জুলাই ঘোষণাপত্রে ২৮ দফা রাষ্ট্রগঠনের রূপরেখা ঘোষণা  

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৫ ১৭:৪৩:১৭
জুলাই ঘোষণাপত্রে ২৮ দফা রাষ্ট্রগঠনের রূপরেখা ঘোষণা
 

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-এ ২৮ দফা রাষ্ট্রচিন্তা: অন্তর্বর্তী সরকারের ভবিষ্যৎ রূপরেখা প্রকাশঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করেন। এতে বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামোগত সংকট তুলে ধরার পাশাপাশি নতুন রাষ্ট্রচিন্তার ২৮টি দিকনির্দেশনা উপস্থাপন করা হয়।

ঘোষণাপত্রে উঠে আসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের ব্যর্থতা, রাজনৈতিক শাসনের সংকট ও কাঠামোতান্ত্রিক দুর্বলতার বিষয়। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য বিকল্প রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও করণীয় স্পষ্টভাবে জানানো হয়।

ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত মূল ২৮ দফা পরিকল্পনা:

১। যেহেতু উপনিবেশ বিরোধী লড়াইয়ের সুদীর্ঘকালের ধারাবাহিকতায় এই ভূখণ্ডের মানুষ দীর্ঘ ২৩ বছর পাকিস্তানের স্বৈরশাসকদের বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং নির্বিচার গণহত্যার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করে জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল;

২। যেহেতু, বাংলাদেশের আপামর জনগণ দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভূখণ্ডে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বিবৃত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে;

৩। যেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন পদ্ধতি, এর কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগের ফলে স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল এবং গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা ক্ষুণ্ণ করেছিল;

৪। যেহেতু স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতার মূলমন্ত্র গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিপরীতে বাকশালের নামে সাংবিধানিকভাবে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করে এবং মতপ্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করে, যার প্রতিক্রিয়ায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশে সিপাহী-জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লব সংঘটিত হয় এবং পরবর্তী সময়ে একদলীয় বাকশাল পদ্ধতির পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র, মতপ্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনঃপ্রবর্তনের পথ সুগম হয়;

৫। যেহেতু আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় বছর ছাত্র-জনতার অবিরাম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয় এবং ১৯৯১ইং সনে পুনরায় সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।

৬। যেহেতু দেশী-বিদেশী চক্রান্তে সরকার পরিবর্তনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় ১/১১ -এর ষড়যন্ত্রমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতা, আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদের পথ সুগম করা হয়;

৭। যেহেতু গত দীর্ঘ ষোল বছরের ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক এবং গণবিরোধী শাসনব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে এবং একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অতি উগ্র বাসনা চরিতার্থ করার অভিপ্রায়ে সংবিধানের অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক পরিবর্তন করা হয় এবং যার ফলে একদলীয় একচ্ছত্র ক্ষমতা ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়;

৮। যেহেতু শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন, গুম-খুন, আইন-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং একদলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন ও পরিবর্তন বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ধ্বংস করে;

৯। যেহেতু, হাসিনা সরকারের আমলে তারই নেতৃত্বে একটি চরম গণবিরোধী, একনায়কতান্ত্রিক, ও মানবাধিকার হরণকারী শক্তি বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিবাদী, মাফিয়া এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রের রূপ দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে;

১০। যেহেতু, তথাকথিত উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী নেতৃত্বে সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের মধ্য দিয়ে বিগত পতিত দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ ও এর অমিত অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে বিপর্যস্ত করে তোলে এবং এর পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য ও জলবায়ুকে বিপন্ন করে;

১১। যেহেতু শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল, ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণ গত প্রায় ষোল বছর যাবত নিরন্তর গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করে জেল-জুলুম, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়;

১২। যেহেতু বাংলাদেশে বিদেশী রাষ্ট্রের অন্যায় প্রভুত্ব, শোষণ ও খবরদারিত্বের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে বহিঃশক্তির তাবেদার আওয়ামী লীগ সরকার নিষ্ঠুর শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে দমন করে;

১৩। যেহেতু অবৈধভাবে ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার তিনটি প্রহসনের নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচন) এদেশের মানুষকে ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করে;

১৪। যেহেতু, আওয়ামী লীগ আমলে ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, শিক্ষার্থী ও তরুণদের নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয় এবং সরকারী চাকুরীতে একচেটিয়া দলীয় নিয়োগ ও কোটাভিত্তিক বৈষম্যের কারণে ছাত্র, চাকুরী প্রত্যাশী ও নাগরিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের জন্ম হয়;

১৫। যেহেতু বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ওপর চরম নিপীড়নের ফলে দীর্ঘদিন ধরে জনরোষের সৃষ্টি হয় এবং জনগণ সকল বৈধ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াই চালিয়ে যায়;

১৬। যেহেতু, সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার বিলোপ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ব্যাপক দমন-পীড়ন, বর্বর অত্যাচার ও মানবতাবিরোধী হত্যাকাণ্ড চালানো হয়, যার ফলে সারা দেশে দল-মত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতার উত্তাল গণবিক্ষোভ গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়;

১৭। যেহেতু ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে অদম্য ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক দল, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী, শ্রমিক সংগঠনসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষ যোগদান করে এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদী বাহিনী রাজপথে নারী-শিশুসহ প্রায় এক হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে, অগনিত মানুষ পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করে এবং আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যগণ জনগণের গণতান্ত্রিক লড়াইকে সমর্থন প্রদান করে;

১৮। যেহেতু, অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের পতন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জনগণ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে, পরবর্তী সময়ে ৫ আগস্ট ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ পরিচালনা করে এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনরত সকল রাজনৈতিক দল, ছাত্র-জনতা তথা সর্বস্তরের সকল শ্রেণী, পেশার আপামর জনসাধারণের তীব্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে গণভবনমুখী জনতার উত্তাল যাত্রার মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়;

১৯। যেহেতু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট মোকাবেলায় গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে ব্যক্ত জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রত্যয় ও প্রয়োগ রাজনৈতিক ও আইনি উভয় দিক থেকে যুক্তিসঙ্গত, বৈধ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত;

২০। যেহেতু জনগণের দাবি অনুযায়ী এরপর অবৈধ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয় এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রীম কোর্টের মতামতের আলোকে সাংবিধানিকভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে একটি অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করা হয়;

২১। যেহেতু, বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের ফ্যাসিবাদবিরোধী তীব্র আকাঙ্ক্ষা এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়;

২২। সেহেতু, বাংলাদেশের জনগণ সুশাসন ও সুষ্ঠু নির্বাচন, ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধ, আইনের শাসন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে বিদ্যমান সংবিধান ও সকল রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক সংস্কার সাধনের অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে;

২৩। সেহেতু, বাংলাদেশের জনগণ বিগত ষোল বছরের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম কালে এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালীন সময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক সংঘটিত গুম-খুন, হত্যা, গণহত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধ ও সকল ধরনের নির্যাতন, নিপীড়ন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি লুণ্ঠনের অপরাধসমূহের দ্রুত উপযুক্ত বিচারের দৃঢ় অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে;

২৪। সেহেতু, বাংলাদেশের জনগণ জুলাই গনঅভ্যুত্থানের সকল শহীদদের জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা করে শহীদদের পরিবার, আহত যোদ্ধা এবং আন্দোলনকারী ছাত্রজনতাকে প্রয়োজনীয় সকল আইনি সুরক্ষা দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে।

২৫। সেহেতু, বাংলাদেশের জনগণ যুক্তিসঙ্গত সময়ে আয়োজিতব্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদে প্রতিশ্রুত প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে দেশের মানুষের প্রত্যাশা, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আইনের শাসন ও মানবাধিকার, দুর্নীতি, শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন ও মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে।

২৬। সেহেতু বাংলাদেশের জনগণ এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছে যে একটি পরিবেশ ও জলবায়ু সহিষ্ণু অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন কৌশলের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের অধিকার সংরক্ষিত হবে।

২৭। বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এ ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে।

২৮। ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে এই ঘোষণাপত্র প্রনয়ণ করা হলো।

এই ২৮টি ঘোষণার মধ্য দিয়ে বর্তমান রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় সংকট থেকে উত্তরণের একটি বিকল্প রূপরেখা এবং গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ সময় ড. ইউনূস বলেন, “দেশের ভবিষ্যৎ তরুণদের হাতে। নতুন প্রজন্মকে এই রাষ্ট্র গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।”

অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, তরুণ প্রতিনিধি ও মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

/আশিক


হাদির জানাজা উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ২১:৩০:২৭
হাদির জানাজা উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা
ছবি: সংগৃহীত

আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বাদ জোহর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এই জানাজাকে কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগমের আশঙ্কা থাকায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মানিক মিয়া এভিনিউতে যান চলাচল সাময়িকভাবে সীমিত থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপি জানায়, জানাজা অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে শনিবার সকাল থেকেই খেজুর বাগান ক্রসিং থেকে মানিক মিয়া এভিনিউ পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে। এ কারণে নগরবাসীকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

ট্রাফিক নির্দেশনা অনুযায়ী, মিরপুর রোড দিয়ে উত্তর দিক থেকে ফার্মগেট বা সোনারগাঁও অভিমুখে যাতায়াতকারী যানবাহনকে গণভবন ক্রসিং হয়ে লেক রোড, উড়োজাহাজ ক্রসিং ও বিজয় সরণি হয়ে ফার্মগেটের দিকে যেতে হবে। একইভাবে ফার্মগেট থেকে ইন্দিরা রোড হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউমুখী যানবাহনকে খেজুর বাগান ক্রসিং হয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং ও লেক রোড ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

ধানমন্ডি এলাকা থেকে ফার্মগেটগামী যানবাহনের জন্য আসাদগেট ও গণভবন ক্রসিং হয়ে বিকল্প রুট নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া আসাদগেট থেকে ফার্মগেটগামী যানগুলোকে লেক রোড ও বিজয় সরণি ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অথবা ইন্দিরা রোড থেকে ধানমন্ডিগামী যানবাহনগুলোকে খেজুর বাগান ক্রসিং হয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং, লেক রোড ও আসাদগেট হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জানাজা চলাকালীন সময়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফার্মগেট এক্সিট র‌্যাম্প ব্যবহার না করে এফডিসি (হাতিরঝিল) র‌্যাম্প ব্যবহারের জন্য চালকদের অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।

ডিএমপি আরও জানায়, জানাজা ও দাফন কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকা এড়িয়ে চলাই সর্বোত্তম হবে। এতে নগরবাসীর ভোগান্তি কমবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে।

-রফিক


ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই সরকারের, ভাঙেনি পুরোনো সিন্ডিকেট

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ১১:১৫:৫৫
ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই সরকারের, ভাঙেনি পুরোনো সিন্ডিকেট
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় বসবাসকারী বেসরকারি চাকরিজীবী শামীমের মাসিক আয় পঁচাত্তর হাজার টাকা হলেও মায়ের ক্যানসারের চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে তিনি এখন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। ক্যানসার আক্রান্ত মায়ের জন্য প্রতি মাসে অত্যাবশ্যকীয় ইনজেকশন পেগফিলগ্রাস্টিম কিনতে হয় তাকে, যার দাম গত এক বছরের ব্যবধানে আট হাজার টাকা থেকে বেড়ে পনেরো হাজার টাকায় ঠেকেছে। শামীমের মতো হাজারো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এখন প্রধান দুশ্চিন্তার নাম ওষুধের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় এক লাখ সাতষট্টি হাজার মানুষ নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। গবেষণায় দেখা গেছে, অর্থাভাবে চিকিৎসা মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই বেশিরভাগ রোগীর মৃত্যু হচ্ছে।

এক সময় ক্যানসারের ওষুধের জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি আমদানিনির্ভর থাকলেও বর্তমানে স্থানীয় কোম্পানিগুলো চাহিদার প্রায় পঁচানব্বই শতাংশ ওষুধ উৎপাদন করছে। সরকার কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিলেও ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে। পেগফিলগ্রাস্টিমের মতো জীবনদায়ী ওষুধের দাম কোম্পানিভেদে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা রাখা হচ্ছে, অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একই ওষুধের দাম মাত্র দেড় হাজার রুপি বা বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই হাজার টাকার কিছু বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় বাংলাদেশে ওষুধের দামের এই বিশাল পার্থক্যের জন্য বিশেষজ্ঞরা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ব্যর্থতা এবং কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। অভিযোগ রয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করত এবং সরকার পরিবর্তনের পরও সেই প্রভাবে ভাটা পড়েনি।

গত পাঁচ বছরে দেশে সব ধরনের ওষুধের দাম অন্তত তিন গুণ বেড়েছে। গ্যাস্ট্রিক, অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়াবেটিসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের দাম গত দেড় বছরেও কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। গেঁটে বাতের ওষুধ অ্যানাফ্লেক্স ম্যাক্স কিংবা দাঁত ব্যথার ওষুধ মারভ্যানের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অ্যাজমা রোগীদের জন্য জরুরি ডক্সোমা ট্যাবলেটের দামও বেড়েছে প্রায় ষাট শতাংশ। বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও পরিচালন ব্যয় বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছ থেকে মেধাস্বত্বে ছাড় পাওয়ার পরেও বাংলাদেশে ওষুধের উৎপাদন খরচ কম হওয়া উচিত। কিন্তু কোম্পানিগুলোর অতিমুনাফার প্রবণতা এবং খুচরা বাজারে তদারকির অভাবে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা যাচ্ছে।

ওষুধের এই উচ্চমূল্য কেবল স্বাস্থ্যগত সমস্যাই নয়, বরং বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটও তৈরি করছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএ-র তথ্যমতে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের ৪৪ শতাংশই খরচ হয় শুধু ওষুধ কিনতে, যেখানে বৈশ্বিক গড় মাত্র ১৫ শতাংশ। ২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে উঠে এসেছে এক ভয়াবহ চিত্র, যেখানে দেখা গেছে ওষুধের অতিরিক্ত ব্যয়ের ভার সইতে না পেরে প্রতি বছর প্রায় ৬১ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। সরকার গত আগস্টে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারণের উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন বাজারে দেখা যাচ্ছে না।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।


হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৯:৩৩:১১
হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় দেশে এসে পৌঁছাবে। ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানানো হয়েছে, সিঙ্গাপুরে প্রথম জানাজা শেষে বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে হাদির মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে স্বজনরা। সব ঠিক থাকলে সন্ধ্যা ৬টা ০৫ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।

এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টায় সিঙ্গাপুরের দ্য আঙ্গুলিয়া মসজিদে (The Angullia Mosque) শহীদ ওসমান হাদির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। দেশে ফেরার পর আগামীকাল শনিবার বাদ জোহর রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে তার দ্বিতীয় ও প্রধান জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আততায়ীর গুলিতে বিদ্ধ হয়ে টানা সাত দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের এই সম্মুখসারির যোদ্ধা।

হাদির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গভীর শোক প্রকাশ করেন। ভাষণে তিনি বলেন, তিনি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক সংবাদ নিয়ে হাজির হয়েছেন এবং জাতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদিকে হারিয়েছে। হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন গভীর শোক জানিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার সারাদেশে দোয়া মাহফিল এবং আগামীকাল শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতার আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে সরকার।


হাদি মৃত্যুতে জ্বলছে দেশ: মিডিয়া অফিস ও হাই কমিশনে হামলা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৯:১৪:০৭
হাদি মৃত্যুতে জ্বলছে দেশ: মিডিয়া অফিস ও হাই কমিশনে হামলা
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সারা দেশ। পাহাড় থেকে সমতল পর্যন্ত সবখানেই হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছেন সাধারণ ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতেই রাজধানীর শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন জুলাইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধারা। এসময় তারা পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং নিরাপত্তার ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন। ছাত্র-জনতার সঙ্গে এক কাতারে মাঠে নেমেছেন জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা ও সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং মাহফুজ আলম। তারা শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর দেশব্যাপী কঠোর বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।

হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ও শনিরআখড়া এলাকায় ছাত্র-জনতা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-ডেমরা সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং চরম ভোগান্তিতে পড়েন শত শত রোগী ও যাত্রী। রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরেও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা কারওয়ান বাজারে দৈনিক প্রথম আলো এবং ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে। ডেইলি স্টার কার্যালয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভেতরে বেশ কয়েকজন কর্মী আটকা পড়েন, যাদের পরে দমকল বাহিনীর সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এবং ছায়ানট ভবনেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

শুধু রাজধানী ঢাকাতেই নয়, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে মুহূর্তের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অফিস ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ জনতা এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাজশাহীতে নগর আওয়ামী লীগের অফিস গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেট, বরিশাল, নেত্রকোনা ও জামালপুরেও রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। হাদির নিজ জেলা ঝালকাঠিতেও বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। ডাকসু নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, হত্যা করে আধিপত্যবিরোধী লড়াই বন্ধ করা যাবে না।


ধ্বংস নয়, পুনর্গঠনেই বাঁচবেন হাদি: হাসনাত আবদুল্লাহ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৮:৩৪:৪২
ধ্বংস নয়, পুনর্গঠনেই বাঁচবেন হাদি: হাসনাত আবদুল্লাহ
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, কোনো কিছু ধ্বংস করে নয়, বরং পুনর্গঠনের মাধ্যমেই শরিফ ওসমান হাদিকে ধারণ করতে হবে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ২টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন। হাসনাত আবদুল্লাহ তার অনুসারী ও দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, হাদিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে, একটি শক্তিশালী কালচারাল এস্টাবলিশমেন্ট গড়ে তুলে, আজাদির প্রশ্নে আপসহীন থেকে এবং জনতার প্রশ্নে সৎ ও স্বচ্ছ থেকে।

আবেগঘন ওই পোস্টে এনসিপির এই নেতা নেতাকর্মীদের শান্ত ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, আমাদের পথ ধ্বংসের নয়, আমাদের পথ পুনর্গঠনের। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হাদির আদর্শকে সম্মান জানানো সম্ভব নয় বলে তিনি সতর্ক করে দেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদি। তার এই অকাল প্রয়াণে সহযোদ্ধা ও রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শেষে রিকশায় ফেরার পথে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন হাদি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে শরিফ ওসমান হাদি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ২২:০৫:৪৭
সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে শরিফ ওসমান হাদি

রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাদির মৃত্যুর বিষয়টি তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং ইনকিলাব মঞ্চের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। এই খবরে তার সহযোদ্ধা ও অনুসারীদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গত ১২ ডিসেম্বর। ওইদিন গণসংযোগের উদ্দেশ্যে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিটি সরাসরি তার মাথায় বিদ্ধ হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সেখানে তার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

সেখানেও শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে জরুরি ভিত্তিতে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দীর্ঘ প্রায় এক সপ্তাহের জীবনযুদ্ধ শেষে বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার এই অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।


ভারত থেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন হাসিনা: আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ২০:১২:২৬
ভারত থেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন হাসিনা: আসিফ নজরুল
ছবি : সংগৃহীত

ভারতে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক জুলাই গণঅভ্যুত্থানকারীদের হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন এবং এই পরিস্থিতিতে তার দলের অনুসারীদের নির্বিচারে জামিন দেওয়া কোনোভাবেই নিয়মীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। আইন উপদেষ্টা হাইকোর্টের কিছু বেঞ্চের ‘অস্বাভাবিক’ জামিন দেওয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং স্পষ্ট করে বলেন, জামিন পাওয়া কোনো ব্যক্তি যদি পরবর্তীতে জুলাই আন্দোলনের নায়কদের ওপর হামলা বা খুন করে, তবে সেই দায় সংশ্লিষ্ট বিচারককে নিতে হবে কি না, তা বিবেচনার সময় এসেছে।

আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্টের কিছু বেঞ্চ থেকে অস্বাভাবিকভাবে জামিন দেওয়া হচ্ছে, এমনকি চার ঘণ্টায় আটশ জামিন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি আগেও প্রধান বিচারপতির কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন এবং প্রধান বিচারপতি ব্যবস্থাও নিয়েছিলেন। তবে এখনো তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আইন উপদেষ্টা বলেন, একজন ভয়ংকর ব্যক্তি যিনি জামিন পেয়ে গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের ওপর হামলা করতে পারেন, তাকে জামিন দেওয়া হলে সরকার অত্যন্ত শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন বোধ করে। আইন মন্ত্রণালয়ের হাইকোর্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই তিনি বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে এনেছেন এবং নতুন প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানান।

বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের প্রশংসা করে আইন উপদেষ্টা বলেন, জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে দায়িত্ব নিয়ে তিনি বিচার বিভাগীয় সংস্কারে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণে এবং বিচার বিভাগের অনিয়ম দূর করতে তার অবদান অনস্বীকার্য। আসিফ নজরুল উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম যোগ্য ও সৎ এই প্রধান বিচারপতিকে পাওয়া ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের একটি বড় অর্জন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, ভবিষ্যতে যিনি প্রধান বিচারপতি হবেন, তার কাছেও এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে যে, আইনগতভাবে জামিন প্রাপ্যদের অধিকার থাকলেও, যারা বেরিয়ে এসে হত্যার কারণ হতে পারে, তাদের জামিন দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।


দুই দশকের আক্ষেপ ঘুচল: ২৭তম বিসিএসে বড় নিয়োগ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ২০:০৮:২৫
দুই দশকের আক্ষেপ ঘুচল: ২৭তম বিসিএসে বড় নিয়োগ
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার (২০০৫) নিয়োগবঞ্চিত ৬৭৩ জনকে নিয়োগ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নব নিয়োগ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি লড়াই ও বঞ্চনার শিকার প্রার্থীদের মুখে হাসি ফুটল। সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশক্রমে নিয়োগপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারের ৯০ জন, পুলিশ ক্যাডারের ৭০ জন, অডিট ক্যাডারের ৫ জন, খাদ্য ক্যাডারের ২ জন এবং সমবায় ক্যাডারের ৫ জনসহ বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুসারে ২২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার ৬০ টাকা বেতনক্রমে এই নিয়োগ পেয়েছেন।

প্রজ্ঞাপনে নিয়োগের শর্তাবলী ও জ্যেষ্ঠতার বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতা অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে তাদের ব্যাচের অন্য কর্মকর্তাদের যেদিন প্রথম নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল, সেই তারিখ থেকেই ভূতাপেক্ষিকভাবে এই নিয়োগ আদেশ কার্যকর হবে। এর অর্থ হলো, তারা তাদের ব্যাচমেটদের সঙ্গে ধারণাগত জ্যেষ্ঠতা বজায় রাখবেন। তবে চাকরিতে যোগদানের আগ পর্যন্ত সময়কালের জন্য তারা কোনো বকেয়া বেতন-ভাতা বা আর্থিক সুবিধা পাবেন না। বিষয়টি দীর্ঘদিনের বঞ্চনার স্বীকৃতি হলেও আর্থিক দিক থেকে তারা বর্তমান সময় থেকেই বেতন ভোগ করবেন।

নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী, নতুন কর্মকর্তাদের আবশ্যিকভাবে বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা সরকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। তাদের দুই বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে হবে, যা প্রয়োজনে সরকার আরও অনূর্ধ্ব দুই বছর বাড়াতে পারবে। শিক্ষানবিশকালে যদি কেউ চাকরিতে বহাল থাকার অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হন, তবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরামর্শ ব্যতিরেকেই তাকে অপসারণ করা যাবে। এছাড়া প্রশিক্ষণের জন্য কর্মস্থল থেকে অব্যাহতির আগে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একজন জামানতদারসহ বন্ড সই করতে হবে। শর্ত অনুযায়ী, শিক্ষানবিশকাল বা এরপর তিন বছরের মধ্যে চাকরি ছাড়লে প্রশিক্ষণের যাবতীয় ব্যয়, বেতন ও উত্তোলিত অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকবেন তারা। প্রশিক্ষণ ও বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই তাদের চাকরি স্থায়ী করা হবে।


গুম পরিবারের জন্য ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: সম্পদ ব্যবহারে বাধা নেই

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ২০:০২:১৮
গুম পরিবারের জন্য ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: সম্পদ ব্যবহারে বাধা নেই
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: পিআইডি

কোনো ব্যক্তি অন্যূন ৫ বছর ধরে গুম থাকলে এবং জীবিত ফিরে না আসলে ট্রাইব্যুনাল তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ডিসাপিয়ার্ড’ বা ‘গুম’ ঘোষণা করতে পারবে—এমন বিধান রেখে ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন এই অধ্যাদেশের ফলে গুম হওয়া ব্যক্তির স্ত্রী বা তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যরা কমিশনের পূর্বানুমতি ছাড়াই গুম হওয়া ব্যক্তির সম্পত্তি ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ট্রাইব্যুনালের জন্য পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিতে পারবে এবং ভুক্তভোগী চাইলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ পাবেন।

বৈঠকে পরিবেশ সুরক্ষায় ‘বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলের ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র বিশ্বে বিরল হলেও অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং পর্যটনের বিরূপ প্রভাবে তা এখন হুমকির মুখে। নতুন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের দায়িত্ব ও ক্ষমতা সুস্পষ্ট করা হয়েছে। এখন থেকে হাওর এলাকায় যেকোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা, নিষিদ্ধ কার্যক্রম নির্ধারণ এবং এসব কার্যক্রমকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে।

কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে বাংলাদেশের একটি নতুন দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। স্বাধীনতার পর থেকে জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থাকলেও বার্নে কোনো দূতাবাস ছিল না। সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী ও কৌশলগত অংশীদার হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজন রাষ্ট্রদূত ও কয়েকজন কর্মকর্তা নিয়ে দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু হবে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মোট ৮২টি মিশন অফিস রয়েছে।

বৈঠকে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির স্বাস্থ্যের অবনতি নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন এবং সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান নিয়মিত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। হাদির চিকিৎসার তদারকির জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন। এছাড়া চলতি বছর মহান বিজয় দিবস সুন্দরভাবে উদযাপনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত