ইরান- ইসরায়েল সংঘাত
ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে চীনের কড়া বার্তা!

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন এক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বিশ্ব। ইরানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক শহরে ইসরায়েলের আকস্মিক ও বিস্তৃত বিমান হামলার পরদিনই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে বসে। আর সেখানে চীন সরাসরি ইসরায়েলকে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘে চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি ফু কং বলেন, “ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ওপর হামলা করেছে ইসরায়েল। আমরা এই হামলার তীব্র বিরোধিতা করছি। এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
চীনা দূত আরও বলেন, “ইসরায়েলকে আমরা অনতিবিলম্বে সব সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানাই। এই সংঘাত যদি আরও বিস্তৃত হয়, তাহলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে তা ভয়াবহ সংকটে রূপ নিতে পারে।”
চীন যে শুধু কূটনৈতিক বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করতে চাইছে না, তা স্পষ্ট। বিশ্ব রাজনীতিতে তাদের সক্রিয় ভূমিকার ইঙ্গিত দিয়েছেন ফু কং নিজেই। “এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সহিংসতা রোধ এবং শান্তিপূর্ণ সংলাপে ফিরিয়ে আনা। চীন এই ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।”
শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (IAF) ইরানের অন্তত আটটি শহরে বোমাবর্ষণ করে। এতে নিহত হয়েছেন ৭৮ জন, আহত প্রায় ৩০০। হামলায় নিহত হন ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, বিপ্লবী গার্ডের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী।
হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান শুরু করে “অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি”, যার আওতায় ইসরায়েলের বিভিন্ন ঘাঁটিতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা হয়। এতে নিহত হন ২ জন এবং আহত হন ৬৩ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শুক্রবার এক ভিডিওবার্তায় বলেন, “যতদিন ইরানের পরমাণু কর্মসূচি হুমকি হয়ে থাকবে, ততদিন ‘দ্য রাইজিং লায়ন অপারেশন’ চলবে।”
জবাবে শনিবার সকালে ইরানের সামরিক বাহিনী জানায়, “অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে। এই আগ্রাসনের যথার্থ জবাব দেওয়া হবে।”
চলতি বছরের মে মাস থেকে ওমানের রাজধানীতে ইরান-মার্কিন গোপন সংলাপ চলছে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে। ৬ রাউন্ড সংলাপের পরও কোনো দৃশ্যমান সমাধান আসেনি। সম্প্রতি ওয়াশিংটনের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তেহরান।
এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পরপরই ঘটে ইসরায়েলের এই হামলা, যা একে শুধু প্রতিক্রিয়া নয় কৌশলগত বার্তাও হিসেবে চিহ্নিত করছে বিশ্লেষকরা।
বিশ্বজুড়ে অস্থিরতার আবহে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এক ভয়াবহ নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। আর একে কেন্দ্র করে বড় আকারের গঠনমূলক কূটনীতি না এলে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ থেকে বিশ্বব্যাপী সংঘাতে রূপ নিতে সময় লাগবে না। চীনের হস্তক্ষেপ আপাতত শান্তির বার্তা দিলেও সমাধান এখনও অনিশ্চিত।
-অনন্যা, নিজস্ব প্রতিবেদক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- দ্বিতীয় দিনেও চলছে কোরবানি, কসাই না পাওয়ায় আজ জবাই অনেকের
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?
- উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষোভ কি ভারতের কেন্দ্রীয় কূটনীতি পাল্টাবে?
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?
- তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা