“পারমাণবিক বিদ্যুৎ যুগে পা রাখছে বাংলাদেশ, রূপপুর প্রায় প্রস্তুত”

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১৬:৫১:৪৭
“পারমাণবিক বিদ্যুৎ যুগে পা রাখছে বাংলাদেশ, রূপপুর প্রায় প্রস্তুত”

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের প্রথম ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের চূড়ান্ত প্রস্তুতির পথে রয়েছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রটির প্রধান ও সহায়ক ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিং কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এতে করে কেন্দ্রটি শিগগিরই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার উপযোগী হয়ে উঠেছে—বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।

শনিবার বিকেলে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রসাটম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই অগ্রগতির কথা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কমিশনিংয়ের কাজ শেষ হওয়ায় ইউনিটটি পরীক্ষামূলক উৎপাদনের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্পে নিযুক্ত এতমস্ত্রয় এক্সপোর্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলেক্সি ডেইরি বলেন,

“সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সমন্বিত প্রয়াস ও কঠোর পরিশ্রমে এই সফলতা অর্জিত হয়েছে। কঠিন লজিস্টিকস ও বৈরী জলবায়ু সত্ত্বেও সবার নিষ্ঠাবান কাজ প্রকল্পের নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতার এক মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

প্রধান ট্রান্সফর্মারগুলোর কাজ মূলত টার্বাইন জেনারেটরে উৎপাদিত ২৪ কেভি বিদ্যুৎকে ৪০০ কেভিতে রূপান্তর করা—যা জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালনের জন্য অপরিহার্য। প্রতিটি ট্রান্সফর্মারের ধারণক্ষমতা প্রায় ১,৫৯৯ মেগাওয়াট, যা প্রথম ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াটের চেয়েও বেশি। ফলে কেন্দ্রটি জাতীয় গ্রিডে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।

প্রতিটি ট্রান্সফর্মার ফেজের ওজন প্রায় ৪০০ টন এবং সংযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে ১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কেবল। পাশাপাশি, ইউনিটের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমেও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়ক ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। দ্বৈত মোডে পরিচালিত এসব ট্রান্সফর্মার জাতীয় গ্রিড ও জেনারেটর উভয় উৎস থেকে বিদ্যুৎ গ্রহণে সক্ষম।

নিরাপত্তা পরীক্ষার আগাম বার্তা

রসাটম আরও জানায়, পরবর্তী ধাপে ইউনিটটিতে ‘হট মিডিয়া টেস্ট’ সহ একাধিক নিরাপত্তা পরীক্ষা চালানো হবে। এসব পরীক্ষার সময় কিছু শব্দ বা বাষ্প নির্গমন স্থানীয় জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিত করেছে, এসব পরীক্ষা পূর্বপরিকল্পিত এবং এতে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই।

রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন এই মেগা প্রকল্পে স্থাপিত হয়েছে দুটি ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি—যাদের প্রত্যেকটির উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। রসাটমের প্রকৌশল বিভাগ সর্বমোট ২,৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত