সাজিদের হত্যা রহস্য ফাস, ইবি ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত বিক্ষোভ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর প্রাথমিক ধারণা পানিতে ডুবে মৃত্যু হলেও, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির তদন্ত ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে উঠে এসেছে যে, সাজিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের পাশে একটি পুকুর থেকে সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর আগের দিন বিকেলেও ক্যাম্পাসে তাকে দেখা গিয়েছিল। এই ঘটনাটি সামনে আসার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ঢেউ ওঠে। সাজিদের পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা শুরু থেকেই দাবি করেছেন এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বিশেষ করে সাজিদের সাঁতার কাটার দক্ষতা থাকায় তার পানিতে ডুবে মৃত্যুর কথা বিশ্বাস করা কঠিন বলে তারা মন্তব্য করেন।

প্রাথমিক ধারণায় শিক্ষার্থীরা নিরাপদ ক্যাম্পাস ও সুবিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলেও, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যাওয়ার পর আন্দোলন আরও তীব্র রূপ নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। পাশাপাশি, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও সাজিদের হত্যার বিচার দাবিতে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।

ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির তদন্তে জানা যায়, সাজিদকে শেষবার দেখা যাওয়ার দিন রাতেও তার মোবাইল ফোনে কল করা হয়েছিল, যা রিসিভ করা হয়। এই কলের লোকেশন ছিল শেখপাড়া বসন্তপুর এলাকা, এরপর পরবর্তী কলের সময় ফোনের অবস্থান পরিবর্তিত হয়ে বিজ্ঞান ভবনের আশপাশে ছিল। কমিটি মনে করেছে, এতো দ্রুত মোবাইলের অবস্থান পরিবর্তন একেবারেই স্বাভাবিক নয় এবং তা সন্দেহজনক। তাই তারা এই ঘটনার তদন্ত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিশেষ কমিটির কাছে হস্তান্তরের সুপারিশ করেছে।

সাজিদের মৃত্যু নিয়ে শিক্ষার্থীরা ধারণা করছেন এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং তারা বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি যেমন বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের দাবি জানিয়ে আসছেন। শিক্ষার্থীদের মূল দাবি হচ্ছে ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য পিবিআই অথবা সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হোক, দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার করা হোক এবং সাজিদের পরিবারকে প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা প্রদান করা হোক।

-রাফসান