প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে জামায়াতের প্রস্তাব

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ১৮:৪৯:৪১
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে জামায়াতের প্রস্তাব

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, একজন ব্যক্তি যেন জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে না পারেন এমন সাংবিধানিক বিধান জরুরি হয়ে পড়েছে।

রোববার (২২ জুন) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক সংলাপ শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই প্রস্তাব তুলে ধরেন। তাহের বলেন, “বার বা মেয়াদ নিয়ে বিতর্ক না করে সময়সীমা নির্ধারণ করাই বেশি যৌক্তিক। একজন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় যতবারই প্রধানমন্ত্রী হোন না কেন, সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি না হওয়াই উচিত। এটা জাতির আকাঙ্ক্ষা—এবং আমরা মনে করি এটি সবার সম্মতিতে গৃহীত হওয়া উচিত।”

তিনি দাবি করেন, এ প্রস্তাবের পক্ষে তিনটি দল ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। তাহের বলেন, “বহু দেশে এমন নজির রয়েছে আমরা মনে করি এটি বাংলাদেশেও প্রয়োজনীয়। এটি আমাদের রাজনীতিতে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনবে।”

তবে এই সংলাপের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এখনো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য আসেনি। যেমন—সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) প্রস্তাব, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রয়েছে তীব্র মতবিরোধ। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী পদে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে এনসিসি গঠনের যে প্রস্তাব এসেছে, তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে স্পষ্ট মতভেদ রয়েছে।

সাম্প্রতিক সংলাপগুলোতে 'ঐকমত্য' শব্দটির সংজ্ঞা নিয়েও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। কেউ একে সর্বসম্মতি, কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠ মত বলে দেখছেন। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ব্যাখ্যাগত অস্পষ্টতা নিরসনে তারা ব্যাখ্যামূলক নথি প্রকাশের বিষয়টি বিবেচনা করছেন।

উল্লেখ্য, ১৭ জুনের সংলাপ পর্বে জামায়াত অংশ নেয়নি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বানের পর তারা পরদিন অংশ নেয়। এই অংশগ্রহণ রাজনৈতিক সংলাপের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছে বলে মনে করছে কমিশনের সংশ্লিষ্টরা।

রোববারের বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজও।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের প্রস্তাব একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে। এতে প্রমাণ হয়, রাজনৈতিক মতপার্থক্যের বাইরে গঠনমূলক পরিবর্তনের জন্য একটি সম্মিলিত চিন্তার জায়গা তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। ঐকমত্যে পৌঁছানো না গেলেও এই আলোচনাগুলো ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সংস্কারের ভিত্তি স্থাপন করতে পারে।

-শরিফুল, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত