৩ মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা সুন্দরবন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ৩১ ১৬:৩১:১২
৩ মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা সুন্দরবন

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে প্রতিবছরের মতো এবারও ১ জুন থেকে শুরু হচ্ছে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা, যা চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়কালে বন্ধ থাকবে পর্যটকদের প্রবেশ এবং মাছ ও কাঁকড়া ধরার সব ধরনের কার্যক্রম। উদ্দেশ্য—বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং মাছ ও বন্যপ্রাণীর নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করা।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের আওতায় থাকা খুলনার কয়রায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে মাইকিং করে স্থানীয় বনজীবীদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বন বিভাগ জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো জেলে বা বনজীবীকে প্রবেশের অনুমতি (পাস) দেওয়া হবে না। পর্যটকরাও সুন্দরবনে ঢুকতে পারবেন না। বর্ষা মৌসুমে সুন্দরবনের ২৫১ প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে, তাই মাছ ধরা বন্ধ থাকলে প্রাকৃতিকভাবে মাছের সংখ্যা বাড়ে। কিন্তু এই বিধিনিষেধে বিপাকে পড়েছেন উপকূলীয় এলাকার হাজারো বনজীবী।

শনিবার সকালে কয়রার শাকবাড়িয়া নদীতীরে দেখা গেছে, সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা শতাধিক মাছ ধরার নৌকা নদীর পাড়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ নৌকা মেরামতের কাজ করছেন। অনেকেই এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন, কীভাবে চলবে তাদের সংসার।

স্থানীয় বনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, “সুন্দরবনের মাছ, কাঁকড়া ও মধু বিক্রি করে সংসার চলে। এখন তিন মাস বন বন্ধ। এলাকায় তেমন কাজ নেই। কীভাবে চলব, কিছু বুঝতে পারছি না।”

পাথরখালী গ্রামের জেলে শফিকুল ইসলাম জানান, “সাগরের জেলেদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হলেও সুন্দরবনের জেলেদের কিছুই দেওয়া হয় না। বাজারে সবকিছুর দাম বেশি। সহায়তা না পেলে দিন চলা কঠিন হয়ে পড়বে।”

সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সাহিদ জানান, “সুন্দরবনে মাছ ধরা ও পর্যটক প্রবেশ বন্ধের পাশাপাশি সব পাস-পারমিট বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি বিষ দিয়ে মাছ ধরা ও বন্যপ্রাণী শিকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে বন বিভাগ।”

কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় বলছে, সেখানে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫২৬ জন। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, কয়রার ৫টি ইউনিয়নে অন্তত ৫০ হাজার জেলে পরিবারের বসবাস রয়েছে, যাঁরা প্রজন্ম ধরে বনজীবী হিসেবে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সমীর কুমার সরকার বলেন, “প্রকৃত জেলে হলেও কার্ড না থাকায় অনেকেই সহায়তা পাচ্ছেন না। আমরা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত জেলেদের অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছি।”

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাসানুর রহমান বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সময়ে বনজীবীদের জন্য আমরা বিকল্প খাদ্য সহায়তা হিসেবে মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার প্রস্তাব করেছি। এ বিষয়ে একটি তালিকা মৎস্য বিভাগে পাঠানো হয়েছে।”

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত