৩ মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা সুন্দরবন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ৩১ ১৬:৩১:১২
৩ মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা সুন্দরবন

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে প্রতিবছরের মতো এবারও ১ জুন থেকে শুরু হচ্ছে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা, যা চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়কালে বন্ধ থাকবে পর্যটকদের প্রবেশ এবং মাছ ও কাঁকড়া ধরার সব ধরনের কার্যক্রম। উদ্দেশ্য—বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং মাছ ও বন্যপ্রাণীর নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করা।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের আওতায় থাকা খুলনার কয়রায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে মাইকিং করে স্থানীয় বনজীবীদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বন বিভাগ জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো জেলে বা বনজীবীকে প্রবেশের অনুমতি (পাস) দেওয়া হবে না। পর্যটকরাও সুন্দরবনে ঢুকতে পারবেন না। বর্ষা মৌসুমে সুন্দরবনের ২৫১ প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে, তাই মাছ ধরা বন্ধ থাকলে প্রাকৃতিকভাবে মাছের সংখ্যা বাড়ে। কিন্তু এই বিধিনিষেধে বিপাকে পড়েছেন উপকূলীয় এলাকার হাজারো বনজীবী।

শনিবার সকালে কয়রার শাকবাড়িয়া নদীতীরে দেখা গেছে, সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা শতাধিক মাছ ধরার নৌকা নদীর পাড়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ নৌকা মেরামতের কাজ করছেন। অনেকেই এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন, কীভাবে চলবে তাদের সংসার।

স্থানীয় বনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, “সুন্দরবনের মাছ, কাঁকড়া ও মধু বিক্রি করে সংসার চলে। এখন তিন মাস বন বন্ধ। এলাকায় তেমন কাজ নেই। কীভাবে চলব, কিছু বুঝতে পারছি না।”

পাথরখালী গ্রামের জেলে শফিকুল ইসলাম জানান, “সাগরের জেলেদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হলেও সুন্দরবনের জেলেদের কিছুই দেওয়া হয় না। বাজারে সবকিছুর দাম বেশি। সহায়তা না পেলে দিন চলা কঠিন হয়ে পড়বে।”

সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সাহিদ জানান, “সুন্দরবনে মাছ ধরা ও পর্যটক প্রবেশ বন্ধের পাশাপাশি সব পাস-পারমিট বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি বিষ দিয়ে মাছ ধরা ও বন্যপ্রাণী শিকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে বন বিভাগ।”

কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় বলছে, সেখানে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫২৬ জন। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, কয়রার ৫টি ইউনিয়নে অন্তত ৫০ হাজার জেলে পরিবারের বসবাস রয়েছে, যাঁরা প্রজন্ম ধরে বনজীবী হিসেবে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সমীর কুমার সরকার বলেন, “প্রকৃত জেলে হলেও কার্ড না থাকায় অনেকেই সহায়তা পাচ্ছেন না। আমরা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত জেলেদের অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছি।”

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাসানুর রহমান বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সময়ে বনজীবীদের জন্য আমরা বিকল্প খাদ্য সহায়তা হিসেবে মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার প্রস্তাব করেছি। এ বিষয়ে একটি তালিকা মৎস্য বিভাগে পাঠানো হয়েছে।”


শুক্রবার থেকে শনিবার ২২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ২১:৩৪:৩৯
শুক্রবার থেকে শনিবার ২২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
ছবিঃ সংগৃহীত

তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ঢাকা ও গাজীপুরের কয়েকটি এলাকায় টানা ২২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হয়ে এই সরবরাহ বন্ধ থাকবে শনিবার সকাল পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এক বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে এবং গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।

বার্তায় বলা হয়, তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শুরু করে শনিবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৭টা পর্যন্ত মোট ২২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

যেসব এলাকার সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে, সেগুলো হলো:

গাজীপুর অঞ্চল: কড্ডা, কোনাবাড়ি, জরুন, সুরাবাড়ি, কাশিমপুর, মৌচাক, সফিপুর, চন্দ্রা, কালিয়াকৈর ও শ্রীপুর।

ঢাকা সংলগ্ন অঞ্চল: নবীনগর, সাভার ক্যান্টনমেন্ট, আশুলিয়া, জিরাবো এবং এর কাছাকাছি অন্যান্য এলাকা।

জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য এই গ্যাস সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


মবের ভয় কেন? যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলেন, ভয় তাদেরই: প্রেস সচিব

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ২০:৫১:১২
মবের ভয় কেন? যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলেন, ভয় তাদেরই: প্রেস সচিব
বক্তব্য রাখছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি : কালবেলা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম মন্তব্য করেছেন, যেসকল সাংবাদিক বর্তমানে 'মবের ভয়ে' আছেন, তারা মূলত পূর্ববর্তী 'ফ্যাসিবাদের দোসর' ছিলেন। তিনি দাবি করেন, বর্তমান সরকার কাউকে ডিজিএফআই বা এনএসআই দিয়ে হয়রানি করেনি, বরং এই সরকারের অধীনে সাংবাদিকরা তুলনামূলক নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারছেন।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত 'গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: ইশতেহারে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি' শীর্ষক সংলাপে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ভয় নিয়ে প্রেস সচিবের কড়া মন্তব্য

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, "অনেকে বলেন মবের ভয়ে আছেন। আমি তো কোথাও সেই ভয় দেখি না।" তিনি যুক্তি দেন, "যিনি মবের ভয় করছেন, তিনি হয়তো তখন দোসর ছিলেন। এখন আপনি যদি দোসর হন, আমি তো আপনার পাপ ক্লিন আপ করব না।"

তিনি দাবি করেন, যারা এখন মবের ভয় পাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই আগের সরকারের দোসর ছিলেন এবং "ভয়টা নিজে নিজে থেকেই আসছে।" তিনি নিশ্চিত করেন, "আমরা বলেছি কোনো গণমাধ্যমে কোনো ধরনের আক্রমণ আমরা সহ্য করব না। সে কথা আমরা রেখেছি।" তিনি আরও বলেন, গত ১৫ মাসে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে সরকার কাজ করেছে, কিন্তু রাজনৈতিক সরকার এলে সেটি টিকে থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন এখনো রয়ে গেছে।

গণমাধ্যমের ইকোসিস্টেম নিয়ে অন্যান্যদের বক্তব্য

সংলাপে অংশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞরা গণমাধ্যম খাতের সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেন।

বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর বলেন, বর্তমানে মিডিয়া হাউস নিয়ে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, মিডিয়া হাউসগুলো শুধু সংবাদ পরিবেশন করে না, তারা ভেটো ক্ষমতার মতো আচরণ করতে চায়। তিনি বড় ব্যবসায়ীদের নতুন নতুন মিডিয়া খোলার প্রবণতা এবং সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার ওপর জোর দেন।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন বলেন, গণমাধ্যমের পুরো ইকোসিস্টেম এখন সাংবাদিকদের জন্য ক্ষতিকর। তিনি জানান, পোশাকশ্রমিকের মতো বেতনে সাংবাদিক নিয়োগ হয়। তিনি অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পর বহু গণমাধ্যমের মালিকানা ও শীর্ষপদে পরিবর্তন এসেছে এবং দলীয় মদতপুষ্ট লোকেরা সেখানে গিয়ে আগে এক দলের ন্যারেটিভ প্রচার করতেন, এখন অন্য দলেরটা করছেন। তিনি 'ক্রস ওনারশিপ' বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এক মালিকের অধীনে একাধিক গণমাধ্যম থাকা উচিত নয়, 'এক মালিক, এক গণমাধ্যম' নীতি থাকা দরকার।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, গণমাধ্যমে দৃশ্যমান কোনো সংস্কার চোখে পড়েনি এবং শেখ হাসিনা আমলের সিস্টেমই এখনো চলছে। তিনি সাবেক উপদেষ্টাদের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বলেন, যারা অন্তর্বর্তী সরকারের অংশ ছিলেন, তারা যদি তাদের মন্ত্রণালয়ে সংস্কার করে দেখাতে পারতেন, তাহলে তারা রোল মডেল হতে পারতেন।

ভুয়া খবর ও ফটোকার্ড বিতর্ক

শফিকুল আলম মিসইনফরমেশন বা ভুয়া খবর ছড়ানোকে বর্তমান সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দখল নিয়ে ১ হাজার ভুয়া নিউজ ছড়িয়েছে এবং মাইলস্টোন নিয়েও গুজব ছড়িয়েছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের সক্ষমতা খুবই সীমিত; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা খবর ধরার বা প্রতিহত করার প্রয়োজনীয় টুল ও ব্যবস্থা নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে দৃঢ় রাখতে হলে এসব ফেক নিউজকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

অন্যদিকে, রাশেদ খাঁন 'ফটোকার্ড' নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মানুষ পুরো খবর না পড়ে দুই লাইনের ফটোকার্ডই শেয়ার করে। এতে বিকৃত বার্তা ছড়ায় এবং নেতাদের চরিত্রহনন হয়। তিনি বলেন, ফটোকার্ড বাদ দিতে বলছেন না, কিন্তু এর অপব্যবহার বন্ধ করতে নীতিমালা তৈরি করা জরুরি।


শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কি সম্ভব? যা আছে আইআরআইর আট দফার সুপারিশে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১৮:৩২:৫০
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কি সম্ভব? যা আছে আইআরআইর আট দফার সুপারিশে

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করতে আটটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণতন্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)। গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসি থেকে প্রকাশিত তাদের প্রাক্‌-নির্বাচনী মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ সুপারিশগুলো উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ গতি-প্রকৃতি, নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম, রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা, এবং নাগরিক অংশগ্রহণের মাত্রা বিশ্লেষণ করে প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যেই আসন্ন নির্বাচনের জন্য বেশ কিছু ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনকালীন আচরণবিধি প্রণয়ন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা, এবং ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ। তবে এসব উদ্যোগ সত্ত্বেও আইআরআই মনে করছে, বর্তমান প্রাক্‌-নির্বাচনী পরিবেশ এখনো ভঙ্গুর ও আস্থাহীনতার মধ্যে রয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতার বিচ্ছিন্ন ঘটনা, স্থানীয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক, নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থার ঘাটতি সব মিলিয়ে নির্বাচনী আস্থা পুনর্গঠনে প্রয়োজন আরও স্বচ্ছতা ও সংলাপ।

আইআরআইয়ের প্রাক্‌-নির্বাচনী মূল্যায়ন মিশনের কার্যক্রম

প্রাক্‌-নির্বাচনী এই মূল্যায়ন মিশনে অংশ নেন একদল আন্তর্জাতিক নীতি, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও গণতান্ত্রিক প্রশাসন বিশেষজ্ঞ। তাঁরা ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করেন এবং রাজধানী ঢাকাসহ একাধিক জেলায় মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। সফরের সময় তাঁরা নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের সদস্যদের সঙ্গে মোট ২১টি আনুষ্ঠানিক বৈঠকে ৫৯ জন অংশগ্রহণকারীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।মিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু ইতিবাচক রূপান্তর দেখা যাচ্ছে। বিশেষত, তরুণ নেতৃত্বের উত্থান, নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর আবির্ভাব, এবং বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সক্রিয় রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে। পাশাপাশি, প্রথমবারের মতো বিপুলসংখ্যক তরুণ ভোটারের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রজন্মগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের একটি নতুন অধ্যায় সূচিত করতে পারে।

তবে প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার ঘাটতি, নারীর সীমিত অংশগ্রহণ, উগ্রপন্থী রাজনীতির পুনরুত্থান এবং অসহিষ্ণু রাজনৈতিক বক্তব্যের প্রসার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করতে পারে। আইআরআই মনে করছে, এই চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণ বাস্তবায়নে আন্তরিক ও দায়বদ্ধ হতে হবে।

জুলাই সনদ: গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের নীলনকশা

আইআরআই প্রতিবেদনে জুলাই জাতীয় সনদকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের একটি “রূপরেখা দলিল” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এই সনদ বাস্তবায়ন হলে নির্বাচনী ব্যবস্থার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, দলীয় সংস্কারে অগ্রগতি, এবং সংসদীয় জবাবদিহি আরও জোরদার হবে। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ও সংসদের কার্যকর ভূমিকার ওপর।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সনদের সময়মতো বাস্তবায়ন, দলীয় নীতিতে অন্তর্ভুক্তি, এবং সংলাপ-ভিত্তিক সংস্কার প্রক্রিয়াই নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা পুনর্গঠনের পথ খুলে দিতে পারে। আইআরআই উল্লেখ করে, গণতন্ত্র তখনই কার্যকর হয়, যখন প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের প্রতি সহিষ্ণু থাকে এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখে।

নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ: এখনো সীমিত পরিসরে

আইআরআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখনো কাঠামোগতভাবে সীমিত। সংরক্ষিত আসনের বাইরে নারীরা খুব কমই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান বা সিদ্ধান্তগ্রহণের পর্যায়ে আসতে পারেন। আইআরআই পরামর্শ দিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোকে নারীর নেতৃত্ব বিকাশে প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি চালু, মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় সমঅধিকার নিশ্চিত, এবং প্রচারণার সময় নিরাপত্তা সুরক্ষা জোরদার করতে হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নারী প্রার্থী ও প্রচারকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও সহিংসতার ঘটনা গণতন্ত্রের অন্তর্ভুক্তিমূলক চরিত্রকে ব্যাহত করে। তাই নারী রাজনীতিবিদদের জন্য নিরাপদ রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে আইআরআই।

শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইআরআইয়ের আট দফা সুপারিশ

১. জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন:

রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ ও প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। গণতান্ত্রিক সংস্কার ও বিতর্কিত বিষয়গুলোর সমাধানে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।২. গণভোটের কাঠামো নির্ধারণ:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে যৌথভাবে গণভোটের জন্য আইনি ও প্রশাসনিক কাঠামো প্রণয়ন করতে হবে। গণভোটের উদ্দেশ্য, প্রক্রিয়া এবং জনগণের অংশগ্রহণের বিষয়টি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।

৩. নাগরিক সচেতনতা ও শিক্ষা কর্মসূচি:

জুলাই সনদ ও সাংবিধানিক সংস্কার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের বোঝাপড়া বাড়াতে দেশব্যাপী নাগরিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে হবে। বিশেষ করে তরুণ, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৪. নারীর অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা:

রাজনৈতিক দলগুলোকে নারীদের নেতৃত্বে আনতে, মনোনয়নে অগ্রাধিকার দিতে এবং নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত করতে উদ্যোগ নিতে হবে।

৫. প্রার্থী বাছাইয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা:

দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়া যেন গণতান্ত্রিক ও জবরদস্তিমুক্ত থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে প্রার্থী ও প্রচারকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৬. নিরাপত্তা সমন্বয় ও সহিংসতা প্রতিরোধ:

নির্বাচন কমিশনকে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রাখতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে উত্তেজনা প্রশমনে সক্রিয় নজরদারি চালাতে হবে।

৭. নাগরিক পর্যবেক্ষণে স্বচ্ছতা:

নির্বাচন কমিশনকে নাগরিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর যোগ্যতার মানদণ্ড নির্ধারণ এবং প্রত্যাখ্যানের কারণ লিখিতভাবে জানানো বাধ্যতামূলক করতে হবে। অনুমোদিত সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিয়মিত তথ্য বিনিময় করতে হবে।

৮. রাজনৈতিক অর্থায়নে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা:

রাজনৈতিক দলগুলোর তহবিল সংগ্রহ, ব্যয় ও দাতাদের তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। আর্থিক অনিয়ম বা ভুল তথ্য প্রদানে কঠোর শাস্তির বিধান রাখতে হবে এবং স্বাধীন নিরীক্ষা উৎসাহিত করতে হবে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও তথ্যের স্বচ্ছতা

প্রতিবেদনে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আইআরআই বলেছে, সাংবাদিকদের এমন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে যেখানে তারা রাজনৈতিক চাপ, ভয়ভীতি বা অর্থনৈতিক প্রভাব ছাড়াই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ব্যাহত হলে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

এছাড়া নির্বাচন কমিশন ও নাগরিক সমাজের যৌথ প্রচেষ্টায় ভোটারদের ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শনাক্ত করার সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। আইআরআই সতর্ক করেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য বা সংগঠিত অপপ্রচার নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করতে পারে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য বড় হুমকি।

সর্বশেষে, আইআরআই বলেছে, বাংলাদেশ এখন এক সংবেদনশীল গণতান্ত্রিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। নির্বাচনের সাফল্য নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর সহনশীলতা, সংলাপ, স্বচ্ছতা এবং জনগণের অংশগ্রহণের ওপর। যদি এসব শর্ত পূরণ হয়, তবে ২০২৬ সালের নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে।


২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা পাস, মোট ছুটি যতদিন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১৮:০৮:৫৮
২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা পাস, মোট ছুটি যতদিন
ছবি: সংগৃহীত

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন এই তালিকা অনুযায়ী আগামী বছর মোট সরকারি ছুটি থাকবে ২৮ দিন। তবে এর মধ্যে নয়টি ছুটি শুক্রবার ও শনিবারে পড়ায় কার্যদিবসে প্রকৃত ছুটি থাকবে ১৯ দিন। অর্থাৎ ছুটির দিন সংখ্যায় কিছুটা বৃদ্ধি হলেও বাস্তবে ছুটি কমে আসবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ২০২৬ সালের সাধারণ ছুটি এবং নির্বাহী আদেশে ঘোষিত ছুটির তালিকা চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পেয়েছে। তালিকায় ধর্মীয়, জাতীয় ও বিশেষ দিবসগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে ছুটির দিনগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রেসসচিব আরও বলেন, মোট ছুটি ২৮ দিন হলেও নয়টি দিন সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিলেছে। ফলে সরকারি দপ্তরে কার্যকরভাবে ছুটি থাকবে ১৯ দিন। তিনি জানান, শিগগিরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই অনুমোদিত তালিকা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করবে, যাতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আগাম ছুটির পরিকল্পনা নিতে পারে।

উল্লেখ করা যায়, ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল গত বছর ১৭ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে। সেই অনুযায়ী, চলতি বছরে মোট ২৬ দিন সরকারি ছুটি নির্ধারিত ছিল এর মধ্যে সাধারণ ছুটি ১২ দিন এবং নির্বাহী আদেশের ছুটি ছিল ১৪ দিন। তবে তখনও নয়টি দিন শুক্রবার ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিলে যাওয়ায় কার্যকর ছুটি ছিল ১৭ দিন।

২০২৬ সালের ছুটির তালিকা তুলনামূলকভাবে দুই দিন বেড়েছে, যদিও বাস্তবিকভাবে কাজের দিন বাদে ছুটি বাড়েনি। প্রশাসনিক সূত্র বলছে, এভাবে ছুটির কাঠামো নির্ধারণের ফলে সরকারি দপ্তরের নিয়মিত কার্যক্রম বজায় থাকবে এবং একই সঙ্গে ধর্মীয় ও জাতীয় দিবসগুলোও যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হবে।

-রফিক


ঐতিহাসিক দৃশ্য: তিস্তা ব্যারেজ থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ চূড়া

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১২:২৫:৪৬
ঐতিহাসিক দৃশ্য: তিস্তা ব্যারেজ থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ চূড়া
মেঘমুক্ত আকাশে উঁকি দিচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। ছবি: ইত্তেফাক

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে আবারও বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার মহিমান্বিত দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। মেঘমুক্ত পরিষ্কার আকাশ এবং শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে এই অপরূপ দৃশ্য দেখতে তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে।

গত দু'দিন বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকালে তিস্তা ব্যারেজ এবং সানিয়াজান নদীর তীর থেকে পর্বতশৃঙ্গটি অত্যন্ত স্পষ্ট দেখা গেছে। টানা কয়েকদিনের মেঘলা আবহাওয়ার পর তিন দিন ধরে আকাশ পরিষ্কার থাকায় দর্শনার্থীরা ভোর থেকেই ব্যারেজ এলাকায় আসতে শুরু করেছেন।

ভোরের আলোয় কাঞ্চনজঙ্ঘার সাদা রূপালি চূড়া যেন নতুন দিনের সৌন্দর্যকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। স্থানীয়রা পরিবার-পরিজন নিয়ে এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও শেয়ার করছেন।

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে বিনা পাসপোর্টে ভারত বা নেপালে না গিয়েই তিস্তা ব্যারেজ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাওয়ায় স্থানীয়রা বিশেষভাবে উচ্ছ্বসিত।

ভূগোলবিদরা জানান, কাঞ্চনজঙ্ঘা নেপাল ও ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার (২৮,১৬৯ ফুট), যা মাউন্ট এভারেস্ট ও কে-টু'র পর বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ।

দেখতে আসা একজন দর্শনার্থী মামুন হোসেন বলেন, "১০ কিলোমিটার দূর থেকে এসে সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়েছি, মনে হয় যেন সাদা বরফে মোড়া কোনো স্বপ্নের পাহাড়। এমন দৃশ্য দেখতে পেয়ে আমরা আনন্দিত।"

প্রকৃতিপ্রেমী আরএম রিমন মনে করেন, "কাঞ্চনজঙ্ঘার এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য শীতের অল্প সময়ের জন্য হলেও, তিস্তাপাড়ের সৌন্দর্যকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে।" তিনি মন্তব্য করেন, এই দৃশ্যকে কেন্দ্র করে তিস্তা ব্যারেজকে দ্রুতই একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে।


ফোনে অশ্লীল বার্তা বা ছবি পাঠালে বিপদ; নতুন অধ্যাদেশের খসড়ায় কঠোর শাস্তির বিধান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১১:০৭:৪০
ফোনে অশ্লীল বার্তা বা ছবি পাঠালে বিপদ; নতুন অধ্যাদেশের খসড়ায় কঠোর শাস্তির বিধান
ছবিঃ সংগৃহীত

ফোনে অশ্লীল বা অশোভন বার্তা পাঠানো এবং বারবার ফোন করে বিরক্ত করা—এই ধরনের অপরাধ দমনে কঠোর হচ্ছে দেশের টেলিযোগাযোগ আইন। নতুন বিধান অনুযায়ী, ফোনে অশ্লীল বার্তা পাঠালে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হতে পারে। এমনকি কাউকে যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া বারবার ফোন করে বিরক্ত করলেও গুনতে হতে পারে এক লাখ টাকা জরিমানা বা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড।

এই বিধানগুলো রেখে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া প্রস্তুত করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। বুধবার এই খসড়াটি প্রকাশ করা হয়েছে এবং অংশীজন ও সাধারণ নাগরিকদের মতামত গ্রহণের জন্য এটি বিভাগের ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

অপরাধ ও শাস্তির বিধান

অশোভন বার্তা প্রেরণ (ধারা ৬৯)

টেলিযোগাযোগ বা বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে অশ্লীল, ভীতিকর, অপমানজনক বা অশোভন কোনো বার্তা, ছবি বা ভিডিও পাঠালে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ দেড় কোটি টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।

বিরক্ত করা (ধারা ৭০)

যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কাউকে বারবার ফোন করে বিরক্ত করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই অপরাধের জন্য এক লাখ টাকা জরিমানা বা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে।

আড়ি পাতা

বেআইনিভাবে আড়ি পাতলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা দেড় কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

খসড়া অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ইন্টারনেটভিত্তিক সেবাগুলোও (OTT) এখন থেকে সরকারের অনুমোদনের আওতায় আসবে। এর মধ্যে রয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, অনলাইন মেসেজিং এবং ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপের মতো সেবাগুলো। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে নিবন্ধন নিতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে নিরাপত্তা সংস্থাকে তথ্য সরবরাহ করতে হবে।

এছাড়া, অনুমতিহীনভাবে টেলিযোগাযোগ সেবা বা বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার প্রয়োজনে সরকার প্রয়োজনে যেকোনো প্ল্যাটফর্ম স্থগিত বা বন্ধ করতে পারবে।

এই খাতে কাজের জন্য ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কমিশন’ নামে একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠিত হবে। এই কমিশনটি লাইসেন্স প্রদান, নীতিনির্ধারণ, স্পেকট্রাম বণ্টন এবং প্রযুক্তিগত মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবে। কমিশনটি পাঁচ সদস্যের হবে, যার মধ্যে একজন চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান থাকবেন।

অধ্যাদেশের এই খসড়ার বিষয়ে আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মতামত জানানোর সুযোগ রয়েছে। মতামত [email protected]—এই ই-মেইল ঠিকানায়, অথবা ডাকযোগে সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা ঠিকানায় পাঠানো যাবে।


৫ বা ১২ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন? ইসি প্রস্তুত, অপেক্ষা শুধু সরকারের সবুজ সংকেতের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ০৮:৫৬:২৭
৫ বা ১২ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন? ইসি প্রস্তুত, অপেক্ষা শুধু সরকারের সবুজ সংকেতের
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী বছরের ৫ অথবা ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের ৪ অথবা ৭ তারিখে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। একইসঙ্গে, সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে সম্পন্ন করার চিন্তাভাবনা করছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, সরকারের 'গ্রিন সিগন্যাল' বা সবুজ সংকেত পেলেই কমিশনের বৈঠকে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করার বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

জুলাই সনদে মতভেদ ('নোট অব ডিসেন্ট'), গণভোটের বিষয়বস্তু এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে গত ৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

ওই দিন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে, নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে, সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে, সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। জুলাই সনদে গণভোটের বিষয়বস্তু, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এবং গণভোট কবে হবে তা ঠিক করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরই ছেড়ে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করা নিয়ে নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও, নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "আমি কমিশনার হিসেবে বলছি না, দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, যদি গণভোট করতেই হয়, তাহলে এক দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট করলে কোটি কোটি টাকা বেঁচে যায়।"

নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ আরও বলেন, এত ব্যয়বহুল কাজ দুই দিনে করা কঠিন হবে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে একসঙ্গে দুই নির্বাচন করা সম্ভব। তিনি মনে করেন, সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে সম্ভব হলেও ভোট কেন্দ্র ও ভোটকক্ষ কিছু বাড়ানো লাগতে পারে।

গণভোট কখন কীভাবে হবে, তা নিয়ে এখনো রাজনৈতিক মহলে মতভেদ আছে। কোনো কোনো দল সংসদ নির্বাচন ও গণভোট এক দিনে করার প্রস্তাব দিয়েছে, আবার জাতীয় নির্বাচনের এক মাস আগেও গণভোট করার প্রস্তাব এসেছে।

নির্বাচন কমিশন জোর গতিতে তাদের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে ভোট কেন্দ্রের তালিকা। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখেরও বেশি।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, নতুনদের নিয়ে বর্তমানে দেশের ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। তিনি বলেন, মোট ৬৪টি জেলার ৩০০টি সংসদীয় আসনে ৪২ হাজার ৭৬১টি কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। মোট কক্ষের সংখ্যা ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্কসবাদী) নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি করে নিবন্ধনের চূড়ান্ত সনদ দেওয়া হবে। আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে নির্বাচনি আইনের সব ধরনের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। ইসি শীঘ্রই আরপিও সংশোধনের আলোকে দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা জারি করবে।

প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নেওয়ার আয়োজন হচ্ছে ‘আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের’ মাধ্যমে। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার এই সংসদ নির্বাচনে ১০ লাখের বেশি লোকবল নিয়োজিত থাকবে। একসঙ্গে গণভোট ও সংসদ নির্বাচন হলে বড় ব্যয় সাশ্রয় হবে।

রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন হবে এবং তার আগে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসি তফসিল ঘোষণা করবে।


ইসি'র ঘোষণা: ভোটার এলাকা বদলাতে চাইলে হাতে আছে মাত্র ৫ দিন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ২১:২২:২০
ইসি'র ঘোষণা: ভোটার এলাকা বদলাতে চাইলে হাতে আছে মাত্র ৫ দিন
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই খসড়া তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি শেষে আগামী ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে নতুন করে আর ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ না থাকলেও, ভোটার এলাকা পরিবর্তন বা স্থানান্তরের সুযোগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, ঠিকানা পরিবর্তন করে স্থানান্তর হতে চাইলে আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে। এরপর রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাদের ১৭ নভেম্বরের মধ্যে এই আবেদনগুলো অনুমোদন বা বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইসি সচিবালয় থেকে এই সংক্রান্ত চিঠি সব উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

ভোটার এলাকা স্থানান্তরের প্রক্রিয়া

আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে ভোটার স্থানান্তরের আবেদন নিষ্পত্তি সংক্রান্ত চিঠিতে ইসি উল্লেখ করে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার আগে আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে ভোটার স্থানান্তরের আবেদন দাখিল ও দাখিলকৃত আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করতে বিস্তারিত সময়সূচি অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হলে ভোটারদের ১৩ নম্বর ফরম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হয়।

প্রবাসীদের ভোটার তালিকা চূড়ান্তের নির্দেশ

এদিকে, নির্বাচন কমিশন মাঠপর্যায়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা পাঠিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) খান আবি শাহানুর খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে, প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধনের আবেদন আগামী বৃহস্পতিবারের (৬ নভেম্বর) মধ্যেই নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যেসব প্রবাসীর বায়োমেট্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে, তাদের আবেদন সিএমএস পোর্টালের অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের এনআরবি মেনুতে পাওয়া যাবে। উপজেলা বা থানা বা রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাকে এই আবেদনকৃত ভোটার ফরম ও সংযুক্ত দলিলাদি প্রিন্ট করে সরেজমিনে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসী নাগরিকেরা ভোটার রেজিস্ট্রেশনের জন্য যেসব আবেদন দাখিল করেছেন, সেগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ৬ নভেম্বরের মধ্যে আবশ্যিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। তবে, ১ সেপ্টেম্বর বা তার পরের আবেদনের সঙ্গে ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা না থাকলে সেসব আবেদন রেখে প্রতিবেদন ছকে 'ডকুমেন্ট সংযুক্ত নেই' মর্মে উল্লেখ করতে হবে। পরবর্তীতে ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা হলে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন শেষে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ছক মোতাবেক মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ বরাবর প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।

নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের শুরুর দিকে তফসিল ঘোষণা করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে।


ইসি'র ঘোষণা: ভোটার এলাকা বদলাতে চাইলে হাতে আছে মাত্র ৫ দিন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ২১:২২:২০
ইসি'র ঘোষণা: ভোটার এলাকা বদলাতে চাইলে হাতে আছে মাত্র ৫ দিন
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই খসড়া তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি শেষে আগামী ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে নতুন করে আর ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ না থাকলেও, ভোটার এলাকা পরিবর্তন বা স্থানান্তরের সুযোগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, ঠিকানা পরিবর্তন করে স্থানান্তর হতে চাইলে আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে। এরপর রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাদের ১৭ নভেম্বরের মধ্যে এই আবেদনগুলো অনুমোদন বা বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইসি সচিবালয় থেকে এই সংক্রান্ত চিঠি সব উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

ভোটার এলাকা স্থানান্তরের প্রক্রিয়া

আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে ভোটার স্থানান্তরের আবেদন নিষ্পত্তি সংক্রান্ত চিঠিতে ইসি উল্লেখ করে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার আগে আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে ভোটার স্থানান্তরের আবেদন দাখিল ও দাখিলকৃত আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করতে বিস্তারিত সময়সূচি অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হলে ভোটারদের ১৩ নম্বর ফরম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হয়।

প্রবাসীদের ভোটার তালিকা চূড়ান্তের নির্দেশ

এদিকে, নির্বাচন কমিশন মাঠপর্যায়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা পাঠিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) খান আবি শাহানুর খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে, প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধনের আবেদন আগামী বৃহস্পতিবারের (৬ নভেম্বর) মধ্যেই নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যেসব প্রবাসীর বায়োমেট্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে, তাদের আবেদন সিএমএস পোর্টালের অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের এনআরবি মেনুতে পাওয়া যাবে। উপজেলা বা থানা বা রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাকে এই আবেদনকৃত ভোটার ফরম ও সংযুক্ত দলিলাদি প্রিন্ট করে সরেজমিনে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসী নাগরিকেরা ভোটার রেজিস্ট্রেশনের জন্য যেসব আবেদন দাখিল করেছেন, সেগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ৬ নভেম্বরের মধ্যে আবশ্যিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। তবে, ১ সেপ্টেম্বর বা তার পরের আবেদনের সঙ্গে ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা না থাকলে সেসব আবেদন রেখে প্রতিবেদন ছকে 'ডকুমেন্ট সংযুক্ত নেই' মর্মে উল্লেখ করতে হবে। পরবর্তীতে ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা হলে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন শেষে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ছক মোতাবেক মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ বরাবর প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।

নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের শুরুর দিকে তফসিল ঘোষণা করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে।

পাঠকের মতামত:

গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত

গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠদান, দীর্ঘদিন ধরে পাঠ্যপুস্তকনির্ভর শিক্ষা ও পরীক্ষাকেন্দ্রিক মূল্যায়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের... বিস্তারিত

হাউসকা দুর্গের ভূগর্ভ আর ‘শয়তানের বাইবেল’ কোডেক্স গিগাস: কিংবদন্তি, ইতিহাস ও ভয়ের মনস্তত্ত্ব

হাউসকা দুর্গের ভূগর্ভ আর ‘শয়তানের বাইবেল’ কোডেক্স গিগাস: কিংবদন্তি, ইতিহাস ও ভয়ের মনস্তত্ত্ব

বোহেমিয়ার অরণ্যমালায় একটি দুর্গ, হাউসকা ক্যাসেল, আর তার কয়েক মাইল দূরে এক সন্ন্যাসীর লেখা বিশাল এক পুঁথি, কোডেক্স গিগাস। শতাব্দীজুড়ে... বিস্তারিত

ক্যানসার চিকিৎসায় মহা সাফল্য: নতুন ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পরীক্ষায় শতভাগ কার্যকারিতা

ক্যানসার চিকিৎসায় মহা সাফল্য: নতুন ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পরীক্ষায় শতভাগ কার্যকারিতা

ক্যানসার চিকিৎসায় বিজ্ঞানীরা এক যুগান্তকারী অগ্রগতি অর্জন করেছেন। নতুন এক ধরনের ক্যানসার ভ্যাকসিনের প্রাথমিক মানবদেহে পরীক্ষায় শতভাগ সাড়া পাওয়ার দাবি... বিস্তারিত