ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, যেন আঁকাবাঁকা কাব্য! ভারতের ব্রিজ দেখে চমকে উঠলেন সবাই

ভারত ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১৮:২৪:৩২
ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, যেন আঁকাবাঁকা কাব্য! ভারতের ব্রিজ দেখে চমকে উঠলেন সবাই

সরকারি প্রকল্পে অব্যবস্থাপনা নতুন কিছু নয়—কিন্তু সেই গাফিলতির জন্য প্রকৃত দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ একটি বিরল ঘটনা। ঠিক এমনই ব্যতিক্রম ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। রাজ্যের রাজধানী ভোপালে নির্মাণাধীন একটি রেলওভার ব্রিজে (আরওবি) অস্বাভাবিক ৯০ ডিগ্রির বাঁক ঘিরে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠলে মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ওই ওভারব্রিজটি নির্মাণ করা হয় ভোপালের ঐশবাগ এলাকায়। কিন্তু নকশাগত একটি তীব্র বাঁক—যেটা গাড়ি চলাচলের জন্য বিপজ্জনক ও অনুপযুক্ত—দেখে স্থানীয় বাসিন্দা এবং নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। শুরু হয় প্রশ্ন—এমন ডিজাইন অনুমোদন পায় কীভাবে? চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকে রাজ্য প্রশাসনের ওপর।

প্রেক্ষিতে শনিবার (২৯ জুন) মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব তার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে জানান, ব্রিজ নির্মাণে অবহেলা ও নকশাগত ত্রুটি তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তদন্তে প্রকল্পে দায়ী হিসেবে চিহ্নিত হন আটজন প্রকৌশলী। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়—এদের মধ্যে দুজন চিফ ইঞ্জিনিয়ারও রয়েছেন। আর এক অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।

শুধু তাই নয়, এই নির্মাণ কাজে যুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ডিজাইন পরামর্শদাতা সংস্থাকেও কালো তালিকাভুক্ত (ব্ল্যাকলিস্ট) করা হয়েছে। এভাবে একযোগে প্রশাসনিক ও পেশাগত ব্যবস্থা গ্রহণ ভারতের অভ্যন্তরীণ প্রকল্প জবাবদিহিতার এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, যতক্ষণ না ব্রিজটির বিপজ্জনক বাঁক সংশোধন ও পুনর্নির্মাণ সম্পন্ন হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত এর উদ্বোধন করা হবে না। তিনি এ ত্রুটির কারিগরি বিশ্লেষণ ও সমাধানের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করেছেন।

রাজনীতিক, প্রকৌশল মহল ও নাগরিক সমাজের অনেকে মনে করছেন, এই ঘটনাটি শুধু একটি ব্রিজ নয়, বরং সুশাসন ও জবাবদিহির প্রশ্নে ভারতের আঞ্চলিক প্রশাসনের সামনে এক নতুন ধারা তৈরি করতে পারে। এমন দৃষ্টান্ত আশা জাগায়—জনগণের দাবি ও সোচ্চার কণ্ঠে যদি সাড়া দেয় প্রশাসন, তবে গাফিলতিও শোধরানো সম্ভব।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত