বিমান ভ্রমণে অসুস্থতার ঝুঁকি এড়াতে করণীয়: চিকিৎসকদের কার্যকর পরামর্শ

সত্য নিউজ: গ্রীষ্মকাল এলেই বেড়ে যায় ভ্রমণের উচ্ছ্বাস। তবে এর সঙ্গে বাড়ে কিছু অদৃশ্য স্বাস্থ্যঝুঁকি, বিশেষ করে যারা বিমানে যাতায়াত করেন তাদের জন্য। যাত্রীদের ঘনত্ব, পুনঃচক্রিত বাতাস এবং স্পর্শকাতর স্থানসমূহ সংক্রমণ ছড়ানোর অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। তবে চিকিৎসকদের মতে, কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই এসব ঝুঁকি অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব।

ভ্রমণের আগে: প্রস্তুতি থেকেই শুরু স্বাস্থ্যসচেতনতা

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়েলনাও আর্জেন্ট কেয়ার’-এর প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. রবার্ট বিয়ার্নবাম বলেন, “ভ্রমণের সময় সুস্থ থাকতে হলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা আগেভাগেই বাড়ানো প্রয়োজন।” এই প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত পানি পান। ডা. কার্লা রবিনসন, ‘গুডআরএক্স’-এর চিকিৎসক, এ ব্যাপারে যোগ করেন, “ভ্রমণের কদিন আগ থেকেই পানির পরিমাণ বাড়ান। হঠাৎ একদিন বেশি পানি পান করলেই চলবে না।”

সিট বাছাইয়ের কৌশল:

বিমান ভ্রমণ নিরাপদ করতে গবেষণার আলোকে জানালার পাশে সিট বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১৮ সালের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডা’র এক গবেষণায় দেখা গেছে, জানালার পাশে বসলে অন্যান্য যাত্রীর সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা কম থাকে। একইভাবে বিমানের পেছনের দিকে বসা আরও নিরাপদ হতে পারে বলে ২০২২ সালের আরেক গবেষণা বলছে।

ব্যক্তিগত প্রস্তুতি:

ভ্রমণের সময় ওষুধ, স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস ও খালি পানির বোতল সঙ্গে রাখা উচিত। বোর্ডিংয়ের আগে বোতল ভর্তি করে নেওয়াই ভালো।

ফ্লাইট চলাকালে: বাড়তি সতর্কতা জরুরি

বিমানভিত্তিক সংক্রমণের সবচেয়ে বড় কারণ শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাস। এ জন্য মাস্ক ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন ডা. বিয়ার্নবাম ও ডা. রবিনসন। এ ছাড়া নিয়মিত হাত ধোয়া, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং ট্রে টেবিল, সিট বেল্ট ও আর্মরেস্ট জীবাণুনাশক দিয়ে মুছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

ভ্রমণের পর: স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন

যাত্রা শেষে হালকা জ্বর, কাশি বা দুর্বলতা দেখা দিলে বিশ্রাম নেওয়া ও প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

পরামর্শ ও অভ্যাস:

ভ্রমণ-পরবর্তী সময়ে প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম, পর্যাপ্ত পানি পান, হালকা খাবার ও ব্যায়াম এবং মানসিক চাপমুক্ত থাকার অভ্যাস সুস্থতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।

বিমান ভ্রমণের সময় কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললেই অসুস্থতার ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। আনন্দদায়ক ও স্বাস্থ্যকর ভ্রমণের জন্য তাই আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বনই সর্বোত্তম উপায়।