‘সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করছেন তথ্য আপারা’ — মন্তব্য উপদেষ্টার, উত্তপ্ত আলোচনা বেইলি রোডে

আন্দোলনরত ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘সরকারকে ব্ল্যাকমেইল’ করার অভিযোগ তুলেছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় মহিলা সংস্থার সম্মেলন কক্ষে প্রকল্প কর্মীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন, যা মুহূর্তেই আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়।
আলোচনার শুরুতেই উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ কড়া ভাষায় বলেন, ‘তোমরা যে সরকারের থেকে এত সাহায্য চাইছো, সেই সরকারকে বিব্রত করা থেকে শুরু করে কোণঠাসা করা, ব্ল্যাকমেইল করা—সবই করছো। এটাকে বলে ব্ল্যাকমেইল।’ তিনি আরও বলেন, সরকার প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর চেষ্টা করছে, তাই এখনই কেউ বেকার হয়নি। কিন্তু আন্দোলনের নামে রাজপথে অবস্থান করে সরকারের ওপর অযথা চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
উপদেষ্টা দাবি করেন, চলমান আন্দোলনের পেছনে ‘বিগত সরকারের সুবিধাভোগীদের’ একটি অংশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বর্তমান সরকারকে বিব্রত করতে মাঠে নেমেছে। তিনি বলেন, এই আন্দোলনকে রাজনীতিকীকরণের চেষ্টা চলছে, যা প্রকল্পের প্রকৃত কর্মীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লড়াইকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
তথ্য আপাদের দুই দফা দাবি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, তিনি নিজে কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না, কারণ এ বিষয়ে একাধিক মন্ত্রণালয় জড়িত এবং সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ। পাশাপাশি তিনি কর্মীদের চাকরির বিধিবিধান ও সরকারি শৃঙ্খলা মেনে চলার বিষয়ে সতর্ক করেন।
অন্যদিকে আলোচনায় অংশ নেওয়া ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের প্রতিনিধি সঙ্গীতা সরকার বলেন, ‘উপদেষ্টা আমাদের আলোচনায় ডেকে তার সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন বটে, কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বা লিখিত নিশ্চয়তা দেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২৩ দিন ধরে রাজপথে অবস্থান করছি। আমাদের দুটি মূল দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
প্রসঙ্গত, ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পটি ডিজিটাল তথ্যসেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে পরিচালিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারী উদ্যোগ, যার আওতায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা তথ্যসেবায় দক্ষ হয়ে জনগণকে ডিজিটাল সহায়তা প্রদান করে থাকেন। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষের দিকে চলে আসায় হাজারো তথ্য আপা চাকরি অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। ফলে আন্দোলন শুরু হয় রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।
এই বিরোধ ও আলোচনা প্রক্রিয়ার ফলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ ও কর্মীদের চাকরির নিশ্চয়তা ঘিরে এখন সৃষ্টি হয়েছে দোলাচল। সরকারের পক্ষ থেকে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
—আশিক নিউজ ডেস্ক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ভোক্তার কষ্ট বুঝছে সরকার:বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান