রয়টার্স প্রতিবেদন

খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা রুখে দিলেন ট্রাম্প: রয়টার্স

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৬ ০৮:১২:৪৪
খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা রুখে দিলেন ট্রাম্প: রয়টার্স

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে একটি বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংস্থাটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার একটি ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা।

এই খবর এমন সময় প্রকাশ পেল, যখন ইসরায়েল ইরানে সামরিক অভিযানের প্রথম দিনেই দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব কর্মকর্তাকে হত্যা করে। একই হামলায় খামেনির একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাও নিহত হন। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং একটি বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়।

একজন মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “ইরান কি এখন পর্যন্ত কোনো মার্কিন নাগরিককে হত্যা করেছে? না। তাই তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে টার্গেট করার বিষয়ে আমরা আলোচনা পর্যন্ত করছি না।”

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার ফক্স নিউজ-কে বলেন, “অনেক সময় এমন সব বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়, যেগুলো কখনো আলোচনা পর্যন্ত হয়নি। আমি এই প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই না।” ফক্স নিউজের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’-এ নেতানিয়াহু আরও বলেন, “আমরা যা করা দরকার, তাই করি।”

তিনি আরও বলেন, ইরানে ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণের একটি সম্ভাব্য ফল হতে পারে সরকার পরিবর্তন। নেতানিয়াহু স্পষ্ট ভাষায় জানান, তেহরান থেকে আসা ‘অস্তিত্বের হুমকি’ দূর করতে ইসরায়েল প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে।

এদিকে এই সংঘাত বড় ধরনের আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরিস্থিতি সহজে সমাধানযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি ইরানকে সতর্ক করে বলেন, “যদি ইরান কোনো আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।”

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। এটি প্রমাণ করে, যুদ্ধের আগুন ছড়ানোর মুহূর্তে নেতৃত্বের একটি বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত কীভাবে পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। এখন বিশ্বের চোখ মধ্যপ্রাচ্যের দিকে—যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ যুদ্ধ এবং শান্তির ব্যবধান নির্ধারণ করতে পারে।


গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ২১:৩৪:৪১
গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘গণহত্যা ঠেকাতে’ দখলদার ইসরায়েলের ওপর পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্পেন। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশটির সরকার এ নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়ে ডিক্রি জারি করেছে।

নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত

স্প্যানিশ অর্থমন্ত্রী কার্লোস কুয়ার্পো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইসরায়েলে স্পেন কোনো সামরিক সরঞ্জাম, দ্বৈত-ব্যবহারের সামরিক পণ্য এবং প্রযুক্তি পাঠাবে না। এছাড়া স্পেনও এ ধরনের কোনো পণ্য বা প্রযুক্তি আমদানি করবে না।”

নিষেধাজ্ঞার আওতায় সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এমন বিমানের জ্বালানির অনুরোধও আটকে দিয়েছে স্পেন। সঙ্গে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলো থেকে আসা পণ্য আমদানি এবং সেগুলোর বিজ্ঞাপনও স্পেনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

স্প্যানিশ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র তৈরির ক্ষেত্রে স্পেনের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বড় পদক্ষেপ।”

আইনি ভিত্তি ও হতাহতের সংখ্যা

২০২৩ সালে গাজায় দখলদার ইসরায়েল বর্বরতা শুরুর পর স্পেন সরকার ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। যদিও বিভিন্ন ফাঁকফোকর থাকায় স্পেন থেকে ইসরায়েলে সামরিক কাজে ব্যবহৃত পণ্য গেছে। এতদিন যে নিষেধাজ্ঞাটি ছিল আজকের ডিক্রির মাধ্যমে সেটি ‘আইনি ভিত্তি’ পেয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মানুষ আটকে থাকায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ধারণার চেয়ে বেশি বলে আশঙ্কা করা হয়।

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও পশ্চিমতীরে ইসরায়েল তাদের অবৈধ বসতি নির্মাণ অব্যহত রাখায় যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ ১০টির বেশি দেশ দুইদিনের মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।

সূত্র: এএফপি


আজই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে আরও ৫ দেশ

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৯:১৩:৩৩
আজই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে আরও ৫ দেশ
ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের বার্ষিক সমাবেশের আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক সম্মেলনের মাধ্যমে আজই বেশ কয়েকটি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। দীর্ঘমেয়াদী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্স ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে এই সম্মেলন আয়োজন করা হবে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে যৌথভাবে এতে সভাপতিত্ব করবেন।

কোন কোন দেশ স্বীকৃতি দিচ্ছে

সম্মেলনে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা এবং সম্ভবত নিউজিল্যান্ড ও লিশটেনস্টাইন ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে। এর আগে, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং পর্তুগাল গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের মাঝে আন্তর্জাতিক ক্ষোভ সত্ত্বেও গাজায় আক্রমণ দ্বিগুণ করার পর ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে গতকাল রোববার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়।

ম্যাক্রোঁর ভূমিকা ও ‘গাজা পরিকল্পনা’

গত জুলাই মাসে ইউরোপজুড়ে এই প্রচারণার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পশ্চিমা দেশগুলোকে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এর আগে, ১২ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদ ‘গাজা পরিকল্পনা’ বা ‘নিউ ইয়র্ক ঘোষণাপত্র’ ব্যাপক ভোটে গৃহীত হয়। জুলাই মাসে ফ্রান্স এবং সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সম্মেলনে এটি প্রস্তাবিত হয়েছিল। ঘোষণাপত্রে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের ওপর ভিত্তি করে ‘ন্যায়সঙ্গত এবং স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অবস্থান

যদিও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল জুলাইয়ের ওই সম্মেলন বয়কট করে এবং এই মাসের শুরুতে ঘোষণার বিরুদ্ধেও ভোট দেয়।

এদিকে, জাতিসংঘ আশা প্রকাশ করেছে, এই শীর্ষ সম্মেলন ‘দুটি রাষ্ট্রের দিকে জাতিসংঘের রোডম্যাপ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় নতুন গতি সঞ্চার করতে পারে।’


মার্কিন নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলা

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১২:০৫:৫২
মার্কিন নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলা
লেবাননে ইসরায়েলি হামলা। পুরোনো ছবি

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিনত জবেইলে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় শিশুসহ অন্তত চার মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এই দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

লেবাননের দাবি ও নিহতদের পরিচয়

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় এক পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সেলিন, হাদি এবং আসিল নামের তিনজনই শিশু। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। সরকারি সংবাদ সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রোববারের ওই হামলাটি একটি মোটরসাইকেল ও একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে চালানো হয়। হামলায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।

লেবাননের সংসদের স্পিকার নাবিহ বেরি দাবি করেছেন, নিহত শিশু ও তাদের পিতা মার্কিন নাগরিক ছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্তব্য

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখনো অস্পষ্ট। তবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে নিহতরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন না। তবে একজনের পূর্বে একটি অভিবাসন ভিসার আবেদন ছিল।

ইসরায়েলের দাবি ও হামলা

ইসরায়েল দাবি করেছে, এই হামলায় হিজবুল্লাহর একজন সদস্য নিহত হয়েছে, তবে তারা স্বীকার করেছে যে, এতে বেসামরিক নাগরিকও মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালাচ্ছে। তারা দাবি করছে, ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ যেন নতুন করে সামরিক শক্তি গড়ে তুলতে না পারে, সে উদ্দেশ্যেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে ইসরায়েল ও লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে প্রতিনিয়ত চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে আসছে ইসরায়েল।


যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের নতুন হামলা: গাজায় মানবিক বিপর্যয়

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১১:২৭:৪৬
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের নতুন হামলা: গাজায় মানবিক বিপর্যয়
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় চলা ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার ২৮৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হলেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

হতাহতের সর্বশেষ পরিসংখ্যান

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ জনের মৃতদেহ হাসপাতালগুলোতে আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে চারজনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩০৪ জন আহত হয়েছেন। এতে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৫ জনে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ‘অনেক ভুক্তভোগী এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং সড়কে পড়ে আছেন কিন্তু উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।’

মানবিক সহায়তা সংগ্রহে গিয়ে প্রাণহানি

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টাকালে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আরও ২৪ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২৩ জনে এবং আহত হয়েছেন ১৮ হাজার ৪৭৩ জনের বেশি।

ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃত্যু

গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে শিশুসহ চারজন মারা গেছে। এ নিয়ে ক্ষুধাজনিত কারণে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪০ জনে, যার মধ্যে ১৪৭টি শিশু। গত মাসে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন মারা গেছেন, এর মধ্যে ৩২টি শিশু।

আন্তর্জাতিক আহ্বান ও আইসিজে মামলা

যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলি সেনারা গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার ৭২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৫৪ হাজার ৫৩৪ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।


ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল ৩ পরাশক্তি

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৯:৩৫:০১
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল ৩ পরাশক্তি
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) পৃথক বিবৃতির মাধ্যমে তিন দেশের পক্ষ থেকে এই স্বীকৃতির কথা জানানো হয়েছে। এই স্বীকৃতিকে ‘শান্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের আশা পুনরুজ্জীবিত করার’ একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা

এক ভিডিওবার্তায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন, “শান্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের আশা পুনরুজ্জীবিত করতে, আজ আমি স্পষ্টভাবে বলছি—এই মহান দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে—যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।”

কানাডার কঠোর বার্তা

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বর্তমান ইসরায়েলি সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, “বর্তমান ইসরায়েলি সরকার সুসংগঠিতভাবে কাজ করছে যাতে কোনোদিনো একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে।” তিনি ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণ নীতিকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে উল্লেখ করেন এবং গাজায় তাদের ধারাবাহিক হামলাকে ‘ভয়াবহ ও প্রতিরোধযোগ্য দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির’ কারণ হিসেবে বর্ণনা করেন।

কার্নি আরও যোগ করেন, “বর্তমান ইসরায়েলি সরকারের ঘোষিত নীতি হলো—কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র থাকবে না। এই প্রেক্ষাপটে কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও ইসরায়েল রাষ্ট্র উভয়ের জন্য শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি গড়ে তুলতে আমাদের অংশীদারিত্বের প্রস্তাব দিচ্ছে।”

অস্ট্রেলিয়ার সমন্বিত উদ্যোগ

এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং এক বিবৃতিতে বলেন, রোববারের এই স্বীকৃতি “কানাডা ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য নতুন গতি সৃষ্টির লক্ষ্যে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার একটি অংশ।”


ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৮:৫২:২৫
ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলের এই অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হামলায় অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ভূপাতিত করা হয়েছে। অপরটি দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি জনবসতিহীন এলাকায় পড়েছে। স্থানীয় লাখিশ ও আশদোদ অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কবার্তা হিসেবে সাইরেন বাজানো হয়। হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে হামলার পেছনে কোন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ছিল, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গাজায় ইসরায়েলের হামলা

একই সময়ে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানায়, রোববার ভোর পর্যন্ত ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলায় অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শনিবার গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন অংশ বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে কেঁপে উঠেছে। বিমান হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলের স্থল অভিযানও জোরদার করা হয়েছে।

প্রায় দুই বছর ধরে চলা সংঘাতে ইসরায়েল গাজা দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। সামরিক বাহিনী টানা বিমান হামলা ও ট্যাংকের গোলাবর্ষণ চালাচ্ছে। এই নির্বিচার হামলায় পুরো গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শনিবার ইসরায়েলি হামলায় গাজা শহরের প্রায় ৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক।


ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তুরস্ক? মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৭:২৩:২৬
ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তুরস্ক? মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা থেকে শুরু করে লেবানন, ইরান এবং ইয়েমেন—প্রায় সবখানেই সামরিক হামলা চালিয়ে ইসরায়েল এখন কার্যত আঞ্চলিক অস্থিরতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় বিমান হামলা চালানোর পর এবার তুরস্কেও উদ্বেগ বেড়েছে। আঙ্কারার কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তবে তুরস্ক?

কাতার থেকে তুরস্ক: বিশ্লেষকদের সতর্কবার্তা

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র কাতারে ইসরায়েলের বিমান হামলার পর আন্তর্জাতিক গবেষক ও বিশ্লেষকদের নজর এখন তুরস্কের দিকে। আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক মাইকেল রুবিন স্পষ্টভাবে বলেন, তুরস্ক ইসরায়েলের পরবর্তী টার্গেটে পরিণত হতে পারে এবং ন্যাটো সদস্যপদও হয়তো এই আক্রমণ থেকে তুরস্ককে রক্ষা করতে পারবে না। ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেইর মাসরিও একই সুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “আজ কাতার, কাল তুরস্ক।”

এর প্রতিক্রিয়ায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা তীব্র সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, যদি ইসরায়েল তুরস্কের ওপর হামলার চিন্তাও করে, তবে দেশটির জন্য ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে।

‘সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু’ হিসেবে দেখছে ইসরায়েল

গত কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো তুরস্ককে ‘ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু’ হিসেবে উপস্থাপন করছে। বিশেষ করে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের সক্রিয় উপস্থিতি এবং যুদ্ধ-পরবর্তী সিরিয়ার পুনর্গঠনে দেশটির ভূমিকাকে ইসরায়েল নতুন হুমকি হিসেবে দেখছে।

এই প্রেক্ষাপটেই তুরস্ক গত আগস্টে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানায়। আঙ্কারার মতে, এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তাও।

যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা ও ন্যাটোর ভূমিকা

কাতারে বিমান হামলার পর তুরস্কের ভেতরে আরেকটি প্রশ্ন উঠে এসেছে—ন্যাটোর প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকর? কারণ, কাতারকে যুক্তরাষ্ট্র ‘মেজর নন-ন্যাটো অ্যালাই’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তবু ইসরায়েলের হামলার পর ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। আটলান্টিক কাউন্সিলের নন-রেসিডেন্ট ফেলো ওমর ওজকিজিলসিক আল জাজিরাকে বলেন, “তুরস্ক বুঝে গেছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটোর ওপর নির্ভর করে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।” তার মতে, ইসরায়েল সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবং এর পেছনে ওয়াশিংটনের নীরব সমর্থন রয়েছে।

নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ পরিকল্পনা

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ধারণাকে খোলাখুলিভাবে সমর্থন করেছেন। আগস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “অবশ্যই, আমি এই ধারণায় বিশ্বাস করি।” আঙ্কারার কাছে এই মন্তব্য নিছক প্রতীকী কোনো বক্তব্য নয়; বরং এটিকে তুরস্কের আঞ্চলিক কৌশল ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থের সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “গ্রেটার ইসরায়েলের উদ্দেশ্য হলো—এ অঞ্চলের দেশগুলোকে দুর্বল, অকার্যকর ও বিভক্ত করে রাখা।”

ইসরায়েলের আগ্রাসী উপস্থিতি ও আঞ্চলিক আধিপত্যের নকশা

ইসরায়েল শুধু গাজা কিংবা পশ্চিম তীরেই সীমাবদ্ধ নেই। সম্প্রতি তারা সিরিয়ায় একাধিক হামলা চালিয়েছে, ইয়েমেনেও বিমান হামলা করেছে। এমনকি গাজায় সাহায্যবাহী বহর বহনকারী জাহাজের ওপর তিউনিসিয়ার উপকূলে আক্রমণ চালায়। ইরানের সঙ্গেও সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ইসরায়েল। সব মিলিয়ে তেলআবিবের সামরিক তৎপরতা এখন প্রায় গোটা অঞ্চলের প্রতিটি সংঘাতময় এলাকায় বিস্তৃত হয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত টম বারাক স্বীকার করেছিলেন—ইসরায়েল কখনোই একটি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সিরিয়া চায় না। সিরিয়ার ওপর হামলা, লেবাননে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে আঘাত, ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ—সবকিছুই ইঙ্গিত দেয়, ইসরায়েল ধাপে ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বীদের দুর্বল করছে।

সংঘর্ষের পরবর্তী ক্ষেত্র: সিরিয়া?

তুরস্কের সাবেক নৌ-অ্যাডমিরাল ও ‘ব্লু হোমল্যান্ড’ কৌশলের স্থপতি সেম গুরদেনিজ মনে করেন, তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম সরাসরি সংঘর্ষের ক্ষেত্র হতে পারে সিরিয়ার ভূমি ও আকাশসীমা। তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গ্রিস, গ্রিক সাইপ্রাস ও ইসরায়েল মিলে সাইপ্রাসে যে সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটি গড়ে তুলছে, তা তুরস্কের ব্লু হোমল্যান্ড কৌশলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

সূত্র : আল জাজিরা


ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে ইসরায়েলিদের পিটিশন

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ১৭:২৯:১৯
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে ইসরায়েলিদের পিটিশন
ছবি: সংগৃহীত

আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সৌদি আরব ও ফ্রান্সের যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় শীর্ষ সম্মেলনের আগে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন প্রায় ৯ হাজার ইসরায়েলি নাগরিক। এই সম্মেলনে ব্রিটেন, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং বেলজিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলি নাগরিকদের আবেদন

‘টাইমস অব ইসরায়েল’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ইহুদি-আরবদের ইসরায়েলি সংগঠন ‘জাজিম - কমিউনিটি অ্যাকশন’ এই পিটিশনটি শুরু করে। ‘যুদ্ধকে না - স্বীকৃতিকে হ্যাঁ’ শিরোনামের এই আবেদনে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত ৮ হাজার ৮৬৬ জন সই করেছেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, “আমরা ইসরায়েলের সেই সব নাগরিক, যারা গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিরোধী এবং শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বের সকল জাতির প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানাই।” এতে আরও বলা হয়েছে, “আমাদের বেছে নিতে হবে যে, আমরা বিশ্বের সঙ্গে যোগ দেব, নাকি নেতানিয়াহু, স্মোট্রিচের পক্ষ নেব – যারা স্বীকৃতির বিরোধিতা করে।”

আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির লক্ষ্য

পিটিশনের আয়োজকরা বলছেন, এর মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বকে দেখানো যে, ইসরায়েলি সমাজের একটি বড় অংশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ইসরায়েলের নিজেদের স্বার্থেও প্রয়োজনীয় বলে মনে করে। একইসঙ্গে, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো যেসব রাষ্ট্র এখনও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি, তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করাও এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য।

সংগঠনটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রালুকা গানেয়া বলেন, দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান এবং ফিলিস্তিনের স্বীকৃতির বিষয়ে আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য ফরাসি-সৌদি উদ্যোগটি একটি “অসাধারণ সুযোগ”। তিনি মনে করেন, “দুই জনগণের জন্য দুটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সমাধান, যেখানে প্রত্যেকের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও শান্তি থাকবে—এটাই একমাত্র বিকল্প।”

পিটিশনের আয়োজকরা আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১০ হাজার ইসরায়েলির সই উপস্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছেন।


গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ১২:০৪:৫৪
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ১৭৪ জনে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার হাসপাতালগুলোতে ৩৩টি মরদেহ এবং ১৪৬ জন আহতকে আনা হয়েছে। এতে ইসরায়েলি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭১ জনে পৌঁছেছে। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এখনও অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছে, কিন্তু উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।

ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়েও প্রাণহানি

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও একজন ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৭ জনের বেশি আহত হয়েছেন। গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে মোট ২ হাজার ৫১৪ জন নিহত এবং ১৮ হাজার ৪৩১ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

দুর্ভিক্ষের শিকার গাজা

গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে শিশুসহ আরও চারজন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অনাহার ও দুর্ভিক্ষ-সংক্রান্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪০ জনে, যার মধ্যে ১৪৭টি শিশু।

চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে, যার কারণে উপত্যকাটির প্রায় ২৪ লাখ বাসিন্দা দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। এটি সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসে ছড়িয়ে পড়বে।

এদিকে, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বারবার আহ্বান জানালেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

পাঠকের মতামত: