বাংলাদেশকে নিয়ে চীন-পাকিস্তানের পরিকল্পনা, দক্ষিণ এশিয়ায় কী বদল আসছে?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ৩০ ১৫:৫৯:৫২
বাংলাদেশকে নিয়ে চীন-পাকিস্তানের পরিকল্পনা, দক্ষিণ এশিয়ায় কী বদল আসছে?

দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন ভিত্তি গড়ে তুলতে চীন ও পাকিস্তান একযোগে কাজ শুরু করেছে। দীর্ঘদিন ধরে কার্যত অচল হয়ে পড়া সার্কের (SAARC) স্থবিরতার প্রেক্ষাপটে তারা এমন একটি নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে, যা ভবিষ্যতে সার্কের বিকল্প মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে। এ উদ্যোগে বাংলাদেশের অংশগ্রহণও ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনের কুনমিং শহরে গত ১৯ জুন অনুষ্ঠিত একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ অংশ নেয়। এ বৈঠককে আঞ্চলিক জোট গঠনের গভীর কূটনৈতিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাণিজ্য, সংযুক্ততা ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে একটি নতুন কাঠামো দাঁড় করানোর লক্ষ্যেই এই বৈঠক। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ইসলামাবাদ ও বেইজিং অনেকদূর এগিয়ে গেছে এবং তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়াকে একটি নতুন ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যে রূপান্তরিত করা।

জোটে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দিল্লির কৌশলগত অবস্থান ও চীনের প্রতি সংবেদনশীলতা এই জোটে তাদের অংশগ্রহণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। তবে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান প্রভৃতি দেশসমূহ এই উদ্যোগে যুক্ত হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, এক সময় সার্ককে দক্ষিণ এশিয়ার 'ইউরোপীয় ইউনিয়ন' বলা হলেও, ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক বৈরিতা, সীমান্ত উত্তেজনা ও নিরাপত্তা জটিলতায় ২০১৪ সালের পর থেকে এটি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সম্মেলন বাতিল হওয়ার পর সার্কের ভবিষ্যৎ ঘোর অনিশ্চয়তায় পড়ে।

সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনার জেরে ভারত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের সার্ক ভিসা সুবিধাও বাতিল করে। ফলে সংস্থাটির কার্যকারিতা আরও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।

এই পটভূমিতে চীন ও পাকিস্তান নতুন জোট গঠনের প্রস্তাব নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা বলছে, এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত ও মতাদর্শগত দিক থেকেও একটি শক্তিশালী মঞ্চ হিসেবে গড়ে উঠবে।

অন্যদিকে, ভারত নিজেও সম্প্রতি এসসিও (SCO) নিয়ে আগ্রহ হারাতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরপর দুটি এসসিও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেননি। অথচ সেই সংস্থায় চীন, রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার প্রভাবশালী দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় রাজনৈতিক অচলাবস্থার এই সময়ে চীন-পাকিস্তান নেতৃত্বাধীন নতুন জোটের উদ্যোগ আঞ্চলিক কৌশলগত ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।


এবার তিন মুসলিম দেশে ভূমিকম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৪ ১১:১৩:১২
এবার তিন মুসলিম দেশে ভূমিকম্প
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চলীয় হরাত আল-শাকা এলাকায় শনিবার ভোরে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জনবসতি ও পার্শ্ববর্তী আগ্নেয় লাভাক্ষেত্র অঞ্চল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৩.৪। একই সময়ে ইরাক–ইরানের সীমান্ত অঞ্চলেও ৫.০৯ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ভূ-কম্পনীয় অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে এই ধারাবাহিক কম্পন।

সৌদি জিওলজিক্যাল সার্ভে (এসজিএস) জানায়, দেশের জাতীয় সিসমিক মনিটরিং নেটওয়ার্ক স্থানীয় সময় শনিবার ভোরে ভূমিকম্পটি রেকর্ড করে। কম্পনের উৎপত্তিস্থল ছিল মদিনা অঞ্চলের আল-আইস এবং তাবুক অঞ্চলের উমলুজ গভর্নরেটের মধ্যে অবস্থিত হরাত আল-শাকা এলাকা যা সৌদি আরবের একটি গুরুত্বপূর্ণ আগ্নেয় লাভাক্ষেত্র।

ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল হরাত আল-শাকায়, যা জনবসতি থেকে প্রায় ৮৬ কিলোমিটার উত্তর–পশ্চিমে অবস্থিত। এলাকাটি অতীতে আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তার ইতিহাসের কারণে ভূতত্ত্ববিদদের বিশেষ নজরকাড়া অঞ্চলের একটি।

একই সময়ে ইরাক ও ইরানের সীমান্তবর্তী এলাকায় ৫.০৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে সংশ্লিষ্ট সিসমোলজিক্যাল কর্তৃপক্ষ। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

মধ্যপ্রাচ্যের ভূতাত্ত্বিক অবস্থান এমনিতেই নেস্টেড ফল্ট লাইন দ্বারা প্রভাবিত। ফলে একই সময়ে বিভিন্ন দেশে কম্পন দেখা গেলেও তা অস্বাভাবিক নয়, তবে বিশেষজ্ঞরা এটিকে সম্ভাব্য টেকটোনিক স্ট্রেস জমার ইঙ্গিত হিসেবেও বিবেচনা করছেন।

হরাত আল-শাকা সৌদি আরবের প্রধান প্রধান আগ্নেয় লাভাক্ষেত্রগুলোর একটি। এখানকার আগ্নেয় শিলাস্তর, লাভা ট্রেইল এবং ভূগর্ভস্থ প্লেট টেনশন এসব এলাকায় মাঝেমধ্যেই ছোট ভূকম্পন তৈরি করে। অতীতে এ অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপও নিবন্ধিত হয়েছে। এ কারণে ভূমিকম্পটির মাত্রা যদিও কম, তবুও আগ্নেয়ক্ষেত্রে কম্পন বিশেষজ্ঞদের সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি দাবি করে।

সৌদি গেজেট ও এসজিএস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো অঞ্চল থেকে বড় ধরনের ক্ষতি, হতাহত বা অবকাঠামোগত ধসের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভূমিকম্পটির উৎস আগ্নেয় লাভাক্ষেত্র হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে।

গত কয়েক বছরে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক এবং তুরস্কে মাঝারি ও ছোট ভূমিকম্পের পরিমাণ বেড়েছে। ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন- এর পেছনে রয়েছে টেকটোনিক প্লেটের ধীরচাপ, আগ্নেয় অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও লাভা চেম্বারের চাপ।

একাধিক দেশে একই সময়ে ভূমিকম্প হওয়া তাই প্রযুক্তিগতভাবে "চেইন সিসমিক রেসপন্স" হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

-রাফসান


কাক দিয়ে শহর পরিষ্কার করছে উন্নত যে দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৪ ১০:৫৯:২৫
কাক দিয়ে শহর পরিষ্কার করছে উন্নত যে দেশ
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা একটি প্রশ্ন আবারও সামনে এসেছে কাককে কি সত্যিই রাস্তার ময়লা পরিষ্কারে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়? কয়েক বছর আগেও এই ধারণা ছিল ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির মতো রোমাঞ্চকর। সাধারণ পাখি কাককে ব্যবহার করে শহরের সিগারেটের অবশিষ্ট পরিষ্কার করানোর উদ্যোগ নিয়ে ২০২২ সালে প্রত্যাশার শীর্ষে ওঠে সুইডেনের ছোট স্টার্টআপ Corvid Cleaning AB।

স্টার্টআপটির পরিকল্পনা ছিল অপারেন্ট কন্ডিশনিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কাককে প্রশিক্ষণ দেওয়া। কাক সিগারেটের অবশিষ্ট কুড়িয়ে নির্দিষ্ট বিনে ফেলবে, আর প্রত্যেক সফল প্রয়াসের পর মেশিন খাবারের একটি পেলেট দিয়ে তাকে পুরস্কৃত করবে। ধারণা ছিল, একজন কাক কাজটি শিখলে অন্য কাকেরাও তার অনুকরণ করবে, আর খুব কম খরচে শহরের জন্য তৈরি হবে ডানাওয়ালা পরিচ্ছন্নতা বাহিনী।

ধারণাটি এতটাই অভিনব ছিল যে মুহূর্তেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বহু মানুষ কল্পনায় দেখতে শুরু করে ছোট কালো পাখিরা শহরের রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সামলাচ্ছে।

তবে শুরুর উত্তেজনার মধ্যেও সুইডেনের একাধিক গবেষক নৈতিক ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির সতর্কতা দেন। সিগারেটের অবশিষ্টে থাকে নিকোটিন, টার, ভারী ধাতু এবং মাইক্রোপ্লাস্টিকসহ অসংখ্য টক্সিন যা পাখির স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা প্রশ্ন তোলেন বন্য কাককে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষাক্ত বস্তু তুলতে বাধ্য করা প্রাণী কল্যাণের নীতির পরিপন্থী কি না।

এই উদ্বেগের ফলে সুইডেনে সরকারি অর্থায়নে গবেষণা শুরু হয় “Bird Litter Picking: Nicotine Items and Health” শিরোনামে। গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল নিশ্চিত হওয়া যে কাকের জন্য কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি না থাকলে তবেই এই কার্যক্রম চালানো যাবে।

যদিও একটি ক্ষুদ্র পাইলট প্রকল্প শুরু হয়েছিল, তবে কী পরিমাণ সিগারেট সংগ্রহ করা হয়েছে, প্রশিক্ষিত কাক কতটা কার্যকর ছিল, বা মানুষের তুলনায় খরচ সত্যিই কম হতো কি না—এসবের কোনো তথ্য আর প্রকাশিত হয়নি। প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে বৈজ্ঞানিক বা আর্থিক কোনো স্বচ্ছতা প্রকাশ না পাওয়ায় আলোচনাও ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যায়।

সবশেষে নিশ্চিত হওয়া খবর আসে সুইডেনের কোম্পানি রেজিস্ট্রি থেকে। ২০২৫ সালের অক্টোবরে Corvid Cleaning AB আনুষ্ঠানিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যায়। পাবলিক নথিতে দেখা যায়, কোম্পানিটির কোনো কর্মী ছিল না, আয় ছিল মাত্র ৭ হাজার সেক (প্রায় ৭৫০ ডলার), এবং তারা কোনোভাবেই বিশ্বজুড়ে কাক-নির্ভর পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাছাকাছি ছিল না।

-রফিক


দুটি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৪ ১০:৫০:৪৬
দুটি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তান
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে আধাসামরিক বাহিনী ফেডারেল কনস্ট্যাবুলারি (এফসি)-এর সদর দপ্তরে সোমবার সকালে সশস্ত্র বন্দুকধারীরা আকস্মিক হামলা চালিয়েছে। হামলার মুহূর্তে এলাকাজুড়ে দুই দফা শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, যা চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। হামলার পরপরই দ্রুতগতিতে পুলিশ ও এফসি সদস্যরা পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে এবং সশস্ত্র অবস্থায় পাল্টা অভিযান শুরু করে।

পাকিস্তানি দৈনিক দ্য ডন এবং বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই হামলার বিষয়টি পেশোয়ার ক্যাপিটাল সিটি পুলিশ অফিসার ড. মিয়াঁ সাঈদ আহমদ নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এফসি সদর দপ্তর সরাসরি হামলার মুখে পড়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে তাৎক্ষণিক কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে সরকার ও তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর জঙ্গিগোষ্ঠী আবারও নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলার হুমকি দিয়ে তৎপরতা বাড়ায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নতুন এই হামলাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বান্নু জেলায় এফসি সদর দপ্তরে অনুরূপ হামলার চেষ্টা হয়েছিল, যা সেনাবাহিনী প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও ছয় সেনা সদস্য নিহত হন এবং পাঁচ হামলাকারী মারা যায়। সেই ঘটনায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ভারতের সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ফিতনা–আল–খারিজ’-কে দায়ী করেছিল, যা সাধারণত নিষিদ্ধঘোষিত টিটিপি-সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

সোমবারের হামলার পর পেশোয়ার শহরের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা, নিরাপত্তা চৌকি ও সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হামলাকারীদের পরিচয় ও সম্ভাব্য নেটওয়ার্ক সনাক্তে তদন্ত জোরদার করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুরো এলাকা সিল করে তল্লাশি অভিযান চলছে।

-শরিফুল


খামেনিকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র, দুই দেশের বিরুদ্ধে ইরানের গুরুতর অভিযোগ 

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ২০:৩২:৩৫
খামেনিকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র, দুই দেশের বিরুদ্ধে ইরানের গুরুতর অভিযোগ 
ছবিঃ সংগৃহীত

ইরানের সবোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে টার্গেট করার চেষ্টা এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ বিদেশি শত্রুরা এ ষড়যন্ত্র করছে বলে সরাসরি অভিযোগ করেছে ইরান। রোববার ২৩ নভেম্বর টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইরানের বার্তা সংস্থা আইএএনএ জানিয়েছে ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় মন্ত্রী এসমাইল খাতিব এক সতর্কবার্তায় বলেছেন শত্রু কখনও হত্যাচেষ্টার মাধ্যমে আবার কখনো বৈরী হামলার মাধ্যমে সর্বোচ্চ নেতাকে টার্গেট করতে চায়। যদিও মন্ত্রী কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার কথা উল্লেখ করেননি তবে ইরানি কর্মকর্তারা প্রায়ই বিদেশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন। তবে গত জুন মাসে ইসরায়েল ও ইরানের ১২ দিনের যুদ্ধের আগে খামেনির বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার হুমকি নিয়ে এমন মন্তব্য বিরল ছিল।

এসমাইল খাতিব আরও বলেন যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত বা সহায়তা করছে তারা জেনে বা না জেনে শত্রুর অনুপ্রবেশকারী এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তিনি এই মন্তব্যের মাধ্যমে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দিকেই ইঙ্গিত করেন।

চলতি বছরের সংঘাতে ইসরায়েল ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা পরমাণু বিজ্ঞানী এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। পরে যুক্তরাষ্ট্রও গুরুত্বপূর্ণ ইরানি পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হানে। ওই সময়ে এমন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল যে যুদ্ধ চলাকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছিলেন। কারণ এতে ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধ আরও তীব্র হতে পারত বলে আশঙ্কা ছিল। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জবাব এড়িয়ে যান তবে তিনি মন্তব্য করেন যে এমন পদক্ষেপ সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে।


টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় আবারও কেঁপে উঠল এশিয়ার দুই দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৫:৫৮:০৬
টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় আবারও কেঁপে উঠল এশিয়ার দুই দেশ

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় উত্তর মালুকু প্রদেশের হালমাহেরা অঞ্চলে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। রোববার ২৩ নভেম্বর সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয় প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অব ফায়ার বরাবর অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অংশে প্রায়শই ভূমিকম্প হয় কারণ সেখানে একাধিক টেকটোনিক প্লেট মিলিত হয়েছে। এর ফলে ওই অঞ্চলে বারবার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে।

অন্যদিকে একই দিনে মিয়ানমার উপকূলে ৫ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। বাংলাদেশ সময় আজ সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে এই ভূকম্পন আঘাত হানে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বা ইউএসজিএস জানিয়েছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের দাওয়েই শহর থেকে ২৬৭ কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণপশ্চিমে আন্দামান সাগরে এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।

ইউএসজিএস আরও জানিয়েছে মিয়ানমারের পাশাপাশি ভূমিকম্পের প্রভাব প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও অনুভূত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ভূমিকম্পের কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য এর আগে গত শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। নরসিংদীর মাধবদীতে উৎপত্তি হওয়া এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৫। এতে ১০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে এবং আহত হয়েছেন বহু মানুষ। প্রতিবেশী দেশগুলোতে রোববারের এই নতুন কম্পন তাই জনমনে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।


শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বড় দুঃসংবাদ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৪:৩৯:৫৭
শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বড় দুঃসংবাদ
ছবিঃ সংগৃহীত

শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনায় বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। শুক্রবারের প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের রেশ না কাটতেই শনিবার ২২ নভেম্বর ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে আরও তিনটি মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয় রাজধানী ও আশপাশের এলাকায়। ঘন ঘন ভূকম্পনের এ ঘটনাকে বিশেষজ্ঞরা মোটেও ভালো লক্ষণ নয় বলে সতর্ক করেছেন।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ৯১টি ভূমিকম্প হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী ভূমিকম্পের তথ্য নিয়ে কাজ করা জনপ্রিয় ওয়েবসাইট আর্থকোয়েকট্র্যাকার ডটকম। রবিবার ২৩ নভেম্বর ওয়েবসাইটটির দুপুরের আপডেটে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে আরও জানানো হয় যে গত সাত দিনে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৮৫২টি ভূমিকম্প হয়েছে যা বৈশ্বিক ভূ-প্রকৃতির অস্থিরতার ইঙ্গিত দেয়।

বাংলাদেশে শুক্রবার ৫ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর শনিবার প্রথম কম্পনটি হয় সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডে যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৩। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ২৯ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে নরসিংদীর পলাশে। এরপর সন্ধ্যায় ঢাকার বাড্ডায় আরও দুবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির জানান সন্ধ্যায় রাজধানীতে পরপর দুটি ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। ঠিক এর ১ সেকেন্ড পর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে দ্বিতীয়বার ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। তিনি আরও জানান এর মধ্যে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল বাড্ডায় এবং ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীতে।

এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা যা সারা দেশেই অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই আতঙ্কে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। শুক্রবারের ওই ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় শিশুসহ ১০ জন নিহত ও ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে নরসিংদীতে। এছাড়া ঢাকায় চারজন ও নারায়ণগঞ্জে একজন মারা যান। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে অনেকেই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন এবং হুড়োহুড়িতে আহত হন। এছাড়া ঢাকার কিছু ভবন হেলে পড়ার এবং ফাটল দেখা দেওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।


যতবার গাজা যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভয়ংকর রেকর্ড

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১১:১০:৫৯
যতবার গাজা যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভয়ংকর রেকর্ড
ছবি: আল জাজিরা

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। ১০ অক্টোবর ২০২৫ থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েল অন্তত ৩৯৩ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে নিশ্চিত করেছে গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস। আকাশপথে বোমাবর্ষণ, আর্টিলারি হামলা, স্নাইপার গুলি ও স্থল অভিযান সব মিলিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি কেবল কাগজে-কলমে বিদ্যমান থাকলেও বাস্তবে গাজা প্রায় প্রতিদিনই হামলার শিকার হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ১০ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ইসরায়েলের আক্রমণে অন্তত ৩১২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৬০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, যা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

প্রতিদিনের লঙ্ঘন: হামলা, অভিযান এবং গুলি-যুদ্ধবিরতির কোনও বাস্তবতা নেই

গাজার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি চলছে বলে দাবি করা হলেও বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পরিসংখ্যান বলছে-

  • সাধারণ নাগরিককে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে ১১৩ বার
  • “ইয়েলো লাইন” অতিক্রম করে স্থল অভিযান হয়েছে ১৭ বার
  • আকাশ ও স্থল থেকে বোমা–আর্টিলারি হামলা হয়েছে ১৭৪ বার
  • বাড়িঘর ও সম্পদ ধ্বংস হয়েছে ৮৫ বার
  • আটক করা হয়েছে কমপক্ষে ৩৫ জন ফিলিস্তিনিকে

এই অভিযানগুলো যুদ্ধবিরতির মূল ধারা-“সম্পূর্ণ শত্রুতা বন্ধ” এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। প্রতিদিনের হামলার বিবরণে দেখা যায়, গাজা যেন কখনোই যুদ্ধবিরতির ছায়া অনুভব করতে পারেনি।

৪২ দিনের মধ্যে ৩৫ দিন হামলার শিকার গাজা

আল জাজিরার বিশ্লেষণ অনুসারে, যুদ্ধবিরতির ৪২ দিনের মধ্যে ৩৫ দিনই ইসরায়েল গাজায় হামলা পরিচালনা করেছে। অর্থাৎ, মাত্র আট দিন কোনও মৃত্যুর খবর বা আঘাতের ঘটনা ঘটেনি।তবুও যুক্তরাষ্ট্র বলছে “ceasefire is still holding”, যা আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন একটি পক্ষ প্রতিদিন আক্রমণ চালায় আর অন্য পক্ষ বাস্তবে প্রতিরোধ করতে পারে না, তখন তাকে যুদ্ধবিরতি বলা যায় না। বরং তা একতরফা আগ্রাসনের রূপ নেয়।

  • ১৯ অক্টোবর ও ২৯ অক্টোবর: যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে ভয়াবহ দুই দিন
  • ১৯ অক্টোবর “বিরোধী পক্ষ হামলা করেছে” অভিযোগের পর পাল্টা আগ্রাসন

ইসরায়েল দাবি করে, রাফাহ এলাকায় হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এই দাবি উঠে আসে দুই ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হওয়ার পর। তবে হামাস জানায়, রাফাহ অঞ্চলে তাদের কোনও যোদ্ধা উপস্থিত ছিল না এবং ঐ এলাকা সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন।

এ অভিযোগের পর ইসরায়েলের ব্যাপক পাল্টা হামলায় অন্তত ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

২৯ অক্টোবর-একদিনে ১০৯ জন নিহত

রাফাহতে স্বল্পস্থায়ী গোলাগুলির পর ইসরায়েল আবারও ব্যাপক হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০৯ জন নিহত হয়, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ছিল বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সেদিনই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেন-“The Israelis hit back, and they should hit back.”

এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে আরও ক্ষুব্ধ করেছে এবং যুদ্ধবিরতির নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

গণহত্যার দীর্ঘ ছায়া: দুই বছরে নিহত প্রায় ৭০ হাজার

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘমেয়াদি হিসাব অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ২০ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছে-

  • ৬৯,৫৪৬ জন, এর মধ্যে ২০,১৭৯ শিশু
  • আহত হয়েছে ১,৭০,৮৩৩ জন

এই সংখ্যা দেখায় দুই বছরে গাজায় এমন ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে, যা আধুনিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।

মানবিক সহায়তা এখনও রুদ্ধ: চুক্তির শর্ত বাস্তবে প্রয়োগ হয়নি

যুদ্ধবিরতির প্রধান শর্ত ছিল গাজায় ‘পূর্ণ’ মানবিক সহায়তা প্রবেশ করবে। কিন্তু বাস্তবে- WFP বলছে, প্রয়োজনীয় খাদ্যের মাত্র ৫০% গাজায় পৌঁছাচ্ছে স্থানীয় সংস্থাগুলোর মতে, সহায়তার মোট মাত্র ২৫% বাস্তবে পৌঁছেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত গাজায় প্রবেশ করেছে ৫,০৩৭টি ট্রাক, যা মৌলিক চাহিদার তুলনায় অনেক কম।

অন্যদিকে হোয়াইট হাউস দাবি করেছে ১৫,০০০ ট্রাক aid প্রবেশ করেছে ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক aid সংগঠনগুলো এই সংখ্যাকে “অবাস্তব” হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ইসরায়েল খাদ্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে

ব্লকড খাদ্যসামগ্রী:

  • মাংস
  • দুগ্ধজাত পণ্য
  • সবজি

শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান

অনুমতি পেয়েছে:

  • চকোলেট
  • স্ন্যাকস
  • ক্রিস্পস
  • সফট ড্রিংকস

এর ফলে অপুষ্টি, রোগ ও চিকিৎসার অভাবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে।

২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা: গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

যুক্তরাষ্ট্রের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় উল্লেখ ছিল—

  • সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি
  • মানবিক aid পূর্ণ প্রবেশ
  • গাজায় বন্দিদের মুক্তি
  • ইসরায়েলের তিন ধাপে প্রত্যাহার
  • ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি

কিন্তু মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইসরায়েল ও হামাস অনুপস্থিত ছিল। ফলে চুক্তির কার্যকারিতা শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, যখন প্রধান পক্ষগুলোই শান্তি প্রক্রিয়ায় নেই, তখন কোনও যুদ্ধবিরতি টেকসই হতে পারে না।

মানবিক, রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত সংকট গাজার ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত

যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিক লঙ্ঘন, সহায়তার বাধা, অবকাঠামো ধ্বংস, ঘরহারা মানুষ, বন্দি ও আহতদের দীর্ঘ তালিকা সবকিছু মিলিয়ে গাজা এখন ইতিহাসের সবচেয়ে গভীর মানবিক সংকটে।

বিশ্বজুড়ে চাপ থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত এবং শান্তি প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হওয়ায় গাজার সাধারণ মানুষের জীবনে নিরাপত্তা, খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয়—সব ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে।


ভারতের চিকেন নেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতার নির্দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ২১:৪৯:৫৮
ভারতের চিকেন নেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতার নির্দেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণ ও বিভিন্ন কারণে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চিকেন নেক বা শিলিগুড়ি করিডরের নিরাপত্তা জোরদার করতে তৎপর হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে শনিবার শিলিগুড়ির সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো বা আইবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো এক উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক। দেশের অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই করিডরের নিরাপত্তা অবকাঠামো নতুন করে খতিয়ে দেখতেই এই বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রায় সব কটি প্রধান নিরাপত্তা ও সামরিক সংস্থার প্রতিনিধিরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স বা সিআইএসএফ বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা বিএসএফ সীমান্ত সুরক্ষা বল বা এসএসবি এবং ইন্দো টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশ বা আইটিবিপি। এছাড়াও রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স বা আরপিএফ জেনারেল রিজার্ভ পুলিশ বা জিআরপি ভারতীয় স্থলসেনা বাহিনী ভারতীয় বায়ুসেনা আর্মি ইন্টেলিজেন্স কেন্দ্রীয় সড়ক দফতর এশিয়ান হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগসহ একাধিক কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা এই বৈঠকে অংশ নেন।

সূত্রের খবরে জানা গেছে বৈঠকে চিকেন নেক করিডরে নজরদারি আরও কঠোর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় দ্বিগুণ তৎপরতা চালানো এবং গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোতে সমন্বিত নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তর পূর্ব ভারতকে দেশটির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা সরু এই করিডরে যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি না হয় মূলত সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতেই তৎপর হয়েছে বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা। দিল্লির সাম্প্রতিক ঘটনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই এই বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সুদান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ২১:০৩:০৬
সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সুদান
ছবিঃ সংগৃহীত

সুদানের মধ্যাঞ্চলে এক মাসের মধ্যে অপুষ্টিজনিত কারণে ২৩ জন শিশু মারা গেছে। অঞ্চলটিতে দেশটির সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক গোষ্ঠী আরএসএফ এর মধ্যে ভয়াবহ লড়াই চলছে। দেশটির একটি মেডিকেল গ্রুপের বরাতে এএফপি জানিয়েছে কর্ডোফান অঞ্চলে ২৩ শিশুর মৃত্যু উত্তর পূর্ব আফ্রিকান দেশটির মানবিক পরিস্থিতির অবনতিকেই তুলে ধরে। সেখানে ৩০ মাসেরও বেশি সময় ধরে ভয়াবহ যুদ্ধের পর দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদান বিশৃঙ্খলায় ডুবে যায়। সামরিক বাহিনী এবং আধাসামরিক আরএসএফ এর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই রাজধানী খার্তুম এবং দেশের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে এই বিধ্বংসী সংঘাতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তবে সাহায্যকারী গোষ্ঠীগুলো বলছে এই সংখ্যাটি কম এবং প্রকৃত সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি হতে পারে। দুই বাহিনীর এই যুদ্ধে ১ কোটি ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে এবং রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে ও দেশের কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক ক্ষুধা বিশেষজ্ঞদের মতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্ডোফান এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুরে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। অন্যান্য অঞ্চলে আরও ৩৬ লক্ষ মানুষ দুর্ভিক্ষের মাঝে রয়েছে। তীব্র অপুষ্টি এবং সরবরাহের ঘাটতির কারণে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সংঘাতের ওপর নজরদারিকারী পেশাদারদের সংস্থা সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে ২০ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে অবরুদ্ধ কাদুগলি এবং ডিলিং শহরে শিশুদের মৃত্যুর খবর বেশি পাওয়া গেছে।

এই বছরের শুরুতে সেনাবাহিনী খার্তুম থেকে আরএসএফকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর কর্ডোফানের নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই তীব্রতর হয়। তখন থেকে আধাসামরিক বাহিনী কর্ডোফান এবং এল ফাশার শহরে ব্যাপক হামলা শুরু করে এবং গণহত্যা চালায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী আরএসএফ যোদ্ধারা শহরের হাসপাতালে তাণ্ডব চালায় এবং এক হাসপাতালেই ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে। সাহায্যকর্মী এবং বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা বলছেন যোদ্ধারা ঘরে ঘরে গিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা এবং যৌন নির্যাতন চালায়।

স্কুল অফ পাবলিক হেলথের হিউম্যানিটেরিয়ান রিসার্চ ল্যাব গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে নতুন স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে আরএসএফ এল ফাশারের বিভিন্ন স্থানে মৃতদেহ লুকানোর জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত