উত্তর মেরু অভিযানে কিশোর বিজ্ঞানী: রসাটম প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি সাফল্য

এম এস রহমান
এম এস রহমান
স্টাফ রিপোর্টার
জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৫ ০৯:১৩:৩০
উত্তর মেরু অভিযানে কিশোর বিজ্ঞানী: রসাটম প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি সাফল্য

বাংলাদেশের একজন স্কুল শিক্ষার্থী, আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, চলতি বছরের আগস্টে রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তিচালিত আইসব্রেকার “বিজয়ের পঞ্চাশ বছর”-এ চড়ে এক অভাবনীয় অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছেন। অভিযানের গন্তব্য: পৃথিবীর সর্ব উত্তরের বরফে মোড়ানো মেরু অঞ্চল—উত্তর মেরু। তিনি বিশ্বের ১৪-১৬ বছর বয়সী বিশজন নির্বাচিত বিদেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন, যিনি এ অনন্য আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক অভিযানের সুযোগ পেয়েছেন।

এই অভিযানে রাশিয়ার উন্মুক্ত ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা এবং আঞ্চলিক বিভিন্ন বাছাই প্রক্রিয়ায় বিজয়ী আরও ৪৫ জন রুশ ও বিদেশি শিক্ষার্থীও অংশ নিচ্ছেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রসাটম বাংলাদেশের জন্য এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়। তবে বাংলাদেশি এই কিশোর বিজ্ঞানীর বিস্তারিত পরিচয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, “আইসব্রেকার অফ নলেজ” নামে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও শিক্ষা প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসরের মাধ্যমে এই নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই আসরটি ছিল রাশিয়ার পারমাণবিক শিল্পের ৮০ বছর এবং ঐতিহাসিক উত্তর সামুদ্রিক পথ আবিষ্কারের ৫০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত।

২০২৪ সালের এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশসহ ২০টি দেশের ৩,৫০০-এর বেশি ১৪-১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ থেকে রেকর্ডসংখ্যক ১৫৩ জন শিক্ষার্থী আবেদন করে, যা দেশটির বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহের একটি চমৎকার ইঙ্গিত বহন করে। রসাটমের সহায়তায় রাশিয়ার পারমাণবিক তথ্য কেন্দ্র নেটওয়ার্ক এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

প্রতিযোগিতাটি তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপে ছিল একটি অনলাইন বিজ্ঞান কুইজ, যেখানে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বিজ্ঞান জ্ঞান যাচাই করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে অংশগ্রহণকারীদের রসাটমের আধুনিক প্রযুক্তি, নিরাপদ আর্কটিক শিপিং এবং ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি নিয়ে ধারাবাহিক ওয়েবিনারে অংশ নিতে হয় এবং সেই বিষয়ভিত্তিক আরও একটি মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে হয়। তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে প্রতিযোগীদের নিজ নিজ দেশের উন্নয়নে পারমাণবিক প্রযুক্তি কীভাবে ব্যবহৃত হতে পারে—তা নিয়ে একটি মৌলিক ভিডিও প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে বলা হয়। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল এই প্রেজেন্টেশনগুলো মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ করে।

এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য হলো, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও পরমাণু প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে প্রতিভাবান ও উদ্ভাবনী সক্ষমতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের বিজ্ঞানভিত্তিক ক্যারিয়ার গঠনে সহায়তা করা।

উল্লেখ্য, বিশ্বে একমাত্র রাশিয়ারই নিজস্ব পরমাণু শক্তিচালিত আইসব্রেকার বহর রয়েছে। FSUE Atomflot-এর অধীন থাকা বহরটিতে বর্তমানে মোট আটটি পরমাণু আইসব্রেকার রয়েছে, যা উত্তর মেরুর চরম আবহাওয়ায় নিরাপদ এবং কার্যকর অভিযানের জন্য ব্যবহৃত হয়।

গত ছয় বছরে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী এই ‘আইসব্রেকার’ অভিযানে অংশগ্রহণ করেছে। এবার বাংলাদেশের কিশোর আবদুল্লাহ আল মাহমুদের অন্তর্ভুক্তি বিশ্ববিজ্ঞানে দেশের সম্ভাবনা ও নতুন প্রজন্মের অগ্রযাত্রাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে দিল।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত