হাসনাতের এক পোস্ট, রাতেই দুদকের জালে চার প্রতারক

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ২০:১৬:৪৮
হাসনাতের এক পোস্ট, রাতেই দুদকের জালে চার প্রতারক

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি ফেসবুক পোস্ট থেকেই বেরিয়ে এলো প্রতারণার এক চাঞ্চল্যকর কাহিনি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসা একটি চক্র অবশেষে ধরা পড়েছে। অভিযানে রাজধানী থেকে চার প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

দুদকের প্রধান কার্যালয় রোববার (২৯ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে একজন হচ্ছেন পিরোজপুর সদর উপজেলার বাদলখালী এলাকার বাসিন্দা মো. সেলিম (৪০), বর্তমানে রাজধানীর মান্ডা এলাকার গ্রিন মডেল টাউনে বসবাস করেন। বাকি তিনজন হলেন—তরিকুল ইসলাম (৪০), মো. আতিক (৩৮) এবং মো. আব্দুল হাই সোহাগ (৩৫)। তারা মুগদা থানার দক্ষিণ মান্দা এলাকার বাসিন্দা।

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ২৪ জুন, যখন এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ সামাজিক মাধ্যমে “স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা” শিরোনামে একটি পোস্ট করেন। পোস্টটি দুদকের দৃষ্টিগোচর হলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয় এবং পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়।

পরে র‍্যাব, পুলিশসহ একাধিক সংস্থার সমন্বয়ে রাজধানীর মুগদা ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে প্রতারকচক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি সনি ডিজিটাল এইচডি ক্যামেরা, বুম, সেলফি স্টিক, দুটি পাসপোর্ট, ছয়টি মোবাইল ফোন, তেরোটি সিমকার্ড, সোনালী ব্যাংকের চেকবই এবং একাধিক জাতীয় দৈনিক ও টিভি চ্যানেলের নামে তৈরি করা ভুয়া আইডি ও ভিজিটিং কার্ড।

দুদকের বিবৃতিতে বলা হয়, এই চক্রটি নিজেদের দুদকের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক কিংবা অন্য কর্মকর্তা পরিচয়ে পরিচিত করিয়ে ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি ও প্রলোভনে ফেলত। তারা মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আর্থিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টায় লিপ্ত ছিল।

জানা গেছে, প্রতারক আব্দুল হাই সোহাগ 'সোহাগ পাটোয়ারী' ছদ্মনাম ব্যবহার করে মিডিয়ার পরিচয় দিতেন। এমনকি তাদের হাতে পাওয়া ভিজিটিং কার্ডেও নাম ছিল মিডিয়া সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে উল্লেখ।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং মামলা রুজু করা হয়েছে। কমিশন জানায়, ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা বন্ধে মনিটরিং জোরদার করা হবে।

এই ঘটনায় শুধুমাত্র একটি প্রতারকচক্র নয়, বরং সামাজিকমাধ্যমে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজনীয়তাও আবারও প্রমাণিত হলো।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত