৯২ সালের পর প্রথমবারের মতো দেশের প্রতিরক্ষা দপ্তরকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাশিয়া ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে 'সমান তালে' চলার লক্ষ্যেই তিনি এই নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানাচ্ছে বিবিসি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, "অন্য দেশগুলোর পরীক্ষামূলক কর্মসূচির কারণে আমি প্রতিরক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাও সমানভাবে শুরু করতে।"
পারমাণবিক অস্ত্রের ভারসাম্য
ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড়। তার মতে, রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন 'অনেক পিছিয়ে' তৃতীয় স্থানে আছে। যদিও স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)-এর তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার কাছেই সবচেয়ে বেশি (৫,৪৫৯টি) পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, এরপর যুক্তরাষ্ট্র (৫,১৭৭টি) এবং চীন (৬০০টি)।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার এই সিদ্ধান্তকে 'অনিবার্য' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, এই অস্ত্রের 'অপরিসীম ধ্বংসক্ষমতা' রয়েছে, তবুও অস্ত্রভান্ডার 'হালনাগাদ ও আধুনিকায়ন' করা ছাড়া তার হাতে 'কোনো বিকল্প ছিল না'। উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের প্রেক্ষাপটে ১৯৯২ সালে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন।
অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও ঝুঁকি
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই ঘোষণা বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতাকে আরও উসকে দেবে এবং বিশ্বকে ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক হুমকির মুখে ফেলবে। কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর ফেলো জেমি ওয়াং উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীন এমন একটি পর্যায়ে প্রবেশ করছে, যা একটি সম্ভাব্য অস্ত্র প্রতিযোগিতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
লন্ডন-ভিত্তিক থিংক ট্যাংক 'রুসি'-এর সিনিয়র ফেলো দারিয়া দোলঝিকোভা অবশ্য মনে করেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণা বিশাল এক ঝুঁকির 'বালতির মধ্যে এক ফোঁটা জলের মতো'। তার মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ভারত-পাকিস্তান, ইরান-ইসরায়েলের মতো অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে এমনিতেই পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে গেছে।
রাশিয়ার পদক্ষেপ ও চীনের প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার পক্ষ থেকে সম্প্রতি নতুন পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা চালানো হয়, যা মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম বলে দাবি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপই ট্রাম্পের ঘোষণার মূল কারণ।
এদিকে, মার্কিন ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় চীন আশা করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তির অধীনে তার বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে এবং পরীক্ষা স্থগিত রাখার প্রতিশ্রুতি মেনে চলবে।
ঐতিহাসিক ভুল এবং রাজনৈতিক বার্তা
ওয়াশিংটনের আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যারিল ক্যাম্পবেল ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে 'আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার দিক থেকে একটি ঐতিহাসিক ভুল' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই পদক্ষেপ চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি বিপজ্জনক ত্রি-পক্ষীয় অস্ত্র প্রতিযোগিতার সূচনা করতে পারে।
অনেকের মতে, যদিও পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার কোনো বাস্তবসম্মত বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই (কারণ যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে), তবে 'দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশন'-এর গবেষক রবার্ট পিটার্স বলেছেন, এর 'প্রাথমিক কারণ হলো প্রতিপক্ষকে একটি রাজনৈতিক বার্তা পাঠানো'। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শক্তি প্রদর্শনের জন্য একজন প্রেসিডেন্টের কখনও কখনও পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা করা প্রয়োজন হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল নেভাডা অঙ্গরাজ্যে ভূগর্ভে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই স্থানটিকে পুনরায় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করতে কমপক্ষে ৩৬ মাস সময় লাগবে।
পাঠকের মতামত:
- ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
- হাশরের ময়দান: যে অপরাধের জন্য পশু-পাখিরও বিচার হবে
- ০২ নভেম্বর: ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- হঠাৎ যমুনায় তিন বাহিনী প্রধানের আগমন নির্বাচনের নিরাপত্তা নিয়ে যা জানা গেল
- ওষুধ ছাড়াই হাতের ব্যথা সারান সহজ এই ব্যায়ামটি ঘরে বসেই করতে পারবেন
- রাশিয়ার অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক অস্ত্র পসাইডন ইউরোপের নিরাপত্তায় নতুন হুমকি
- সহজ কিছু টিপস মানলেই আমেরিকা ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে
- রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করা হচ্ছে কড়া সমালোচনা সালাহউদ্দিন আহমদের
- যুবদল নেতার চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই গণভোট সম্ভব: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
- সোনার বাংলাদেশ নয় এবার 'খেলাফতের বাংলাদেশ' দেখতে চান মাওলানা মামুনুল হক
- নির্বাচন কমিশন কেকের মতো ভাগাভাগি হয়ে গেছে: হাসনাত
- আয়ারল্যান্ড সিরিজ দিয়ে শান্তর নতুন চক্রের সূচনা তিন অধিনায়কের যুগ বহাল
- ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর: ইসি আনোয়ারুল
- ১৪ বছরের প্রতীক্ষা শেষে খুলনায় আধুনিক কারাগার চালু ফুল দিয়ে বরণ করা হলো কয়েদিদের
- ধাপে ধাপে জানুন বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের প্রক্রিয়া
- উপহার নিয়ে তোলপাড় ভারতে বাংলাদেশের 'বিকৃত' মানচিত্র প্রসঙ্গে দিল্লির জবাব
- কঠিন ব্যাকরণ নয় শিশুদের মতো করে ইংরেজি শেখার সহজ কৌশল শিখে নিন
- বিচার বিলম্বিত করার নতুন কৌশল নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার মামলার রায় অনিশ্চিত
- ট্রাম্পের ৭,৫০০ শরণার্থী সীমা: যুক্তরাষ্ট্রের সীমাবদ্ধ অভিবাসন নীতির পুনরাবৃত্তি
- অভিনয় ছেড়ে শরীর নিয়েই বেশি চর্চা হয় কেন সিডনি সুইনি মুখ খুললেন নগ্ন দৃশ্য বিতর্কে
- তীব্র আর্থিক সংকটে অন্তর্বর্তী সরকার
- ফিলিস্তিনি বন্দির ওপর নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস,শীর্ষ ইসরাইলি জেনারেলের পদত্যাগ
- বিশ্ব পাসপোর্ট র্যাংকিংয়ে ভারতের বড় ধস
- ওষুধ নয় প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালার্জি কমাবে রান্নাঘরের ৭ সুপারফুড
- নির্বাচনের আগে গণভোট চায় না যারা তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়: জামায়াত নেতা
- ভারত কি পরামর্শ দেবে আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করতে যা জানা গেল দিল্লিতে
- চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আবারও পর্দায় পূজা চেরি
- নিম্ন-আয়ের মানুষের দুর্ভোগ গরিবের বরাদ্দ চাল নিয়ে 'চালবাজি' থামছে না
- বাংলাদেশ নেপাল শ্রীলঙ্কায় সরকার পরিবর্তন কেন হলো বিশ্লেষণ করলেন ভারতের এনএসএ
- বাংলাদেশকে নিয়ে অজিত দোভালের করা মন্তব্যে তোলপাড়
- ট্রাম্পের দেওয়া রুপার নেকলেস নিজের কাছে রাখতে মূল্য পরিশোধ করলেন কিয়ার স্টারমার
- অস্কার আলোচনায় সিডনি সুইনি: পর্দায় প্রতিভা, রেড কার্পেটে রূপের জাদু
- আপনার এনআইডিতে কয়টি সিম নিবন্ধিত জেনে নিন এখনই বন্ধ হতে পারে অতিরিক্ত সিম
- দীর্ঘমেয়াদি কাশি হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সার জেনে নিন সতর্কতার সংকেত
- ওষুধ ছাড়াই সুস্থ জীবন আদা ব্যবহারের ৪০টি জাদু টিপস যা আপনার জীবন বদলে দেবে
- ভিডিও ডাউনলোডের ঝামেলা শেষ কম ডেটায় দ্রুত কাজ করবে এই অ্যাপগুলো
- ১৯৯২ সালের পর নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের নির্দেশনায় বাড়ল বৈশ্বিক পারমাণবিক ঝুঁকি
- মুরের জাদুতে শীর্ষ দলকে হারাল ওরেক্সহাম
- আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ার পথ দেখালেন ড. ইউনূস
- পাকিস্তান আমলের সঙ্গে তুলনায় দুর্নীতি এখন সমাজের অনুষঙ্গ: জামায়াত আমির
- সুদানের আকাশে রক্তের চিহ্ন স্যাটেলাইট চিত্রেও দেখা যাচ্ছে মর্মান্তিক দৃশ্য
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের বড় উদ্যোগ আলোচনায় দুই প্রধান দল
- একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার
- ফখরুলের অভিযোগ: অন্তর্বর্তী সরকার আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে
- শেষ হলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ
- অনন্য মামুনের পোস্টে ঢালিউডে তামান্না ভাটিয়ার সম্ভাব্য আগমন
- নিজ দেশে ইসরায়েলিদের বিক্ষোভ
- ডা. জাকির নায়েক ঢাকায় আসছেন, ভারতের দাবি হস্তান্তরের
- রক্তদান শুধু মানবসেবা নয়, এটি এক মহৎ ইবাদত
- জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিয়ে ড. গালিবের সতর্কবার্তা
- রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে
- IFIC ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- পূবালী ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- ইতিহাসের পাতায় আজ: ৩০ অক্টোবর - বিজয়, বিপ্লব আর বেদনার দিন
- ২৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ২৯ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ প্রভাবে ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস
- আজকের বাজারের সেরা এবং খারাপ পারফরমার: লাভের সম্ভাবনা কোথায়?
- রাসুল (সা.) কেন অন্যের পাপকাজ প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন?
- রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- ২৮ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় বাবা হারানো: দুই শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে স্ত্রীর আকুল আবেদন
- ২৭ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- GSP ফাইন্যান্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- ফখরুলের অভিযোগ: অন্তর্বর্তী সরকার আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে








