মোদি সরকারের গোপন ক্ষতি ফাঁস

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ৩০ ০৮:৫৩:২৩
মোদি সরকারের গোপন ক্ষতি ফাঁস

প্রথমবারের মতো ভারতের একজন শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে, পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক বড় ধরনের সামরিক সংঘাতে ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আয়োজিত একটি প্রতিরক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভারতের নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন শিব কুমার এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ৭ মে পাকিস্তান এয়ারফোর্সের (PAF) সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতের কয়েকটি জেট ভূপাতিত হয়। তবে তিনি ঠিক কতটি বিমান ভূপাতিত হয়েছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। কেবল উল্লেখ করেন, “যত বলা হচ্ছে, ততটা নয়।”

দ্য ওয়ায়ার সূত্রে জানা যায়, ক্যাপ্টেন কুমার এই ক্ষতির জন্য ভারতের সামরিক ব্যর্থতাকে নয়, বরং রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব শুরুতে পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু না করার কড়া নির্দেশ দিয়েছিল, যার ফলে পাকিস্তানের জন্য ‘অপারেশনাল সুবিধা’ তৈরি হয়। তার ভাষায়, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে কাজ করে যা আমাদের প্রতিবেশী কিছু দেশের মতো নয়।”

এই মন্তব্য ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, ‘অপারেশন সিদুঁর’ চলাকালে কতগুলো বিমান হারানো হয়েছে সে বিষয়ে সত্য গোপন রেখে সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে।

পাকিস্তান আগে থেকেই দাবি করে আসছে যে, ওই সংঘর্ষে তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ছিল ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নবসংযোজিত ফ্রান্স থেকে আমদানি করা রাফালে জেট। এই ঘটনার পর ভারত কৌশল পরিবর্তন করে প্রথমে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিস্ক্রিয় করে এবং পরে ব্রাহ্মোস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে পাল্টা হামলা চালায় বলে জানান কুমার।

এই সামরিক উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে যখন ভারত-অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের পাহেলগামে এক পর্যটকবাহী বাসে হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও ইসলামাবাদ তা প্রত্যাখ্যান করে এবং একে ভিত্তিহীন রাজনৈতিক অভিযোগ বলে উল্লেখ করে।

ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহানও সিঙ্গাপুরে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “কতগুলো বিমান হারিয়েছি সেটা মুখ্য নয়, বরং কেন হারিয়েছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।” তার এই মন্তব্য এবং ক্যাপ্টেন কুমারের স্বীকারোক্তি দুটিই ভারতের প্রতিরক্ষা নীতির কার্যকারিতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।

দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে এই সংঘাত সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় সামরিক উত্তেজনা হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত স্থিতিশীলতাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত শুধু একটি মুহূর্তিক উত্তেজনা নয়, বরং এটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের গভীরে থাকা দীর্ঘস্থায়ী আস্থাহীনতা এবং রাজনীতিক-সামরিক ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার প্রতিফলন।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত