বাংলাদেশকে নিয়ে চীন-পাকিস্তানের পরিকল্পনা, দক্ষিণ এশিয়ায় কী বদল আসছে?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ৩০ ১৫:৫৯:৫২
বাংলাদেশকে নিয়ে চীন-পাকিস্তানের পরিকল্পনা, দক্ষিণ এশিয়ায় কী বদল আসছে?

দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন ভিত্তি গড়ে তুলতে চীন ও পাকিস্তান একযোগে কাজ শুরু করেছে। দীর্ঘদিন ধরে কার্যত অচল হয়ে পড়া সার্কের (SAARC) স্থবিরতার প্রেক্ষাপটে তারা এমন একটি নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে, যা ভবিষ্যতে সার্কের বিকল্প মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে। এ উদ্যোগে বাংলাদেশের অংশগ্রহণও ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনের কুনমিং শহরে গত ১৯ জুন অনুষ্ঠিত একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ অংশ নেয়। এ বৈঠককে আঞ্চলিক জোট গঠনের গভীর কূটনৈতিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাণিজ্য, সংযুক্ততা ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে একটি নতুন কাঠামো দাঁড় করানোর লক্ষ্যেই এই বৈঠক। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ইসলামাবাদ ও বেইজিং অনেকদূর এগিয়ে গেছে এবং তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়াকে একটি নতুন ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যে রূপান্তরিত করা।

জোটে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দিল্লির কৌশলগত অবস্থান ও চীনের প্রতি সংবেদনশীলতা এই জোটে তাদের অংশগ্রহণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। তবে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান প্রভৃতি দেশসমূহ এই উদ্যোগে যুক্ত হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, এক সময় সার্ককে দক্ষিণ এশিয়ার 'ইউরোপীয় ইউনিয়ন' বলা হলেও, ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক বৈরিতা, সীমান্ত উত্তেজনা ও নিরাপত্তা জটিলতায় ২০১৪ সালের পর থেকে এটি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সম্মেলন বাতিল হওয়ার পর সার্কের ভবিষ্যৎ ঘোর অনিশ্চয়তায় পড়ে।

সাম্প্রতিক সময়ে কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনার জেরে ভারত পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের সার্ক ভিসা সুবিধাও বাতিল করে। ফলে সংস্থাটির কার্যকারিতা আরও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।

এই পটভূমিতে চীন ও পাকিস্তান নতুন জোট গঠনের প্রস্তাব নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা বলছে, এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত ও মতাদর্শগত দিক থেকেও একটি শক্তিশালী মঞ্চ হিসেবে গড়ে উঠবে।

অন্যদিকে, ভারত নিজেও সম্প্রতি এসসিও (SCO) নিয়ে আগ্রহ হারাতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরপর দুটি এসসিও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেননি। অথচ সেই সংস্থায় চীন, রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার প্রভাবশালী দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় রাজনৈতিক অচলাবস্থার এই সময়ে চীন-পাকিস্তান নেতৃত্বাধীন নতুন জোটের উদ্যোগ আঞ্চলিক কৌশলগত ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত