জামায়াতের ৩৯ দিনের ব্যাপক কর্মসূচি ঘোষণা, যা থাকছে 

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৮ ১৪:২৭:২৯
জামায়াতের ৩৯ দিনের ব্যাপক কর্মসূচি ঘোষণা, যা থাকছে 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে ৩৯ দিনের ব্যাপক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে ঢাকার মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের রক্তাক্ত ঐতিহাসিক স্মৃতি আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই গণআন্দোলন শুধু রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থার রূপান্তর নয়, বরং একটি সর্বজনীন রাজনৈতিক জাগরণের প্রতীক। আমরা সেই ঐতিহাসিক আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে তা ছড়িয়ে দিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছি।”

ঘোষিত কর্মসূচির শুরু ১ জুলাই, শেষ ৮ আগস্ট। কর্মসূচিতে রয়েছে স্মরণ, দোয়া, সেবামূলক কার্যক্রম, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, এবং সেমিনার ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনীর মতো বহুবিধ আয়োজন।

প্রথম দিন (১ জুলাই) দেশব্যাপী জামায়াতের শাখাগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে শহীদদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠান। এরপর ২ থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত অসহায়, দরিদ্র ও ইয়াতিমদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে।

৮ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত নেতারা শহীদ ও আহতদের পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করবেন। ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদকে কেন্দ্র করে রংপুরে হবে আলোচনা সভা।

সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় সমাবেশ, যা অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। একই দিনে জামায়াত আমির অংশ নেবেন শহীদ পরিবারের জন্য আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে।

২০ থেকে ২৪ জুলাই গণআন্দোলনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রত্যাশা বিষয়ে সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম হবে। এরপর ২৫ থেকে ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে গণঅভ্যুত্থানভিত্তিক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

নারী ও ছাত্রীদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে ২৯ ও ৩০ জুলাই। ১ আগস্ট মোড়ক উন্মোচন হবে শহীদ স্মারকের ইংরেজি ও আরবি অনুবাদের। একইসঙ্গে ১ থেকে ৩ আগস্ট ছাত্রদের উদ্যোগে আলোকচিত্র প্রদর্শনী চলবে।

সবচেয়ে বিস্তৃত কর্মসূচি ৫ আগস্ট দেশব্যাপী গণমিছিল এবং জাতীয় ও স্থানীয় রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ। শেষ তিন দিন (৬-৮ আগস্ট) আলোচনায় বসবেন সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী ও আলেম-ওলামারা।

জামায়াতের এই কর্মসূচি একদিকে সংগঠনটির পুনর্জাগরণমূলক প্রয়াস, অন্যদিকে একটি সুসংগঠিত রাজনৈতিক বার্তা যেখানে গণআন্দোলনের আদর্শ ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ভবিষ্যৎ রাজনীতির রূপরেখা তৈরির ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ আয়োজন এবং পেশাজীবী শ্রেণির অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে দলটি একটি বৃহৎ সামাজিক ঐক্য তৈরির প্রয়াস নিচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিকে সামনে রেখে এ কর্মসূচি কেবল স্মরণে সীমাবদ্ধ নয়, বরং রাজনৈতিক সক্রিয়তা ও আদর্শিক প্রাসঙ্গিকতা জোরদার করাও এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

এই কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন এবং প্রতিক্রিয়া জামায়াতের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল ও অবস্থান নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে অভিমত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত