বিডিআর হত্যাকাণ্ড

বিডিআর হত্যাযজ্ঞ: কারা ছিল পেছনে? পুনঃতদন্তে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৫ ১৭:৪৫:০৯
বিডিআর হত্যাযজ্ঞ: কারা ছিল পেছনে? পুনঃতদন্তে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য 

২০০৯ সালের পিলখানায় সংঘটিত নারকীয় বিডিআর হত্যাকাণ্ড ছিল দীর্ঘমেয়াদি এক পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফল, এবং এতে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এএলএম ফজলুর রহমান।

রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম নতুন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কমিশনের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন তিনি। জানান, ঘটনার গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ও ঘটনার নানা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ধ্বংসের উদ্যোগেরও প্রমাণ মিলেছে।

কমিশন বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করছে। ইতোমধ্যে ১৫৮ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে এবং আরও ৫০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। শহীদ সেনা পরিবারের ছয়জন সদস্য এবং দুটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আরও কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনের অভিমত ও অভিজ্ঞতা কমিশন সংগ্রহ করেছে।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে বেঁচে যাওয়া ১৫ জন সেনা কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। সেনা সদর দপ্তরের সহায়তায় আরও ৫০ জন কর্মকর্তার লিখিত বক্তব্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, এই ঘটনায় জড়িত বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন মোট ৮ জন রাজনৈতিক নেতা। এদের মধ্যে তিনজনের বক্তব্য জেলখানায় সরাসরি গ্রহণ করা হয়েছে, তিনজনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে মুখোমুখি, আর বাকি দুইজন পলাতক নেতার বক্তব্য এসেছে ই-মেইলের মাধ্যমে।

কমিশন ৫৫ জন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে, যাঁরা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ও শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে ২০ জন অসামরিক নাগরিককেও, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক, আমলা ও বিডিআর ট্র্যাজেডি-সংক্রান্ত পূর্ববর্তী তদন্ত কমিটির সদস্যরা। কমিশন সাক্ষাৎকার নিয়েছে তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) এবং সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের।

এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে। তাঁরা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনার পাশাপাশি কারা এর পেছনে ছিল সেই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। আরও সাক্ষাৎকার নেওয়ার কাজ চলছে।

মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান বলেন, “এই তদন্তে কমিশনের লক্ষ্য সত্য উদঘাটন এবং দেশবাসীর সামনে ঘটনাটির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা। আমরা কারো বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু করছি না, বরং ইতিহাসের কাছে দায়বদ্ধতা থেকেই কাজ করছি।”

কমিশনের এই ধারাবাহিক তদন্ত পিলখানার মর্মান্তিক অধ্যায়কে নতুন আলোয় বিশ্লেষণের পথ তৈরি করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন অপেক্ষা—এই তদন্ত শেষ হলে কী ধরনের আইনি ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

-হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত