এ সপ্তাহেই অনেক ঘটনা ঘটবে: গুম মামলা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের ইঙ্গিত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটবে। সোমবার (৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই ইঙ্গিত দেন।
গুম মামলার তদন্ত প্রতিবেদন
তাজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আলোচিত গুমের কয়েকটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দাখিল করা হবে। বিচারে দেরি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তদন্তের জন্য যে সময় প্রয়োজন ছিল, তা শেষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন:
“এখন একের পর এক মামলার ফরমাল চার্জ দাখিল করা হচ্ছে। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং অনেক মামলা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তাই জনগণের প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যেই এই মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
ওবায়দুল কাদের ও শেখ হাসিনার মামলা
ওবায়দুল কাদেরের মামলা প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সব মামলা একসঙ্গে হবে না। ধাপে ধাপে সব মামলা এগোচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “কেউ দায় এড়িয়ে যাবেন—এমন আশা করা বৃথা। ন্যায়বিচার তার নিজস্ব গতিতে চলবে।”
শেখ হাসিনা এ মামলার প্রধান আসামি কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বাকিটা খুব শিগগিরই দেখতে পাবেন।”
জুলাই আন্দোলন দমনে পুলিশ সারাদেশে ৩ লাখের বেশি গুলি ছুড়েছিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে তৎকালীন পুলিশ সারাদেশে ৩ লাখ ৫ হাজার ১১ রাউন্ড গুলি ছুড়েছিল। এর মধ্যে শুধু রাজধানী ঢাকা শহরেই ব্যবহার করা হয়েছিল ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড গুলি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সর্বশেষ সাক্ষী, তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর, সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানান।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের দ্বিতীয় দিনের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে শুনানি মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত প্যানেলে এই জবানবন্দি দেওয়া হয়।
ব্যবহৃত মারণাস্ত্র ও নির্দেশনার অভিযোগ
তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, তার তদন্তকালে তিনি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার ওপর ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি সংক্রান্ত ২২৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন পান। এতে দেখা যায়, এলএনজি, চাইনিজ রাইফেল, শর্টগান, রিভলবার ও পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল।
আলমগীর জানান, তিনি ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা ও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও পেয়েছেন। এছাড়া র্যাব সদর দপ্তর থেকে হেলিকপ্টার ব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিবেদন পান গত ১৪ জানুয়ারি।
তদন্ত কর্মকর্তা জবানবন্দিতে অভিযোগ করেন, পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গত বছরের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে আন্দোলন দমনে শান্তিপূর্ণ ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক মাত্রায় প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন।
সাকিবের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেনকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর আগে সাকিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তথ্য পেতে দুদক বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছিল।
মামলার তদন্তে যুক্ত হচ্ছে নতুন অভিযোগ
চলতি বছরের জুনে শেয়ারবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করার অপরাধে সাকিব আল হাসানসহ মোট ১৫ জনের নামে মামলা করে দুদক। সেই মামলায় শেয়ারবাজার থেকে ২৫৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
এবার নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের মাধ্যমে সেই মামলার তদন্তের সঙ্গে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।
কারাগারে মহিলা লীগ নেত্রী লিমাসহ ১০
রাজধানীর পৃথক তিন থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আমতলী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুসরাত জাহান লিমাসহ ১০ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয়
আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আনিসুর রহমান, পাথরঘাটা উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. রিপন, আওয়ামী লীগ নেতা মো. নেছার আলী, ছাত্রলীগ নেতা কাজী আইনুল ইসলাম আশিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ এস এম আল সনেট, মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. আরশেদ আলী বিশ্বাস, রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অবিমন্যু বিশ্বাস অভি, আমিনুল হক ফয়সাল ও মো. বেলাল হোসেন তুহিন।
কোন মামলায় গ্রেপ্তার
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বনানী থানার এক মামলায় চারজন, ধানমণ্ডি থানার এক মামলায় দুজন এবং শাহজাহানপুর থানার এক মামলায় চারজনকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগ
মামলার সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজধানীর ধানমণ্ডি, শাহজাহানপুর ও বনানী থানাধীন এলাকায় মিছিল করেন। তারা একত্রিত হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তথা রাষ্ট্রের ক্ষতি সাধন করে অপপ্রচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্লোগান দেয় ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে অপরাধ করে। এসব ঘটনায় গত ১ সেপ্টেম্বর ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক মো. আকিব নূর, গত ১৯ মে শাহজাহানপুর থানায় এবং গত ২ সেপ্টেম্বর বনানী থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ, নাহিদ ইসলামের জেরা অব্যাহত ট্রাইব্যুনালে
জুলাই–আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম রাষ্ট্রপক্ষের ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়ার পর বর্তমানে আসামিপক্ষের জেরার মুখোমুখি আছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জেরা কার্যক্রম রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে দুপুর আড়াইটায় পুনরায় কার্যক্রম শুরু হয়। বিকেল চারটা পর্যন্ত তাকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োজিত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তবে জেরা শেষ না হওয়ায় তা পরবর্তী তারিখে মুলতবি করা হয়।
সেদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম। উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর সহিদুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও মামুনুর রশীদসহ অন্যান্যরা। এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নাহিদ ইসলাম জবানবন্দি দেন, যার অবশিষ্ট অংশ বৃহস্পতিবার শেষ করা হয়।
একই মামলায় বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। এখন পর্যন্ত মোট ৪৭ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে হাজির করা হয় মামলার অন্যতম আসামি থেকে রাজসাক্ষীতে পরিণত হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে। তিনি এর আগে ২ সেপ্টেম্বর ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন এবং ৪ সেপ্টেম্বর তা শেষ করেন। তার সাক্ষ্যে উঠে আসে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে দেশজুড়ে ব্যাপক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এ জন্য তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চান এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অন্যান্য সাক্ষীরাও একই সময়ে আন্দোলনের মধ্যে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ বর্ণনা আদালতে উপস্থাপন করেছেন। শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা স্পষ্টভাবে দাবি করেছেন, এসব অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। এরপর ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রটি প্রায় আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দকৃত প্রমাণাদি ও দলিল চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদ পরিবারের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠায় সন্নিবেশিত। রাষ্ট্রপক্ষের তালিকাভুক্ত সাক্ষীর সংখ্যা ৮১ জন।
এর আগে, চলতি বছরের ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর মামলার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় এবং বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে।
শেখ হাসিনাসহ ৩৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
রাজধানীর ভাটারায় মো. জাহাঙ্গীর হত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ৩৯ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের ভিত্তিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আদালত পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন—এমন আশঙ্কায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ভাটারা থানার উপপরিদর্শক নাজমুল আমিন আদালতে আবেদন করেন। আদালত গত ২ জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার এজলাসে আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু শীর্ষ নেতা ও সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন, কে এম নুরুল হুদা ও হাবিবুল আওয়াল। এছাড়া আওয়ামী মহিলা লীগের সদস্য নুজহাত সারওয়াত তমা, মিরপুর যুবলীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম, শেরেবাংলা নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বশির আহমেদসহ আরও অনেকে আছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালের ২১ জুলাই ভাটারা থানার অন্তর্গত এলাকায় নিহত জাহাঙ্গীর আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করেন। আওয়ামী লীগের আর্থিক জোগানদাতাদের সহযোগিতায় তারা অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং লাঠিসোটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করতে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
এই হামলায় গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীর এবং পরে তার মৃত্যু ঘটে। ঘটনার পর ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভাটারা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে এবং আদালতের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্ত মামলার আইনি প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
-রফিক
আদালত চত্বরে ব্যারিস্টার সুমনের বারবার উচ্চারণ: ‘ভালো থাকুক বাংলাদেশ’
জুলাই আন্দোলনের শেষ দিনে যাত্রাবাড়ীতে শ্রমিক মো. রিয়াজ নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার শুনানি বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ সাতজন আসামিকে কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে তাদের আদালতের হাজতখানায় রাখা হয় এবং পরে এজলাসে তোলা হয়। আসামিদের সবার হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট ও শরীরে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ছিল। শুনানি শেষে সকাল সোয়া ১০টার দিকে তাদের পুনরায় হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার সময় ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “দেশের যে পরিস্থিতি, ভালো থাকুক বাংলাদেশ।” তিনি বারবার একই বক্তব্য পুনরাবৃত্তি করেন। এসময় মামলার অন্য আসামিরা নীরবে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এবং সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু।
শুনানির সময় ভিন্ন একটি ঘটনা ঘটে। সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমুর আইনজীবী মহসিন রেজা আদালতের কাছে আবেদন করেন, যাতে তার মক্কেলকে বিশেষ খাবার (স্যান্ডউইচ ও ড্রাই ফুড) সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হয়। তিনি যুক্তি দেন যে, আমির হোসেন আমু প্রবীণ এবং নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, এজন্য তাকে নির্দিষ্ট বিরতিতে খাবার খেতে হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী এ আবেদনের বিরোধিতা করেন এবং শেষ পর্যন্ত আদালত বিশেষ খাবার দেওয়ার আবেদন নাকচ করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, মামলার অভিযোগে বলা হয় যে ৫ আগস্ট জুলাই আন্দোলনের শেষ দিনে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শ্রমিক মো. রিয়াজ। এই ঘটনার পর যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাকে আসামি করা হয়।
-রফিক
বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা: আইনি প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক কৌশল

শেখ তাইজুল ইসলাম
আইনজীবী, সুপ্রীম কোর্ট অব বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত শত্রুতা, সম্পত্তি বিরোধ, পারিবারিক কলহ কিংবা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে প্রায়ই নিরপরাধ মানুষ মিথ্যা মামলার শিকার হন। মিথ্যা মামলা শুধু অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করে না, বরং মানসিক চাপ, আর্থিক ক্ষতি এবং দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় ভোগান্তির কারণ হয়। তবে আইন মিথ্যা মামলার শিকারদের জন্য প্রতিরক্ষা ও পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রেখেছে। এজন্য প্রয়োজন সচেতনতা, ধৈর্য এবং সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া।
প্রাথমিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
১. সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করুন:যদি আশঙ্কা থাকে যে আপনার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হতে পারে, তাহলে থানায় জিডি করুন। এটি ভবিষ্যতে প্রমাণ করবে যে আপনি আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেছিলেন।
২. প্রমাণ সংরক্ষণ করুন:যে কোনো ঘটনা বা সম্পর্কিত বিষয়ে চ্যাট, ফোন কল রেকর্ড, ভিডিও ফুটেজ, লেনদেনের কাগজপত্র সংরক্ষণ করুন। এগুলো ভবিষ্যতে আপনার নির্দোষিতা প্রমাণ করতে সহায়ক হবে।
৩. বিশ্বাসযোগ্য আইনজীবীর পরামর্শ নিন:প্রাথমিক পর্যায়েই একজন দক্ষ আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করুন। এতে আপনার প্রতিরক্ষা কৌশল আগে থেকেই পরিকল্পিত হবে।
মিথ্যা মামলা হলে তাৎক্ষণিক করণীয়
১. জামিনের ব্যবস্থা করুন: মামলার ধরণ অনুযায়ী দ্রুত জামিনের আবেদন করুন। এতে অপ্রয়োজনীয় হয়রানি ও কারাবাস এড়ানো সম্ভব।
২. আইনি কৌশল নির্ধারণ করুন: অভিযোগকারীর অভিযোগ খণ্ডন করার মতো সব তথ্য, কাগজপত্র ও সাক্ষ্য সংগ্রহ করুন। আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে প্রতিটি অভিযোগের যৌক্তিক জবাব দিন।
৩. মানসিক দৃঢ়তা বজায় রাখুন:মিথ্যা মামলা মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়ার জন্য করা হয়। তাই ভয় না পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
বিশেষ উদাহরণ: যৌতুকের মিথ্যা মামলা
বাংলাদেশে প্রায়ই দেখা যায়, যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮-এর অধীনে মিথ্যা মামলা দায়ের হয়। এ ক্ষেত্রে—আসামি যদি সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হন, তবে তিনি খালাস পাবেন। খালাস পাওয়ার পর অভিযুক্ত চাইলে যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮-এর ৬ ধারা অনুযায়ী অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করতে পারেন। এ ধারায় দোষী প্রমাণিত হলে অভিযোগকারীকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০,০০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
পাল্টা আইনি ব্যবস্থা
১. মানহানি মামলা: অভিযোগকারীর মিথ্যা অভিযোগে আপনার সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হলে মানহানির মামলা করা যায়।২. ক্ষতিপূরণ দাবি: দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় আপনার আর্থিক ক্ষতি হলে সিভিল কোর্টে ক্ষতিপূরণ দাবি করা সম্ভব।৩. দণ্ডবিধির আওতায় ব্যবস্থা: বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ২১১ ধারা অনুযায়ী, কেউ যদি জেনে শুনে মিথ্যা অপরাধমূলক অভিযোগ করে, তবে তারও শাস্তি হতে পারে।
প্র্যাকটিক্যাল গাইডলাইন চেকলিস্ট (Step-by-Step করণীয়)
১. মামলা হওয়ার আশঙ্কা থাকলে (প্রতিরোধমূলক ধাপ):
- থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করুন।
- ঘটনার সাথে সম্পর্কিত কাগজপত্র, অডিও-ভিডিও, চ্যাট লগ সংরক্ষণ করুন।
- একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
২. মামলা হলে (প্রথম পদক্ষেপ):
- ভীত না হয়ে আইনজীবীর পরামর্শ নিন।
- দ্রুত জামিনের জন্য আবেদন করুন।
- পুলিশের কাছে সহযোগিতা করুন, তবে ভীতি বা চাপে স্বীকারোক্তি দেবেন না।
৩. মামলার বিচার চলাকালীন:
- সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করুন।
- প্রত্যেক শুনানিতে আইনজীবীর মাধ্যমে শক্ত প্রতিরক্ষা দিন।
- আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন, কিন্তু আপনার অধিকার নিয়ে সচেতন থাকুন।
৪. খালাস পাওয়ার পর:
- অভিযোগকারী/বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করতে পারেন (যেমন: যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮-এর ৬ ধারা বা দণ্ডবিধির ২১১ ধারা)।
- মানহানি মামলা বা ক্ষতিপূরণের দাবি করতে পারেন।
৫. দীর্ঘমেয়াদে:
- ভবিষ্যতে এ ধরনের হয়রানি থেকে বাঁচতে সবসময় আইনগত দলিল, লেনদেনের রেকর্ড ও যোগাযোগের প্রমাণ সংরক্ষণ করুন।
- ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিরোধে লিখিত সমঝোতা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
মিথ্যা মামলা বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আইন সচেতনতা, প্রস্তুতি, দক্ষ আইনজীবীর পরামর্শ ও সঠিক সময়ে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে একজন নির্দোষ ব্যক্তি শুধু নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন না, বরং অভিযোগকারীকে শাস্তিও দিতে পারবেন। মনে রাখতে হবে, মিথ্যা মামলা মোকাবিলায় আতঙ্ক নয়, বরং জ্ঞান, প্রস্তুতি ও দৃঢ়তা—এই তিনটিই সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক ও বাবরের খালাসের রায় বহাল
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপি নেতা তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সকল আসামির খালাসের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনটি খারিজ করে এই রায় দেন।
এর আগে গত ১ জুন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সকল আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। দীর্ঘদিন ধরে আপিলের শুনানি শেষে আজ চূড়ান্ত আদেশ দেন আদালত।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায়ের নথি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পাঠানো হয়।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে তারেক রহমান ও বাবরসহ সকল আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্ট সে সময় রায়ে মন্তব্য করেন যে, মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া আইনসম্মত ছিল না এবং চার্জশিটও আইনত গ্রহণযোগ্য ছিল না।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। এই হামলায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ দলের শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন, যাদের অনেকেই এখনো গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
/আশিক
মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সম্পত্তি ভাগাভাগির নিয়ম
বাংলাদেশসহ মুসলিম প্রধান সমাজে জমি কিংবা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন বা ফরায়েজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আইন মূলত কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুসারে প্রণীত, যেখানে প্রত্যেক ওয়ারিশের প্রাপ্য অংশ সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত থাকে।
পুত্র ও কন্যার অংশ
মৃত ব্যক্তির পুত্র ও কন্যা উভয়েই উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির অধিকারী হন। তবে ইসলামী উত্তরাধিকার ব্যবস্থায় সাধারণত পুত্র সন্তান কন্যার দ্বিগুণ অংশ প্রাপ্ত হন। এই নিয়মের মাধ্যমে পরিবারে আর্থিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বণ্টনের বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়েছে।
দাদা-দাদী ও নানী-নানীর অংশ
যদি মৃত ব্যক্তির পিতা-মাতা জীবিত না থাকেন, তবে দাদা, দাদী কিংবা নানীও উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির অংশীদার হওয়ার সুযোগ পান। তবে এ ক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্য অংশ নির্ভর করে অন্য ওয়ারিশদের উপস্থিতি ও প্রাপ্য অংশের ওপর।
মায়ের সম্পত্তির বণ্টন
মৃত মায়ের সম্পত্তি ভাগ করার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। যদি মা জীবিত না থাকেন, তবে তাঁর সন্তানরা সমানভাবে উত্তরাধিকার হবেন। এখানে ছেলেমেয়ের অনুপাতে দ্বিগুণ-অর্ধেকের নীতি কার্যকর হয়। অর্থাৎ, ছেলে সন্তান কন্যার তুলনায় দ্বিগুণ অংশের দাবিদার হন।
ওয়ারিশ সনদের প্রয়োজনীয়তা
ব্যবহারিক বাস্তবতায় সম্পত্তি ভাগাভাগি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরি। ওয়ারিশ সনদে নির্ধারিত হয় কে কে বৈধ উত্তরাধিকারী এবং কার কত অংশ পাওনা। এই সনদ ছাড়া সরকারি বা আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পত্তি হস্তান্তর বা নামজারি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না।
আইনি প্রক্রিয়া ও মামলা
যদি উত্তরাধিকার বণ্টন নিয়ে কোনো মতবিরোধ বা জটিলতা দেখা দেয়, তবে সংশ্লিষ্ট আদালতে "বণ্টন মামলা" বা ব্যাটওয়ারা মামলা দায়ের করতে হয়। আদালতের রায় অনুযায়ী সম্পত্তির অংশীদারদের মধ্যে যথাযথভাবে জমি বা সম্পত্তি ভাগ করা হয়।
প্রযোজ্য আইন
বাংলাদেশে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন ১৯৬১ একটি প্রধান রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই আইনে উত্তরাধিকার বণ্টনের বিস্তারিত কাঠামো বর্ণিত আছে। তবে কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা জটিলতার ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া সবসময়ই যুক্তিসঙ্গত।
পাঠকের মতামত:
- এ সপ্তাহেই অনেক ঘটনা ঘটবে: গুম মামলা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের ইঙ্গিত
- চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী
- আদালতে দণ্ড থেকে রাষ্ট্রপ্রধান: তিন রাষ্ট্রের সাক্ষী ড. ইউনূসের অবিশ্বাস্য জীবনগাঁথা
- ডিএসইতে সোমবারের লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ২ বছর: মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ চিত্র
- আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুন
- হংকং ম্যাচের আগে দেশে পৌঁছে যা বললেন হামজা
- নির্বাচনী আয়োজনে নতুন পদক্ষেপ, ভোটারদের বিশেষ অধিকার ফিরিয়ে দিচ্ছে ইসি
- আওয়ামী লীগের বিচার: ‘এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় বিচারক আমি মনে করি জনগণ’
- বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রত্যাশা কী, জানালেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
- চ্যাম্পিয়নের দুর্দিন: সেভিয়ার মাঠে ৪–১ গোলে হার বার্সেলোনার
- যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র চুক্তি: এক বছরের জন্য নবায়নের প্রস্তাবে ট্রাম্পের সম্মতি
- “যুদ্ধ চলতে পারে না আলোচনার সময়”— যুক্তরাষ্ট্রের সতর্ক বার্তা ইসরায়েলকে
- আঞ্চলিক সহযোগিতায় নতুন দিগন্তে বাংলাদেশ–মালদ্বীপ সম্পর্ক
- বিসিবি নির্বাচন আজ: নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহে নিরবচ্ছিন্ন পদযাত্রা আমিনুল-বাহিনীর
- তারেক রহমানের ঘোষণা: “জনগণের নির্বাচনে আমি থাকব জনগণের মধ্যেই”
- নতুন পে স্কেলে বেতন কত বাড়তে পারে, জানাল কমিশন
- ৬ অক্টোবর, ২০২৫ (সোমবার) ঢাকা ও অন্যান্য বিভাগের নামাজের সময়সূচি
- ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করে দ্বিতীয় দিনেও গাজায় হামলা অব্যাহত
- আধুনিক বিজ্ঞান ও কোরআনের আলোকে জিন: রহস্যময় অস্তিত্বের এক নতুন দিগন্ত!
- ‘শাপলা’ প্রতীক না দেওয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে সারজিস আলমের হুঁশিয়ারি
- প্রবাসী আয়ে বড় চমক: সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্স নিয়ে এল সুখবর
- ঐকমত্য থাকলেও সংকট: বিএনপি-জামায়াতের দ্বন্দ্ব সনদ বাস্তবায়নে বাধা?
- সূর্যও যেখানে বামন: মহাবিশ্বের দানব নক্ষত্রদের সামনে আমাদের অস্তিত্ব কতটুকু?
- থাইরয়েডের সঙ্গে হতাশা: মানসিক স্বাস্থ্যের এই গোপন সংযোগটি জানুন
- মুক্তা থেকে রিয়েল এস্টেট: যেভাবে ৫০ বছরে মরুভূমিকে সম্পদে পরিণত করলো দুবাই
- সংসদ নির্বাচনের দিনই জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট হতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
- ডেঙ্গু পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করল, একদিনের চিত্রে উদ্বেগ
- সভ্যতার সঙ্গমস্থল আফগানিস্তান: ইতিহাস, সংগ্রাম ও পুনর্জাগরণের এক দীর্ঘ যাত্রা
- রবার্ট ওপেনহাইমার: যে বিজ্ঞানীর হাতে তৈরি হয়েছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বোমা!
- ব্রণ চেপে ফাটানো: হতে পারে যে ভয়াবহ রোগ, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা
- ‘পশুর মতো আচরণ’: ইসরায়েলে গ্রেটা থুনবার্গসহ কর্মীদের ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ
- আগামী ২৪ ঘণ্টায় ৩ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির শঙ্কা
- মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে উত্তাল তেল আবিব: জিম্মি মুক্তির দাবিতে হাজারো ইসরায়েলি, পাশে ট্রাম্প
- কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
- আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য, আজ রাতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
- বিটকয়েন ইতিহাসে: মূল্য বাড়ার নতুন রেকর্ড গড়ল ক্রিপ্টোকারেন্সি
- সপ্তাহের প্রথম দিনে বাজারে প্রাণ ফিরছে ডিএসইতে
- ডিএসইতে রবিবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে রবিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ‘জীবন্ত’ কম্পিউটার তৈরির পথে বিজ্ঞানীরা, ডেটা সেন্টারে আসছে নতুন বিপ্লব
- ত্বককে বিষমুক্ত রাখতে চান? জেনে নিন ৫টি সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি
- একটানা চিয়া সিড খাচ্ছেন?অতিরিক্ত খেলে যে ৪টি স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনতে পারে
- লিওনার্দো দা ভিঞ্চি – এক কিংবদন্তি যিনি ৫০০ বছর আগেই ভবিষ্যতের পথ এঁকে রেখেছিলেন!
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর: নতুন বেতন কাঠামোয় বেতন বাড়ছে দ্বিগুণ
- ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে: পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর তীব্র হুমকি
- কোথায় আটকানো হবে, বলা কঠিন—শহিদুল আলম
- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: ‘ফ্যাসিবাদী চক্রের সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা হয়েছে’
- বার্লিন সম্মেলন ১৮৮৪–৮৫: আফ্রিকা বিভাজনের রাজনীতি, অর্থনীতি ও উত্তরাধিকার
- রসুনের গোপন শক্তি: এক কোয়া কি সত্যিই শরীরকে বদলে দিতে পারে?
- সর্ব রোগের ঔষধ কালিজিরা’র আদ্যপ্রান্ত: ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, ব্যবহার ও সতর্কতা
- ম্যালেরিয়া: কারণ, লক্ষণ, ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
- স্মার্টফোন থেকে ডিলিট হওয়া ছবি ফিরে পাওয়ার ৩টি সহজ উপায়
- মেথি কি সত্যিই ‘সুপারফুড’? বিজ্ঞান, উপকার, ঝুঁকি ও খাওয়ার সেরা সময়
- ডিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- শ্বাসরুদ্ধকর জয়: শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় আফগানিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- যে সাগরে কেউ ডুবে না, কেন সেখানে লুকিয়ে আছে এক অভিশপ্ত ইতিহাস?
- ল্যাপটপে পানি পড়লে কী করবেন? যে ৭টি কাজ ভুলেও করা উচিত নয়
- ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা: কাঁটাযুক্ত পাতার ভেতর লুকানো আরোগ্যের জেল
- টিসিবির তালিকায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৫ পণ্য