যুক্তরাষ্ট্র কি রোহিঙ্গা সংকটে এবার সত্যিই পাশে থাকবে?

যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সম্প্রতি মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার ল্যান্ডোর সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, বাণিজ্য-শুল্ক আলোচনা এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের ভবিষ্যৎ রূপরেখা বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়।
বৈঠকটি নিরাপত্তা উপদেষ্টার নিজস্ব ফেসবুক পেজে জানানো হয়, যেখানে একে "উৎপাদনশীল এবং কৌশলগত অগ্রগতির দিকে ধাবিত একটি সংলাপ" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাক্ষাতে ড. খলিলুর রহমান কক্সবাজারে অবস্থানরত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান চাপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যথাযথ ভূমিকা ছাড়া এ সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যান্ডো বিষয়টিকে "মানবিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু" হিসেবে আখ্যা দেন এবং ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে সমস্যার টেকসই সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাতের পাশাপাশি সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন খলিলুর রহমান। বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক শুল্ক কাঠামো সহজীকরণ, টেক্সটাইল ও রপ্তানি খাতে কর হ্রাস এবং ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট (TIFA)–এর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।
উভয় পক্ষই এ বৈঠককে "গঠনমূলক ও পারস্পরিক স্বার্থে সহায়ক" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
আলোচনায় বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়েও গুরুত্বপূর্ন মতবিনিময় হয়। ল্যান্ডো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, নির্বাচন ও নাগরিক অংশগ্রহণ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাক।"
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত বর্তমান সরকারের প্রয়াসের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী কূটনৈতিক সমর্থনের আশ্বাস দেন।
এই বৈঠকগুলো বাংলাদেশের জন্য একটি কৌশলগত কূটনৈতিক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট থেকে শুরু করে বাণিজ্যনীতি, গণতন্ত্র ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা সবকিছুতেই যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের আগ্রহ ও জড়িত থাকার ইঙ্গিত মিলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের সাক্ষাৎসমূহ ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে একবিংশ শতাব্দীর ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতায়।
-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ভোক্তার কষ্ট বুঝছে সরকার:বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান