শান্তর অভিমানে যে বার্তা থাকলো ক্রিকেট বোর্ডের জন্য

খেলা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১০:০৬:৩৯
শান্তর অভিমানে যে বার্তা থাকলো ক্রিকেট বোর্ডের জন্য

বাংলাদেশ জাতীয় দলের টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত হঠাৎ করেই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার কলম্বো টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আর টেস্ট দলের নেতৃত্বে থাকছেন না। এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে বিসিবির (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) সঙ্গে তার দূরত্ব, হতাশা এবং সম্মানজনক আলোচনার ঘাটতি। বোর্ড তার সঙ্গে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পরিবর্তনের বিষয়েও আলোচনা করেনি, বরং শ্রীলঙ্কা সফরের আগে হঠাৎ করেই মেহেদী হাসান মিরাজকে ওয়ানডে অধিনায়ক ঘোষণা করে বিসিবি। নাজমুলের অভিযোগ, এসব সিদ্ধান্ত বোর্ড তার সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই নিয়েছে, যা তাকে হতাশ করেছে এবং অধিনায়কত্ব ছাড়তে মানসিকভাবে প্রভাবিত করেছে।

টেস্টে দুইটি সেঞ্চুরি করার পর নাজমুল বিসিবিকে জানিয়েছিলেন, তিনি নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চান। কিন্তু বিসিবির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া আসেনি, এমনকি বিষয়টি নিয়ে কোনো রকম সংবেদনশীল আলোচনা বা ব্যাখ্যা দেয়ারও প্রয়োজন মনে করা হয়নি। বিসিবি সভাপতি তখন রংপুরে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন, আর জাতীয় দল কলম্বোতে হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। এর মাঝেই সংবাদ সম্মেলনে দাঁড়িয়ে নাজমুল জানান, তিনি আর অধিনায়ক নন।

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল মন্তব্য করেছেন, 'এখানে কোচ, নির্বাচক, ম্যানেজার আছেন। তাদের দায়িত্ব এগুলো দেখা। আমি তো সব সময় মাঠে থাকতে পারি না। তারা চাইলে আমাকে কাজে লাগাতে পারে।' বোর্ডের এমন দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া ও খেলোয়াড়ের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা না করাকে পেশাদারিত্বহীন বলে মনে করছেন অনেকেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় দলের এক খেলোয়াড় মন্তব্য করেন, ‘শান্তর সঙ্গে আলোচনা করে ওয়ানডে অধিনায়ক বদল করা হলে এমন কিছু হতো না। তাকে সম্মান দেখানো হলে সে কষ্ট পেত না।’

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম অবশ্য বলেন, শান্তর সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু তিনি ধারণা করেছিলেন যে শান্ত হয়তো এ সিরিজ শেষে অধিনায়কত্ব ছাড়বেন না। তিনি বলেন, ‘নেতৃত্ব তার ভালো লাগছে না হয়তো। সিদ্ধান্তটা তার ব্যক্তিগত। তবে সে না থাকলেও দলের জন্য কাজ করে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’

তবে এ ঘটনাগুলো বিসিবির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দেয়। একজন অধিনায়ককে অবহেলায় হারিয়ে ফেলা শুধু একটি দায়িত্ব নয়, এটা একজন খেলোয়াড়ের আত্মমর্যাদার জায়গায়ও আঘাত করে। বোর্ডের উচিত ছিল, একজন সিনিয়র ক্রিকেটারের মানসিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে তাকে সম্মানজনকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করা। খেলোয়াড়দের সঙ্গে বোর্ডের সম্পর্ক যতটা পেশাদার এবং মানবিক হবে, ততটাই জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ শক্তিশালী হবে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ