চামড়া শিল্প নিয়ে গাফিলতির কথা স্বীকার প্রধান উপদেষ্টার

চামড়া শিল্প নিয়ে সঠিক মূল্যায়ন না করায় দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের সুযোগ হারিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “এ শিল্পের মাধ্যমে আমরা বড় ধরনের লাভবান হতে পারতাম। কিন্তু আমরা তা পারিনি। এটি আমাদের বড় একটি অপরাধ।”
আজ বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত “স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ” বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। সভায় এলডিসি থেকে উত্তরণে ১৬টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।
সভায় জানানো হয়, এনবিআরের চারটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের তিনটি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের দুটি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের চারটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান সভায় জানান, ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে ১৯টি সংস্থাকে যুক্ত করা হয়েছে। আরও সংস্থাকে যুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ট্যারিফ পলিসি ২০২৩ এর বাস্তবায়ন অগ্রগতির বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
সভায় তৈরি পোশাক শিল্প ছাড়াও অন্যান্য রপ্তানি খাতকে সহযোগিতা ও প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব আসে। ম্যান-মেইড ফাইবারভিত্তিক কাঁচামাল এবং সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও ওঠে।
এছাড়া সাভারে ট্যানারি ভিলেজের ইটিপি পুরোপুরি চালু করা, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এপিআই পার্ক বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং ২০২২ সালের শিল্প নীতির হালনাগাদ—এই বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা চামড়া শিল্পের সংকট নিরসনে একটি আলাদা বৈঠক আয়োজনের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে, আগামী দুই মাসের মধ্যে এলডিসি থেকে উত্তরণ বিষয়ক পরবর্তী সভার আয়োজন করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সভায় তিনি বলেন, “আমাদের নিজেদের স্বার্থেই কাজ করতে হবে। যেসব নীতিমালা কাজে আসছে না, সেগুলো সংস্কার করতে হবে। এগুলো মৌলিক বিষয়। আমাদের উত্তরণের পথ নিজেকেই তৈরি করতে হবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, এনবিআর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।
/আশিক
জাতীয় ঐকমত্য: বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা নিছক একটি রাজনৈতিক বিবৃতি নয়; বরং একটি জাতির জন্য নতুন সামাজিক চুক্তির ঘোষণা। তাঁর কথায় স্পষ্ট প্রতিধ্বনিত হয়েছে ছাত্র-যুবকেন্দ্রিক অভ্যুত্থানের শক্তি, যে শক্তি শুধু একনায়কতন্ত্রকে উৎখাত করেনি, বরং জাতিকে নতুন পথের সামনে দাঁড় করিয়েছে।
ইউনূস বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে যে অগ্রগতি এসেছে, তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যও এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। গণতান্ত্রিক সংকট ও সামাজিক বিভাজনে জর্জরিত এই সময়ে বাংলাদেশ দেখাচ্ছে—সংলাপ, আলোচনা ও আপসের মাধ্যমে কীভাবে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে ওঠে। তাঁর ভাষায়, শুরুতে এই ধারণা টিকবে কি না তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত ছিলেন না, কিন্তু দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার পর যে দৃশ্যপট দাঁড়িয়েছে, তা অভূতপূর্ব।
নির্বাচনের প্রসঙ্গে ইউনূস ঘোষণা করেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেটি হবে "জাতির নবজন্মের মহোৎসব"। এটি কেবল একটি ভোট আয়োজন নয়, বরং একটি জাতির আত্মপ্রকাশ। তাঁর বক্তব্যে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা স্পষ্ট—অসংখ্য রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই মুহূর্তকে অর্থবহ করে তুলতে হলে ঐকমত্য ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তিনি সতর্ক করেছেন, "আমরা অনেক কথা বলতে পারি, কিন্তু দ্বিমত রেখে সমাপ্ত করতে পারব না।"
অধ্যাপক ইউনূস রূপক টেনে বলেন, এখন জাতির হাতে আলাদিনের প্রদীপ এসে গেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সেই শক্তি দিয়েছে। ছোটখাটো চাওয়া-পাওয়া নয়, চাইলে জাতিকে নতুনভাবে গড়া সম্ভব। কিন্তু এই সুযোগ একবারই এসেছে—পুনরায় আসবে না। এখানেই তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির মৌলিকত্ব; তিনি বুঝতে পারছেন যে রাজনৈতিক নেতারা যদি এই সুযোগ হাতছাড়া করেন, তবে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে একটি মৌলিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন—সংস্কারের লক্ষ্য হলো সব পথঘাট বন্ধ করে দেওয়া, যাতে ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচার পুনরায় মাথাচাড়া দিতে না পারে। এ জন্য কেবল সরকার বা প্রশাসন নয়, বরং সব রাজনৈতিক শক্তিকে একমত হতে হবে। একে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন “হাইওয়ে” হিসেবে—পথ ইতিমধ্যেই তৈরি, এখন শুধু সাইনবোর্ড বসানো বাকি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, এনসিপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মতামত দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দার। এই অংশগ্রহণ নিজেই প্রমাণ করে, রাজনৈতিক বৈরিতার মধ্যেও সংলাপের ক্ষেত্র রচিত হচ্ছে।
ইউনূসের বক্তব্যের কেন্দ্রে ছিল একটি বার্তা—এবার ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ব্যর্থ হলে তা কেবল একটি নির্বাচন বা একটি সরকারের পরাজয় নয়, বরং একটি জাতির নবজন্মের ব্যর্থতা। বাংলাদেশের ইতিহাসে বহু আন্দোলন হয়েছে, বহু অভ্যুত্থান ঘটেছে, কিন্তু সবসময় তা জাতির দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠনে রূপান্তরিত হয়নি। এবার সেই পথ খোলা।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, সামাজিক মনস্তত্ত্বেও গভীর প্রভাব ফেলবে। এটি নাগরিকদের জন্য আশ্বাস, আবার রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একধরনের নৈতিক চাপ। ঐকমত্যের এই যাত্রা সফল হলে বাংলাদেশ শুধু নিজেদের জন্য নয়, দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও এক উদাহরণ তৈরি করবে। আর ব্যর্থ হলে—অতীতের মতো আবারও বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে হবে।
বাংলাদেশ এক নতুন ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষায়, "এই নির্বাচন শুধু নির্বাচন নয়, এটি হবে জাতির নবজন্ম।" প্রশ্ন এখন একটাই—রাজনৈতিক নেতৃত্ব কি এই নবজন্মকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে?
মালয়েশিয়ায় প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু বুধবার
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন (ইসি) মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসীদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ায় এই কর্মসূচির উদ্বোধন হবে। শনিবার মালয়েশিয়ায় পৌঁছানো নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই উদ্যোগের উদ্বোধন করবেন।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলামের একান্ত সচিব মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকারমূলক উদ্যোগ, যা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসীরা শুধু ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন না, বরং ভবিষ্যতে স্মার্ট এনআইডি ব্যবহার করে সরকারি বিভিন্ন সেবায়ও অংশ নিতে পারবেন।
-নাজমুল হোসেন
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান: ড. আলী রিয়াজ
ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশনের (এনসিসি) সহ-সভাপতি ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, দেশে অন্তত তিনটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, কিন্তু পরাজিত পক্ষ তা কখনোই মেনে নেয়নি। তিনি বলেন, “দেশ অন্তত তিনটি সুষ্ঠু নির্বাচন করেছে, কিন্তু পরাজিতরা তা কোনোভাবেই মেনে নেয়নি।”
রবিবার রাজধানীর গুলশানে এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. রিয়াজ বলেন, দেশে গণতন্ত্রের রূপান্তর ঘটেনি, কারণ এ লক্ষ্যে কোনো শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। তার মতে, নির্বাচন পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় হলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তা যথেষ্ট নয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সিটিজেন্স ফর গুড গভর্ন্যান্স (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “জনগণের মধ্যে ঐক্য আছে, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সে ঐক্য বাস্তবায়নের সদিচ্ছা নেই।” তিনি আরও বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে হবে।
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সম্পাদক ড. তাসনিম জারা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, রাজনৈতিক সংস্কারের বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে যে অবিশ্বাস রয়েছে তা দূর করতে আইনগত বাধ্যবাধকতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, “দলগুলো শুধু নিজেদের এজেন্ডা নিয়েই কথা বলছে, অথচ এই মুহূর্তে জনগণ জাতীয় ঐকমত্য চায়।”
আলোচনায় বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য কেবল নির্বাচন নয়, শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও জনগণের আস্থার পরিবেশ তৈরি জরুরি।
-সুত্রঃ বি এস এস
উদ্যোক্তা সৃষ্টির আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ বলেছেন, দেশের আর্থিক কাঠামো এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে প্রত্যেকে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ পায়—শুধু চাকরির প্রত্যাশী হয়ে না থাকে।
রবিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের খিলজি রোডে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) নতুন ভবন ‘ভবন-২’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “মানুষ চাকরি করার জন্য জন্মায়নি, মানুষ জন্মায় উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য। তাই আমাদের আর্থিক ব্যবস্থা এমন হতে হবে যেখানে প্রত্যেকে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ পাবে।”
ড. ইউনূস বলেন, আজকের প্রজন্ম বিশেষ করে গ্রামের তরুণ-তরুণীরা অনেক বেশি সচেতন, তথ্যসমৃদ্ধ ও কল্পনাশীল। তাই এমন আর্থিক ও সামাজিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে তারা নিজেদের উদ্যোগ শুরু করতে পারে—ব্যক্তিগতভাবে বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি এমন কাঠামো তৈরি করতে পারি যেখানে মানুষ ইচ্ছা করলে নিজের উদ্যোগ শুরু করতে পারে, এমনকি বিনিয়োগকারী হিসেবেও যুক্ত হতে পারে, তবে পরিবর্তন সম্ভব।”
প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বাস করেন, এমন পরিবেশে প্রত্যেকে চাইলে সংগঠিতভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে যেতে পারবে। তারা স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ শুরু করতে পারে, বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে পারে এবং নিজেদের এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি বলেন, “আমরা এগিয়ে যেতে চাই। পরীক্ষামূলকভাবে দেখতে চাই কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ। ইতোমধ্যেই লাখো উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে মেয়ে-ছেলেদের নিয়ে দল গঠন করে কাজ করছে। এ অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে এ ধারা আরও প্রসারিত করা সম্ভব।”
-সুত্রঃ বি এস এস
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে ড. ইউনূসের শোক
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে গভীর শোক নেমে এসেছে একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তি লোকসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া দশটার দিকে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী ও চার সন্তান রেখে গেছেন।
ফরিদা পারভীনের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন,
“নজরুলগীতি, দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গানসহ বিভিন্ন ধারায় তিনি কণ্ঠের স্বাক্ষর রেখেছেন। তবে সর্বাধিক পরিচিতি তিনি পেয়েছেন ‘লালনকন্যা’ হিসেবে। তাঁর কণ্ঠে লালন সাঁইয়ের গান বিগত পাঁচ দশক ধরে মানুষের অন্তরে সাড়া জাগিয়েছে এবং বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছে।”
শোকবার্তায় ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ফরিদা পারভীন কখনো সংগীতচর্চা থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। সংগীতের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা ও নিবেদন কেবল একজন শিল্পী হিসেবেই নয়, একজন সাংস্কৃতিক যোদ্ধা হিসেবেও তাঁকে অমর করেছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁর গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে, যা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
বাংলাদেশের সংগীত জগতে ফরিদা পারভীনের অবদান অনন্য। তিনি শুধু লালন সংগীতের ধারক ও বাহকই ছিলেন না, বরং তা জনপ্রিয় করে তোলার মাধ্যমে আধুনিক শ্রোতাদের মধ্যে লোকসংগীতের নতুন আগ্রহ সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর কণ্ঠের মাধুর্য ও অনুভবজাত পরিবেশনা লালনের দর্শনকে কেবল গ্রামবাংলা নয়, শহুরে প্রজন্মের কাছেও পৌঁছে দেয়।
‘লালনকন্যা’ খ্যাত ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে পরিবেশিত “আমি কুলহারা কলঙ্কিনী”, “তোরা সবাই কইতে পারিস”, “মন রে ক্রমে শুদ্ধ কর”সহ অসংখ্য লালনগীতি শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে এবং আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ফরিদা পারভীনের ব্যক্তিগত সংগ্রামের কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, জীবনের নানা প্রতিকূলতায়ও গান থেকে দূরে যাননি এই শিল্পী। সংগীতের প্রতি তাঁর অবিচল অনুরাগ শুধু শিল্পচর্চার ক্ষেত্রেই নয়, সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের সংগীত জগতে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে তাঁর সৃজনশীলতা ও চিন্তাভাবনা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য খোরাক যোগাবে।” তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
-রফিক
কিংবদন্তি ফরিদা পারভীনের শেষনিঃশ্বাস: শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন
দেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল রোগে ভুগে তিনি শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বড় ছেলে ইমাম নিমেরি উপল গণমাধ্যমকে মায়ের মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করে জানান, “আম্মা রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানানো হবে।” ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তীও তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কিডনির রোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। নিয়মিত ডায়ালাইসিস চলছিল তাঁর। কিন্তু গত ৫ জুলাই ডায়ালাইসিস চলাকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি।
ফরিদা পারভীনের সঙ্গীতযাত্রা শুরু হয় ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে তিনি জাতীয়ভাবে পরিচিতি পান। তবে তাঁর প্রকৃত পরিচয় লালনসংগীতশিল্পী হিসেবে। এই ধারার গানকে তিনি বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিয়েছেন। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
এরপর একে একে অর্জন করেছেন বহু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে তিনি ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার পান। চলচ্চিত্রে গাওয়া গানের জন্য ১৯৯৩ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ফরিদা পারভীনকে বলা হয় ‘লালনসংগীতের রাণী’। তাঁর কণ্ঠের মায়াবী ছোঁয়ায় লালনের দর্শন ও সঙ্গীত পৌঁছে গিয়েছিল ঘরে ঘরে, শহর থেকে গ্রাম, এমনকি আন্তর্জাতিক পরিসরেও। তাঁর মৃত্যুতে দেশের সঙ্গীতাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থ পাচারের অভিযোগে নতুন করে আলোড়ন
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস সম্প্রতি প্রকাশিত ডকুমেন্টারি “Bangladesh’s Missing Billions, Stolen in Plain Sight”-এ দাবি করা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এ ডকুমেন্টারিতে বলা হয়, বাণিজ্যে অতিরিক্ত বা কম ইনভয়েস তৈরি, হুন্ডি-হাওলা প্রক্রিয়া এবং যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি ক্রয়সহ বিভিন্ন মাধ্যমে এই বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে।
ডকুমেন্টারির শুরুতেই শেখ হাসিনার নাটকীয় ক্ষমতাচ্যুতির প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। এতে ছাত্রনেত্রী রাফিয়া রেহনুমা হৃদি, রেজওয়ান আহমেদ রিফাদ, এফটির দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরো প্রধান জন রিড, কমোডিটি সংবাদদাতা সুসানাহ সাভেজ, স্পটলাইট অন করাপশন–এর ডেপুটি ডিরেক্টর হেলেন টেইলরসহ একাধিক রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ডকুমেন্টারিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় যে, লন্ডন বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের অন্যতম প্রধান গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের বিশাল আর্থিক খাত ও আকর্ষণীয় সম্পত্তি বাজার এ পাচারের জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করেছে।
এতে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে, যার মধ্যে এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের নামও রয়েছে, অবকাঠামো প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত চলছে। এছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং এস আলম গ্রুপ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমকেও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে নাম উল্লেখ করা হয়।
জন রিড ডকুমেন্টারিতে জানান, ব্যাংক পরিচালকরা কখনো কখনো অস্ত্রের মুখে শেয়ার হস্তান্তরে বাধ্য হয়েছেন। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুশতাক খান বলেন, “এ ধরনের ঘটনা সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনকে চিনি যারা ‘হল অব মিররস’ নামে কুখ্যাত একটি কারাগারে বন্দি ছিলেন।”
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদক সুসানাহ সাভেজ মন্তব্য করেন, “এ ধরনের দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় লুটপাটকে আমরা দূরের সমস্যা ভাবতে পারি, কিন্তু আসলে এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং যুক্তরাজ্যও এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।”
অর্থ ফেরত আনা যে অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া, তাও ডকুমেন্টারিতে উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পদ উদ্ধারের টাস্কফোর্সের উপদেষ্টা ইফতি ইসলাম এটিকে ইতিহাসের অন্যতম জটিল প্রক্রিয়া হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ডকুমেন্টারিতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, “সব টাকা ফেরত আনা সম্ভব নাও হতে পারে, কিন্তু আমরা যা পারি তার প্রমাণ খুঁজে বের করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে ফেরত আনার চেষ্টা করব। এটি সম্ভবত বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থপাচারের ঘটনা।”
তবে প্রশ্ন থেকে গেছে—যেসব ব্যবসায়ী ও গোষ্ঠী এই অর্থ বিদেশে সরিয়ে নিয়েছে, তারা ভবিষ্যত সরকারেও প্রভাব খাটাতে পারবে কিনা। জন রিড সতর্ক করে বলেন, “বাংলাদেশের বিপ্লব একটি টার্নিং পয়েন্ট হলেও দেশ আবারও একক রাজনৈতিক আধিপত্যের দিকে ফিরতে পারে।”
ডকুমেন্টারির শেষে রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় ভয় হলো, আমরা হয়তো আমাদের শহিদদের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারব না।”
-হাসানুজ্জামান
নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেপালের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। শনিবার এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি নেপালের জনগণ ও সরকারের উদ্দেশে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানান।
ড. ইউনূস বার্তায় বলেন,
“বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি আপনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই সংকটময় ও চ্যালেঞ্জিং সময়ে আপনার দায়িত্ব গ্রহণ নেপালের জনগণের আপনার প্রতি আস্থার প্রতিফলন।”
তিনি আরও বলেন, নেপাল বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশ।
“আপনার দক্ষ নেতৃত্বে নেপাল শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ নেপালের সঙ্গে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে আগ্রহী।”
ড. ইউনূস সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেন,
“নেপালে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলিতে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের গভীর শোক ও সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
বার্তার শেষে প্রধান উপদেষ্টা নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও সফলতা এবং নেপালের জনগণের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থায়ী উন্নয়ন কামনা করেন।
-সুত্রঃ বি এস এস
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কঠিন অঙ্কে ভারত
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে ভারত এক জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে অতীতে ভারতের সম্পর্ক মধুর না থাকলেও এখন ভারতের সামনে রয়েছে এক কঠিন সমীকরণ। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক শীতল, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে ভারত কাকে সমর্থন দেবে, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
অতীতের সম্পর্ক ও বর্তমান অবস্থান
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার চললেও তাদের সঙ্গে ভারতের খুব বেশি আলোচনা হয়নি। বরং, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শীতল সম্পর্কই সামনে এসেছে। অতীতে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভালো ছিল না।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২০ আগস্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের প্রত্যাশা হলো বাংলাদেশে দ্রুত একটি অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও ‘ইনক্লুসিভ’ নির্বাচন হোক। ‘ইনক্লুসিভ’ শব্দটি দিয়ে ভারত বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তারা চায় আওয়ামী লীগও নির্বাচনে লড়তে পারুক, যদিও বর্তমানে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে।
কারা ভারতের পছন্দের তালিকায়?
ওপি জিন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেছেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে ভারত বিএনপিকেই ক্ষমতায় দেখতে চাইবে। কারণ, জামায়াত ও এনসিপি-কে নিয়ে ভারত খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী নয়। তার মতে, ভারত নিজের স্বার্থেই চাইবে বাংলাদেশে একটি স্থিতিশীল সরকার আসুক।
প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত রায়চৌধুরীও মনে করেন, ভারত কোনো অস্থির সরকার দেখতে চাইবে না। তিনি বলেন, ভারত মনে করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার প্রশাসন ভারতবিরোধী কথা বলেছেন, যার কারণে তাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো নয়।
অবসরপ্রাপ্ত আইএএস কর্মকর্তা জহর সরকার মনে করেন, ভারত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকবে। তিনি বলেন, বর্তমান দলগুলোর মধ্যে বিএনপি সবচেয়ে পুরোনো দল। তিনি আরও মনে করেন, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে ভারত-বিরোধী জামায়াতের উত্থান ঠেকানো যাবে। তবে তিনি এটাও বলেছেন যে, বাংলাদেশের মানুষ যাদের ক্ষমতায় আনবে, ভারত তাদের সঙ্গেই কথা বলতে বাধ্য।
জটিলতা ও ভবিষ্যতের ভাবনা
বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কখনোই ভালো ছিল না। এনসিপি একটি নতুন দল, যার সঙ্গে ভারতের কোনো যোগাযোগই তৈরি হয়নি। তবে জামায়াত সমর্থিত ছাত্রশিবির যেভাবে ডাকসু নির্বাচনে জিতেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে তারা এবার ভোটের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
জহর সরকার বলেন, শেষের দিকে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন ও দুর্নীতি জেনেও ভারত তাকে সমর্থন দিয়ে গেছে। এটা ঠিক নীতি নয়। তবে শেখ হাসিনা সবসময় ভারতের পাশে ছিলেন, তাই তাকে ত্যাগ করা ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে ভারতের সামনে এখন এক জটিল রাজনৈতিক সমীকরণ। এই অঙ্কে জড়িয়ে আছে শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, জামায়াত, ইউনূস, এনসিপি এবং নিজেদের স্বার্থের বিষয়টি।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
পাঠকের মতামত:
- জাতীয় ঐকমত্য: বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ
- নেপালের গণঅভ্যুত্থান থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা: বৈধতার সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আগামীর চ্যালেঞ্জ
- মালয়েশিয়ায় প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু বুধবার
- গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান: ড. আলী রিয়াজ
- শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের অস্ত্র মামলায় নতুন মোড়
- উদ্যোক্তা সৃষ্টির আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- ব্লক মার্কেটে রেকর্ড লেনদেন
- ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) বাজার বিশ্লেষণ প্রতিবেদন
- ১৪ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ১৪ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- তারেক জিয়ার কেন দেশে ফেরা কেন জরুরি?
- উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ায় উত্তেজনা
- গুলিবর্ষণের পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল দিশা পাটানিকে
- ডিএসই–৩০ সূচকে মিশ্র লেনদেন
- গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কা, নাসা থেকে বহিষ্কার চীনা গবেষকরা
- ছুটির মুডে অনন্যা পাণ্ডে: ফ্যাশনপ্রেমীদের জন্য নতুন অনুপ্রেরণা
- সরকার পরিবর্তনের ডাক দিলেন ইলন মাস্ক, লন্ডনে বিক্ষোভ
- ন্যাটো সীমান্তে নতুন উত্তেজনা: রাশিয়ার ড্রোন অভিযান প্রসারিত
- ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর বড় সিদ্ধান্ত: সরকারি ছুটি কাটছাঁটের পরিকল্পনা বাতিল
- PRIME1ICBA ফান্ডের সাপ্তাহিক এনএভি প্রকাশ
- মেক্সিকো সিটিতে গ্যাস ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৩
- ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম জয় পেল আতলেতিকো
- এমবাপ্পের ঝলকে রিয়াল মাদ্রিদের টানা চতুর্থ জয়
- ২১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক, ২৫ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা
- ঢাকায় মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দল, শুল্ক কমানোতে নতুন আশার আলো
- আফগান সীমান্তে পাকিস্তান সেনার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি
- ক্যাম্পাস হবে জ্ঞান ও নেতৃত্ব বিকাশের স্থান: শিবির
- এবার মন্ত্রী নির্ধারণে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নেপালে
- আজকের ক্রীড়া সূচি (শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর)
- ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে ড. ইউনূসের শোক
- শ্রীলঙ্কার ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশ, ৩২ বল বাকি থাকতেই লঙ্কানদের দাপুটে জয়!
- কিংবদন্তি ফরিদা পারভীনের শেষনিঃশ্বাস: শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন
- জাকসু নির্বাচনে শিবিরের দাপট, ভিপি পদে স্বতন্ত্রের চমক!
- বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা: আইনি প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক কৌশল
- শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থ পাচারের অভিযোগে নতুন করে আলোড়ন
- বাজার ব্যবস্থাপনায় টেকসই সরবরাহই স্থিতিশীলতার মূলমন্ত্র: শেখ বশির উদ্দিন
- নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
- অপারেশন থিয়েটারের আলো: ছায়াহীন বিস্ময়ের বৈজ্ঞানিক রহস্য
- আজকের মুদ্রা বিনিময় হারের বিশ্লেষণ
- বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পাখি: সাউদার্ন ক্যাসোয়ারির রহস্যময়তা ও আতঙ্ক
- জাকসু নির্বাচনের ফলাফল দেওয়ার সময় জানা গেল
- দিশা পাটানির বাড়িতে গুলিবর্ষণ: আতঙ্কে পরিবার, কঠোর নিরাপত্তায় বাড়ি ঘিরে ফেলল পুলিশ
- ম্যানচেস্টার ডার্বির আগে রুবেন আমোরিমের হুঁশিয়ারি: "আমরা ভিন্ন দল"
- ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইতিহাস: ফিল সল্টের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের রেকর্ড জয়
- কিম জং উনের নতুন সামরিক নীতি: একসাথে পারমাণবিক ও প্রচলিত শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা
- মোদি বনাম ভাগবত: বিজেপি–আরএসএস সম্পর্কে ফাটল
- বোলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড: ব্রাজিলের রাজনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা
- ভূমি মন্ত্রণালয়ে বড় নিয়োগ!
- জানুন নিয়মিত সাঁতারের ছয় বড় উপকারিতা
- রাশিয়ার উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- ডোপ টেস্ট কী, কেন করা হয়, কেন এত এখন জরুরি
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
- রজনীকান্ত–কমল হাসান আবারও একসঙ্গে বড় পর্দায়