ফের যতদিনের রিমান্ডে শাজাহান খান, সালমান, আনিসুল হক

২০২৫ জুন ২৩ ১৩:০১:৩০
ফের যতদিনের রিমান্ডে শাজাহান খান, সালমান, আনিসুল হক

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সংঘটিত বহুল আলোচিত সাজেদুর রহমান ওমর হত্যা মামলায় দেশের সাবেক ও বর্তমান উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (২৩ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম শুনানি শেষে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বর্তমান নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে দুই দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

এছাড়া একইদিন যাত্রাবাড়ীতে সংঘটিত আরেকটি হত্যা মামলায় (রিটন উদ্দিন হত্যা) ঢাকা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। তবে যাত্রাবাড়ীর রাসেল হত্যা মামলায় তার রিমান্ড আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে বিএনপি আয়োজিত মহাসমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) সোহাইলের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ২১ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন ছাত্র-জনতার সঙ্গে একাত্ম হয়ে সাজেদুর রহমান ওমর। আন্দোলনের একপর্যায়ে রাজনৈতিক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন ওমর। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। এরপর ২০২৪ সালের ৩ জানুয়ারি সৈয়দ তানভীর আহমেদ বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন। এতে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ৮১ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই উপ-পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম মীর শুনানিতে তিন বিশিষ্ট রাজনীতিকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন, আদালত অনুমোদন দেন দুই দিন করে।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর যৌথ উদ্যোগে একটি বৃহৎ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উদ্দেশ্য ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন, দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের প্রতিবাদ। সেই সমাবেশে অংশ নেওয়া বদরুল ইসলাম সায়মন গুলিবিদ্ধ হন। অভিযোগে বলা হয়, হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে গুলি চালিয়ে সায়মনকে হত্যা করতে চেয়েছিল। ঘটনার প্রায় ছয় মাস পর, ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল তিনি নিজে পল্টন মডেল থানায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) সোহাইল অন্যতম অভিযুক্ত। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিমান তরফদার তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলেও আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানা এলাকাকে ঘিরে সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে রিটন উদ্দিন ও রাসেল নামে দুই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর দু’জনই মারা যান। এ ঘটনায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। রিটন হত্যা মামলায় সাবেক এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। তবে রাসেল হত্যা মামলায় তার রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দেন আদালত।

এদিন মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় কুষ্টিয়া-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। পাশাপাশি, পল্টন থানার রমজান মিয়া জীবন হত্যা মামলায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, হত্যা এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় রিমান্ড ও গ্রেপ্তারের আদেশ নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা এবং চলমান আন্দোলন-সংঘর্ষ কেন্দ্রিক মামলার তদন্ত ত্বরান্বিত করা প্রশাসনের কঠোর অবস্থানকেই প্রতিফলিত করছে। তবে এসব মামলা ও রিমান্ডের রাজনৈতিক ব্যাখ্যাও রয়েছে, যা দেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


মেজর সিনহা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে উঠে এল সেই রাতের রোমহর্ষক বর্ণনা

২০২৫ নভেম্বর ২৩ ২১:১৬:০১
মেজর সিনহা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে উঠে এল সেই রাতের রোমহর্ষক বর্ণনা
ছবিঃ সংগৃহীত

সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়া মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায় ঘোষণার প্রায় পাঁচ মাস পর রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৭৮ পৃষ্ঠার এই রায়টি প্রকাশ করা হয়। রাষ্ট্র বনাম মো. লিয়াকত আলী এবং অন্যান্য শিরোনামে এই রায়টি লিখেছেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

রায়ে সিনহা হত্যাকাণ্ডের বিশদ বিবরণ এবং সেই রাতের নৃশংসতার চিত্র উঠে এসেছে। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ওসি প্রদীপ মরণাপন্ন সিনহার বুকে লাথি মেরেছিলেন এবং বুট জুতা দিয়ে গলা চেপে ধরেছিলেন।

ঘটনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে রায়ে বলা হয় ২০১৮ সালে সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার পর সিনহা ভ্রমণবিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল জাস্ট গো এর জন্য তথ্যচিত্র বানাতে কক্সবাজারে গিয়েছিলেন। সেখানে ভিডিও তৈরির কাজের সময় তিনি ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের কাছ থেকে নানা অভিযোগ পান। এ নিয়ে তিনি ওসি প্রদীপের কাছে জানতে চাইলে প্রদীপ ক্ষিপ্ত হন এবং সিনহার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে এলাকা ছাড়তে বলেন।

হত্যাকাণ্ডের রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে রায়ে উল্লেখ করা হয় ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে সিনহা ও তাঁর সঙ্গীরা ভিডিও ধারণ শেষে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে গাড়ি থামানোর পর সিনহা হাত উঁচু করে নিজের পরিচয় দেন। ঠিক তখনই লিয়াকত আলী শ্যুট শ্যুট বলে সিনহাকে লক্ষ্য করে পরপর চার রাউন্ড গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ সিনহা মাটিতে পড়ে গেলে তাঁকে হাতকড়া পরানো হয়। এ সময় সিনহা পানি চাইলে লিয়াকত তাঁকে গালি দেন এবং কোমরে লাথি মারেন।

এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে আসেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। উপুড় হয়ে পড়ে থাকা মরণাপন্ন সিনহার কাছে গিয়ে প্রদীপ বলেন অনেক টার্গেট করে তোকে মেরেছি। তখন সিনহা প্রদীপের কাছেও পানি চান। কিন্তু পানি না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে প্রদীপ সিনহার বাঁ বুকে কয়েকটি লাথি মারেন এবং বুট জুতা দিয়ে তাঁর গলার বাঁ দিকে চেপে ধরেন। এতে সিনহার শরীর কাঁপতে কাঁপতে এক পর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে যায়। এভাবেই ওসি প্রদীপ মেজর সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করেছিলেন বলে ঘটনার বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য চলতি বছরের ২ জুন বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের বেঞ্চ বিচারিক আদালতের রায় বহাল রেখে এই রায় দিয়েছিলেন। এর আগে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি বিচারিক আদালত ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের আপিল খারিজ করে সেই দণ্ডই বহাল রাখা হয়েছে।


শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না

২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১২:১১:০৩
শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না
ছবি: সংগৃহীত

গুম, খুন, নির্যাতন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের একাধিক মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ ঘোষণা দেন।

ট্রাইব্যুনালে আগমনের পর জেড আই খান পান্না বলেন, একজন আইনজীবী হিসেবে তিনি ন্যায়বিচারের স্বার্থে এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়াতে চান। তার ভাষায়, “প্রতিটি আসামির ন্যায়বিচার পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। উচ্চপর্যায়ের মামলা হলেও আইনের চোখে সবই সমান। আমি মনে করি, আদালতে তার পক্ষে দাঁড়ানো আইনজীবী হিসেবে আমার পেশাগত ও নৈতিক দায়িত্ব।”

তিনি আরও বলেন, মামলাগুলো অত্যন্ত গুরুতর এবং দেশ-বিদেশে আলোচিত হওয়ায় সঠিক আইনি প্রক্রিয়া ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষা উপস্থাপন করা প্রয়োজন। তিনি ট্রাইব্যুনালের অনুমতি ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন জানাবেন।

ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সংঘটিত অভিযোগসমূহ নিয়ে সাক্ষ্য–প্রমাণ সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবৃতি গ্রহণ এবং তদন্ত প্রতিবেদন পেশের কাজ জোরদার হয়েছে। মামলাগুলোর ব্যাপ্তি, চরিত্র এবং প্রভাব বিবেচনায় এটি বাংলাদেশের বিচার ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জেড আই খান পান্নার এই ঘোষণা রাজনৈতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও বিচারিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপই এখন গভীর মনোযোগের কেন্দ্রে, এবং এই মামলাগুলোর রায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও নীতিনির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।

আইনজীবী পান্না বলেন, “আইনই সর্বোচ্চ। ন্যায়বিচারই আমার লক্ষ্য। আদালতে প্রমাণের ভিত্তিতেই সব সিদ্ধান্ত হবে এটাই আমাদের সাংবিধানিক পথ।”

বর্তমানে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং শিগগিরই পরবর্তী শুনানির তারিখ ঘোষণা করা হবে।

-শরিফুল


নাসা চেয়ারম্যানকে কালো দরবেশ ডেকে আদালতে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল

২০২৫ নভেম্বর ২০ ২১:৪৯:০৮
নাসা চেয়ারম্যানকে কালো দরবেশ ডেকে আদালতে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল এম আসাদুজ্জামান। ছবি : পুরোনো

নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল এবং মালিককে গুম করার মতো গুরুতর অভিযোগে দায়ের করা মামলার রিভিউ আবেদন মঞ্জুর করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর ফলে গুলশানের একটি বাড়ি জালিয়াতি করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে করা মামলাটির আইনি কার্যক্রম আবারও সচল হলো। আপিল বিভাগ জানিয়েছে, আগের রায়ের বিরুদ্ধে এখন পুনরায় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আদালতে শুনানিকালে অ্যাটর্নি জেনারেল এম আসাদুজ্জামান অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম মজুমদারকে ‘কালো দরবেশ’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি মন্তব্য করেন, দেশে দুজন দরবেশের অস্তিত্ব ছিল—একজন সাদা এবং একজন কালো। এই মামলার নজরুল ইসলাম মজুমদার হলেন সেই ‘কালো দরবেশ’, যিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল তাকে ‘অলিগার্ক’ বা বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত গোষ্ঠী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এদের কারণেই দেশের আজকের এই অবস্থা।

মামলার শুনানিতে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল আদালতকে জানান, তিনি মূল মামলার আইনজীবী ছিলেন। কিন্তু তাকে অন্ধকারে রেখে বাদীর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, বাদীকে গুম করে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক মামলাটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছিল। আরেক সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম এই বক্তব্যের সমর্থন করে বলেন, পিটিশনার বা বাদীকে কুখ্যাত ‘আয়নাঘরে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে অস্ত্রের মুখে তাকে দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের কাগজে সই করানো হয়। অপমান ও ভয়ের কারণে পরে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।

মামলার প্রেক্ষাপট থেকে জানা যায়, রাজধানীর বনানীর বাসিন্দা আনোয়ারুল কবির খান ‘এ আর এ জুট ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেড’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। তার বাবা অগ্রণী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন এবং এর বিপরীতে গুলশানের বাড়িটি বন্ধক ছিল। ঋণ খেলাপি হওয়ার পর নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নজর পড়ে ওই সম্পত্তির ওপর। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে একটি ভুয়া সমঝোতা দলিল তৈরি করেন, যেখানে বিদেশে থাকা পরিবারের সদস্যদেরও স্বাক্ষর দেখানো হয়।

ভুক্তভোগী আনোয়ারুল কবির খান গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে দেওয়া অভিযোগে জানান, জালিয়াতির বিরুদ্ধে তিনি দুদক ও আদালতে গিয়েছিলেন। বিষয়টি আপিল বিভাগে বিচারাধীন থাকাকালে নজরুল ইসলাম মজুমদার তাকে মামলা না চালানোর জন্য হুমকি দিতে থাকেন। এক রাতে তাকে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের চেম্বারে এবং পরে হাইকোর্টের নিচতলায় নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিভিন্ন কাগজে সই নেওয়া হয়। তাকে বলা হয়েছিল, এগুলো মামলা প্রত্যাহারের আবেদন। সবশেষে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে, তাদের অনুমতি ছাড়া তিনি যেন দেশ ত্যাগ না করেন। আজকের আদেশের ফলে দীর্ঘদিনের সেই অন্যায়ের বিচার পাওয়ার পথ নতুন করে উন্মুক্ত হলো।


জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ ঘোষণা, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৭:১২:০৭
জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ ঘোষণা, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, সেটিকে ‘ঐতিহাসিক রিপোর্ট’ বা দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই রায়টি প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত বছরের আগস্ট মাসে অভ্যুত্থান চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের দেওয়া প্রতিবেদনটিকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ এই বিষয়ে জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করেছিলেন। সেই রিটের রুল শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় প্রদান করেন। রায়ের বিস্তারিত অংশে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনটিকে জাতীয় ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালত তার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনটিকে ‘জুলাই বিপ্লব-২০২৪’ শিরোনামে সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এই ইতিহাসের সাক্ষ্য পৌঁছে দিতে জাতীয় আর্কাইভ এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি পাবলিক লাইব্রেরিসহ সব রাষ্ট্রীয় সংরক্ষণাগারে এটি সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি, একাডেমিক বা শিক্ষাজীবনে গবেষণা এবং আইনি প্রয়োজনে যাতে এই দলিলটি সহজে পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে প্রতিবেদনটি সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশের জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে জুলাই অভ্যুত্থানের সময়কার মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্রটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংরক্ষিত হবে।


সময়সীমা পার হলে কী হবে? শেখ হাসিনার আপিল নিয়ে প্রসিকিউটরের ব্যাখ্যা

২০২৫ নভেম্বর ১৮ ২১:৪৮:০৬
সময়সীমা পার হলে কী হবে? শেখ হাসিনার আপিল নিয়ে প্রসিকিউটরের ব্যাখ্যা
প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। ছবি- সংগৃহীত

জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্তদের আপিল করার আইনি সময়সীমা ও প্রক্রিয়া নিয়ে আজ মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।

প্রসিকিউটর জানান, রায় ঘোষণার দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যেই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল আইনের ২১(৩) ধারায় বিষয়টি স্পষ্ট করা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল দাখিল করতে হবে। এই নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলে আর কোনো আপিল গ্রহণ করা হবে না। এছাড়া আইনের ২১(৪) ধারা অনুযায়ী, আপিল দায়ের করার পর তা ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বিধান রয়েছে।

সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনা যদি ৩০ দিনের মধ্যে দেশে না ফেরেন এবং তিন মাস পর ফিরে এসে আপিল করতে চান, তবে তা সম্ভব হবে কি না? জবাবে প্রসিকিউটর ব্যাখ্যা দেন যে, সাধারণ ফৌজদারি আইনে সময়সীমা পার হয়ে গেলে 'ডিলে কন্ডোনেশন' বা বিলম্ব মওকুফ করার সুযোগ থাকে। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল আইন একটি বিশেষ আইন। এখানে সময়সীমা কঠোরভাবে নির্ধারিত থাকায় বিলম্ব মওকুফের কোনো সুযোগ নেই। তাই ৩০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলে আপিলের রাস্তাও বন্ধ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তারা যখনই গ্রেফতার হবেন বা আত্মসমর্পণ করবেন, তখনই রায় কার্যকর হবে।

তিনি আরও স্পষ্ট করেন, আইন অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্তদের যা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার, তা এই ৩০ দিনের ভেতরেই নিতে হবে। এই সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া রায় চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং তা কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে। আপিল বিভাগের 'কমপ্লিট জাস্টিস' বা পূর্ণাঙ্গ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষমতা থাকলেও, বিশেষ আইনে নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করার পর আবেদন গ্রহণের সুযোগ থাকে না।

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এখন জামিন চাইতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে গাজী মোনাওয়ার জানান, ট্রাইব্যুনাল একবার দণ্ড ঘোষণা করার পর এই আদালতে আসামিদের আর কোনো আবেদন করার সুযোগ থাকে না। এখন তারা কেবল রায়ের বা সাক্ষ্য-নথির সার্টিফাইড কপি (অনুলিপি) সংগ্রহ করতে পারবেন। এরপর এই নথিগুলো নিয়ে আপিল বিভাগে আপিল করার সময়ই কেবল জামিনের আবেদন করা যাবে।

অন্যদিকে, সাবেক আইজিপি মামুনের পাঁচ বছরের সাজাকে 'অপ্রতুল' বা কম মনে করছেন জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা। তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে প্রসিকিউটর জানান, সংক্ষুব্ধ পক্ষ বা বাদীরাও চাইলে আইন মেনে ওই ৩০ দিনের মধ্যেই আপিল বিভাগে যেতে পারবেন।


হাসিনার আইনজীবীর বিস্ময়কর স্বীকারোক্তি

২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১০:৩৯:৪৫
হাসিনার আইনজীবীর বিস্ময়কর স্বীকারোক্তি
ছবি: সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষণার ঘণ্টাখানেক আগে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পলাতক ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার বিচার স্বচ্ছভাবে হয়েছে এবং শেখ হাসিনা খালাস পেলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। তার ভাষায়, একজন আইনজীবী হিসেবে নিজের মক্কেলের খালাস চাওয়া স্বাভাবিক প্রত্যাশা।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি কোনো যোগাযোগের চেষ্টা করেননি এবং আইনি কাঠামো অনুযায়ী তার সেই সুযোগও নেই। আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা কিংবা তার পক্ষ থেকে কেউ কোনো ধরনের সহায়তাও করেননি। প্রচ্ছন্ন সহায়তাও পাননি। এমনকি চাইলে করাও যেত না, কারণ বিচার-প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এমন যোগাযোগের বিধান নেই।

আইনজীবী আমির হোসেন জানিয়েছেন, দীর্ঘ মাস ধরে তিনি নিজের মক্কেলের জন্য লড়েছেন এবং সেই কারণে তার একমাত্র প্রত্যাশা হলো শেখ হাসিনার খালাস। তার ভাষায়, একজন আসামির জন্য যতদিন মামলা লড়েছেন, সেই ব্যক্তির খালাস পাওয়ার আনন্দ তার নিজের জন্যও বিশেষ এক তৃপ্তি হবে।

রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, মামুন তার মক্কেল নন এবং তিনি তাকে নিয়ে মন্তব্য করবেন না। আইনগত নৈতিকতার কারণে তিনি শুধুমাত্র নিজের ক্লায়েন্ট সম্পর্কে কথা বলতে চান বলে জানান।

সাক্ষীদের জেরা, দালিলিক প্রমাণ, তদন্ত প্রতিবেদন ও রাষ্ট্র–ডিফেন্স উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আজ রায় ঘোষণা হবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমে তার দেওয়া সাক্ষাৎকার এবং ডিফেন্সের যুক্তি পরস্পরের সঙ্গে কোথাও কোথাও মিলে গেছে কিনা—এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আমির হোসেন বলেন, উভয় পক্ষ তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। বিচার করবে ট্রাইব্যুনাল।

এদিকে শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল এবং সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা কয়েক স্তরে বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবি এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তৎপর। জননিরাপত্তার কারণে দোয়েল চত্ত্বর থেকে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। জনসচেতনতা বিবেচনায় চলাচল সীমিত করা হয়েছে পুরো এলাকায়।

এই মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয় গত মে মাসে। ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য এবং জেরা শেষ হয়। ৯ কার্যদিন ধরে চলে ডিফেন্স–প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তিখণ্ডন। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রনিযুক্ত ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন শেষ বক্তব্য উপস্থাপনের পর বিচারপতিরা রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন।

প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের সর্বোচ্চ সাজার আবেদন করেছে। অন্যদিকে রাজসাক্ষী হওয়ায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের রায় ট্রাইব্যুনালের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। তার আইনজীবী খালাস চেয়েছেন। ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন অবশ্য আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছেন যে শেখ হাসিনা ও কামাল খালাস পাবেন বলে তিনি মনে করেন।

এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকা দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।

-রফিক


শেখ হাসিনাদের রায় সরাসরি দেখতে পাবেন যেভাবে

২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১২:৩২:৫২
শেখ হাসিনাদের রায় সরাসরি দেখতে পাবেন যেভাবে
ছবি: সংগৃহীত

চব্বিশের জুলাই–আগস্টে সংঘটিত ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থান দমন করতে গিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে দায়ের করা বহুল আলোচিত মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা হবে আগামীকাল সোমবার। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) রায়টি সরাসরি সম্প্রচার করবে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গত ১৩ নভেম্বর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এই রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন। তার সঙ্গে বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আগস্ট-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে এই রায়কে দেশ–বিদেশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই মামলায় মোট পাঁচটি অভিযোগ এনে শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন প্রসিকিউশন। প্রসিকিউটরদের মতে, রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষ, ছাত্রসমাজ এবং নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, গুম, নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালানো হয়েছিল।

অন্যদিকে, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন আসামিদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাই আসামিদের সম্পূর্ণ খালাস প্রদান ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা নেই।

এ মামলায় গুরুত্বপূর্ণ মোড় আসে যখন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হন। তিনি আদালতে ঘটনাবলির সত্যতা, প্রশাসনের ভেতরে থেকে পরিচালিত নির্দেশাবলি এবং দমননীতি বাস্তবায়নের নানা দিক সম্পর্কে বিস্তৃত জবানবন্দি দেন। তার পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এস এইচ তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, শাইখ মাহদি ও আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ দলীয় আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তারা সাক্ষ্য, নথিপত্র, ভিডিও প্রমাণ, ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও গণঅভ্যুত্থানকালীন ঘটনাবলি তুলে ধরে আদালতকে জানায় যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতা, নিহত ও নিখোঁজদের স্বজনরা, আহত বিক্ষোভকারীরা এবং প্রত্যক্ষদর্শী নাগরিকরা। স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। তাদের সাক্ষ্য এই মামলার রায়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে দলীয় ক্যাডার, সরকারি প্রশাসনের একটি অংশ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও নির্বিচার হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই প্রেক্ষাপটেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অভিযোগের বিচার চলমান রয়েছে।

-রফিক


সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন হলে কী হবে জানালেন শিশির মনির

২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১০:২২:৫০
সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠন হলে কী হবে জানালেন শিশির মনির
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি হওয়াকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করছেন জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ শিশির মনির। শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া বিশ্লেষণে তিনি মন্তব্য করেন এ আদেশ জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার সরাসরি প্রয়োগের পথ উন্মুক্ত করেছে।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বৃহস্পতিবার জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি করেন। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদিত হয়। জাতীয় সনদের বিভিন্ন দিক, বাস্তবায়ন কাঠামো ও রাজনৈতিক গুরুত্ব জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ব্যাখ্যা করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে ঘোষণা দেন যে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। সময় হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ। তিনি বলেন, চারটি বিষয়ে গণভোট হবে; তবে ব্যালটে থাকবে মাত্র একটি প্রশ্ন হ্যাঁ বা না।

গণভোটে জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ মত ‘হ্যাঁ’ হলে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যদের দিয়েই গঠিত হবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ। এই পরিষদকে প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে হবে।

এই কাঠামোকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অভূতপূর্ব আখ্যা দিয়ে শিশির মনির বলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় প্রথমবারের মতো জনগণই সরাসরি সাংবিধানিক সংস্কারের ম্যান্ডেট দিতে যাচ্ছে। তাঁর ভাষায়, এটি ১০৬ অনুচ্ছেদের বিকল্প নয়; বরং জনগণের সার্বভৌমাধিকার প্রয়োগের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া।

তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ফলে রাষ্ট্রপতি–প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ চালু, অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির প্রয়োগ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জোরদার, নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি এবং স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়নের মতো কাঠামোগত পরিবর্তন আসবে।

জুলাই সনদ অনুযায়ী, উচ্চ কক্ষ হবে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট; দলগুলোর মোট ভোটের আনুপাতিক ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে আসন বণ্টন। এতে ক্ষুদ্র দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে এবং একক দলীয় আধিপত্য কমে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিত করার প্রস্তাবটিকে শিশির মনির বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তাঁর মতে, দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতায় একক দল বা ব্যক্তি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করে; নতুন প্রস্তাব সে ঝুঁকি কমাবে।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন এগুলো কার্যকর হলে দেশের শাসন কাঠামো আরও সুশাসনমুখী হবে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার প্রস্তাবও গণতন্ত্রের গভীরতর রূপায়নে সহায়ক হবে।

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম হয়েছে। বিএনপি ইতিমধ্যে জরুরি বৈঠক ডেকেছে; অন্যান্য দলগুলোর মধ্যেও পরামর্শ-সমন্বয় চলছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ আগামী নির্বাচনের ফলাফল ও পরবর্তী রাজনৈতিক স্থিতি নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন গণভোটের বিষয়গুলো মোটামুটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের জায়গা থেকে এসেছে। তবে জনগণ ‘হ্যাঁ’ না ‘না’ বলবেন, সে সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে দেশের ভবিষ্যৎ সাংবিধানিক স্থাপত্য কেমন হবে।

এদিকে, আইনবিদ শিশির মনির তাঁর পোস্টে মন্তব্য করেন এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় আইনজীবী সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও নাগরিকদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে, যেন সংস্কারের স্বচ্ছতা ও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ নিশ্চিত হয়।


অনুপস্থিত থাকলেও খালাস পাবেন হাসিনার আইনজীবী আশাবাদী

২০২৫ নভেম্বর ১৩ ১৮:৫৬:৪৫
অনুপস্থিত থাকলেও খালাস পাবেন হাসিনার আইনজীবী আশাবাদী
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত ও ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আগামী সোমবার ১৭ নভেম্বর ঘোষণা করা হবে।

বিচারপতি মো গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ বৃহস্পতিবার এই মামলার রায়ের দিন ধার্য করেন।

অভিযুক্ত ও সাজা আবেদন

এই মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামির মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন একমাত্র গ্রেপ্তার হয়ে ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থিত ছিলেন। তবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এখনো পলাতক রয়েছেন।

মামলার প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অভিযুক্তদের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, রাষ্ট্রনিযুক্ত শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন জানান, তিনি আশা করছেন ট্রাইব্যুনাল আসামিদের খালাস দেবেন।

আইনজীবীর বক্তব্য ও বিচার প্রক্রিয়া

আইনজীবী আমির হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আসামিদের অনুপস্থিতিতেও তিনি নিজের সর্বোচ্চ যুক্তি তুলে ধরেছেন। বিচার প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন

"আমি বিচারের কোনো অস্বস্তি দেখিনি। আমাকে কেউ বাধা দেয়নি, আমি আমার সীমাবদ্ধতার মধ্যে যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি। মামলা পরিচালনায় যে সহযোগিতা লাগে যেমন দলিল-দস্তাবেজ, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আইন অনুযায়ী আমাকে দেওয়া হয়েছে। যে সব ডকুমেন্ট পেয়েছি তার আলোকেই আমাকে কাজ করতে হয়েছে।"

রায় ঘোষণাকারী এই প্যানেলের নেতৃত্ব দেবেন বিচারপতি মো গোলাম মর্তুজা মজুমদার। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি সফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত