রয়টার্স প্রতিবেদন

খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা রুখে দিলেন ট্রাম্প: রয়টার্স

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৬ ০৮:১২:৪৪
খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা রুখে দিলেন ট্রাম্প: রয়টার্স

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে একটি বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংস্থাটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার একটি ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা।

এই খবর এমন সময় প্রকাশ পেল, যখন ইসরায়েল ইরানে সামরিক অভিযানের প্রথম দিনেই দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব কর্মকর্তাকে হত্যা করে। একই হামলায় খামেনির একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাও নিহত হন। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং একটি বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেয়।

একজন মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “ইরান কি এখন পর্যন্ত কোনো মার্কিন নাগরিককে হত্যা করেছে? না। তাই তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে টার্গেট করার বিষয়ে আমরা আলোচনা পর্যন্ত করছি না।”

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার ফক্স নিউজ-কে বলেন, “অনেক সময় এমন সব বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়, যেগুলো কখনো আলোচনা পর্যন্ত হয়নি। আমি এই প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই না।” ফক্স নিউজের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’-এ নেতানিয়াহু আরও বলেন, “আমরা যা করা দরকার, তাই করি।”

তিনি আরও বলেন, ইরানে ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণের একটি সম্ভাব্য ফল হতে পারে সরকার পরিবর্তন। নেতানিয়াহু স্পষ্ট ভাষায় জানান, তেহরান থেকে আসা ‘অস্তিত্বের হুমকি’ দূর করতে ইসরায়েল প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে।

এদিকে এই সংঘাত বড় ধরনের আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরিস্থিতি সহজে সমাধানযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি ইরানকে সতর্ক করে বলেন, “যদি ইরান কোনো আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।”

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। এটি প্রমাণ করে, যুদ্ধের আগুন ছড়ানোর মুহূর্তে নেতৃত্বের একটি বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত কীভাবে পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। এখন বিশ্বের চোখ মধ্যপ্রাচ্যের দিকে—যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ যুদ্ধ এবং শান্তির ব্যবধান নির্ধারণ করতে পারে।


তালেবানের প্রতিশোধ এড়াতে যুক্তরাজ্যে গোপন আফগান পুনর্বাসন

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৬ ১১:১১:০৮
তালেবানের প্রতিশোধ এড়াতে যুক্তরাজ্যে গোপন আফগান পুনর্বাসন

২০২২ সালের এক ভয়াবহ ডেটা ফাঁসের ঘটনায় মৃত্যুঝুঁকিতে পড়া হাজার হাজার আফগান নাগরিককে গোপনে যুক্তরাজ্যে সরিয়ে আনার তথ্য অবশেষে প্রকাশ করলো ব্রিটিশ সরকার। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে এই বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন দেশটির নতুন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জন হিলি।

প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ফেব্রুয়ারি ২০২২-এ যুক্তরাজ্যের এক কর্মকর্তা ভুলবশত ১৯ হাজার আফগান নাগরিকের নামসহ সংবেদনশীল তথ্যসংবলিত একটি স্প্রেডশিট ফাঁস করে দেন। এরা সবাই ব্রিটেনে আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। ঘটনাটি ঘটে কাবুলে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের মাত্র ছয় মাস পর। হিলি বলেন, “এটি ছিল একটি গুরুতর প্রশাসনিক ব্যর্থতা, এবং এতে অনেকের জীবন হুমকির মুখে পড়ে।”

এ প্রেক্ষিতে, পূর্ববর্তী কনজারভেটিভ সরকার ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে শুরু করে ‘আফগান রেসপন্স রুট’ নামে একটি গোপন পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করে। উদ্দেশ্য ছিল—তালেবানের প্রতিশোধের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধার করা।

এই গোপন মিশনের আওতায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪,৫০০ আফগান নাগরিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছে বা আনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড, এবং আরও ৬০০ জনের আবেদনে সম্মতি দেওয়ায় মোট ব্যয় দাঁড়াবে আনুমানিক ৮৫০ মিলিয়ন পাউন্ড।

এই কর্মসূচি ছিল আদালতের দেওয়া এক ‘সুপার ইনজাংশনের’ আওতায়, যা কোনো গণমাধ্যম বা সংসদে এ নিয়ে কথা বলাও নিষিদ্ধ করেছিল। লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রী হিলি জানান, এই বিষয় নিয়ে সংসদে কথা বলতে না পারায় তিনি "অত্যন্ত অস্বস্তিতে" ছিলেন।

তিনি বলেন, তখনকার সরকার বিষয়টি গোপন রাখে যাতে তালেবান ফাঁস হওয়া ডেটাবেজটি নিয়ে আরও কিছু জানতে না পারে এবং ক্ষতির মাত্রা না বাড়ে। তবে বর্তমানে তিনি নিশ্চিত করেন, তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিশোধ অভিযানের খুব কম প্রমাণ পাওয়া গেছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও জানান, এই রেসপন্স রুট প্রোগ্রামটি এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং এই অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। পুরো আফগানিস্তান থেকে ব্রিটেনে লোক পুনর্বাসনের খরচ আনুমানিক ৫.৫ থেকে ৬ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, কনজারভেটিভ পার্টির প্রতিরক্ষা মুখপাত্র জেমস কার্টলিজও ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি সরকারের গোপনীয়তার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে উল্লেখ করেন, “কারণ একটি সামান্য ভুলও বিপজ্জনক তালেবান সরকারের হাতে মানুষকে নির্যাতন বা হত্যার মুখে ফেলতে পারতো।”

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক ডেটা ফাঁসের কারণে ৩৫০,০০০ পাউন্ড জরিমানা গুনতে বাধ্য হয়। ওই ঘটনায় ২৬৫ জন আফগান নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছিল, যারা তালেবান থেকে পালাতে ব্রিটিশ সহায়তা চেয়েছিলেন।

এই গোপন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া সকল ব্যক্তিকে ব্রিটিশ অভিবাসন পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী হিলি।

-আলমগীর হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে বিভক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, গাজায় মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ১০:৫৫:৩৬
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে বিভক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, গাজায় মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা মঙ্গলবার গাজা যুদ্ধ নিয়ে সম্ভাব্য ১০টি কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এখনই কোনো পদক্ষেপে ঐকমত্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা খুবই কম।

ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাস আলোচনার টেবিলে যে ১০টি বিকল্প রেখেছেন, তার মধ্যে রয়েছে—ইসরায়েলের সঙ্গে বিদ্যমান সহযোগিতা চুক্তি পুরোপুরি স্থগিত করা, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সীমিত করা, নির্দিষ্ট ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি এবং ভিসা-মুক্ত ভ্রমণ সুবিধা বাতিল করা।

তবে গাজায় বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সত্ত্বেও ইইউ সদস্য দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এককাট্টা হতে পারেনি। ইউরোপের ভেতরেই কেউ ইসরায়েলের পক্ষে, কেউ ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতিশীল—এই বিভক্তিই মূল বাধা।

কায়া কাল্লাস বলেন, “আমার দায়িত্ব ছিল সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলোর একটি তালিকা তৈরি করা। এখন সিদ্ধান্ত নেবে সদস্য রাষ্ট্রগুলো—তারা কোন পথে এগোবে।”

ইসরায়েল যদি গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাস্তব পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ইইউ আলোচনায় নমনীয়তা দেখাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সার-এর সঙ্গে বৈঠকে কায়া কাল্লাস গাজায় আরও প্রবেশপথ খোলা ও খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছান।

সোমবার কাল্লাস বলেন, “আমরা কিছু ভালো লক্ষণ দেখছি—আরও ট্রাক প্রবেশ করছে। তবে আমরা জানি, এটা যথেষ্ট নয়। চুক্তির বাস্তবায়নে আরও চাপ প্রয়োগ করতে হবে।”

একইদিন ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ও আশপাশের দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, “গাজা এখনো মানবিকভাবে ভয়াবহ অবস্থায় আছে।”

এদিকে বৈঠকে অংশ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার বলেন, “আমি নিশ্চিত, ইইউ রাষ্ট্রগুলো এসব পদক্ষেপের কোনোটিই নেবে না। এসবের কোনো ন্যায্যতা নেই।”

তবে বিশ্লেষকদের মতে, ইইউ’র পক্ষ থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি পর্যালোচনার সিদ্ধান্তই একটি বড় রাজনৈতিক অগ্রগতি। মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করার পরই ইইউ প্রথমবারের মতো বিষয়টি খোলাখুলি আলোচনা করছে।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১,২১৯ জনকে হত্যা করে—এদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। সেদিন অপহৃত ২৫১ জনের মধ্যে এখনো ৪৯ জন বন্দি, যাদের মধ্যে ২৭ জনকে মৃত বলে জানাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

অন্যদিকে, হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৮,৩৮৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ। জাতিসংঘ এই সংখ্যাগুলোকে ‘বিশ্বস্ত’ হিসেবে বিবেচনা করছে।

-আলমগীর হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, চার শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১২:০১:১২
গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, চার শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নতুন করে চালানো বিমান হামলায় অন্তত ২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চার শিশু ও দুই নারী রয়েছেন। শনিবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ১৩ জন নিহত হন, বলে জানায় আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল। একই এলাকার একটি জ্বালানি স্টেশনের কাছে হামলায় আরও চারজন প্রাণ হারান। এদিকে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে নাসের হাসপাতাল জানিয়েছে, তারা ১৫ জনের মরদেহ গ্রহণ করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা গাজা জুড়ে প্রায় ২৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে হামাসের যোদ্ধা অবস্থান, অস্ত্রের গুদাম, সুড়ঙ্গপথ ও বিস্ফোরক বস্তু রাখা ভবন অন্তর্ভুক্ত। তবে নিহতদের বেসামরিক নাগরিক কিনা, সে বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি, যদিও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (AP) এ বিষয়ে তাদের কাছে প্রতিক্রিয়া চেয়েছিল।

এই সংঘাতের সূচনা হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। বর্তমানে তাদের হাতে ৫০ জনের মতো জিম্মি রয়েছে, যাদের অর্ধেকেরও কম জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর জবাবে ইসরায়েল শুরু করে সর্বাত্মক সামরিক অভিযান। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৫৭,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। যদিও এই পরিসংখ্যানে যোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের আলাদা হিসাব নেই, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এই তথ্যকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিসেবে গণ্য করে।

এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, সংঘর্ষবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি, অর্থাৎ তাৎপর্যপূর্ণ কোনো অগ্রগতি হয়নি।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


পরিস্থিতি বদলাচ্ছে প্রতিদিন, তবে যুদ্ধবিরতির আশায় ট্রাম্প

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৫ ১০:৩৪:৩৩
পরিস্থিতি বদলাচ্ছে প্রতিদিন, তবে যুদ্ধবিরতির আশায় ট্রাম্প

গাজা উপত্যকায় চলমান সংকট নিরসনে একটি সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার তিনি জানান, আগামী সপ্তাহেই এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি হতে পারে এবং তিনি এ বিষয়ে "খুবই আশাবাদী"। তবে একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, এই ধরনের পরিস্থিতি দিনে দিনে পরিবর্তিত হতে পারে।

এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি খুবই আশাবাদী। তবে এই বিষয়ে কিছুই নিশ্চিত নয়, কারণ এটা প্রতিদিনই বদলাচ্ছে।” তিনি আরও জানান, গাজা নিয়ে কিছু একটা করতে হবে এবং এই সংঘাত বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।

গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে হামাস ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে—বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ট্রাম্প বলেন, “এটা ভালো। যদিও এখনো আমাকে অফিসিয়ালি কিছু জানানো হয়নি। তবে এটাকে এখন শেষ করতে হবে। গাজার ব্যাপারে কিছু একটা করা দরকার।”

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময় এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন পক্ষ গাজা সংঘাত নিরসনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির পথ খুঁজছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির বিভিন্ন খসড়া আলোচনায় এসেছে, যদিও সেগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে নানা জটিলতা দেখা দেয়।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এমন মন্তব্য প্রমাণ করে, তিনি ২০২4 সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে নিজেকে একজন সক্রিয় ও কার্যকর খেলোয়াড় হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। পাশাপাশি গাজা ইস্যুতে তার অবস্থান স্পষ্ট করে দিতে চাচ্ছেন তিনি—বিশেষ করে ইসরায়েলপন্থী ও রিপাবলিকান ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই।

অন্যদিকে, গাজায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা ও মানবিক সংকট। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা অবিলম্বে অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে।

-নাজমুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠকের আগে গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০২ ০৯:৩৮:৫১
ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠকের আগে গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় চলমান যুদ্ধ থামাতে নতুন এক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, ৬০ দিনের জন্য ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে, যেখানে ইসরায়েল ইতোমধ্যে রাজি হয়েছে বলে ট্রাম্প দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, তার প্রতিনিধিরা ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে সম্মত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সব পক্ষকে নিয়ে যুদ্ধের স্থায়ী সমাধানে কাজ করা হবে। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এই ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ হামাসের কাছে পৌঁছানোর কথাও জানান তিনি। ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেন, “আমি আশা করি হামাস এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে, কারণ এর চেয়ে ভালো কিছু আর আসবে না—পরিস্থিতি কেবল আরও খারাপই হবে।”

এমন সময় এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এলো, যখন গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছে, মঙ্গলবার একদিনেই ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করছে, তারা হামাসের সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে অভিযান জোরদার করেছে এবং নতুন এলাকাগুলোতে প্রবেশ করেছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা “শত শত সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস” করেছে এবং “ডজন ডজন সন্ত্রাসী” হত্যা করেছে। গাজা শহরের শুজাইয়া এলাকার বাসিন্দা রাফাত হাল্লেস বলেন, “যখনই যুদ্ধবিরতির কথা উঠে, তখনই ইসরায়েলি বাহিনী হামলা বাড়িয়ে দেয়। এটা কেন হয়, তা আমার বোধগম্য নয়।”

যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলাকালে গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি ট্যাংকের অবস্থান ও শহরে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে জীবনের চিহ্ন খুঁজে বেড়ানো শিশুদের দৃশ্য বিশ্ব মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। আল-শিফা ও আল-আকসা হাসপাতালগুলোতে আত্মীয় হারানোর বেদনায় কাতর মানুষদের কান্নাও মানবিক সংকটের চিত্র আরও গভীর করেছে। রেড ক্রস জানিয়েছে, গাজার হাসপাতালগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। মাসের পর মাস ধরে চলা সংঘাত ও সরবরাহ সংকটের কারণে অনেক হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে বা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, “গাজা শহর ও জাবালিয়ায় ক্রমবর্ধমান সংঘাতে অল্প সময়েই বহু বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যা গভীর উদ্বেগজনক।”

এদিকে মঙ্গলবার গাজার মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। চলমান খাদ্য সংকটে এই ধরনের হামলা মানুষের দুর্দশাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা কেবলমাত্র “সন্দেহভাজনদের হঠাতে সতর্কতামূলক গুলি” ছুঁড়েছে এবং কোনো হতাহতের খবর তারা জানে না, তবে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। রাফাহ এলাকায় সংঘটিত এক ঘটনার প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, “ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রটি কার্যকর ছিল না এবং হামলার স্থান থেকে তা শত শত মিটার দূরে ছিল।”

এমন অবস্থায় ১৬৯টি আন্তর্জাতিক মানবিক সংগঠন গাজায় বর্তমান মার্কিন-ইসরায়েল-সমর্থিত ত্রাণ বিতরণ কাঠামো বাতিল করে পূর্বের জাতিসংঘনির্ভর ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা এই নতুন কাঠামোকে ‘প্রাণঘাতী’ হিসেবে অভিহিত করেছে, কারণ এটি বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে। তবে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF), যারা এই নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করছে, তারা জানিয়েছে, নিহতদের ঘটনা তাদের কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।

এই অবস্থায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আসন্ন সপ্তাহে ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শীর্ষ মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য। আন্তর্জাতিক মহলে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ বাড়তে থাকায় এই সফরের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, “নেতানিয়াহুও এই যুদ্ধ শেষ করতে চান।” অন্যদিকে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নুনু এএফপি-কে বলেন, “যে কোনো প্রস্তাব যদি যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি এবং দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার নিশ্চিত করে, তাহলে আমরা তা গ্রহণে প্রস্তুত।” তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত অগ্রগতি হয়নি বলে তিনি জানান।

গাজায় চলমান এই মানবিক সংকট ও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে পারে। তবে হামাস কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং নেতানিয়াহু-ট্রাম্প বৈঠক কী ফলাফল বয়ে আনে, তা-ই নির্ধারণ করবে এই যুদ্ধের ভবিষ্যৎ গতিপথ।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর মামলায় হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত ট্রাম্পের

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ০৯:৪২:৩৮
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর মামলায় হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত ট্রাম্পের

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির মামলাকে যুক্তরাষ্ট্র সহ্য করবে না। শনিবার ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ এক পোস্টে বলেন, “আমেরিকা প্রতিবছর ইসরায়েলকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহায়তা ও সুরক্ষা দিয়ে থাকে, যা অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এই অন্যায় বিচার আমরা সহ্য করবো না।”

সম্প্রতি এক ইসরায়েলি আদালত নেতানিয়াহুর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে, যেখানে তিনি দুর্নীতির মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার সময় পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। আদালত জানিয়েছে, তার অনুরোধ যথাযথ ভিত্তি ও প্রমাণের অভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।

এই মামলাগুলোর মধ্যে একটি মামলায় নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিলিয়নিয়ারদের কাছ থেকে সিগার, গহনা ও শ্যাম্পেইনের মতো প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার ডলারের বিলাসবহুল উপহার নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, যা তারা রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের বিনিময়ে নিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। অন্য দুটি মামলায় অভিযোগ, তিনি ইসরায়েলের দুটি প্রভাবশালী গণমাধ্যমের সঙ্গে অনুকূল সংবাদ কাভারেজ পাওয়ার জন্য সমঝোতার চেষ্টা করেছিলেন।

নেতানিয়াহু এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তার আইনজীবী দাবি করেছেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক নানা সিদ্ধান্তে মনোযোগ দেওয়া দরকার, এজন্য তাকে আগামী দুই সপ্তাহ শুনানি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।

ট্রাম্প ইতিমধ্যে এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক খেলা’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু একজন যুদ্ধনায়ক। এই বিচার প্রক্রিয়া ইরান এবং হামাসের সঙ্গে চলমান আলোচনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।” যদিও তিনি কোন নির্দিষ্ট আলোচনার কথা বলছিলেন, তা স্পষ্ট নয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এখনও ৪৯ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের মধ্যে ২৭ জন ইতোমধ্যেই মৃত বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তির জন্য আলোচনা চললেও, ইসরায়েলের গাজায় চালানো ব্যাপক হামলা অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্প নিজের অতীতের আইনি সমস্যার সঙ্গে নেতানিয়াহুর পরিস্থিতির তুলনা করে বলেন, “এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, যেমনটি আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে সহ্য করেছিলাম।”

মে ২০২৪-এ ট্রাম্প ব্যবসায়িক নথি জালিয়াতির ৩৪টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন, যা একটি পর্ন তারকাকে অর্থ দেওয়া সংক্রান্ত মামলার সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া, তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টানোর চেষ্টার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ফেডারেল মামলার মুখোমুখি হয়েছেন।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


ইরানে মার্কিন হামলার গোপন প্রতিবেদনে চাঞ্চল্য

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৫ ১১:৩১:১৫
ইরানে মার্কিন হামলার গোপন প্রতিবেদনে চাঞ্চল্য

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী সম্প্রতি ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর একাধিক বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও এসব হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কেবল “কয়েক মাসের জন্য বিলম্বিত” করতে পেরেছে—সম্পূর্ণ ধ্বংস নয়। এমনটাই বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি–ডিআইএ) কর্তৃক প্রস্তুত একটি গোপন প্রাথমিক প্রতিবেদনে, যা সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাংকার-বাস্টার বোমা এবং টমাহক ক্রুজ মিসাইল দিয়ে পরিচালিত বিমান হামলায় ইরানের নাতান্জ, ইসফাহান এবং ফোরদুতে অবস্থিত পরমাণু স্থাপনাগুলোর প্রবেশপথগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলেও, ভূগর্ভস্থ ভবন ও মূল সেন্ট্রিফিউজগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়নি। এ তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ লেখেন: "ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস!"

তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট ডিআইএর প্রতিবেদনটির সত্যতা স্বীকার করলেও এটিকে “ভুল ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ফাঁস” বলে অভিহিত করেন। তাঁর ভাষায়, “একাধিক ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের বোমা নির্ভুলভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যে ফেলার পর যা হয়, সেটাই হয়েছে—সম্পূর্ণ ধ্বংস।”

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভেন উইটকফ ফক্স নিউজকে বলেন, “আমরা যা অর্জন করেছি, তা নিয়ে সন্দেহ তোলা হাস্যকর।” তিনি দাবি করেন, নাতান্জ, ইসফাহান ও ফোরদুর প্রতিটি স্থাপনায় অধিকাংশ, যদি না হয় সমস্ত, সেন্ট্রিফিউজই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এই কর্মসূচি পুনরায় সচল করতে ইরানের কয়েক বছর সময় লেগে যাবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ একে ‘সেনাবাহিনীর অসাধারণ সাফল্য’ বলে অভিহিত করেন, যদিও শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল ড্যান কেইন কিছুটা সতর্ক স্বরেই বলেন, “স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, তবে পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।”

অন্যদিকে, ইরান সরকার তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানায়, “পরমাণু কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।” ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামী এক বিবৃতিতে বলেন, “পুরনো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ পুনরায় শুরু হবে। উৎপাদন ও সেবাদানে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।”

এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির এক উপদেষ্টা জানান, “ইরানের কাছে এখনও সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত রয়েছে এবং খেলা এখনও শেষ হয়নি।”

মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, অভিযানে ১২৫টিরও বেশি বিমান, স্টেলথ বোমার, রিফুয়েলিং ট্যাংকার, গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন এবং নজরদারি ও গোয়েন্দা বিমান অংশ নেয়।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী এটি ছিল এক "বিস্ময়কর সামরিক সাফল্য", কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন—আন্তর্জাতিক রাজনীতির এই জটিল খেলার পরিণতি নির্ভর করবে ভবিষ্যতের কৌশল ও প্রতিক্রিয়াগুলোর ওপর।

-আলমগীর হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


ইরানে ছয় বিমানবন্দরে হামলার দাবি ইসরায়েলের

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৩ ১২:৫২:০৪
ইরানে ছয় বিমানবন্দরে হামলার দাবি ইসরায়েলের

ইসরায়েলি বাহিনী ইরানের কেন্দ্রীয়, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ছয়টি বিমানবন্দরে হামলা চালানোর দাবি করেছে। সোমবার (২৩ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের দূর থেকে পরিচালিত ড্রোন ইরানের ১৫টি বিমান এবং হেলিকপ্টার ধ্বংস করেছে। বিবৃতিতে হামলাগুলোর লক্ষ্যে রানওয়ে, ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার, একটি জ্বালানি ভরার বিমান, এফ-১৪, এফ-৫ ও এএইচ-১ ধরণের বিমানকে ক্ষতিগ্রস্ত করার কথা বলা হয়েছে। হামলার সময় ইসরায়েল একটি ছবি ও লক্ষ্যবন্দরের তালিকাও প্রকাশ করেছে।

তবে ইরানের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই দাবির বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১১ দিনের মধ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে গত শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, যা উত্তেজনাকে আরও জোরালো করেছে।


ইরানে মার্কিন হামলা বিশ্বশান্তির হুমকি: জাতিসংঘ মহাসচিব

মধ্যপ্রাচ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ১০:৪১:৪১
ইরানে মার্কিন হামলা বিশ্বশান্তির হুমকি: জাতিসংঘ মহাসচিব

মধ্যপ্রাচ্য যখন যুদ্ধাবস্থার দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্রের ইরান লক্ষ্য করে সাম্প্রতিক হামলাকে ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা’ বলে আখ্যা দিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এই অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতি এমনিতেই উত্তপ্ত, এর মাঝে এ ধরনের হামলা সরাসরি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”

গুতেরেস তাঁর বিবৃতিতে বলেন, “এখন দ্রুত এই সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এর পরিণতি হতে পারে বেসামরিক জনগণের জন্য ভয়াবহ, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক, এমনকি বিশ্বজুড়েই অস্থিরতার কারণ হতে পারে।”

তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান, “এই ভয়াবহ সময়ে বিশৃঙ্খলার চক্র থামানো জরুরি। এ সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই। একমাত্র পথ—কূটনীতি। একমাত্র আশা—শান্তি।”

বিশ্লেষকদের মতে, গুতেরেসের এই বার্তা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের উদ্দেশে নয়, বরং এটি একটি বৈশ্বিক আহ্বান—বিশ্ব নেতাদের শান্তি ও সংলাপের পথে ফিরিয়ে আনতে তাঁর একটি চেষ্টা।

গুতেরেস এর আগেও গাজা, ইউক্রেন ও সুদান ইস্যুতে যুদ্ধ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং সংবিধানভিত্তিক সমাধানের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন।

বিশ্ব এখন তাকিয়ে রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এই উত্তেজনা আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নেয়, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কতটা দায়িত্বশীল অবস্থান নিতে সক্ষম হয়।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত: