দ্রুত নির্বাচন না হলে দেশ পিছিয়ে পড়বে: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ১৬:৩৯:৩৭
দ্রুত নির্বাচন না হলে দেশ পিছিয়ে পড়বে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “নির্বাচিত সরকারের চাইতে শক্তিশালী কোনো সরকার হতে পারে না।” তিনি দ্রুত একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “নির্বাচন যত দেরি হবে, বাংলাদেশ তত পিছিয়ে যাবে।”

সোমবার (৭ জুলাই) সিলেটে একটি দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “দ্রুত নির্বাচন না দিলে দেশে বিনিয়োগ আসবে না, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে না, বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে।”

১৫ বছরের বেশি সময় ধরে সিলেটে বিএনপির নেতাকর্মীরা গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, “মিথ্যা মামলায় অনেককে বন্দি করা হয়েছে। ২০২৪ সালে আমাদের ভাই, আমাদের ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে এই সরকার। আমরা যারা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতে সিলেটে এসেছি।”

তিনি বলেন, “হঠাৎ করে শেখ হাসিনা পালায়নি, এটি বহুদিনের আন্দোলন, ত্যাগ আর রক্তের ফল। কিন্তু আমাদের লড়াই এখন গণতন্ত্রের জন্য—একটি এমন রাষ্ট্র গঠনের জন্য যেখানে মানুষ ভোট দিতে পারবে, কথা বলবে, তরুণরা কাজ পাবে, নারীরা নিরাপত্তা পাবে এবং সকলের চিকিৎসা নিশ্চিত হবে।”

বিএনপির ইতিহাস স্মরণ করে ফখরুল বলেন, “আমরা সেই দলের প্রতিনিধি, যার প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। বিপরীতে, শেখ মুজিব একদলীয় শাসন চালু করে চারটি ছাড়া সব মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। জিয়া জনগণের বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়েছিলেন।”

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মির্জা আব্বাস এবং কেন্দ্রীয় নেতা নিপুণ রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

/আশিক


আবারও হাসপাতালে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ২১:৪৬:৫৩
আবারও হাসপাতালে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া
ছবিঃ সংগৃহীত

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে এভারকেয়ারের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। পরে স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি জানান বেশ কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। বর্তমানে তিনি কেবিনে আছেন। টেস্টের রিপোর্টগুলো মেডিকেল বোর্ড পর্যালোচনার পরে চিকিৎসার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সর্বশেষ শুক্রবার ২১ নভেম্বর বিকেলে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেন বলে জানিয়েছিলেন তাঁর প্রেস উইংয়ের সদস্যরা।

উল্লেখ্য গত ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। এরপর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে আবারও এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলো বিএনপি চেয়ারপারসনকে।


স্বাস্থ্য খাত ও বেকারত্ব দূরীকরণে বিএনপির মেগা প্ল্যান তুলে ধরলেন আমীর খসরু

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ২০:৫৬:৩০
স্বাস্থ্য খাত ও বেকারত্ব দূরীকরণে বিএনপির মেগা প্ল্যান তুলে ধরলেন আমীর খসরু
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা চালু করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। রোববার ২৩ নভেম্বর দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বা বিএমইউ অডিটরিয়ামে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা ড্যাব আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিনা চিকিৎসায় কোনো মানুষ মারা যাবে না।

ড্যাব নেতাদের উদ্দেশে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আহ্বান জানান বিএনপির ৩১ দফায় স্বাস্থ্য খাত নিয়ে যে অঙ্গীকার আছে তা যেন তাঁরা সারা দেশে ছড়িয়ে দেন। তিনি প্রত্যেককে ফেসবুকে পোস্ট করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করুন এবং তাদের জানান বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সারা দেশের মানুষের জন্য বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা চালু করবে। এ লক্ষ্যে বিএনপি এখন থেকেই পরিকল্পনামাফিক কাজ শুরু করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কর্মসংস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন সবার আকাঙ্ক্ষা আকাশচুম্বী তাই ডে ওয়ান বা প্রথম দিন থেকেই পারফর্ম করতে হবে। বিএনপি প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এক কোটি মানুষকে কীভাবে চাকরি দেওয়া হবে সে বিষয়ে হোমওয়ার্ক করেই কথা বলা হচ্ছে। আমীর খসরু ঘোষণা দেন বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মাত্র ১৮ মাসের মধ্যে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সেক্টর চিহ্নিত করে কাজ শুরু হয়েছে।

রাজনৈতিক দর্শন পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন আগের সেই রাজনৈতিক ধ্যান ধারণা আর নেই। রাজনীতি বদলেছে এবং মানুষও বদলেছে। আর তাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির রাজনৈতিক মন্ত্র এখন নবযুগের সূচনা। তিনি বলেন দেশের সার্বিক পরিবর্তনই এখন বিএনপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সহনশীল রাজনীতির ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন আমাদের সহনশীল হতে হবে এবং গণতন্ত্র থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ নেই। দেশকে নিয়ে তারেক রহমানের ভবিষ্যৎ চিন্তা মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

প্রতিপক্ষের সঙ্গে তারেক রহমানের পার্থক্য তুলে ধরে তিনি বলেন সাংঘর্ষিক রাজনীতি করতে চান না তিনি। আজকে অনেকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাস্তায় নামছে কিন্তু বিএনপি কোনো দাবি নিয়ে রাস্তায় নামছে না। বিএনপি সাংঘর্ষিক রাজনীতিতে যাচ্ছে না কারণ বিএনপি সহনশীল রাজনীতির পক্ষে। দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে সহনশীল রাজনীতি করতে হবে।

আমীর খসরু আরও বলেন মানুষের রাজনৈতিক সচেতনতা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সবাই খোঁজে আমার জন্য কী আছে। মানুষ এখন শিক্ষা স্বাস্থ্য কর্মসংস্থান ও নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ সচেতন। আর মানুষের এসব চাহিদা মাথায় রেখে বিএনপি আগামী রাষ্ট্র বিনির্মাণের ৩১ দফা ঘোষণা করেছে। দেশের যত মৌলিক সংস্কার তা সবই ৩১ দফায় আছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার অধ্যাপক ডা. বজলুল গনি ড্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী হাসানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।


পাঠ্যবই থেকে ৭ মার্চের ভাষণ বাদ দেওয়া নিয়ে সোহেল তাজের কড়া সতর্কতা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ২০:৪০:১৮
পাঠ্যবই থেকে ৭ মার্চের ভাষণ বাদ দেওয়া নিয়ে সোহেল তাজের কড়া সতর্কতা
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ। ফাইল ছবি

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ বলেছেন প্রকৃত ইতিহাস জানার অধিকার থেকে নতুন প্রজন্মকে বঞ্চিত করলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোনোদিনও উজ্জ্বল হবে না। রোববার ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এ কথা বলেন।

পোস্টে তিনি তিনটি ছবি শেয়ার করেছেন। এর মধ্যে একটি হলো দৈনিক শিক্ষা অনলাইন পত্রিকার একটি খবরের স্ক্রিনশট। সেই ছবিতে লেখা রয়েছে পাঠ্যবই থেকে ৭ মার্চের ভাষণ বাদ যুক্ত হচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থান। অন্য দুটি ছবি হলো বিখ্যাত লেখক জর্জ অরওয়েলের লেখা দুটি বই অ্যানিমেল ফার্ম ও ১৯৮৪ বা নাইনটিন এইটি ফোর। এই বই দুটি তিনি সবাইকে পড়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।

সোহেল তাজ তাঁর স্ট্যাটাসে লিখেছেন যখন যে দল বা গোষ্ঠী ক্ষমতার চেয়ারে বসে ইতিহাস আড়াল করে বা বিকৃত করে নিজের মতো করে নতুন ইতিহাস লেখার চেষ্টা করে যার ফলে নতুন প্রজন্ম বিভ্রান্ত হয় এবং দেশপ্রেম জেগে ওঠে না। আর আমরা সেই একই দুর্নীতি অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলার বেড়াজালে আটকে থাকি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন ২০২৪ সাল বাংলাদেশকে একটি স্বৈরাচারী অগণতান্ত্রিক অপশাসনের কবল থেকে মুক্ত করেছে আর ১৯৭১ আমাদের স্বাধীন একটি দেশ দিয়েছে। তাই সঠিক ও প্রকৃত ইতিহাস জানার অধিকার থেকে নতুন প্রজন্মকে বঞ্চিত করলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোনোদিনও উজ্জ্বল হবে না।

পোস্টের শেষ অংশে তিনি জর্জ অরওয়েলের ১৯৮৪ বইয়ের একটি বিখ্যাত উক্তি উদ্ধৃত করেন হু কন্ট্রোলস দ্য পাস্ট কন্ট্রোলস দ্য ফিউচার বা যারা অতীত নিয়ন্ত্রণ করে তারাই ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ করে। এই উক্তির মাধ্যমে তিনি ইতিহাসের বিকৃতি রোধের গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছেন এবং সবাইকে জর্জ অরওয়েলের লেখা অ্যানিমেল ফার্ম ও ১৯৮৪ বই দুটি পড়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।


কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে বাংলাদেশে কোনো কাজ হবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ২০:২৬:০১
কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে বাংলাদেশে কোনো কাজ হবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
ছবিঃ সংগৃহীত

কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে কোনো কাজ বাংলাদেশে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। রোববার ২৩ নভেম্বর বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত ইমাম খতিব জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বক্তব্যে তিনি বলেন উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ ছাড়া রাষ্ট্রের কাউকেই গ্রেপ্তার করা যায় না আর সেখানে ইমাম খতিবরা তো দূরের কথা। তিনি অভিযোগ করেন যে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ইসলাম বিদ্বেষী ছিল এবং তারা আলেম ওলামাদের ওপর অন্যায়ভাবে দমনপীড়ন চালিয়েছে।

রাজনৈতিক প্রয়োজনে মসজিদকে ব্যবহারের প্রবণতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন দুনিয়ার কোনো কার্যক্রমকে যেন মসজিদে প্রশ্রয় না দেওয়া হয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন রাজনৈতিক চর্চার অনেক জায়গা রয়েছে তাই মসজিদকে রাজনীতির হাতিয়ার না বানিয়ে ইমামদের যেন আমরা বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখি।

সম্মেলনে তিনি উপস্থিত আলেম ওলামা এবং সাধারণ জনতাকে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন দেশের নবযাত্রা শুরু হয়েছে এবং এই যাত্রায় ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ইনসাফ বজায় রাখা হবে।


চট্টগ্রাম ১ আসনে বিএনপির নুরুল আমিন নাকি জামায়াতের সাইফুর রহমান কার পাল্লা ভারী

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৮:৪২:৫৬
চট্টগ্রাম ১ আসনে বিএনপির নুরুল আমিন নাকি জামায়াতের সাইফুর রহমান কার পাল্লা ভারী
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম ১ বা মীরসরাই আসনে ভোটের রাজনীতি এখন তুঙ্গে। এই আসনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নেমেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান। আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে এই দুই নেতার লড়াই মীরসরাইয়ের নির্বাচনী মাঠকে উত্তপ্ত করে তুলেছে।

মাঠের রাজনীতিতে নুরুল আমিন বেশ পোড় খাওয়া নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের কাজ এবং তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বেশ গভীর। বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করছেন নুরুল আমিনের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা সহজেই এই আসনে জয় ঘরে তুলতে পারবেন। বিশেষ করে ধানের শীষের বিশাল ভোটব্যাংক এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ভোটারদের টানতে সহায়ক হবে বলে তাঁদের বিশ্বাস।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমানও ছেড়ে কথা বলছেন না। পেশায় আইনজীবী সাইফুর রহমান ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। জামায়াতের সুশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী এবং নিজস্ব ভোটব্যাংকের পাশাপাশি তিনি সাধারণ ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন নুরুল আমিন হেভিওয়েট প্রার্থী হলেও সাইফুর রহমানের কৌশলী প্রচারণায় ভোটের মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে।

মীরসরাইয়ের সাধারণ ভোটাররা এই লড়াইকে বিএনপি বনাম জামায়াতের মর্যাদার লড়াই হিসেবেই দেখছেন। একদিকে নুরুল আমিনের প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা ও দলের সাংগঠনিক শক্তি অন্যদিকে সাইফুর রহমানের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও জামায়াতের নীরব ভোট বিপ্লবের কৌশল এই দুইয়ের মধ্যে কে শেষ হাসি হাসবেন তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে পুরো চট্টগ্রামবাসী। কার্যত নৌকা না থাকায় মীরসরাইয়ের ভোটের মাঠ এখন পুরোপুরি নুরুল আমিন বনাম সাইফুর রহমানের দ্বৈরথে পরিণত হয়েছে।


ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়: তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৮:১৪:৫৪
ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়: তারেক রহমান
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সম্মানী ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রবিবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ইমাম ও খতিব সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দানকালে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।

বক্তব্যে তারেক রহমান উল্লেখ করেন যে কোনো হীন দলীয় স্বার্থে ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা গেছে। তিনি সতর্ক করে বলেন হীন স্বার্থে ধর্মীয় ব্যাখ্যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ভিন্নমত যাতে সমাজে ফেৎনা তৈরি না করে সেদিকে আলেম ওলামাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। তিনি জোর দিয়ে বলেন বরাবরের মতো বিএনপি সবসময় ইসলাম ও মুসলমানের স্বার্থবিরোধী তৎপরতা রোধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ধর্মীয় নেতাদের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের বাইরে রেখে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে ইমাম ও খতিবদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।

এ সময় দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। সবশেষে একটি ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে আলেম ওলামাদের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন তারেক রহমান।


রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত: রিজভী

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৬:৪৮:৪৮
রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত: রিজভী
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন গ্রামের জমি বিক্রি করে ঢাকায় এসে ফ্ল্যাট কিনছে। মানুষ অতিদ্রুত বড় লোক হতে চাচ্ছে। সেই বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত সেই নদী সেই পুকুর আর রাখতে চাচ্ছে না। টাকাকেই ভাবা হচ্ছে দেবতা। এ কারণেই আজ সামান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা কেঁপে উঠছি। এজন্য আমরা বলছি যার যে কাজ যারা রাজনীতিবিদ যারা রাজনীতি করছে তাদের ওপর রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া। এখানে অন্য কেউ যদি আসে ওই উপলব্ধিটা বুঝবে না।

রোববার ২৩ নভেম্বর রাজধানীর ভাসানী ভবনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সদ্য প্রয়াত সাইফুল ইসলাম পটুর আত্মার মাগফিরাত কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত পূর্ব আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন মোগল আমলের কারওয়ান বাজার। এখানে নদী ছিল। একসময় পাল তোলা নৌকা আসত জাহাজ আসত। এই নদী আমরা রক্ষা করিনি আমরা মনেই করিনি। তাড়াতাড়ি ভরাট কর জায়গা দখল কর। এখানে কোনো প্লানিং ছাড়াই আমরা বাড়ি বানাব ভাড়া দেব অথবা বিক্রি করে টাকা আয় করব।

জীবনের স্মৃতিচারণ করে রিজভী বলেন আজকে সমাজে মূল্যায়ন হয় নানাভাবে। আমি তখন ছাত্রদলের রাজনীতি শেষে স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতি করি। মিরপুরের পাইকপাড়ায় থাকি। পকেটে পয়সা ছিল না। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে পরীবাগে আসতাম। সেখানে একটা খাল ছিল এখন সেটা নেই। পার হয়ে আবার রিকশা নিয়ে নয়াপল্টন অফিসে আসতাম। বেশিদিন আগের কথা নয় ৯৭ বা ৯৮ সালের দিকের কথা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন এই ঢাকায় এতো বড় বড় নেতা গবেষক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তবুও ধোলাইখাল বন্ধ করে দেওয়া হলো। এটাকে পুনঃখনন করে পরিষ্কার করে পানিটা যাতে ক্লিন থাকে সেই ব্যবস্থাটা আমরা কেন করলাম না।

রিজভী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ভূমিদস্যু ও নগর প্লানার এদের কাছে খাল পরিবেশ নির্মল বাতাস যেন শত্রুপক্ষ। শুধু ঢাকা নয় সারা বাংলাদেশে একই অবস্থা তাদের কাছে সবই যেন শত্রুপক্ষ। এরা কেউ ভাবেনি ধোলাইখালটা রক্ষা করতে হবে আমাদের সন্তানদের সুস্থ রাখতে হবে। এদের সবার টাকা দরকার। এক দেড় কাঠা পৈতৃক জায়গার ওপর তলার পর তলা করে করে দশ তলাও করেছে। আগে বাড়ির সামনে একটা বাগান থাকত সেটা এখন নেই। এখন একটা শিশু ফ্ল্যাটে বন্দি জীবনযাপন করে। ইংল্যান্ড আমেরিকায় তো তা হয় না। সেখানে তো কোনো খাল বা জলাধার বন্ধ করে দেওয়া হয় না।

তিনি আরও বলেন দেখতে দেখতে ঢাকার জলাধার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরা ভূমিদস্যু এরাই আবার রাজনৈতিক নেতা হচ্ছে এরাই সমাজের অধিপতি হচ্ছে। এদের অনেকে ম্যাট্রিক পাশও করেনি। খাল বিল পুকুর এবং জায়গা দখল করে এখন বিরাট ফার্মের মালিক। এদের কাছে গিয়েই বুয়েট বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য ধর্ণা দিচ্ছেন কারণ সমাজ এমনভাবে বিভাজিত হয়েছে।

এটি শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি করে গেছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন তা না হলে ঢাকা শহরে পঞ্চাশটির বেশি ক্যাসিনো থাকতে পারে অথচ এর সঙ্গে জড়িতদের আওয়ামী লীগ থেকে বাদ দেওয়া হয়নি বা বহিষ্কার করা হয়নি। তকী হত্যার অভিযোগ যার বিরুদ্ধে ছিল শেষ পর্যন্ত সে এমপি হয়ে যায়। অর্থাৎ খারাপ মানুষ সন্ত্রাসী ভূমি দখলকারী এদেরকেই প্রটেকশন দেওয়া হলো। এদেরকেই টিকিয়ে রাখা হলো যার কারণে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে দশজন মানুষ মারা গেল।

যতটুকু বিল্ডিং কোড রয়েছে তাও মানা হয় না উল্লেখ করে রিজভী বলেন আপনারা জানেন এই ঢাকা শহরে রাজউকের যে এলাকা সেখানেও ৯৫ শতাংশ অনুমোদনহীন বিল্ডিং তৈরি হয়। এখানে রাজউক বা অন্যান্যদের চোখ বন্ধ। তার মতে এই ভূমিকম্পের মধ্য দিয়ে আমাদের উপলব্ধি করা প্রয়োজন। আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের সবার উপলব্ধি করার সময় এসেছে। তা যদি করতে না পারি তাহলে একটি শূন্য গর্তে হারিয়ে যাব।

সদ্য প্রয়াত সাইফুল ইসলাম পটুর কথা স্মরণ করে রিজভী বলেন সাইফুল ইসলাম পটু সামগ্রিকভাবে জীবিত থাকা অবস্থায় আমরা তার কী মূল্যায়ন করেছি। এখানে অনেকে আছেন যাদের জীবন কেটেছে আন্দোলন সংগ্রামে। যারা রাজনীতিতে জীবন উৎসর্গ করার মতো ভূমিকা রেখেছেন। এদের অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অথবা নামকরা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী। তাদের বিষয়গুলো দলের শীর্ষ মহলে আমরা সেভাবে বলি না। এরা কিন্তু পাড়ার বখাটে ছেলেও নয়। তাদের স্টুডেন্ট এবং রাজনৈতিক দুটি ক্যারিয়ারই আছে। তাদের যদি মূল্যায়ন না করি তাহলে চেতনা সম্পন্ন অনেক নেতৃবৃন্দকে হারাব।

এ সময় বিগত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাবেক ছাত্রনেতা পটুর ব্যক্তিগত জীবন ও রাজপথের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন তার সহযোদ্ধা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী সপু সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল যুব বিষয়ক সহ সম্পাদক নেওয়াজ আলী নেওয়াজ ও সাদরেজ জামান প্রমুখ। হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন আজকের দিনে যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে কষ্ট করে তাদের হয়তো অনেকেই বোকা মনে করতে পারেন। কিন্তু এই বোকারাই দলকে টিকিয়ে রাখে এবং ক্ষমতায় নিয়ে যায়।


নৌকার ভোট বাগে আনতে বিএনপি ও জামায়াতের যত কৌশল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৪:৪৬:০৫
নৌকার ভোট বাগে আনতে বিএনপি ও জামায়াতের যত কৌশল
ছবিঃ সংগৃহীত

দেশে বইছে নির্বাচনের হাওয়া আর এই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ বাড়ছে। কার্যক্রম স্থগিত এবং ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতি নতুন এক সমীকরণ তৈরি করেছে। এখন বড় প্রশ্ন উঠেছে দলটির ভোট আসলে কোন দিকে যাবে। তবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দুই দলই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এই দলটির ভোট টানতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে।

সূত্রগুলো জানাচ্ছে জয়ের ব্যাপারে এক ধরনের নিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের ভোট নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা রয়েছে বিএনপির। তাই প্রকাশ্যে তারা দলটির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান দেখাচ্ছে না। পাশাপাশি নির্বাচনি প্রচারণায় অনেক স্থানে বিএনপির প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ সমর্থক ও ভোটারদের নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসের পাশাপাশি তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

অন্যদিকে বসে নেই আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী বলে পরিচিত জামায়াতও। এ দলটিও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়াসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এমনকি আওয়ামী লীগের ভোট টানতে সংখ্যালঘুদেরও দু একটি আসন ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করছে জামায়াত। খোঁজ নিয়ে দুটি দলেই নতুন এই নির্বাচনি কৌশলের কথা জানা গেছে।

তবে আওয়ামী লীগের ভোট টানার লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির সঙ্গে জোট করবে কি না তা নিয়ে বিএনপি ও জামায়াত উভয় দলই পুনর্বিবেচনা করে দেখছে। এনসিপির সঙ্গে নির্বাচনি জোট থাকলে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা ভোট নাও দিতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে দল দুটি নানা হিসাব নিকাশ কষছে। কারণ আওয়ামী লীগ নেতারা এনসিপিকে প্রধান শত্রু মনে করে এমন আলোচনা আছে দেশের রাজনীতিতে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে এবং এই সংগঠনের নেতৃত্বদানকারীরাই পরে এনসিপি গঠন করে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অব. হাফিজউদ্দিন আহমেদ একটি সংবাদ মাধমকে বলেছেন আওয়ামী লীগের ভোট জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়ার কথা নয়। তাঁর মনে হয় তারা অধিকাংশই ভোটকেন্দ্রে যাবে না আবার যারা যাবে হয়তো বিএনপির ধানের শীষেই ভোট দেবে।

অবশ্য জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের মনে করেন বাস্তবে নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের ভোট ৫ শতাংশের বেশি নয়। তিনি বলেন আওয়ামী লীগ আমলের শেষের দিকে বিভিন্ন উপনির্বাচনে দেখা গেছে সেখানে কেউ ভোট দিতে যায়নি। শুধু তাদের লোকজন গেলেও ভোট পড়ার কথা ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কিন্তু সেখানে ভোট পড়েছে ৬ থেকে ৭ শতাংশ। বাস্তবে মানুষ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এরপরও যারা আছে আমার ধারণা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেকেই ভোট দিতে যাবে না। আর যারা ভোট দিতে যাবে তারা হয়তো অবস্থার আলোকে ব্যবস্থা নেবে। সফট সাপোর্টার যারা রয়েছে তারা স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কসহ নানা হিসাব নিকাশ করে ভোট দিতে পারেন। তিনি বলেন আমরা তো সবার কাছেই ভোট চাইব এবং কে কাকে ভোট দেবে সেটা তো তার ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে আওয়ামী লীগের ভোট কারা পাবে সেটি নির্ভর করছে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। প্রথমত দলটির আদর্শের কাছাকাছি যদি কোনো প্রার্থী থাকে তাদের ভোট দেবে। দ্বিতীয়ত ভোটারদের সঙ্গে প্রার্থীর সম্পর্কের ওপর এবং তৃতীয়ত ৫ আগস্টের পর প্রার্থী বা তাদের কর্মীরা আওয়ামী লীগের কর্মীদের ওপর কতটা নির্যাতন চালিয়েছে সে বিবেচনা নির্ভর করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান মনে করেন প্রার্থীরা স্থানীয় হলে সুবিধা হলো নির্বাচনটি সামাজিক হয়। ফলে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে না এসে থাকতে পারেন না। সে হিসাবে আওয়ামী সমর্থকগোষ্ঠী বা ভোটাররা কেন্দ্রে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন দলটির সমর্থকগোষ্ঠী বা ভোটাররা তাদের আদর্শের কাছাকাছি যদি কোনো প্রার্থী পায় তবে তাদের ভোট দেবেন। আবার না ভোট দেওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এছাড়া যদি কোনো প্রার্থী ব্যক্তিগতভাবে ভোটারদের আকর্ষণ করতে পারেন তাহলে আওয়ামী লীগের ভোট পাবেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ এখনো অনিশ্চিত। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন আগামী নির্বাচনে দলটি অংশ নিতে পারবে না। এনসিপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলও বলেছে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। বর্তমানে দেশে দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনও নৌকা প্রতীক স্থগিত করেছে। এ অবস্থায় দলটির সমর্থক বা ভোটাররা কাকে ভোট দেবেন কিংবা ভোট দিতে আদৌ কেন্দ্রে আসবেন কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বাড়ছে কৌতূহল। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের ভোট নিজেদের পক্ষে নিতে নানা কৌশল ও চেষ্টার প্রমাণও মিলছে বিএনপি ও জামায়াতের অনেক নেতার বক্তব্যে।

ভোট নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন বর্তমান বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ সমর্থকরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত। একটি অংশ শেখ মুজিবুর রহমানকে নেতা মেনে রাজনীতি করে। এই অংশটির ভোট এবার বিএনপির পক্ষে যাবে বলে মনে হয় কারণ মুক্তিযুদ্ধসহ নানা ইস্যুতে তারা কখনো জামায়াতকে ভোট দেবে না। আরেক অংশ শেখ হাসিনাকে নেতা হিসেবে মেনে রাজনীতি করছে। এই অংশটির আবার দুটি ধারা রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। তারা বলছেন শেখ হাসিনা যদি কোনো নির্দিষ্ট দলকে ভোট দিতে বলেন বা ভোট বর্জন করতে বলেন তাতে একটি অংশ সাড়া দেবে। আরেকটি অংশ মনে করে শেখ হাসিনার জন্যই আওয়ামী লীগের বর্তমান এই পরিণতি। ফলে তারা শেখ হাসিনার নির্দেশ না মেনে নিজেদের হিসাব নিকাশ থেকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন। অনেকের মতে এই অংশের এলাকার রাজনীতি ও নিরাপত্তার কথা ভেবে বিএনপির ধানের শীষকে বেছে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এজন্যই কেউ কেউ মনে করছেন কিছুটা জামায়াত প্রভাবিত উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায় আওয়ামী লীগের একাংশ জামায়াতকে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্লেষকদের আরও মতামত হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিএনপির দিকে ঝোঁকার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে সরাসরি পক্ষে ছিল না বিএনপি। দলটি প্রজ্ঞাপন নয় বিচার করে নিষিদ্ধের পক্ষে ছিল। দ্বিতীয়ত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিল জামায়াত। ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচিও দিয়েছে কিন্তু বিএনপি সেখানে কৌশলী অবস্থান নেয়। বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা মাঠে থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কর্মসূচি দেয়নি। যদিও বিএনপি প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে বিএনপি উদারপন্থি দল হওয়ার কারণে ভোটের মাঠে অনেক বেশি সুবিধা পাবে।

বিগত জাতীয় নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায় আওয়ামী লীগ ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ৩০ দশমিক ০৮ শতাংশ ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ ও ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪৮ দশমিক ০৪ শতাংশ। এরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন হলেও তা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত। এর মধ্যে দুটি নির্বাচন একতরফা ও একটি নির্বাচনে ভোটের আগের রাতেই ভোট হয়ে যায়। লক্ষণীয় যে শতকরা হিসাবে আওয়ামী লীগ ভোট কিছুটা বেশি পেলেও ২০০৮ সালের পর আর সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে সাহস পায়নি দলটি। কারণ দুঃশাসনের কারণে দলটির জনপ্রিয়তা কমে যায় এবং জয়ের ব্যাপারে দলটি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। ফলে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে দলটি পরপর তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন করে। আর এভাবেই প্রথমে স্বৈরশাসক এবং সবশেষে ফ্যাসিস্ট হিসেবে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে।

অন্যদিকে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ভোট পেয়েছে ৩০ দশমিক ৮১ শতাংশ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ৩৩ দশমিক ৬১ শতাংশ ২০০১ সালের নির্বাচনে ৪০ দশমিক ৯৭ শতাংশ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ৩৩ দশমিক ২০ শতাংশ। আর বিগত নির্বাচনে ভোটের পরিসংখ্যান বলছে জামায়াতের ভোট কমেছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াত ভোট পেয়েছে ১২ দশমিক ১৩ শতাংশ ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ ২০০১ সালের নির্বাচনে ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট পায় ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ।

বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের মতে আওয়ামী লীগের প্রায় ১৭ বছরের দুঃশাসনে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ ছিল যার ফলাফল গত বছরের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান। ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেশের সাধারণ জনগণও জুলাই আগস্ট আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছিল। যে কারণে আওয়ামী লীগের আগের ভোটের হারের সঙ্গে বর্তমান অবস্থা মেলানো যাবে না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ভোট সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হতে পারে এমন আলোচনা আছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।


৩০০ আসনের জন্য ১৪৮৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে এনসিপি শুরু করল বিশেষ কার্যক্রম

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৪:০৮:১৪
৩০০ আসনের জন্য ১৪৮৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণে এনসিপি শুরু করল বিশেষ কার্যক্রম
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কার্যক্রম শুরু করেছে। রবিবার ২৩ নভেম্বর সকালে রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়।

দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন দেশে ৩০০টি আসনের জন্য এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৪৮৪ জন মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তিনি আরও জানান দেশের ১০টি বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের আলাদা আলাদা করে মতবিনিময় করা হবে এবং তাঁদের ধাপে ধাপে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলা এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে এবং আগামী ২৪ নভেম্বর শেষ হবে।

মতবিনিময় সভায় মনোনয়নপ্রার্থীদের যোগ্যতা দক্ষতা রাজনৈতিক দর্শন সাংগঠনিক সক্ষমতা এবং জনগণের সঙ্গে সংযোগের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রার্থী নির্বাচনের প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন করবে এনসিপি। দল আশা করছে স্বচ্ছ উন্মুক্ত ও নীতিনিষ্ঠ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের স্বার্থ রক্ষায় সক্ষম যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন সম্ভব হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মুখ্য সমন্বয়ক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সিনিয়র সদস্য সচিব ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি ডাক্তার তাসনিম জারা মুখ্য সংগঠক উত্তরাঞ্চল সারজিস আলম এবং মতবিনিময় সভার কো অর্ডিনেটর আব্দুল্লাহ আল আমিন। এছাড়া ঢাকা চট্টগ্রাম কুমিল্লা খুলনা রংপুর রাজশাহী সিলেট ময়মনসিংহ ফরিদপুর ও বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা মিডিয়া উপ কমিটির প্রধান মাহাবুব আলম।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত