শেয়ার বাজার সাপ্তাহিক বিশ্লেষণ

ঘুড়ে দাড়াচ্ছে শেয়ার বাজার: ৭৬ পয়েন্ট পতন থেকে ৬৫ পয়েন্ট ঊর্ধ্বমুখী

শেয়ারবাজার ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ১৬:৫৩:৪৪
ঘুড়ে দাড়াচ্ছে শেয়ার বাজার: ৭৬ পয়েন্ট পতন থেকে ৬৫ পয়েন্ট ঊর্ধ্বমুখী

বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে একটানা চতুর্থ কার্যদিবসে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফেরার একটি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। ২৬ জুন (বৃহস্পতিবার) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) — উভয় বাজারেই অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সেইসঙ্গে, ডিএসইতে ৩১ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন রেকর্ড হয়েছে, যা বাজারে সক্রিয়তার পরিসর বাড়ার প্রমাণ দেয়।

এর পেছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির সরাসরি প্রভাব। ২১ জুন রাতের দিকে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ফলে ২২ জুন বাংলাদেশের শেয়ারবাজার খোলার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক বিক্রির চাপে ৩৫০টিরও বেশি কোম্পানির শেয়ারের দরপতন ঘটে। ডিএসইর সূচক কমে যায় ৭৬ পয়েন্ট। কিন্তু যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসায় ২৪ জুন থেকে ধীরে ধীরে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এবং বৃহস্পতিবার তা পূর্ণমাত্রায় উত্থানে রূপ নেয়।

বৃহস্পতিবার বাজারের শুরু থেকেই শেয়ারদরের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যায়, দিনশেষে ২৯৮টি শেয়ারের দাম বেড়ে যায়, ৪৬টি কমে এবং ৫৪টি অপরিবর্তিত থাকে। ডিএসইএক্স সূচক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৮৩২ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ১,০৫৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ১,৮২০ পয়েন্টে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় ৬৫ কোটি টাকা বেশি।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া ১৬৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। মাঝারি মানের (১০ শতাংশের নিচে লভ্যাংশ) ৬৫টি কোম্পানির শেয়ারের দামও ঊর্ধ্বমুখী ছিল। সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হলো, লভ্যাংশ না দেওয়া এবং ঝুঁকিপূর্ণ 'জেড' গ্রুপের ৬৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের উচ্চ ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা নির্দেশ করে। মিউচুয়াল ফান্ডের ২১টি ইউনিটের দাম বেড়েছে, ৪টি কমেছে এবং ১১টি অপরিবর্তিত থেকেছে।

এই উত্থান শুধু সংখ্যাগত নয়, এটি বিনিয়োগকারীদের মানসিকতায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি। যুদ্ধ আতঙ্কের মধ্যে ডুব দেওয়া বাজার এখন আত্মবিশ্বাসের শক্ত ভিতে দাঁড়িয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। অনেকের চোখে এটি শুধুই বাজারের সূচক নয়, বরং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং কৌশলগত বিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ