“সাম্য হত্যার রহস্য উন্মোচনে এক সপ্তাহ!”

সত্যনিউজ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন করে চার্জশিট দাখিলের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “তদন্ত একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তবে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আশা করছি, এক সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার তদন্ত সম্পন্ন করে চার্জশিট দাখিল করতে পারব।”

তিনি আরও জানান, সাম্য হত্যা মামলার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং মামলাটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।এ ঘটনায় পরদিন সকালে সাম্যের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায়।

ঘটনার রাতেই রাজধানীর রাজাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালত শনিবার তাদের ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

ডিএমপি কমিশনার জানান, হত্যাকাণ্ডের পরপরই আহত সন্দেহে কয়েকজনকে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য প্রকাশ করা না গেলেও, তদন্ত কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছে বলে জানান তিনি।

রমনা বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “আমরা শুধু গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে নিয়ে বসে নেই, প্রত্যেক সম্ভাব্য দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ ডিজিটাল তদন্ত চলছে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লাউঞ্জে আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং ডিএমপির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।সেখানেও কমিশনার সাম্যের পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ন্যায়বিচার পাওয়ার পূর্ণ আশ্বাস দেন।

তদন্তের গতি দেখে আশা করা যায়, সাম্য হত্যার বিচার শুধু দ্রুতই নয়, দৃষ্টান্তমূলকও হবে—এমন প্রত্যাশা এখন নিহতের পরিবার, সহপাঠী ওসাধারণমানুষের।