স্টারমার-ম্যাক্রোঁর ঐতিহাসিক সমঝোতা: ব্রিটেন থেকে ফেরত পাঠানো হবে অভিবাসী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৫ ১১:১১:৪৩
স্টারমার-ম্যাক্রোঁর ঐতিহাসিক সমঝোতা: ব্রিটেন থেকে ফেরত পাঠানো হবে অভিবাসী
ছবিঃ সংগৃহীত

চ্যানেল উপকূল পেরিয়ে ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানো অভিবাসীদের এখন আর শুধু ব্রিটেনেই আশ্রয় খোঁজার সুযোগ থাকছে না। আগামী মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মধ্যে নতুন এক ‘একজন এলো, একজন ফিরল’ ধরনের অভিবাসন চুক্তি, যার আওতায় কিছু অভিবাসীকে ব্রিটেনে ঢোকার পরপরই ফেরত পাঠানো হবে ফ্রান্সে।

এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একটি বহুপ্রতীক্ষিত কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছান, যার মূল লক্ষ্য—অবৈধ উপকূলীয় অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ। গত মাসে ম্যাক্রোঁর যুক্তরাজ্য সফরকালে এই সমঝোতায় পৌঁছায় দুই দেশ।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিশন এই 'নতুনধরনের যৌথ পরিকল্পনা'র জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন যেকোনো দিন শুরু হতে পারে অভিবাসীদের আটকের প্রক্রিয়া।

চুক্তি অনুযায়ী, যেসব অভিবাসী ছোট নৌকায় করে ব্রিটেনে প্রবেশ করবেন এবং আশ্রয় পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য বিবেচিত হবেন, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে ফ্রান্সে। এর বিনিময়ে যুক্তরাজ্য একই সংখ্যক অভিবাসীকে গ্রহণ করবে ফ্রান্স থেকে, যারা অনলাইনে আশ্রয় আবেদন করতে পারবেন। এই আবেদনকারীদের মধ্যে অগ্রাধিকার পাবেন মানবপাচারকারীদের ঝুঁকিতে থাকা এবং যুক্তরাজ্যে আত্মীয়স্বজন বা সামাজিক সম্পর্ক রয়েছে—এমন ব্যক্তিরা।

এ বছর জুলাই শেষে পর্যন্ত চ্যানেল পেরিয়ে যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ২৫,০০০ ছাড়িয়ে গেছে, যা এই সময়ের মধ্যে রেকর্ড। জনমত ও রাজনৈতিক চাপের মুখে থাকা স্টারমার সরকার এই চুক্তিকে কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে তুলে ধরছে।

তবে চুক্তিটি নিয়ে ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে কিছু স্থানীয় কর্মকর্তা আপত্তি জানিয়েছেন, তাদের মতে, এই ব্যবস্থা যুক্তরাজ্যের পক্ষেই বেশি অনুকূল। অন্যদিকে, ব্রিটেনে অভিবাসনবিরোধী কট্টর দল রিফর্ম ইউকে নেতা নাইজেল ফারাজ অভিযোগ করছেন, চুক্তিটি ব্রিটিশ সীমান্ত নিরাপত্তায় যথেষ্ট শক্ত পদক্ষেপ নয়।

চ্যানেলপাড়ি ঠেকাতে সরকার £১০০ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বরাদ্দ করেছে, যার মাধ্যমে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী, প্রযুক্তি ও মানব পাচারকারী চক্র মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধ অভিবাসন পথ প্রচার করাও এখন থেকে অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। সংসদে প্রস্তাবিত বর্ডার সিকিউরিটি বিল অনুযায়ী, চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার মতো বিপজ্জনক পথের বিজ্ঞাপন বা প্রচার চালালে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল ও জরিমানা হতে পারে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যারা ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে আসছেন, তাদের ৮০ শতাংশই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেছেন যাত্রার পরিকল্পনায়।

-সুত্রঃ এ এফ পি

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ