"রপ্তানি থেমে গেল ৩,৬৮০ কনটেইনার, শাটডাউনে অচল চট্টগ্রাম বন্দর"

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১৫:৫৪:৪৭
"রপ্তানি থেমে গেল ৩,৬৮০ কনটেইনার, শাটডাউনে অচল চট্টগ্রাম বন্দর"

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার দাবিতে কাস্টমস কর্মকর্তাদের চলমান ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনেও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ কার্যত অচল। রোববার (২৯ জুন) এই অচলাবস্থার কারণে একদিনেই রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে ৩ হাজার ৬৮০ একক কনটেইনার পণ্য, যা দেশের রপ্তানি ইতিহাসে এক দিনে সবচেয়ে বেশি কনটেইনার আটকে যাওয়ার রেকর্ড।

চট্টগ্রামের মাধ্যস্থ কনটেইনার ডিপো থেকে এসব কনটেইনার তিনটি জাহাজে তুলে বিদেশে পাঠানোর কথা ছিল। রপ্তানিযোগ্য এসব পণ্যের বেশিরভাগই তৈরি পোশাক শিল্পখাতের—যেখানে সময়মতো ডেলিভারি না হলে ক্রেতা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়।

বেসরকারি কনটেইনার ডিপো মালিকদের সংগঠন (বিকডা)-এর মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার জানান, “কাস্টমস কর্মকর্তারা না থাকায় শুল্কায়ন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। ফলে কোনো কনটেইনার বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না।” তিনি আরও জানান, বন্দরজেটিতে দাঁড়িয়ে থাকা ‘এএস সিসিলিয়া’, ‘এক্সপ্রেস নিলওয়ালা’ ও ‘হং ডা জিন-৬৮’ নামের তিনটি জাহাজ এখন রপ্তানি কনটেইনার ছাড়া বন্দরে অলস পড়ে আছে।

এই তিনটি জাহাজে যথাক্রমে ৫৬৪, ১,৪৬০ এবং ১,৬৬৬ একক কনটেইনার রপ্তানির পরিকল্পনা ছিল। বিশেষ করে ‘এএস সিসিলিয়া’ জাহাজটি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক শিপিং জায়ান্ট Mediterranean Shipping Company (MSC) পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটির হেড অব অপারেশন অ্যান্ড লজিস্টিকস আজমীর হোসেন চৌধুরী জানান, “ডিপো থেকে কনটেইনার না আসায় জাহাজ ছাড়তে পারছে না।”

শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, “প্রথমে কারখানা থেকে পণ্য ডিপোতে আসে, তারপর শুল্কায়নের মাধ্যমে বন্দরে পাঠানো হয়। কিন্তু কাস্টমস শাটডাউনে পুরো চেইন এখন থমকে আছে।”

উল্লেখ্য, গত ১২ মে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি অধ্যাদেশ জারি করে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠন করে। এরপর থেকেই এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেন। মাঝে একবার ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশ সংশোধনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। তবে ২২ জুন থেকে আবারও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করে কর্মসূচি শুরু হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ও আজ সারাদেশে কাস্টমস, কর ও মূসক অফিসে চলছে কর্মবিরতি। এই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে চট্টগ্রাম বন্দরে—যেখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০০ কোটি টাকার শুল্ক আদায় হয় এবং দেশের আমদানি-রপ্তানির সিংহভাগ সম্পন্ন হয়।

এখন প্রশ্ন—এই অচলাবস্থা কতদিন চলবে? এবং তা দেশীয় অর্থনীতিতে কত গভীর প্রভাব ফেলবে?

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত