ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’

মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’। দেশটির জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা এবং মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যেই এটি ক্যাটাগরি-২ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) মধ্যরাত নাগাদ মেক্সিকোর উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ বাতাসের গতি বর্তমানে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন, ভূমিতে আছড়ে পড়ার আগে এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে ক্যাটাগরি-৩ মাত্রার ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

বিশেষভাবে ঝুঁকির মুখে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের ওয়াঝাকা (Oaxaca) এবং গুয়েরেরো (Guerrero) রাজ্য। এ অঞ্চলে প্রবল ঘূর্ণি বাতাসের পাশাপাশি আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এসব এলাকায় সর্বোচ্চ ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

মেক্সিকোর নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান লরা ভেলাজকুয়েজ জানান, উপকূলীয় রাজ্যগুলোয় প্রায় ২ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চিয়াপাস, গুয়েরেরো এবং ওয়াঝাকা রাজ্যের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের ইতোমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম চলছে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "নিজ নিজ ঘরে নিরাপদে অবস্থান করুন এবং সরকার ও জরুরি বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলুন। মানুষের জীবন রক্ষাই এখন আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।"

২০২৩ সালের অক্টোবরে ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ‘ওটিস’ আকাপুলকো শহরে আঘাত হানে। সেই ভয়াবহ ঝড়ে অন্তত ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সরকারের পক্ষ থেকে আগেভাগেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’-এর গতি ও গতিপথ প্রতি ঘণ্টায় ট্র্যাক করছে। একইসঙ্গে, স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো প্রস্তুত রয়েছে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায়।

জনগণকে সতর্ক থাকতে, গুজবে কান না দিতে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে সরকার-নির্দেশিত নিরাপত্তাবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি