১৪০০ শহীদের নামে বিজয় সরণিতে ‘গণমিনার’

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৯ ১৮:০২:৫৫
১৪০০ শহীদের নামে বিজয় সরণিতে ‘গণমিনার’

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪’-এ সংঘটিত গণপ্রতিরোধ, আত্মত্যাগ ও জনগণের বিজয়কে চিরস্মরণীয় করে রাখতে রাজধানী ঢাকায় ‘গণমিনার’ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে ‘গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি’। এই গণমিনার নির্মাণ করা হবে বীর উত্তম মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান সড়ক ও বিজয় সরণির মধ্যবর্তী সবুজ চত্বরে, যা ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন জমি বরাদ্দ ও প্রকৌশল সহায়তায় সম্মতি দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। এতে অংশ নেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্থপতি কামার আহমাদ সাইমনসহ বিশিষ্টজনেরা।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম জানান, ৫ আগস্টের প্রতীকি বিজয়ের মাধ্যমে জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা具সফল বাস্তবায়ন পেয়েছে। তিনি বলেন, “এই অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন ১,৪০০ জন এবং আহত হয়েছেন হাজার হাজার। তাদের স্মরণেই নির্মাণ করা হবে এই গণমিনার, যাতে জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।” এজন্য গণচাঁদার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। অচিরেই প্রকাশ করা হবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও দানের বিস্তারিত তথ্য।

তিনি আরও জানান, এই মিনারের কাজ ৫ আগস্টের মধ্যে দৃশ্যমান পর্যায়ে পৌঁছাতে চাওয়া হলেও, পূর্ণাঙ্গ নির্মাণ কাজ একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। তবুও ইতোমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে।

স্থপতি কামার আহমাদ সাইমন বলেন, “আমরা ইতিহাস ভুলে যাই খুব সহজেই। লাখো মানুষের অংশগ্রহণ আর হাজার হাজার শহীদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতেই এই উদ্যোগ। জাদুঘরের মতো স্মৃতি সংরক্ষণের পাশাপাশি মিনার একটি উন্মুক্ত গণস্থান যেখানে সম্মান, শ্রদ্ধা ও চেতনার প্রকাশ ঘটে।”

তিনি জানান, প্রস্তাবিত গণমিনারে শহীদদের নাম, জন্ম-মৃত্যুর তারিখ, পেশা ও শাহাদাতের স্থানসহ বিস্তারিত তথ্য সংবলিত এপিটাফ বা ফলক নির্মাণ করা হবে। এর পাশাপাশি একটি প্রাচীরও নির্মাণ করা হবে, যা হয়ে উঠবে গণচেতনার দৃশ্যমান ভাষ্য।

গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটির অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-

১. ২৫০ বছরের অধিক সময় ধরে এই ভূখণ্ডে সংঘটিত প্রতিরোধ ও লড়াইয়ের চিত্র ও বিবরণ খোদাই করে স্থাপন।

২. জাতিসংঘ স্বীকৃত ১,৪০০ শহীদের তথ্য সংরক্ষণ।

৩. রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সর্বস্তরের নাগরিকের অংশগ্রহণে একটি ঐক্যবদ্ধ স্মৃতিসৌধ গড়ে তোলা।

এটি শুধু একটি স্মারক নয়, বরং হবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মুক্তিযুদ্ধ ও জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছাশক্তির দৃঢ় প্রতিচ্ছবি। গণমিনার হবে এমন এক চেতনাস্থল, যেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অতীতের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের শক্তি নিয়ে এগিয়ে যাবে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত