রাশিয়ার সর্ববৃহৎ হামলা: ইউক্রেনে ৭২৮ ড্রোন ও ১৩ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৯ ২০:২০:২১
রাশিয়ার সর্ববৃহৎ হামলা: ইউক্রেনে ৭২৮ ড্রোন ও ১৩ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ

রাশিয়া ইউক্রেনের উপর এখন পর্যন্ত সর্ববৃহৎ আকাশ হামলা চালিয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত মধ্যরাতে একযোগে ৭২৮টি ড্রোন এবং ১৩টি ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হামলা চালানো হয়। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাজধানী কিয়েভে বিস্ফোরণের শব্দ ও ড্রোনের গর্জনে রাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও এএফপির সাংবাদিকদের বরাতে জানা গেছে, বিস্ফোরণের শব্দে রাতভর কেঁপেছে শহর। বিমান হামলার সাইরেন দীর্ঘ সময় ধরে বাজতে থাকে।

এই হামলায় খমেলনিতস্কি অঞ্চলে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে আঞ্চলিক কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

গত সপ্তাহের ৫৫০টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার রেকর্ড ভেঙে এই হামলা রাশিয়ার নতুন শক্তি প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এমন এক সময়ে এ হামলা চালানো হলো, যখন আমরা যুদ্ধবিরতির জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছি। অথচ কেবল রাশিয়াই বারবার এই প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।”

এই হামলার ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে নতুন করে সামরিক সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দেয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসনের আগের সহায়তা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। এতে ইউক্রেনকে ১০টি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে মার্কিন গণমাধ্যম দাবি করেছে, ট্রাম্প নিজে ওই স্থগিতাদেশ সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। মঙ্গলবার এক মন্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “পুতিন সব সময়ই আমাদের সঙ্গে ভদ্র আচরণ করেছেন, কিন্তু এখন তার আচরণ অর্থহীনতায় পরিণত হয়েছে।”

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে বলেন, “মস্কো এসব কথার প্রতিক্রিয়া জানাবে না। ট্রাম্প সাধারণত যেভাবে কথা বলেন, তা কর্কশ ধাঁচের হয়ে থাকে।”

ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে সাম্প্রতিক টেলিফোন সংলাপও ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় কোনো কার্যকর অগ্রগতি আনতে পারেনি। বরং এই সংলাপের পরই রাশিয়ার এই বৃহৎ হামলা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

ট্রাম্প জানান, তিনি এখন রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করা দেশগুলোর ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের একটি প্রস্তাব বিবেচনা করছেন। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামের প্রস্তাবিত এই নিষেধাজ্ঞা বিল ট্রাম্প প্রশাসনের ভবিষ্যৎ অবস্থান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে ইউক্রেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। রাজধানী কিয়েভসহ পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা এবং অন্যান্য শহরে নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।

বিশ্লেষকদের মতে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও সামরিক সহায়তার সমন্বয় ছাড়া ইউক্রেনের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কঠিন হয়ে পড়ছে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ