রোবট বিদ্রোহ! ‘এইচ ১’ কারখানায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রকৌশলীদের ওপর হামলা

চীনের ইউনিট্রি রোবোটিক্সের কারখানায় সম্প্রতি ঘটে গেল এক অদ্ভুত ও উদ্বেগজনক ঘটনা। নির্মাণাধীন মানবাকৃতির হিউম্যানয়েড রোবট ‘এইচ ১’ হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রকৌশলীদের ওপর আক্রমণ চালায়, যা প্রযুক্তি ও মানবতা সংক্রান্ত গভীর প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। প্রায় ৮০ হাজার ইউরোর দামের এই রোবটটির অস্বাভাবিক আচরণ একটি প্রোগ্রামিং ত্রুটির ফল হিসেবে প্রাথমিকভাবে বিবেচিত হলেও, সামাজিক মাধ্যমে চলছে হ্যাকিং বা ইচ্ছাকৃত বিচ্যুতির তত্ত্বেও ব্যাপক জল্পনা।
হিউম্যানয়েড রোবট, যার গঠন ও কার্যক্রম মানবসদৃশ, আধুনিক শিল্প ও স্বাস্থ্যখাতে সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, এই ঘটনাটি ইঙ্গিত দেয় এমন জটিল প্রযুক্তির সামগ্রিক নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ কতটা যথাযথ রয়েছে। এইচ ১ রোবটটি উন্নত অ্যালগরিদমের মাধ্যমে পরিবেশ ও মানব ক্রিয়াকলাপ বুঝে কাজ করার ডিজাইন করা হলেও, সামান্যতম কোডিং ভুলই বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, রোবটের অপ্রত্যাশিত ও খাপছাড়া আচরণের ঘটনা একেবারে নতুন নয়। পূর্বেও চীনে প্রদর্শনীতে রোবটের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জনসমক্ষে ভুলভাবে আচরণ করার নজির রয়েছে, যা প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থার মিল না থাকায় জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
রোবটের নৈতিক সীমাবদ্ধতা ও ব্যবহার সংক্রান্ত ভাবনা প্রথম প্রস্তাব করেন বিখ্যাত বিজ্ঞান কথাসাহিত্যিক আইজ্যাক অ্যাসিমভ, যিনি ‘রোবটিক্সের তিন অনুশাসন’ ও পরবর্তীতে ‘জিরোথ ল’ সংযোজনের মাধ্যমে রোবট ও মানুষের সম্পর্কের একটি নৈতিক ভিত্তি স্থাপন করেন। তার মতে, রোবট কখনও মানুষের ক্ষতি করতে পারবে না, মানুষের আদেশ পালন করবে এবং নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করবে, যদি তা মানুষের ক্ষতির বিরোধী না হয়।
তবে বর্তমানের এই ঘটনা স্পষ্ট করে দেয়, বাস্তব জীবনে প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ ও জটিলতার মাঝে এসব নৈতিক অনুশাসন কতটা কার্যকর হচ্ছে তা প্রশ্নের মুখে। রোবটের মতো যন্ত্র মানুষের সহকারী থেকে যদি শত্রুতে পরিণত হয়, তা শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা নয় বরং একটি সংকেত যে, প্রযুক্তি ও নৈতিকতার সমন্বয়হীনতা মানবজীবনে গুরুতর ঝুঁকি ডেকে আনতে পারে।
তাই প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন যথাযথ নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও নৈতিকতাবোধের অঙ্গীকার, যাতে যন্ত্র মানবতার মূল্যবোধ ভুলে না যায় এবং মানব-রোবট সহযোগিতার ভবিষ্যৎ নিরাপদ থাকে। আজকের এই ঘটনা আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছে প্রযুক্তি যতই আধুনিক হোক না কেন, তার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহার অবশ্যই মানবকেন্দ্রিক ও সুরক্ষামূলক হতে হবে।
-মঈন, নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- কবে থামবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভেদের রাজনীতি?
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- দ্বিতীয় দিনেও চলছে কোরবানি, কসাই না পাওয়ায় আজ জবাই অনেকের
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষোভ কি ভারতের কেন্দ্রীয় কূটনীতি পাল্টাবে?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?
- তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- আবদুল হামিদের দেশে ফেরা: স্বপ্ন না বাস্তব? সারজিস আলম যা বললেন