"গ্রোসির হুঁশিয়ারি— ইউরেনিয়ামে ফের গতি আনতে পারে ইরান!"

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১৪:২৩:১৩
"গ্রোসির হুঁশিয়ারি— ইউরেনিয়ামে ফের গতি আনতে পারে ইরান!"

ইরান অচিরেই আবারও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে—যার মধ্য দিয়েই দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (IAEA)-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ বিমান হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়েছে—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন দাবি করলেও বাস্তবচিত্র ভিন্ন বলেই জানান গ্রোসি। তার মতে, ইরান এখনো চাইলে কয়েক মাসের মধ্যেই পুনরায় সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম।

গত ১৩ জুন ইসরায়েল প্রথমবারের মতো ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ চালায়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রও হামলায় অংশ নেয় এবং ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বোমা ফেলে। যদিও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত মাত্রা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। পেন্টাগনের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।

সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন, ইরানের হাতে এখনো শিল্প ও প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো রয়েছে যা দিয়ে তারা সেন্ট্রিফিউজ ঘুরিয়ে পুনরায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারবে। এ বিষয়ে সরাসরি তিনি বলেন, “সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে—এমনটা বলার সুযোগ নেই। কিছু না কিছু এখনো অবশিষ্ট রয়েছে।”

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মূল্যায়নে একেবারেই দ্বিমত পোষণ করে বলেন, মিডিয়া তার ‘ইতিহাসসৃষ্ট সফল সামরিক অভিযানের’ অবমূল্যায়ন করছে। একইসঙ্গে তিনি ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুনরায় শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্র আবারও সামরিক জবাব দেবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, বোমা হামলায় পরমাণু স্থাপনাগুলোতে গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, আইএইএ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নিচ্ছে এবং এরই প্রেক্ষিতে ইরানি পার্লামেন্ট সংস্থাটির সঙ্গে সবধরনের সহযোগিতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তিতে ইরান ১৫ বছর পর্যন্ত ৩.৬৭ শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ না করার অঙ্গীকার করেছিল। এছাড়া, ফোরদো স্থাপনায় কোনো ধরনের সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালানো যাবে না বলেও চুক্তিতে উল্লেখ ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন এবং ইরানের বিরুদ্ধে আবারও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর পর থেকেই ইরান চুক্তির শর্ত ভাঙতে শুরু করে এবং ২০২১ সালে ফোরদোতে আবারও সমৃদ্ধকরণ শুরু করে।

আইএইএর সাম্প্রতিক তথ্যমতে, ইরান ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এত পরিমাণে মজুত করেছে যা দিয়ে প্রায় নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত