পরমাণু যুদ্ধ ঠেকাতে কতটি ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি তৈরি করেছে আমেরিকা?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৫ ১১:২১:৩৯
পরমাণু যুদ্ধ ঠেকাতে কতটি ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি তৈরি করেছে আমেরিকা?

হঠাৎ যদি শুরু হয়ে যায় পরমাণু যুদ্ধ? যদি শহরের পর শহর কেঁপে ওঠে ধ্বংসাত্মক বিস্ফোরণে? এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাকি গোপনে বিশাল এক ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার নেটওয়ার্ক তৈরি করে ফেলেছে—এমনটাই দাবি করেছেন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা ক্যাথরিন অস্টিন ফিটস। তিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের সময়ে মার্কিন গৃহ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সহ-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

সম্প্রতি এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ক্যাথরিন জানান, ১৯৯৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকার অনুমোদনহীন খরচের মাধ্যমে প্রায় ২১ লক্ষ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। এই বিপুল অর্থের একটি বড় অংশ ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৭০টি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার নির্মাণে। তার দাবি অনুযায়ী, এই বাঙ্কারগুলো কেবলমাত্র সমাজের ধনী, ক্ষমতাশালী ও অভিজাত শ্রেণির মানুষদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ নাগরিকদের এসব বাঙ্কারে প্রবেশের কোনো অনুমতি নেই।

ক্যাথরিন আরও বলেন, কিছু বাঙ্কার এমনকি সমুদ্রের তলদেশেও অবস্থিত। এসব স্থানে পারমাণবিক যুদ্ধ বা বৈশ্বিক দুর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থার পাশাপাশি গোপন মহাকাশ প্রকল্প এবং শক্তি প্রযুক্তির গবেষণাও চলে। যদিও এসব দাবির পক্ষে তিনি কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ তুলে ধরেননি।

তিনি তার বক্তব্যে ২০১৭ সালে প্রকাশিত ‘স্কিডমোর রিপোর্ট’-এর উল্লেখ করেন, যা মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ মার্ক স্কিডমোর তৈরি করেছিলেন। সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ১৯৯৮ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মার্কিন প্রতিরক্ষা ও নগর উন্নয়ন বিভাগের বিপুল অঙ্কের অর্থের হিসাব পাওয়া যায়নি বা তা ‘অননুমোদিতভাবে’ ব্যয় হয়েছে।

এদিকে, আমেরিকার ইতিহাসে গোপন ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারের অস্তিত্ব নতুন কিছু নয়। শীতল যুদ্ধের সময় নির্মিত ‘শায়েন মাউন্টেন কমপ্লেক্স’ এবং ‘গ্রিনব্রিয়ার বাঙ্কার’ এমনই দুটি নজিরবিহীন প্রকল্প। তবে সরকারিভাবে এখনো পর্যন্ত ১৭০টি নতুন বাঙ্কার বা ২১ লক্ষ কোটি ডলার ব্যয়ের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।


ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও অনড় জোহরান মামদানি; প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই দিলেন কঠোর জবাব

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ০৯:০৬:৩২
ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও অনড় জোহরান মামদানি; প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই দিলেন কঠোর জবাব
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম নগরী নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের পর নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি এখন তাঁর নেতৃত্ব ও ভবিষ্যৎ করণীয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া শুরু করেছেন। বুধবার (৫ নভেম্বর) নির্বাচনের মাত্র একদিন পরই কুইন্সের ফ্লাশিং মিডোস করোনা পার্কে তাঁর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে এই বার্তা দেন।

জোহরান মামদানি বলেন, নিউইয়র্ক সিটির জন্য ফেডারেল তহবিল নিশ্চিত করতে যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হতেও প্রস্তুত আছেন।

উল্লেখ্য, জোহরান মামদানির এই জয়ে প্রকাশ্যে ক্ষুব্ধ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিউইয়র্কের উন্নয়ন তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি শহরে সেনা পাঠানোরও হুমকি দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের এই হুমকির মুখে মামদানি আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে শহরকে সুরক্ষিত রাখার ঘোষণা দিলেন।

জয়ের পর মামদানি একটি 'ট্রানজিশন টিম' বা অন্তর্বর্তীকালীন দল গঠনেরও ঘোষণা করেছেন, যা তাঁকে দ্রুত ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রথম মুসলিম হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়ে জোহরান মামদানি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অভিজাতদের একটি বড় অংশের তীব্র বিরোধিতাকে পাশ কাটিয়ে এই বিজয় অর্জন করেন।

তরুণ ও স্বল্প আয়ের ভোটারদের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে বিজয়ী হওয়া মামদানি শত বছরের মধ্যে নিউইয়র্কের সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র হতে চলেছেন। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১০ মাসের মাথায় অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ৩৪ বছর বয়সী রাজনীতিক মামদানির জয় দেশটির জাতীয় রাজনীতিতেও এক নতুন এবং তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে।

প্রথম সংবাদ সম্মেলনে মামদানি তাঁর পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু এম. কুওমোর বাবা, সাবেক গভর্নর মারিও এম. কুওমোর একটি বিখ্যাত উক্তি ব্যবহার করেন। জোহরান মামদানি বলেন, "গত রাত ৯টায় প্রচারণার কবিতা শেষ হয়েছে। কিন্তু শাসনকাজের সুন্দর গদ্য সবেমাত্র শুরু হয়েছে।" তাঁর এই বক্তব্য ক্ষমতা গ্রহণের পর জনগণের জন্য কাজ করার প্রতি তাঁর অঙ্গীকারকেই তুলে ধরে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি


পাকিস্তানে মিলল বিশাল স্বর্ণ ভান্ডার: মজুত ৬৩৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ২১:১৬:০১
পাকিস্তানে মিলল বিশাল স্বর্ণ ভান্ডার: মজুত ৬৩৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি!
ছবিঃ সংগৃহীত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের হরিপুর জেলার তারবেলা এলাকায় বিশাল স্বর্ণের মজুত আবিষ্কৃত হয়েছে। এই আবিষ্কৃত স্বর্ণভান্ডারের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬৩৬ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে পাকিস্তানের সমস্ত বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলে দাবি করেছেন দেশটির একজন ব্যবসায়ী নেতা।

পাকিস্তান ফেডারেশন অব চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এবং এয়ার করাচির চেয়ারম্যান হানিফ গওহর সোমবার (৩ নভেম্বর) করাচি প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান।

হানিফ গওহর বলেন, এই স্বর্ণভান্ডারের মূল্য প্রায় ৬৩৬ বিলিয়ন ডলার। তিনি দাবি করেন, এই বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ উত্তোলন করা সম্ভব হলে পাকিস্তান তার সমস্ত বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হবে।

তিনি জানান, বিষয়টি ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিশেষ বিনিয়োগ সহায়তা কাউন্সিল (এসআইএফসি) এবং পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (এসবিপি)-এর গভর্নরের নজরে আনা হয়েছে।

পাকিস্তানের এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, স্বর্ণ উত্তোলনের জন্য খননকাজ শুরুর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডার দুটি ড্রিলিং কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেলেই তারবেলার মাটির নিচ থেকে স্বর্ণ উত্তোলনের কাজ শুরু করা হবে।

তবে, উল্লেখযোগ্যভাবে এই বিষয়ে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য প্রকাশিত হয়নি বা সরকারি কোনো সংস্থা এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেনি।


মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ,  নতুন তথ্য ফাঁস

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৮:৪৩:০৬
মোদি-ট্রাম্প ফোনালাপ,  নতুন তথ্য ফাঁস
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ চলছে। দুই রাষ্ট্রপ্রধান শুধু ব্যক্তিগত আলাপেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না, পাশাপাশি বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্পর্কিত বিষয় নিয়েও তাদের সংশ্লিষ্ট দলগুলো সক্রিয়ভাবে আলোচনা চালাচ্ছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিগগিরই এই বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল এবং তারা প্রায়শই ফোনে বা অন্যান্য মাধ্যমে কথা বলেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক আলোচনা নিয়মিত হয় এবং ট্রাম্পের বাণিজ্য দল ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় লিপ্ত।

কয়েকদিন আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরে গিয়ে ট্রাম্প মোদির প্রশংসা করেন। তিনি মোদিকে “সবচেয়ে সুদর্শন, শক্তিশালী এবং দুর্দান্ত” বলে অভিহিত করেন। একই সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে দ্রুত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান। এছাড়াও, ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে মোদি তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন ভারত রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করবে।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই দাবিকে ভারত স্পষ্টভাবে উড়িয়ে দিয়েছে। দিল্লির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প যে ফোনকলের ভিত্তিতে এই মন্তব্য করেছেন, তা আদতে ঘটেনি। শুধুমাত্র দিপাবলী উপলক্ষে ট্রাম্প মোদিকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মোদিও নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে ফোনালাপের কথা জানিয়েছেন, কিন্তু রুশ তেল সংক্রান্ত কোনও আলাপের কথা উল্লেখ করেননি।

-শরিফুল


ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী গ্রামে সৌদি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৫:৫৬:৫৩
ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী গ্রামে সৌদি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ছবি: মেহের নিউজ

সৌদি বাহিনী ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী রাজিহ জেলায় বেসামরিক গ্রামগুলোকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) ইয়েমেনের সা’দা প্রদেশের কর্তৃপক্ষ এই হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইরানের সংবাদ সংস্থা মেহের নিউজ এই খবর প্রকাশ করেছে।

সা’দা প্রদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সৌদি আরব রাজিহ সীমান্ত অঞ্চলের নাগরিক বসতিগুলোর ওপর এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পরিচালনা করেছে।

তবে, তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলায় সম্ভাব্য হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ঘটনার প্রেক্ষিতে সা'দা প্রদেশ কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।


জোহরান মামদানির জয়ে উচ্ছ্বাসে মাতলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৪:২৭:২৫
জোহরান মামদানির জয়ে উচ্ছ্বাসে মাতলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা
ছবিঃ সংগৃহীত

ইতিহাস সৃষ্টি করে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম নগরী নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ রাজনীতিক জোহরান মামদানি। এক ঐতিহাসিক ভোটে জয়লাভের পর তাঁর এই বিজয়কে ঘিরে নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতেই মামদানির জয়ের খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে। বিশেষ করে জ্যামাইকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের উচ্ছ্বাসে পুরো এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। এ সময় তারা স্লোগান দেয়, "আমার মেয়র, তোমার মেয়র - মামদানি, মামদানি" এবং "শ্রমিক শ্রেণির মেয়র - মামদানি, মামদানি"।

বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের বিপুল সমর্থন

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সড়কে নেমে স্লোগান দেওয়া বাংলাদেশিদের হাতে ব্যানারে লেখা ছিল, "জ্যামাইকার বাংলাদেশি আমেরিকানরা মামদানির জন্য।"

জোহরান মামদানি তাঁর প্রচারণার শুরু থেকেই বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বিপুল সমর্থন পেয়েছিলেন। ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার এবং উগান্ডার শিক্ষাবিদ মাহমুদ মামদানির পুত্র জোহরান প্রচারণার বিভিন্ন সমাবেশে বাংলায় কথা বলে প্রবাসীদের মন জয় করেন।

ঐতিহাসিক বিজয় ও রেকর্ড

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জোহরান মামদানি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে তাঁর বিজয় নিশ্চিত করেন। এই নির্বাচনে তিনি পরাজিত করেছেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোকে। উল্লেখযোগ্য হলো, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে অ্যান্ড্রু কুমোকে সমর্থন করেছিলেন।

এই জয়ের মাধ্যমে জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে একাধিক রেকর্ড গড়েছেন:

তিনি হলেন নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র।

একই সঙ্গে তিনি এই নগরীর প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং আফ্রিকান জন্ম নেওয়া মেয়র।

এছাড়াও, প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে তিনিই হতে যাচ্ছেন নিউইয়র্কের সবচেয়ে তরুণ মেয়র।


মামদানির জয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প কি সত্যিই ফেডারেল তহবিল বন্ধ করবেন এবার

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১০:৪৭:৫৬
মামদানির জয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প কি সত্যিই ফেডারেল তহবিল বন্ধ করবেন এবার
ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমোর পাশে দাঁড়ান এবং সতর্ক করে জানান, যদি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি নির্বাচিত হন, তবে তিনি নিউইয়র্ককে প্রদত্ত ফেডারেল তহবিল বন্ধ করার সম্ভাবনা দেখছেন। তবে ট্রাম্পের হুমকি কার্যকর হয়নি। নির্বাচনের ফলাফলে জোহরান মামদানি প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশিয়ান বংশোদ্ভূত হিসেবে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচিত হন। তার এই জয় যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহরের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

রবিবার সিবিএস নিউজের ‘৬০ মিনিটস’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প উল্লেখ করেছিলেন, মামদানি কমিউনিস্ট এবং তার জয়ের ক্ষেত্রে শহরে অর্থ সরবরাহ করা কঠিন হবে। ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, মামদানির জয়ের ক্ষেত্রে, কমিউনিস্ট প্রার্থী হওয়ায় তিনি প্রয়োজনীয় ন্যূনতম তহবিল ব্যতীত অন্য কোনো ফেডারেল অর্থ প্রদান করবেন না এবং শহরের সফলতার সম্ভাবনা কমবে। তিনি আরও জানান, মামদানি জিতলে নিউইয়র্ক সিটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটের মুখোমুখি হবে এবং তিনি এমন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর পক্ষে, যার ইতিবাচক অর্জন রয়েছে। সাক্ষাৎকারে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, শহরে কমিউনিস্ট থাকলে ফান্ড প্রদান অর্থহীন হবে।

নিউইয়র্ক রাজ্য কম্পট্রোলারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ অর্থবছরে শহরের প্রয়োজনীয় ফেডারেল তহবিল প্রায় ৭.৪ বিলিয়ন ডলার, যা মোট বাজেটের ৬.৪ শতাংশ। ২০২৫ সালে শহরের পরিচালনা বাজেট ছিল ৯.৭ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ১.১ বিলিয়ন ডলার মহামারি তহবিল হিসেবে সংরক্ষিত ছিল। বরাদ্দকৃত অর্থের বড় অংশ হাউজিং, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য সামাজিক সেবামূলক সংস্থাগুলোকে সমর্থন দিতে ব্যবহার করা হয়। তবে সংবিধান অনুযায়ী, ফেডারেল তহবিল বণ্টনের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতে নেই; কর সংগ্রহ ও অর্থ ব্যয়ের সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের অধিকার। ১৯৭৪ সালের ‘ইমপাউন্ডমেন্ট কন্ট্রোল অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট কংগ্রেস অনুমোদিত তহবিল সর্বোচ্চ ৪৫ দিন পর্যন্ত স্থগিত করতে পারেন, কিন্তু কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া তা কার্যকর হবে না।

বর্তমানে সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, যেখানে সিনেটে ৫৩ ও ৪৭ এবং প্রতিনিধি পরিষদে ২২০ ও ২১২ আসন রয়েছে। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন নিউইয়র্কের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করেছিল। মেয়র এরিক অ্যাডামসের সময় মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্ট অথরিটির ১২ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ স্থগিত করা হয়েছিল, যা পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত ছিল। রাজ্য কম্পট্রোলারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কয়েকশো মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল কাটা বা স্থগিত হতে পারে। বিশ্লেষকরা অনুমান করছেন, ২০২৫ সালে শহরের দৈনন্দিন বাজেট থেকে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৬ সালে প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন ডলার কমে যাবে।

-রাফসান


ইতিহাস সৃষ্টিকারী কে এই জোহরান মামদানি? যিনি প্রথম মুসলিম ও সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হতে চলেছেন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১০:৫০:০৮
ইতিহাস সৃষ্টিকারী কে এই জোহরান মামদানি? যিনি প্রথম মুসলিম ও সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হতে চলেছেন
ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্ববাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র এবং আধুনিক সভ্যতার প্রতীক নিউইয়র্ক সিটির নেতৃত্বভার এখন যেতে চলেছে এক তরুণ মুসলিম ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিকের হাতে। তিনি হলেন ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি। যদি তিনি মেয়র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেন, তবে তিনি হবেন নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম, প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং একইসঙ্গে সর্বকনিষ্ঠ মেয়র। তাঁকে ঘিরে এখন কেবল মার্কিন রাজনীতিই নয়, আলোচনা সরব গোটা বিশ্ব।

শৈশব ও পারিবারিক পটভূমি

জোহরান মামদানি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৯১ সালের ১৮ অক্টোবর, উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায়। তাঁর পরিবার বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। তাঁর মা প্রখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার, আর বাবা মাহমুদ মামদানি একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী, যিনি ভারতের মাটিতে জন্ম নিলেও উগান্ডার নাগরিক।

মাত্র পাঁচ বছর বয়সে পরিবারসহ জোহরান দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। এরপর সাত বছর বয়সে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন নিউইয়র্কে। ছোটবেলা থেকেই তিনি বিভিন্ন দেশের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও অভিবাসী জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, যা পরবর্তীতে তার রাজনৈতিক চিন্তাধারায় গভীর প্রভাব ফেলে।

রাজনীতিতে উত্থান ও জনপ্রিয়তার কারণ

জোহরান মামদানির রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয় ২০২০ সালে, যখন তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন। সেখান থেকেই তিনি সাধারণ মানুষের সমস্যা, বিশেষত ভাড়া, গণপরিবহন ও শিক্ষা নিয়ে সরাসরি কাজ করে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

২০২৪ সালে তিনি যখন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেন, তখনও তিনি তুলনামূলকভাবে অপরিচিত মুখ ছিলেন। কিন্তু মাত্র এক বছরের মধ্যেই তার প্রচারাভিযান নিউইয়র্কের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত প্রার্থী হয়ে ওঠে। এই নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া। প্রথমে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিলেও জনসমর্থনের অভাবে তিনি সরে দাঁড়ান। মামদানি বারবার বলেছেন, বিশ্ব বদলাতে বয়স বা অভিজ্ঞতা নয়, প্রয়োজন হয় ইচ্ছা আর সততা, যা তরুণ ভোটারদের প্রভাবিত করেছে।

তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে ছিল— স্থায়ী ভাড়ার সীমা নির্ধারণ, গণপরিবহন বিনামূল্যে করা, শিশু যত্নের সার্বজনীন সুযোগ এবং ধনীদের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করে সামাজিক কল্যাণে ব্যয়। এই ধরনের সমাজকল্যাণমূলক প্রতিশ্রুতিগুলো শহরের শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে দ্রুত সাড়া ফেলে দেয়।

আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সরব অবস্থান

জোহরান মামদানি শুধু অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও নিজের অবস্থান জানাতে সরব। তিনি গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সোচ্চার। তাঁর দাবি, গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যদি নিউইয়র্কে আসেন, তবে তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত।

এমন কঠোর অবস্থানের কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে তাঁর সমালোচনা করেন এবং হুমকি দেন যে, মামদানি যদি নির্বাচনে জেতেন, তাহলে নিউইয়র্কের ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু ট্রাম্পের এই বিতর্কিত বক্তব্য উল্টো মামদানির জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে দেয়।


উত্তর গাজার প্রবেশপথ এখনো বন্ধ,যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১০:৪২:৩২
উত্তর গাজার প্রবেশপথ এখনো বন্ধ,যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা
উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের মধ্যে একজন ফিলিস্তিনিখাবার তৈরি করছেন। ছবি: আল জাজিরা

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলমান থাকলেও, ত্রাণ প্রবেশে ইসরায়েলের অব্যাহত বিধিনিষেধের কারণে গাজাবাসীর মধ্যে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি এখন ক্ষুধা ও চরম দুর্ভোগে কাতর হচ্ছেন। জাতিসংঘ সতর্ক করে জানিয়েছে, সীমিত সীমান্ত খোলা থাকার কারণে ত্রাণ সরবরাহে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হয়েছে। বৈশ্বিক এই সংস্থাটি এখন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফিলিস্তিনিদের কাছে জরুরি ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরেছে।

ত্রাণ অপ্রতুল ও উত্তর গাজা বিচ্ছিন্ন

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মুখপাত্র আবির ইতেফা মঙ্গলবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গত মাসে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও সীমিতভাবে সীমান্ত খোলা থাকার কারণে ত্রাণের পরিমাণ এখনো 'অত্যন্ত কম'।

ইতেফা জোর দিয়ে বলেন, "আমাদের পূর্ণ প্রবেশাধিকার দরকার। দ্রুতগতিতে ত্রাণ সরানো জরুরি। আমরা সময়ের সঙ্গে দৌড়াচ্ছি। শীত চলে আসছে, অথচ মানুষ এখনো ক্ষুধায় ভুগছেন।" তিনি জানান, ডব্লিউএফপি গাজাজুড়ে ৪৪টি স্থানে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে।

তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, যে পরিমাণ খাদ্য গাজায় প্রবেশ করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় মোটেও যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে উত্তর গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো এখনো কঠিন, যেখানে গত আগস্টেই বৈশ্বিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি শনাক্ত করেছিল। ইতেফা বলেন, "উত্তর গাজার প্রবেশপথ এখনো বন্ধ। ফলে আমাদের ত্রাণ কাফেলাগুলোকে দক্ষিণ দিকের দীর্ঘ ও ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় ঘুরে যেতে হচ্ছে। কার্যকর ত্রাণ বিতরণের জন্য সীমান্ত পারাপারের সব পয়েন্ট খোলা দরকার, বিশেষ করে উত্তর দিকেরগুলো।"

চুক্তির শর্ত ভঙ্গ ও হামলা অব্যাহত

গাজার সরকারি তথ্য অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী দৈনিক ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করার কথা। কিন্তু ১০ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে গাজায় প্রবেশ করেছে মাত্র ৩ হাজার ২০৩টি বাণিজ্যিক ও ত্রাণবাহী ট্রাক, অর্থাৎ গড়ে দিনে মাত্র ১৪৫টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, যা চুক্তির শর্তের অর্ধেকেরও কম।

এর পাশাপাশি, যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। মঙ্গলবার গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি কোয়াডকপ্টার হামলায় একজন নিহত ও একজন আহত হন। উত্তর গাজার জাবালিয়াতেও সেনাদের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে স্থানীয় হাসপাতাল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৪০ জন নিহত ও ৬০৭ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে, ইসরায়েলি সেনারা 'ইয়েলো লাইন'-এ পিছু হটার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজার বাড়িতে ফিরে গেছেন। কিন্তু তাদের অধিকাংশই ফিরে দেখেন, তাদের ঘরবাড়ি ও আশপাশের এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

সূত্র: আল জাজিরা


জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১০:১৭:৫৯
জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম ও অন্যতম প্রভাবশালী শহর নিউইয়র্কে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম রাজনীতিক জোহরান মামদানি। শহরটির প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে তিনি শুধু নিউইয়র্ক নয়, বরং বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন।

বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রকাশিত আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রায় ৮৪ লাখেরও বেশি মানুষের এই মহানগরের নেতৃত্বে উঠে এসে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে মামদানি নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি একই সঙ্গে নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম, দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এবং আফ্রিকা মহাদেশে জন্ম নেওয়া ব্যক্তি যিনি শহরটির মেয়র পদে আসীন হয়েছেন।

রাজনীতিতে প্রবেশের আগে তিনি নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন এবং সেখানে থেকেই তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ স্থাপন করেন। মঙ্গলবারের নির্বাচনে জয়লাভের পর তার বিজয়োৎসবের আয়োজন ছিল ব্রুকলিনের প্যারামাউন্ট থিয়েটারে, যদিও সোমবারই তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আজ নিউইয়র্কে ইতিহাস তৈরি হয়েছে, আর এই ইতিহাসের নায়ক আপনারাই।”

নিউইয়র্কের বহু জাতি, ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষের কাছে মামদানির এই বিজয় এক অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে তার সমর্থকদের মতে, এই জয় ধর্ম বা জাতিগত পরিচয়ের নয়, বরং বাস্তব জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিশেষত জীবনযাত্রার ব্যয়, আবাসন সংকট ও সামাজিক ন্যায্যতা নিয়ে তার কার্যকর প্রচারণারই ফল।

আল জাজিরা তাদের বিশ্লেষণে বলেছে, এই নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতর মতাদর্শিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে। সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো ছিলেন মূলধারার, ধনী দাতাদের প্রভাবাধীন রাজনীতির প্রতিনিধি; অন্যদিকে মামদানি নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে, যা প্রগতিশীল তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।

ভোটদানের দিন কুয়োমো মন্তব্য করেন, “এটি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে এক ধরনের গৃহযুদ্ধ, যেখানে সমাজতান্ত্রিক নেতৃত্বাধীন বামপন্থিরা মধ্যপন্থিদের চ্যালেঞ্জ করছে।” এই বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বাড়তে থাকা বিভাজনের বাস্তবতা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। ব্রঙ্কসের সমাজকর্মী ৩৩ বছর বয়সী জোশুয়া উইলসন বলেন, “ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে দেশ গভীরভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাই এই সময়ে জোহরান মামদানি মতো তরুণ ও নতুন নেতৃত্বের উত্থান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”

৬৮ বছর বয়সী ভোটার লুসি কর্দেরো জানান, “আমরা কুয়োমোকে বহু বছর ধরে দেখেছি, কিন্তু তিনি সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ ছিলেন। মামদানি তরুণ, নতুন এবং পরিবর্তনের আশা জাগানিয়া এক মুখ।” একইভাবে ব্রুকলিনের ক্রাউন হাইটস এলাকার ৫২ বছর বয়সী ফ্রিল্যান্সার মেগান মার্কস বলেন, “মামদানির রাজনৈতিক অবস্থান আমার চেয়ে বেশি বামঘেঁষা, কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তার মতো দৃষ্টিভঙ্গির একজন নেতার উপস্থিতি জরুরি। আমি তাকে সমর্থন করেছি, কারণ তার মধ্যে সততা ও নতুন চিন্তার সাহস দেখেছি।”

এদিকে নির্বাচনের কয়েক ঘণ্টা আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কুয়োমোকে সমর্থনের ঘোষণা দেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সমর্থন রক্ষণশীল ভোটারদের ঐক্যবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে দেওয়া হলেও তা উল্টো মামদানির পক্ষে কাজ করেছে। ৫৫ বছর বয়সী আইনজীবী অ্যালেক্স লরেন্স বলেন, “প্রথমে আমি মামদানিকে ভোট দিইনি, কিন্তু পরে তার বক্তব্য শুনে তার ইতিবাচক মনোভাব ও সততায় অনুপ্রাণিত হয়েছি এবং তাকে সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ড্রাইভার ইফতেখার খান বলেন, “এই নির্বাচনে মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় ভোটারদের ঐক্যই ছিল মামদানির বড় শক্তি। ২০০১ সালের ৯/১১ হামলার পর যেভাবে মুসলিমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন, সেই ইতিহাসের বিপরীতে এই বিজয় আমাদের জন্য নতুন মর্যাদা ও আশার সূচনা।”

-রফিক

পাঠকের মতামত:

গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত

গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠদান, দীর্ঘদিন ধরে পাঠ্যপুস্তকনির্ভর শিক্ষা ও পরীক্ষাকেন্দ্রিক মূল্যায়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের... বিস্তারিত

হৃদরোগের ঝুঁকি কম বয়সে: হার্টের রক্তনালী বন্ধ হওয়ার ৭টি প্রাথমিক লক্ষণ চিনে সতর্ক হোন

হৃদরোগের ঝুঁকি কম বয়সে: হার্টের রক্তনালী বন্ধ হওয়ার ৭টি প্রাথমিক লক্ষণ চিনে সতর্ক হোন

বর্তমানে কম বয়সের মধ্যেই হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, তীব্র মানসিক চাপ এবং অপর্যাপ্ত শারীরিক চলাফেরার মতো কারণগুলো... বিস্তারিত