টিউলিপ সিদ্দিক বনাম দুদক: ‘রাজনৈতিক নয়, দুর্নীতি মামলার লড়াই’

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এবং তাঁর আইনজীবীর সমালোচনা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, তাঁরা নিজেদের দেশকে ছোট করছেন এবং ব্রিটেনের রাজনীতিকে দুর্বল প্রমাণ করছেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর দুদক প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, "আমরা ব্রিটেনের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছি না। ব্রিটেন কি এতটাই ভঙ্গুর যে, একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হলেই তাদের গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা ধসে পড়বে?" তিনি টিউলিপের আইনজীবীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, "শব্দচয়নে সচেতন না হলে সেটি নিজেদের দেশকেই ছোট করে দেখায়।"
সম্প্রতি টিউলিপের পক্ষ থেকে দুদককে পাঠানো এক চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, দুদক ও অন্তর্বর্তী সরকার ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। এর জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, "চিঠি-পত্র দিয়ে নয়, টিউলিপকে অন্যান্য অভিযুক্তদের মতো আদালতে এসে মামলা মোকাবেলা করতে হবে। এটি কোনো রাজনৈতিক মামলা নয়, ব্যক্তিগত দুর্নীতির অভিযোগ।"
তিনি আরও জানান, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশানে একটি সরকারি প্লট ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের মাধ্যমে অবৈধভাবে হস্তান্তরের বিনিময়ে ঘুষ হিসেবে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে দুদক ১৫ এপ্রিল তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে এবং ২২ জুন তাঁকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে। এর আগে ১৪ মে প্রথমবার তাঁকে তলব করা হয়েছিল।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “টিউলিপ আমাদের কাছে বাংলাদেশি নাগরিক। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র ও টিআইএন আছে। সুতরাং বাংলাদেশে করা মামলার মুখোমুখি তাঁকে হতেই হবে।” তিনি আরও দাবি করেন, টিউলিপ গোড়া থেকেই বিষয়টি জানতেন, তাই তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরে যেতে হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা চলমান এবং অনুপস্থিত থাকলেও বিচার চলবে।
এর আগে ২৩ জুন টিউলিপ সিদ্দিক এক উকিল নোটিশে অভিযোগ করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও দুদক তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে কাজ করছে এবং ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে।
—সত্য নিউজ/আশিক
নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কমিশনের সম্পৃক্ততা নেই: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে আয়োজিত কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায় ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ২০টি আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ১১টিতে কোনো ভিন্নমত ছিল না, আর বাকি ৯টিতে নোট অব ডিসেন্টসহ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের একটি বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কমিশন এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
স্থানীয় শাসন ব্যবস্থায় সংসদ সদস্যদের প্রভাব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, এটি আইনত বৈধ নয়। প্রাথমিক আলোচনায় যে ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তার মধ্যে স্থানীয় সরকারে সংসদ সদস্যদের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যেসব বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট আছে, সেগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা ও বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে। পাশাপাশি, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের গুরুত্বও বিবেচনায় রাখতে হবে।
কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনের কথা বললেও আলী রীয়াজ পুনরায় স্পষ্ট করেন, কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
/আশিক
চীনের রোবোটিক অঙ্গ পেলেন জুলাই বিপ্লবের আহতরা
জুলাই বিপ্লবে আহত হয়ে হাত-পা হারানো অসংখ্য মানুষের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে চীনের দেওয়া উন্নতমানের রোবোটিক অঙ্গ। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, এই প্রযুক্তি শুধু শারীরিক সক্ষমতা ফেরাতেই সাহায্য করছে না, বরং আহতদের আত্মবিশ্বাস ও স্বনির্ভরতা ফিরিয়ে দিচ্ছে। তার ভাষায়, চীন বাংলাদেশের শুধু উন্নয়ন অংশীদার নয়, সংকটমুহূর্তে নির্ভরযোগ্য ও দীর্ঘস্থায়ী বন্ধু।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বনানীর হোটেল সারিনায় অনুষ্ঠিত ‘নি হাও! চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উন্নয়ন প্রদর্শনী-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। প্রদর্শনীটির আয়োজন করে বেল্ট অ্যান্ড রোড হেলথকেয়ার সেন্টার।
নূরজাহান বেগম জানান, চীনের সহায়তায় রংপুরে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, দক্ষ নার্স ও অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানদের সেবা থাকবে। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপনেও চীনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। চীনের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে তা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে এবং স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের উন্নয়ন ঘটবে।
অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি ও উন্নত হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় চীনের সুনাম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে চীন একটি টেকসই ও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো গড়ে তুলতে চায়। মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণ করে তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই চীনা চিকিৎসক দল বাংলাদেশে এসে সেবা প্রদান করেছে এবং ভবিষ্যতেও চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
প্রদর্শনীতে অংশ নেয় চীনের ১০টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল, যারা অন-সাইট ও অনলাইন চিকিৎসা পরামর্শ, চিকিৎসা ভিসার আমন্ত্রণপত্র, দ্রুত প্রসেসিং, অনুবাদক সহায়তা এবং বিমানবন্দর থেকে রোগী পিকআপের মতো সেবা দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
দিনব্যাপী আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে স্বাস্থ্য প্রশাসনের প্রতিনিধি, চিকিৎসক, রোগী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন, যা চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সহযোগিতাকে আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যাশা জাগিয়েছে।
-শরিফুল
প্রথমবারের মতো বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরাও দিতে পারবেন ভোট
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যেসব নাগরিক ১৮ বছর পূর্ণ করবেন, তাদের নাম ভোটার তালিকায় যুক্ত করা হবে। অর্থাৎ, তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নবম কমিশন সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, "ভোটার তালিকা আইনে সামান্য সংশোধন করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী এবার বছরের মাঝামাঝি সময়েও ভোটার অন্তর্ভুক্তি সম্ভব হচ্ছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ হবে, তারা তালিকায় যুক্ত হবেন। এতে প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ নতুন তরুণ ভোটার যোগ হতে পারে।"
নির্বাচন কমিশনার জানান, প্রবাসীদের জন্য ‘সিম্বল ব্যালট’ চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যালটে শুধু প্রার্থীর প্রতীক থাকবে। প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর সেই তালিকা দেখে প্রবাসীরা পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে ভোট দিতে পারবেন। ব্যালট পাঠানোর জন্য পোস্ট অফিসের সহায়তা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “প্রার্থীর নামসহ ব্যালট পাঠালে তা পাঠাতে ১৮ থেকে ২৮ দিন সময় লাগবে। তাই শুধু প্রতীক সম্বলিত ব্যালট পাঠানো হবে যাতে সময় বাঁচে।”
তিনি জানান, এবার তিন ধরনের ভোটার পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন—প্রবাসীরা, কারাবন্দিরা ও ভোটের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা। এদেরকে আগেই নিবন্ধন করতে হবে।
সানাউল্লাহ বলেন, “প্রচার এবং ভোটার শিক্ষা কার্যক্রম সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে।” তবে তিনি জানান, যদি শেষ মুহূর্তে আদালতের আদেশে কোনো প্রার্থী পরিবর্তন হয়, সে ক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালটে সেই কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে না।
ডিসেম্বরের শুরুতেই নির্বাচনী তফসিল, ফেব্রুয়ারির আগেই ভোট
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই। ভোটগ্রহণ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির আগেই। এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত নবম কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভাটি সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে।
কমিশনার সানাউল্লাহ জানান, “ডিসেম্বরের প্রথম ভাগেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। সেই অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির আগেই ভোটগ্রহণ শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন।”
তিনি আরও জানান, সভায় নির্বাচনী আচরণবিধি, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, প্রবাসী ভোটারদের ভোটগ্রহণের পদ্ধতি এবং নির্বাচনে প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ড্রোন নয়, সিসিটিভিতে আগ্রহ কমিশনের
ভোটের সময় ড্রোন ব্যবহারের বিষয়ে সানাউল্লাহ বলেন, “নির্বাচনে কেউই ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে না, এমনকি গণমাধ্যমও নয়। কমিশনের পক্ষ থেকেও ড্রোন ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা দেখা যাচ্ছে না।” তবে তিনি জানান, ভোটকেন্দ্রে নজরদারির জন্য সিসিটিভি ব্যবহারে কমিশনের আগ্রহ রয়েছে, যদিও এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালট
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে কমিশন এবার পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি ব্যবহার করবে। ভোটের অন্তত তিন সপ্তাহ আগে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের কাছে ব্যালট পাঠানো হবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মাধ্যমে। এ প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন এবং ডাক বিভাগ যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানান সানাউল্লাহ।
অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার: সুষ্ঠু নির্বাচন
অন্যদিকে, আজ দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূস বলেন, “একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করাই সরকারের প্রধান কাজ।” সভা শেষে তার প্রেসসচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন ৫ আগস্ট তার প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ থেকে শুরু হলো দ্বিতীয় অধ্যায়, যার মূল লক্ষ্য নির্বাচন আয়োজন।”
এর আগে গতকাল (৬ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি পাঠিয়ে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির রমজানের আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনে সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধ সম্পন্ন হয়েছে।
/আশিক
সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দুর্নীতি দূর করার প্রতিশ্রুতি বাণিজ্য উপদেষ্টার
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের ভেতরে বিদ্যমান দুর্নীতি হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এই কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিগত এক বছরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সফল হয়েছি। তবে শুধু অর্জন নয়, আগামী দিনের লক্ষ্য হলো দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলা।”
তিনি আরও জানান, “আগামী নির্বাচনের আগেই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবো। সেইসঙ্গে জ্বালানি সংকট নিরসনে যেসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তা ইতোমধ্যে মধ্যবর্তী ধাপে পৌঁছেছে।”
শেখ বশিরউদ্দীনের মতে, নির্বাচন সামনে রেখে অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও জ্বালানি খাতে দৃশ্যমান উন্নয়ন আনাই সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, “আমরা একটি স্বচ্ছ ও টেকসই প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তি রেখে যেতে চাই, যাতে জনগণের আস্থা আরও সুদৃঢ় হয়।”
/আশিক
অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায়ে প্রধান লক্ষ্য যা থাকছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, আজ থেকে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হলো। এই নতুন অধ্যায়ের মূল লক্ষ্য হচ্ছে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর সোয়া দুইটার দিকে রাজধানীর সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
প্রেস সচিব জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ড. ইউনূস বলেছেন- প্রথম অধ্যায়ে সরকারের প্রধান কাজ ছিল প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা ও নীতিগত কাঠামো গড়ে তোলা, যা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন দ্বিতীয় ধাপে মূল ফোকাস থাকবে রাজনৈতিক শান্তি, গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং সর্বোপরি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম করা।
বিস্তারিত আসছে...
১২ মাসে সরকারের ১২ সাফল্য তুলে ধরলেন প্রেস সচিব
৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের পর শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের মাধ্যমে দেশে নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হয়। আগামীকাল শুক্রবার সেই সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। এ উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সরকারের উল্লেখযোগ্য অর্জন তুলে ধরেছেন।
ফেসবুকে প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি সরকারের ১২টি উল্লেখযোগ্য সাফল্যের তালিকা তুলে ধরেন। এতে রয়েছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, মানবাধিকার উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদারসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের অগ্রগতি।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা
জুলাই বিপ্লবের পর দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা ও প্রতিশোধের চক্র বন্ধ হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার পুনর্মিলন ও গণতন্ত্রের পথে জাতিকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখে।
অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন
অর্থনীতিতে অবনতি ঠেকিয়ে ইতিবাচক ধারা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে, সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি নেমেছে ৮.৪৮ শতাংশে—যা গত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। রেমিট্যান্স এসেছে রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার, রপ্তানি বেড়েছে ৯ শতাংশ, টাকার মান ডলারের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে, ব্যাংক খাতেও স্থিতিশীলতা এসেছে।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অগ্রগতি
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখযোগ্য হানদা গ্রুপের ২৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগে প্রায় ২৫ হাজার কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) আগের সরকারের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে। চীনা বিনিয়োগকারীরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
রাজনৈতিক সংস্কার ও ঐক্য
৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়েছে। গঠিত হয়েছে সংস্কার কমিশন। ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত হয়েছে, যা ভবিষ্যতের গণতন্ত্র রক্ষায় একটি কাঠামোগত রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করবে।
বিচার ও আইনের শাসন
জুলাই-আগস্টের সহিংসতার ঘটনায় চারটি বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও বিচার শুরু হয়েছে। এতে আইন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
নির্বাচন সংস্কার ও প্রস্তুতি
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রবাসী, নারী ও নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতি চলছে।
প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনগত সংস্কার
বিচার বিভাগ: স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়ে বিচারক নিয়োগ।
পুলিশ: মানবাধিকার ইউনিট, বডি ক্যাম, স্বচ্ছ জিজ্ঞাসাবাদ ব্যবস্থা চালু।
আইন: সিভিল ও ক্রিমিনাল প্রসিডিউরে সংস্কার; গ্রেফতারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানানো, আইনজীবী ও চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম ও ডিজিটাল অধিকার
দমনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার হয়েছে। প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
বৈদেশিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত
একক নির্ভরতা থেকে সরে বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে রূপান্তর ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইইউসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও সহযোগিতা বেড়েছে। সার্ক পুনরুজ্জীবন এবং আসিয়ান সদস্যপদ অর্জনের জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রবাসী ও শ্রমিক কল্যাণ
আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায় ভিসা পুনরায় চালু, অনিবন্ধিত শ্রমিকদের বৈধতা, ১ লাখ কর্মীকে জাপানে পাঠানোর পরিকল্পনা ও নতুন দেশগুলোতে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিপ্লবীদের সহায়তা
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের সহায়তায় আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ৭৭৫ শহীদ পরিবারকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা এবং ১৩,৮০০ আহত বিপ্লবীকে ১৫৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহতদের জন্য বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
সমুদ্রসম্পদ ও অবকাঠামো উন্নয়ন
বঙ্গোপসাগরকে জাতীয় সম্পদ ঘোষণা করে জলভিত্তিক অর্থনীতির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় উন্নয়ন, গভীর সমুদ্র মৎস্য প্রকল্পে বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই সাফল্যগুলোর মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার এক বছরের মধ্যে একটি অন্তর্নির্ভরশীল, স্বচ্ছ এবং জনমুখী শাসনব্যবস্থা গঠনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
/আশিক
সচিবালয়ে কড়া নিরাপত্তায় প্রধান উপদেষ্টার উপদেষ্টা পরিষদ সভা
দ্বিতীয়বারের মতো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অংশ নিতে সচিবালয়ে এসেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে তিনি সচিবালয়ের ৫ নম্বর গেট (প্রেস ক্লাবের দিক) দিয়ে প্রবেশ করেন।
তার আগমন ঘিরে সচিবালয়জুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বৈঠকটি সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় সচিবালয়ের নতুন নির্মিত ১ নম্বর ভবনের ৫ম তলায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে। এতে সভাপতিত্ব করছেন ড. ইউনুস এবং উপস্থিত রয়েছেন অন্যান্য উপদেষ্টারা।
সকাল থেকেই সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি লক্ষ করা গেছে। একমাত্র ১ নম্বর গেট দিয়ে যানবাহন প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। সেখানে সোয়াত সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। এছাড়া সচিবালয়ের ভিতরে ও বাইরের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী।
সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়িও ভেতরে ঢুকতে পারেনি। এমনকি সচিবালয় কাভার করা সাংবাদিকদেরও বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।
নতুন ভবনের সামনে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে, আর ভবন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। সকাল থেকেই ওই ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্য কাউকে ভবনের আশপাশে যেতে দেওয়া হয়নি।
গত বছরের ২০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের ১৩ তলায় উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম সভা পরিচালনা করেন ড. ইউনুস। পরে রাষ্ট্রীয় বাসভবন যমুনায় বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংস্কারের পর সেটিকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। এরপর থেকে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক সেখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আজকের বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টা সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি আলাদা বৈঠক করতে পারেন বলে জানা গেছে। সেখানে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে দিকনির্দেশনা দিতে পারেন।
/আশিক
১৭ বছরের দানবীয় বিআরটি প্রকল্প: বিদেশি ঋণে জর্জরিত সরকার
বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প বাস্তবায়নে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বিদেশি ঋণ নিলেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। মূলত সমন্বয়হীন পরিকল্পনা, নকশায় ত্রুটি এবং বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার কারণে এই প্রকল্প এখন সরকারের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকল্পের চার দফা সংশোধনের পরও কাজ শেষ না হওয়ায় আরও এক দফা অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা প্রকল্পটিকে ১৭ বছর মেয়াদী এক 'দানবীয় উদ্যোগ'-এ পরিণত করেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
২০১২ সালে ‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (জিডিএসইউটিপি)’ নামে প্রকল্পটি শুরু হয়। এর আওতায় গাজীপুর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিআরটি করিডোর নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল, যাতে নির্দিষ্ট লেনে দ্রুত, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব বাস চলাচল সম্ভব হয়।
প্রকল্পের মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ছিল ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। কিন্তু তিনবার সংশোধনের পর ব্যয় দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকায়। সম্প্রতি আরও এক দফা অর্থ বৃদ্ধির প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৬ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা (এএফডি)-এর কাছ থেকে।
তবে প্রকল্পের কাজ শেষ না হলেও রেয়াতকাল শেষে এখন থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু করতে হবে। এতে করে প্রকল্প থেকে উপকার না পেয়েই অর্থ পরিশোধের দায়ে পড়েছে সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো বাস্তবায়ন হলে ঋণটি যথার্থ হতো। কিন্তু এখন এই প্রকল্প সরকারের জন্য আর্থিক ও প্রশাসনিক চাপ তৈরি করছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “বিআরটি প্রকল্প এখন এমন এক পর্যায়ে এসেছে, যেখানে থামানো বা এগিয়ে নেওয়া—দুটোই জটিল সিদ্ধান্ত। অনেক টাকা ব্যয় হয়ে গেছে, কিন্তু এখনও পরিবহন বাস চালু হয়নি। অবকাঠামো এমনভাবে তৈরি হয়েছে, যাতে পথচারীরা ফুটপাত ব্যবহার করতে পারবে না, রাস্তায় হেঁটে পারাপারও সম্ভব নয়। এমন অসংগতি প্রকল্প পরিকল্পনার শুরুতেই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “পরামর্শক নিয়োগের সময় চুক্তিতে থাকে, প্রকল্প সফল বা ব্যর্থ হলে তাদের দায় নেই। কিন্তু যারা এই পরামর্শক নিয়োগ দেয়, তাদের দায় তো থেকেই যায়। আর যখন বিদেশি ঋণ থাকে, তখন প্রকল্প শেষ করার বাড়তি চাপও তৈরি হয়।”
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানায়, ২০১২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এডিবি ও এএফডি’র সঙ্গে চারটি ঋণচুক্তি হয়েছে। মোট ঋণ প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এই ঋণের সুদ ২ শতাংশ, যার সঙ্গে ম্যাচুরিটি ও কমিটমেন্ট চার্জও যুক্ত রয়েছে। পাঁচ বছরের রেয়াতকাল শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে।
এদিকে, প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকারের চারটি সংস্থা—সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, সেতু কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট পিএলসি। কিন্তু চার দফা সংশোধনের পরও প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৬৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি মাত্র ৭৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
ইআরডির সাবেক সচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, “যে উদ্দেশ্যে ঋণ নেওয়া হয়েছিল, তা যদি পূরণ না হয়, তাহলে সেই ঋণ বোঝায় পরিণত হয়। সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় এখন একদিকে ঋণ শোধ করতে হচ্ছে, অন্যদিকে প্রকল্পের সুফলও মিলছে না।”
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সাম্প্রতিক এক বৈঠকে চতুর্থ সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলেও তা অনুমোদন পায়নি। বরং প্রকল্পটির খুঁটিনাটি মূল্যায়নের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি)। এর মধ্যেই মে মাস পর্যন্ত ২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
পরিস্থিতি এখন এমন যে, প্রকল্পটি বন্ধ করা যেমন সম্ভব নয়, আবার পূর্ণ বাস্তবায়নেও দরকার অতিরিক্ত কয়েক হাজার কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের মতে, এই ধরনের অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিত প্রকল্প দেশের আর্থিক সক্ষমতার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। এখন সময় হয়েছে—এই প্রকল্পের দায় কে নেবে, সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজে বের করার।
/আশিক
পাঠকের মতামত:
- লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের হুমকি, প্রাণ সংকটে কপিল শর্মা
- যারা নির্বাচনে ভয় পায়, তারাই পিআর পদ্ধতি চান: শামসুজ্জামান দুদু
- তারেক রহমানই দেশের আগামী প্রধানমন্ত্রী: মির্জা ফখরুল
- গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে
- মাসিক আয় থেকে সঞ্চয় করার সহজ ছয়টি উপায়
- অন্তর্বর্তী সরকারের আট উপদেষ্টার দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ আছে:সাবেক সচিব সাত্তার
- রাজশাহীতে ১২টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়া
- ফেসবুক প্রেমে ফাঁদ, ৯ কোটি রুপি হারালেন বৃদ্ধ
- গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যায় সাতজন গ্রেফতার
- বড় কিছু নিয়ে ফিরছেন শাকিব খান, ভক্তদের জন্য বিশেষ বার্তা দিলেন
- নাসির উদ্দিন: মানুষের আস্থা হারিয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা
- আওয়ামী লীগ ও ভারতের স্বার্থে বাংলাদেশে দাঙ্গা দরকার: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
- ছবিতে প্রথমে যা দেখলেন, সেটাই বলে দেবে আপনার চরিত্র
- সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে সরকারের নির্ধারিত ২৭ টাকার সার বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়
- উপেক্ষার জবাব হ্যাটট্রিকের মাধ্যমে দিলেন রোনালদো
- আলাস্কায় পুতিন-ট্রাম্প সাক্ষাৎ: কূটনৈতিক ইতিহাসের নতুন অধ্যায়
- দুই কারণ সামনে রেখে গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যা ঘটনায় তদন্ত
- চীনে প্রথমবার হিউম্যানয়েড রোবট পিএইচডিতে ভর্তি
- হাইপোথাইরয়েডিজম নিয়ন্ত্রণ করে জীবনে ফিরুন প্রাণবন্ততা
- ইসরায়েলি দখল পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিল ইরাক
- বেতন বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনের ঘোষণা
- নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কমিশনের সম্পৃক্ততা নেই: আলী রীয়াজ
- ছয় বছর পর ড্যাবের ভোটযুদ্ধ আজ, চিকিৎসক মহলে উত্তেজনা
- ১৮ হল কমিটি গঠনের পর বিক্ষোভ, ঢাবি উপাচার্যের কড়া বার্তা
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: ধ্বংসের ছায়া থেকে নতুন বিশ্বব্যবস্থার উত্থান
- মোদিকে গোপন পরামর্শ দেবেন নেতানিয়াহু
- খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিদ্রুপকারী পেলেন ছাত্রদলের পদ
- আসন্ন নির্বাচনে গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার অঙ্গীকার তারেক রহমানের
- জামায়াতের ‘পিআর’ কৌশলে নির্বাচন বিলম্বের অভিযোগ হাফিজ উদ্দিনের
- সুরা আল-বাকারার উল্লেখযোগ্য ঘটনা ও বিষয়বস্তু বিস্তারিত জানুন
- কিশমিশের পানির বহুমুখী উপকারিতা: স্বাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যের সঙ্গী
- ভক্তদের উদ্দেশ্যে রহস্যময় বার্তা শাকিব খানের
- ক্রিকেটের তীর্থক্ষেত্রের স্মৃতি ঘরে তোলার বিরল সুযোগ
- চীনের রোবোটিক অঙ্গ পেলেন জুলাই বিপ্লবের আহতরা
- কানাডায় কপিল শর্মার রেস্তোরাঁয় ফের গুলিবর্ষণ
- যানবাহন পানিতে পড়লে বাঁচার উপায়: বিশেষজ্ঞের জরুরি পরামর্শ
- গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডের আপডেট
- বয়স থেমে গেছে ৪০-এ! আর মাধবনের ২১ দিনের তারুণ্যের গোপন রহস্য
- নিজের আয়ের হিসাব দিলেন এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ
- শেখ হাসিনার প্রেতাত্মা এখনো সক্রিয়: জয়নুল আবদিন ফারুক
- ট্রাম্প বলেন, “খুব হতাশ”
- কলকাতায় গোপন কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সাংগঠনিক পুনর্গঠন
- ভারতের পণ্যে উচ্চ শুল্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য সুবর্ণ সুযোগ নাকি সীমিত সম্ভাবনা?
- হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.): ন্যায়, প্রজ্ঞা ও বিশ্বনেতৃত্বের এক স্বর্ণযুগ
- চীনের অর্থনৈতিক নীরব বিপ্লব: পশ্চিমা একপক্ষীয় বিশ্বনীতির অবসানের সংকেত
- ‘সাইয়ারা’কে ছাড়িয়ে অ্যানিমেটেড সিনেমা ‘মহাবতার নরসিংহ’র বক্স অফিস ঝড়
- আদালতে দীপু মনিকে কঠোর ভাষায় দুষলেন কলিমউল্লাহ
- ‘চাঁদাবাজি’র ভিডিও পোস্টের পর খুন হলেন গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিন
- ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার ‘শুল্ক হামলা’! কাঁপছে ভারতীয় অর্থনীতি
- শেখ হাসিনার পতনের পর কূটনীতি ও নিরাপত্তার কঠিন প্রশ্নগুলো
- গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: মুক্তির স্বপ্ন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের চ্যালেঞ্জ
- ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের মনোবিশ্লেষণমূলক পাঠ: একটি প্রজন্মের অবচেতনের বিস্ফোরণ
- জামায়াতের ‘পিআর’ কৌশলে নির্বাচন বিলম্বের অভিযোগ হাফিজ উদ্দিনের
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: ধ্বংসের ছায়া থেকে নতুন বিশ্বব্যবস্থার উত্থান
- ভারতের ওপর ২৫% শুল্ক বৃদ্ধিতে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ
- ৫ আগস্ট ছুটি ঘোষণা: কোন কোন সেবা পাবেন, কোনগুলো বন্ধ থাকবে
- হুয়াংহে নদীর তীরে এক মহাজাতির উত্থান: চীনা সভ্যতার আদিগন্ত ইতিহাস
- প্রধান উপদেষ্টা: "জুলাই শহীদদের স্বপ্নই হবে আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ভিত্তি"
- যুক্তরাষ্ট্রে শাকিব-বুবলীর সময় কাটানো নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস
- চীনের অর্থনৈতিক নীরব বিপ্লব: পশ্চিমা একপক্ষীয় বিশ্বনীতির অবসানের সংকেত
- তালেবানের আফগানিস্তান: ধ্বংসস্তূপ থেকে অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ
- বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ‘জুলাই জাগরণ’-এ জনতার ঢল
- শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত!
- কলাপাড়ার ইলিশ মোকামে ফের গর্জন, ঘাটে জমে উঠল ক্রেতার ভিড়