ধর্ষণ মামলা থেকে বিয়ে- নোবেল কাহিনির নাটকীয় মোড়

ধর্ষণের অভিযোগে কারাবন্দি সঙ্গীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল ও মামলার বাদী ইডেন মহিলা কলেজের এক সাবেক শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্মতি ভিত্তিক বিবাহ সম্পাদনের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে রেজিস্ট্রি কাবিননামার মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে এবং এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কারা কর্তৃপক্ষকে আদালতকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
নোবেলের পক্ষে আদালতে দাখিল করা এক আবেদনপত্রে বলা হয়, তিনি ২০ মে থেকে কারাবন্দি। মামলার বাদীর সঙ্গে তার পূর্বপরিচয় ছিল এবং দুজনের মধ্যে সম্পর্কজনিত জটিলতা ও ভুল বোঝাবুঝির কারণেই মামলাটি দায়ের হয়। এখন দুই পক্ষই পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হতে ইচ্ছুক।
আদালত আবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে কারাগারে অবস্থানরত আসামি ও বাদীর মধ্যে আইনগত প্রক্রিয়ায় বিয়ে সম্পাদনের অনুমতি প্রদান করেন।
গত ১৯ মে দিবাগত রাতে রাজধানীর ডেমরা এলাকার একটি বাসা থেকে মাইনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অভিযোগ ছিল, ইডেন কলেজের সাবেক এক ছাত্রীকে তিনি স্টুডিও দেখানোর কথা বলে বাসায় নিয়ে যান এবং সেখানেই তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ, নির্যাতন ও ব্ল্যাকমেইল করেন। এমনকি ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে তা প্রকাশের হুমকিও দেন।
পুলিশের দাবি, এ সময় নোবেলের ২–৩ জন ঘনিষ্ঠ সহযোগীও ওই ঘটনায় সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রায় সাত মাস ধরে ওই বাসায় অবরুদ্ধ ছিলেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এই ঘটনা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে প্রকাশ্যে আসে।
ছাত্রীটির পরিবার একটি ভিডিও দেখে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন যেখানে নোবেলকে এক নারীকে টেনে হিঁচড়ে নামাতে দেখা যায়। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং নোবেলকে প্রযুক্তির সহায়তায় রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তারের আগে নোবেল সীমান্ত পেরিয়ে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করছিলেন এবং এ উদ্দেশ্যে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছিলেন।
মাইনুল আহসান নোবেল ২০১৮ সালে কলকাতার একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জনপ্রিয় সংগীত প্রতিযোগিতা ‘সারেগামাপা’তে অংশ নিয়ে দুই বাংলাতেই ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।এরপর তিনি বাংলাদেশ এবং ভারতের একাধিক সিনেমায় প্লে-ব্যাক গানের মাধ্যমে তার সংগীতজীবন বিস্তৃত করেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাকে ঘিরে একাধিক বিতর্ক সামনে এসেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর এই ধর্ষণ মামলা।
আদালতের নির্দেশে বিবাহ সম্পাদনের এই সিদ্ধান্ত একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত হলেও, এতে মামলার আইনগত গতিপথ শেষ হয়ে যায় না। বিয়ে কোনো অপরাধকে মুছে দেয় না এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে আদালতের এই পদক্ষেপ সামাজিক ও আইনগত স্তরে একটি নতুন আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান