মুরাদনগরে ধর্ষণ: মামলা করে এখন তুলতে চান ভিকটিম! কারণ..

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১৫:৩১:৫৪
মুরাদনগরে ধর্ষণ: মামলা করে এখন তুলতে চান ভিকটিম! কারণ..

কুমিল্লার মুরাদনগরে চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৯ জুন) রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমদ খাঁন।

ঘটনার পেছনের প্রেক্ষাপট অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ফজর আলীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিন ধরে। ঘটনার রাতে বাড়িতে একা থাকা অবস্থায় ফজর আলী কৌশলে প্রবেশ করেন। এরপর স্থানীয় একদল যুবক দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মারধর ও ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ৫৭ সেকেন্ড ও ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের দুটি ভিডিওতে দেখা যায়, কাপড় পরতে না দেওয়ার পাশাপাশি ওই নারীকে অপমানজনক অবস্থায় ধারণ করে ভিডিওকারীরা। ঘটনায় পুলিশ শুরু থেকেই সক্রিয়ভাবে অনুসন্ধান চালিয়ে আসছিল।

ধর্ষণের পাশাপাশি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে একটি ধর্ষণ মামলা এবং আরেকটি পর্নোগ্রাফি ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে। পুলিশ জানিয়েছে, যদি ভুক্তভোগী মামলা না করেন, তাহলে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা করবে।

ভুক্তভোগীর বক্তব্যে উঠে এসেছে নানা দ্বিধাদ্বন্দ্ব। তার মা জানিয়েছেন, ঘটনার পর তার জামাতা বিদেশ থেকে ফোনে পরামর্শ দেন মামলা না করার জন্য, যাতে পারিবারিক সম্মান ও সংসার রক্ষা পায়। একই সঙ্গে তিনি জানান, ফজর আলী তাদের বাড়িতে যাতায়াত করতেন টাকার লেনদেনের কারণে, যদিও তার ভাই এ যোগাযোগে আপত্তি জানিয়েছিলেন। ভুক্তভোগী নিজেও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি স্বামীকে ধরে রাখতে চাইছেন বলেই মামলা উঠিয়ে নিতে চান।

রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। একসময় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে কাজ করা ফজর আলী, সরকার পতনের পর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে মিশতে শুরু করেন। ফলে তাকে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুরু হয়।

এ ঘটনায় কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, ফজর আলীকে গ্রেপ্তারের পর তার চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।

উল্লেখযোগ্য যে, এই ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে উত্তেজনা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। ভুক্তভোগীর বক্তব্য ও পারিবারিক চাপ, ভিডিও ভাইরাল হওয়া এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা সব মিলিয়ে এটি এখন একটি জটিল আইনি ও সামাজিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত