শেখ হাসিনার ভারত থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে দিল্লি

গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে আর উসকানিমূলক কথা বলতে দেবে না ভারত। মূলত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে নজর দিয়েই ভারত এই উদ্যোগ নিতে চলেছে। দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ শ্রী রাধা দত্তের বরাত দিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ সম্প্রতি তার ইউটিউব চ্যানেলে এই তথ্য জানিয়েছেন।
‘জামাই আদর’ বন্ধের কারণ
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “ভারতে শেখ হাসিনার ‘জামাই আদর’ সম্ভবত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মাটি থেকে কোনো কথা না বলতে। তিনি যদি বলতে থাকেন, তাহলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আর কখনোই ভালো হবে না।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতে থেকে দিল্লিতে বসে কোনো কথা বলা যাবে যাবে না। যদি তিনি (শেখ হাসিনা) কথা বলতে থাকেন, তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আর উন্নত হবে না, স্বাভাবিক থাকবে না।”
পরবর্তী সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের প্রস্তুতি
আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি অথবা জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারে বলে ভারত ধারণা করছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় যে-ই আসুক না কেন, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত।
মোস্তফা ফিরোজের মতে, “ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা আগামী নির্বাচন থেকে যারা পরবর্তী সরকারে আসবে, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলবে। ভারত নিশ্চিতভাবেই জানে যে আগামী সরকার হবে বিএনপি অথবা জামায়াত সরকার। দুই সরকারের যারাই নির্বাচিত হোক না কেন, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে ভারত।”
তবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ রাখতে পারবেন।
সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার পথে বাংলাদেশ: বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে
দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে সরকার একটি ‘বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনা’ (Multimodal Transport Plan) গ্রহণের পথে অগ্রসর হচ্ছে। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো—সড়ক, রেল ও নৌপথকে একীভূত করে একটি সমন্বিত, দক্ষ ও সময়সাশ্রয়ী জাতীয় যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিন জানিয়েছেন, পরিকল্পনাটির খসড়া প্রণয়ন প্রায় সম্পন্ন। তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, আমাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পরিবহন পরিকল্পনার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে পারব।”
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বিএসএস) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ মঈনুদ্দিন জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনা প্রণয়নের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, “পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় বিশদ তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। বিদ্যমান সড়ক, রেল ও নৌরুটের মানচিত্র তৈরি, পণ্য ও যাত্রী চলাচলের তথ্য বিশ্লেষণ, অবকাঠামোগত ঘাটতি নিরূপণ, বিনিয়োগ অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং সবচেয়ে কার্যকর পরিবহন মাধ্যম চিহ্নিত করার কাজ চলছে।”
তিনি আরও জানান, পরিকল্পনাটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সরকার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংককে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছে। “উন্নত দেশের পরিবহন ব্যবস্থাপনার মানদণ্ড অনুযায়ী তাদের পরামর্শ পাওয়া গেলে পরিকল্পনাটি হবে আরও বাস্তবসম্মত ও কার্যকর,” বলেন মঈনুদ্দিন।
বর্তমান পর্যায়ে পরিকল্পনাটি মূলত সড়ক, রেল ও নৌপথের সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশের বন্দর, বাণিজ্যকেন্দ্র, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও পর্যটন এলাকাগুলোর সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, এই পর্যায়ে বিমান পরিবহন খাতের পূর্ণ অন্তর্ভুক্তি করা হয়নি, বিশেষ করে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে। কারণ, এ খাতটি এখনো প্রাথমিক বিকাশধারায় রয়েছে।
শেখ মঈনুদ্দিন বলেন, “এই পরিকল্পনার অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হলো একটি কেন্দ্রীয় সমন্বিত নীতিমালা তৈরি করা, যার অধীনে ভবিষ্যতের সব অবকাঠামো প্রকল্প এই মাস্টার প্ল্যানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাস্তবায়িত হবে।”
তিনি স্বীকার করেন যে বাংলাদেশের পরিবহন খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বিভাগসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। তাঁর মতে, “ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ, রোডস অ্যান্ড হাইওয়েজ, ব্রিজ অথরিটি ও এভিয়েশনসহ সব সংস্থাকে ভবিষ্যতে এক ছাতার নিচে এনে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।”
অতীতের দুর্বল পরিকল্পনার উদাহরণ হিসেবে তিনি ঢাকা বিমানবন্দরের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। “বিমানবন্দরে যাত্রীরা পৌঁছানোর পর সরাসরি কোনো গণপরিবহন পান না। দূর থেকে ট্যাক্সি এনে নিতে হয়, যা পরিকল্পনার ঘাটতির স্পষ্ট উদাহরণ।”
তিনি জানান, নতুন বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনায় এই ঘাটতি পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে বিমানবন্দরে মেট্রোরেল সংযোগ বাড়ানো হবে এবং নিয়মিত বাস ও ট্যাক্সি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
মঈনুদ্দিন বলেন, “আমরা এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যেখানে দেশের প্রতিটি পরিবহন খাত পারস্পরিকভাবে সংযুক্ত থাকবে—যাতে সময়, ব্যয় ও সম্পদের সর্বোচ্চ সাশ্রয় নিশ্চিত করা যায়।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে লজিস্টিক্স খাতে দক্ষতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে। দেশের রপ্তানি, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যও পাবে নতুন গতি।
-আশরাফুল ইসলাম
শহিদুল আলমের আটক নিয়ে অপপ্রচার: বাংলাফ্যাক্ট যা জানাল
গাজাগামী ফ্লোটিলার জাহাজ থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়া বাংলাদেশি লেখক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ভিডিওবার্তাটি প্রি-রেকর্ডেড (আগে থেকে রেকর্ড করা), এটি মোটেও সাজানো নয়। বুধবার (৮ অক্টোবর) তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট এই তথ্য জানিয়েছে।
ভিডিও নিয়ে বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার
বাংলাফ্যাক্টের তথ্যমতে, শহিদুল আলমের ভিডিওটি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেস সচিব মো. আশরাফুল আলম খোকন ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে প্রশ্ন তোলেন, আটক করা হলে শহিদুল আলম কীভাবে ভিডিও রেকর্ড করে পোস্ট দিলেন? একই ধরনের মন্তব্য আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ একাধিক ফেসবুক পেজ থেকেও ছড়ানো হচ্ছে।
বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানায়, কনশানস জাহাজের যাত্রীরা যে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন, তা আল জাজিরা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, বিবিসি এবং টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষ থেকেই এই আটকের তথ্য প্রকাশ করা হয়।
প্রি-রেকর্ডেড ভিডিওর কারণ
আলোচিত ভিডিওতে শহিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, ‘যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন... তাহলে বুঝবেন আমাদের ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী আটক ও অপহরণ করেছে।’ বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে, এই স্পষ্টতই এটি আগে থেকে রেকর্ডিং করা ভিডিও। ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া যাত্রীরা এমন ভিডিও আগে থেকেই প্রস্তুত রাখেন, যাতে আটক হওয়ার পর সেগুলোতে নির্দিষ্ট অ্যাক্টিভিস্টরা পোস্ট করতে পারে।
পূর্ব প্রস্তুতি: চলতি বছরের জুনেও Freedom Flotilla Coalition-Gi ‘Madleen’ জাহাজে অংশ নেওয়া কর্মীরা আটক হওয়ার পর তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকেও অনুরূপ প্রি-রেকর্ডেড ভিডিওবার্তা প্রকাশ হয়েছিল।
শেষ মুহূর্তের বার্তা: শহিদুল আলম এই ভিডিওটি পোস্ট করার প্রায় দুই ঘণ্টা আগে ইসরায়েলি বাহিনীর এগিয়ে আসার খবর জানিয়ে ‘Israelis approaching conscience’ লিখে আরেকটি ১ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের ভিডিও পোস্ট করেছিলেন।
বাংলাফ্যাক্ট মনে করছে, আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন ও দমননীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার থাকায় শহিদুল আলমকে ঘিরে পরিকল্পিতভাবে অপতথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে তার ফেসবুক পেজ Bangladesh Stands With Palestine এবং Free Shahidul অ্যাক্টিভিস্টরা পরিচালনা করছেন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: চূড়ান্ত ঐকমত্যের পথে কমিশন
জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়নের ‘চূড়ান্ত রোডম্যাপ’ আগামী শুক্রবারের মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গণভোট ও ঐকমত্য
আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলই একমত হয়েছে। এখনকার পরিস্থিতিতে তারা গণভোটের পথে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে আর কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আজকের আলোচনার মধ্য দিয়ে বাকি বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন:
“গোটা দেশ অপেক্ষা করছে, আমরা সকলে মিলে এমন একটি ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছতে পারব, যাতে করে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের পথরেখাটা নির্ধারিত হয়।”
সময়সীমা ও স্বাক্ষর
কমিশনের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, কমিশন আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে সনদ বাস্তবায়নে সরকারের কাছে এক বা একাধিক সুপারিশ দেবে। তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, আগামী ১৫-১৬ অক্টোবরের মধ্যে যাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের একটা অনুষ্ঠান করতে পারি।”
আলী রীয়াজ জানান, আজকের আলোচনায় গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য যে আইনি প্রক্রিয়া ও কী কী বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেটার একটি ধারণা এসেছে। তিনি বলেন, কিছু ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (ভিন্নমত) থাকলেও, জনগণের সম্মতি যেন জেনে-শুনে নেওয়া যায়, সেদিকে কমিশন লক্ষ্য রাখবে।
তিনি বলেন, যদি ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আরও একদিন বা বড়জোর দুদিন ব্যয় করার প্রয়োজন হয়, কমিশন তা করতে প্রস্তুত।
নতুন দুটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমোদন, নেপথ্যে এনসিপি ও বিএনপি’র নেতা
অন্তর্বর্তী সরকারের নীতি অনুযায়ী, কোনো গণমাধ্যম বন্ধ করা হবে না, বরং নতুন গণমাধ্যমের অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, নতুন গণমাধ্যম এলে প্রতিযোগিতা বাড়বে। বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
নতুন টিভি চ্যানেলের অনুমোদন
মাহফুজ আলম বলেন, “যদি নতুন আইনে গণমাধ্যমের অনুমতি দিতে পারতাম, তবে সেটি সবচেয়ে সুখকর হতো। কিন্তু নতুন আইন প্রণয়ন করতে গেলে, এ সরকারের আমলে কোনো নতুন গণমাধ্যম আসতে পারবে না।” তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের নীতি হলো, কোনো গণমাধ্যম বন্ধ করা হবে না। যেহেতু কোনো গণমাধ্যম বন্ধ হচ্ছে না, তাই নতুন গণমাধ্যমের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে এটি আগের নিয়ম অনুযায়ী করা হবে।
ইতিমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার যে প্রক্রিয়ায় বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের (টিভি) লাইসেন্স দিত, সেই একই প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার দুটি নতুন টিভির অনুমোদন দিয়েছে। চ্যানেল দুটির নাম ‘নেক্সট টিভি’ ও ‘লাইভ টিভি’।
নেক্সট টিভি: এর লাইসেন্স পেয়েছে ‘৩৬ মিডিয়া লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আরিফুর রহমান তুহিন। এই চ্যানেলের পরিচালনা পর্ষদে আছেন বগুড়ার বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম হাফিজুর রহমানের ছেলে এ কে এম গোলাম হাসনাইন, যিনি সৌদি আরব (পূর্বাঞ্চল) বিএনপির সভাপতি।
লাইভ টিভি: ‘লাইভ টিভির’ লাইসেন্স পেয়েছে আরিফুর রহমান নামের আরেকজন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মিনার্ভা মিডিয়া লিমিটেড’। তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ছিলেন।
চ্যানেল অনুমোদনের প্রক্রিয়া
বর্তমানে দেশে অনুমোদিত ৫০টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল রয়েছে। এর মধ্যে পূর্ণ সম্প্রচারে আছে ৩৬টি এবং ১৪টি সম্প্রচারের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদিত আইপি টিভি রয়েছে ১৫টি। টিভি চ্যানেলের আরও কিছু আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল অনুমোদনের জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর সনদ এবং প্রকল্প প্রস্তাবসহ বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়। আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাচাই করা হয় এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছ থেকে ‘ফ্রিকোয়েন্সি ক্লিয়ারেন্স’ নিতে হয়। মূলত সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের ‘সবুজ সংকেত’ থাকলেই তরঙ্গ পাওয়া যায়।
স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি এখন আত্মনির্ভরতা। তিনি বলেন, “আমরা আর কারও ওপর নির্ভরশীল থাকতে চাই না। আমাদের নিজেদের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করতে হবে। যেহেতু আমরা এখনও অন্যদের ওপর নির্ভরশীল, তাই যত দ্রুত সম্ভব এই নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসাই এখন সবচেয়ে জরুরি। এর কোনো বিকল্প নেই।”
আজ বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ‘স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর টেকসই ও মসৃণ রূপান্তর কৌশল বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি’র সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরে পররাষ্ট্র সেবা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সভার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সভায় ড. ইউনূস বলেন, “স্বনির্ভর হতে হলে আমাদের অভ্যাস বদলাতে হবে। নিজেদের মেধা, শ্রম ও অধ্যবসায় দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। শুরুতে কঠিন মনে হলেও এই পথেই আনন্দ ও সার্থকতা নিহিত। আমরা যখন নতুন বাংলাদেশের কথা বলি, তখন সেটি একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশেরই প্রতিশ্রুতি।”
তিনি আরও বলেন, “এই জাতি নিজ যোগ্যতায় দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে। আমাদের শক্তি হলো তরুণ প্রজন্ম ও তাদের সৃষ্টিশীলতা। এই শক্তি ও সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা নির্ভরতার শৃঙ্খল থেকে দেশকে মুক্ত করবে। আমরা আর পরনির্ভরতার বন্ধনে বাঁচতে চাই না।”
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, কৃষি উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, মুখ্য সচিব এম সিরাজউদ্দিন মিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফাইজ তাইয়েব আহমাদ, এবং এসডিজি বাস্তবায়নের মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদসহ ইআরডির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বৈঠকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ঢাকাচেম্বার সভাপতি তাসকিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আব্দুল মুকতাদির।
বিশ্লেষকদের মতে, এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বৈদেশিক সহায়তার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো গঠন করা। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে সেই রূপান্তর পরিকল্পনার দিকনির্দেশনাই স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
-নাজমুল হাসান
উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে বিতর্ক, রিজওয়ানা হাসান চাইলেন নাম
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কারা ‘সেফ এক্সিট’ (নিরাপদ প্রস্থান) নিতে চান, তা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এই মন্তব্য করেন।
এনসিপি নেতার অভিযোগ
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকেই পরিষ্কার করতে হবে, কারা সেফ এক্সিট চায়। তিনি আরও বলেন, একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সর্বোচ্চ সহায়তা করবে। কোনো দল নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তা সম্পূর্ণভাবে আইনি প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।
প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ এনসিপির
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন এবং তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন। তিনি বলেন:
“অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, অথবা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সময় এলে তাদের নামও আমরা উন্মুক্ত করব।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের অনেককেই বিশ্বাস করাটা আমাদের ভুল হয়েছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর যে আস্থা আমরা রেখেছিলাম, সে জায়গায় আসলে আমরা প্রতারিত হয়েছি।”
শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি আলাদা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৮ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল আসামিদের আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
গ্রেফতারি পরোয়ানা যাদের বিরুদ্ধে
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া ২৮ জনের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক। বাকি আসামিদের অধিকাংশই সাবেক ও বর্তমান সেনা এবং র্যাব কর্মকর্তা।
প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম সাংবাদিকদের জানান, গুমের একটি মামলায় শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন:
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ।
র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, মো. হারুন-অর-রশিদ।
ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. আকবর হোসেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে গুমের দুটি মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করার পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল এই পরোয়ানা জারি করে।
উল্লেখ্য, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর শেখ হাসিনা ভারত গিয়ে আশ্রয় নেন। তার সরকারের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার দেবর তারিক সিদ্দিকও বিদেশে রয়েছেন।
জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রসিকিউশন টিম বুধবার পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। অভিযোগে তার দীর্ঘমেয়াদি শাসনামলে জোরপূর্বক গুমের ঘটনা সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, এদিন দুটি পৃথক মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যার উভয়টিতেই শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রথম অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনা, তারিক সিদ্দিক ও আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিদের আটক করে ‘টাস্কফোর্স ফর ইন্টাররোগেশন’ (টিএফআই) সেলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন চালান।
দ্বিতীয় অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনা, তারিক সিদ্দিক এবং আরও ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে একই ধরনের অপরাধে—তবে এবার অভিযোগের স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘জয়েন্ট ইন্টাররোগেশন সেল’ (জেআইসি)।
এ প্রসঙ্গে আইসিটি প্রসিকিউশনের এক কর্মকর্তা জানান, উভয় অভিযোগপত্র আদালতে গ্রহণের জন্য দাখিল করা হয়েছে এবং শিগগিরই শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হবে। প্রসিকিউশন বলছে, প্রমাণপত্র ও সাক্ষ্য বিবেচনায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর্যাপ্ত ভিত্তি রয়েছে।
তবে সরকারের কোনো পক্ষ বা সংশ্লিষ্টদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভিযোগপত্র দাখিল বাংলাদেশের রাজনীতি ও বিচারব্যবস্থায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে, যা আগামী দিনে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
-নাজমুল হাসান
চট্টগ্রামে উত্তেজনা: সড়ক দুর্ঘটনায় নেতার মৃত্যু ঘিরে হেফাজতের অবরোধ
চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের এক কেন্দ্রীয় নেতার সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ফলে সকাল থেকেই উভয় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয় এবং শতাধিক যানবাহন বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়ে।
চট্টগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করছি। পরিস্থিতি যাতে আরও উত্তপ্ত না হয়, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।”
মঙ্গলবার বিকেলে রাউজান উপজেলার নবীন সেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা সোহেল চৌধুরী (৫০)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরসাইকেলে করে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি দ্রুতগতির যাত্রীবাহী বাস পিছন দিক থেকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন।
তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সোহেল চৌধুরী চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দা হলেও পরিবারসহ রাউজান পৌরসভায় বসবাস করছিলেন।
তার মৃত্যুর খবরে বুধবার সকাল থেকেই হেফাজতের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। এতে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে চট্টগ্রাম থেকে দুই পার্বত্য জেলায় যাতায়াতকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও চালককে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
-নাজমুল হাসান
পাঠকের মতামত:
- শেখ হাসিনার ভারত থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে দিল্লি
- সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার পথে বাংলাদেশ: বহুমাত্রিক পরিবহন পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে
- র্যাঙ্কিংয়ে ৩৮ ধাপ এগিয়ে থাকা হংকংয়ের বিপক্ষে আজ লড়বে বাংলাদেশ
- গাজায় শান্তি ফেরায় উৎসব: হামাস-ইসরায়েল চুক্তিতে আনন্দ-উচ্ছ্বাস
- অষ্টম প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পথে ফ্রান্স: ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ম্যাক্রোঁ
- শুক্রবার ১৬ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
- তহবিল সংকটে জাতিসংঘ: শান্তিরক্ষী বাহিনী কমছে ২৫ শতাংশ
- নোবেল শান্তি পুরস্কার: আগামীকাল ঘোষণা, ট্রাম্পের ভাগ্য নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে
- শেখ হাসিনার সঙ্গে পাঁচজন উপদেষ্টা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে: রাশেদ খান
- রাশিফল: ৯ অক্টোবর আপনার জীবনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
- শর্ত লঙ্ঘনের বিশাল অভিযোগ: বিসিবি নির্বাচন নিয়ে কেন এত বিতর্ক?
- নির্বাচন সামনে রেখে এনসিপিকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতে নীরব প্রতিযোগিতা
- ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে সই করল ইসরায়েল-হামাস
- ওমানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা: নিহত ৭ বাংলাদেশি
- জেনে নিন ০৯ অক্টোবর ঢাকা ও অন্যান্য বিভাগের নামাজের সময়সূচি
- অল্প রানে অলআউট বাংলাদেশ, আফগানদের বিপক্ষে কঠিন চ্যালেঞ্জ
- মানসিক চাপ ও হতাশা দূর করুন: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ১০ খাবার
- শহিদুল আলমের আটক নিয়ে অপপ্রচার: বাংলাফ্যাক্ট যা জানাল
- স্মার্টফোন ব্যবহারে কঠোর আইন, দিনে ২ ঘণ্টার বেশি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
- জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: চূড়ান্ত ঐকমত্যের পথে কমিশন
- কন্যা হত্যা ও গোত্রীয় সংঘাতের যুগে এক বিশ্বস্ত শিশুর বেড়ে ওঠা
- নতুন দুটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুমোদন, নেপথ্যে এনসিপি ও বিএনপি’র নেতা
- ২১ শতকের নীরব ঘাতক: কোলোরেক্টাল ক্যানসারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে যে খাবার
- হোয়াটসঅ্যাপে আর লাগবে না নম্বর,ইউজার নেম দিয়েই করা যাবে যোগাযোগ
- ১৬তম মুসলিম হিসেবে নোবেল পুরস্কার জিতলেন ওমর এম ইয়াগি
- আল-আকসা ও শাম: কেন এই ভূখণ্ডকে পৃথিবীর সভ্যতার কেন্দ্র বলা হয়?
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- সতর্কতা জারি: ঢাকাসহ ২০ জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার শঙ্কা
- উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে বিতর্ক, রিজওয়ানা হাসান চাইলেন নাম
- ৫টি বিশেষ ধরনের মধু, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
- শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
- রসায়নে নোবেল: জল সংগ্রহ ও গ্যাস নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার
- সঙ্গী কি আপনাকে এড়িয়ে চলছেন? এই ৬টি লক্ষণ দেখলেই বুঝবেন
- ১৩ গ্রামের ফোন! বিশ্ব কাঁপানো Zanco Tiny T1
- আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ওয়ানডে: টিভিতে ছাড়াও মোবাইলে দেখবেন যেভাবে
- যানজটে আটকা পড়ে গাড়ি ছেড়ে মোটরসাইকেলে উপদেষ্টা
- ৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ প্রকাশ
- ৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- নিবন্ধন ছাড়াই ৫ কোটি শিশুকে টিকা দেবে সরকার
- সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুলের আহ্বান: ‘আর বিলম্ব নয়’
- পাকিস্তানে আফগান সীমান্তের কাছে সামরিক কনভয়ে বোমা ও বন্দুক হামলা
- জোরপূর্বক গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র
- আর্সেনালের মাঠে লিয়ঁর প্রতিশোধ, বার্সার ঝড়ে উড়ে গেল বায়ার্ন
- চট্টগ্রামে উত্তেজনা: সড়ক দুর্ঘটনায় নেতার মৃত্যু ঘিরে হেফাজতের অবরোধ
- সিরিয়ার বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দল
- নোবেল দৌড়ে ‘গ্রিন কেমিস্ট্রি’—জলবায়ু সংকটের যুগে বৈজ্ঞানিক আশার আলো
- রেকর্ড ছুঁয়েছে সোনার দাম: বিশ্ব অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় সোনা
- ‘আমাকে অপহরণ করা হয়েছে’—ফেসবুক ভিডিওতে শাহিদুল আলমের দাবি
- নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সেফ এক্সিট’ বিতর্ক
- মেথি কি সত্যিই ‘সুপারফুড’? বিজ্ঞান, উপকার, ঝুঁকি ও খাওয়ার সেরা সময়
- সর্ব রোগের ঔষধ কালিজিরা’র আদ্যপ্রান্ত: ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, ব্যবহার ও সতর্কতা
- ম্যালেরিয়া: কারণ, লক্ষণ, ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
- শ্বাসরুদ্ধকর জয়: শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় আফগানিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
- ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা: কাঁটাযুক্ত পাতার ভেতর লুকানো আরোগ্যের জেল
- “বিবেকের গর্জন”—গাজা ফ্লোটিলায় শহিদুল আলমকে প্রশংসা করলেন তারেক রহমান
- কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
- ল্যাপটপে পানি পড়লে কী করবেন? যে ৭টি কাজ ভুলেও করা উচিত নয়
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- আন্দেসের হৃদয়ে এক বিপ্লবী দেশ: বলিভিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
- আফ্রিকার হৃদয়ে পাথরের রাজ্য: জিম্বাবুয়ের প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও আত্মার গল্প
- গাজা যুদ্ধের অবসানে আলোচনায় রাজি হামাস, ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ
- জিরো-ওয়েস্ট কুকিং’: সবজির খোসাও হবে সুস্বাদু রেসিপি
- ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: প্রস্তুতির সার্বিক চিত্র ও টাইমলাইন
- সালাহউদ্দিন আহমদ: প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে, শিগগিরই মাঠে নামবে একক প্রার্থী