‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ নিয়ে বিতর্ক, মুখ খুললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৭ ২১:৫৮:১০
‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ নিয়ে বিতর্ক, মুখ খুললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবস’, ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ এবং ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ ঘোষণা করে গত বুধবার তিনটি পৃথক পরিপত্র জারি করে অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ঘোষণায় বলা হয়, এই দিবসগুলো যথাযথ মর্যাদায় রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলো।

তবে এই ঘোষণার পরপরই ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। বিশেষ করে ৮ আগস্টকে এই দিবস হিসেবে নির্ধারণ করায় আপত্তি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়ে দাবি করেন—‘নতুন বাংলাদেশের প্রকৃত সূচনা হয়েছিল ৫ আগস্ট, ৮ আগস্ট নয়।’

এই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, ‘দিবসবিষয়ক সিদ্ধান্তগুলো পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। ঘোষিত তিনটি দিবস নিয়েই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে।’

আসিফ মাহমুদ নিজেই ছিলেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। বর্তমানে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।

পরিপত্র জারির পরদিন, বৃহস্পতিবার বিকেলে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে ৫ আগস্ট। ৮ আগস্ট নয়। ৫ আগস্টের সাধারণ ছাত্র–জনতার এই অর্জনকে সরকারের কুক্ষিগত করার চেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না।’

উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম আরও কড়া ভাষায় বলেন, ‘৮ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা শুরু হয়নি। দ্বিতীয় স্বাধীনতা নষ্টের, ছাড় দেওয়ার এবং বিপ্লব বেহাতের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে।’ তিনি ৫ আগস্টকেই ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস’ এবং প্রকৃত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ বলে উল্লেখ করেন।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন নিজের প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস সেদিনই হবে, যেদিন “জুলাই ঘোষণাপত্র” আসবে, যেদিন মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে “জুলাই সনদ” হবে।’

বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে ইতিহাসের পটভূমি ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনা না করে রাষ্ট্রীয় দিবস ঘোষণা করলে তা বিভ্রান্তি ও দ্বন্দ্বের জন্ম দিতে পারে। সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার উদ্যোগ তাই স্বস্তিদায়ক হলেও, আসল চ্যালেঞ্জ হলো—একটি ঐকমত্য তৈরি করা।

—সত্য প্রতিদিন/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ