ড. ইউনূসকে নিয়ে যা বললেন গোলাম মাওলা রনি

রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি এক ভিডিও বার্তায় মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক লন্ডন সফর কূটনৈতিক শোভনতা ও মর্যাদার দিক থেকে হতাশাজনক ছিল। বৃহস্পতিবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণে তিনি বলেন, লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ড. ইউনূসের পাশে ব্যাগ বহনের দায়িত্বে কেবল প্রেসসচিব শফিকুল আলম ছিলেন, যা প্রধান উপদেষ্টার মর্যাদার সঙ্গে বেমানান এবং সরকারের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে দুর্বলভাবে উপস্থাপন করে।

তিনি বলেন, “একজন প্রেসসচিবই ছবি তুলছেন, কেউ অভ্যর্থনা জানাতে ছিল না, এমনকি একজন সরকারি ক্যামেরাম্যানও উপস্থিত ছিলেন না। এটি নিঃসন্দেহে একটি প্রটোকল বিপর্যয়।” রনির মতে, লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের তরফ থেকেও যথাযথ কূটনৈতিক সমর্থন বা অভ্যর্থনার আয়োজন লক্ষ করা যায়নি।

আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতি ঘিরে বাঙালি কমিউনিটির মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। হোটেলটির সামনে যে মাত্রার বিক্ষোভ হয়েছে, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে নজিরবিহীন। তিনি দাবি করেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ড. ইউনূসকে হোটেলের পেছনের প্রবেশদ্বার দিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তিনি হোটেলের বাইরে বের হতে পারছেন না বা পারেননি।

“তিনি বিধ্বস্ত, ক্লান্ত এবং অপমানিত মনে হচ্ছিলেন,”— বলেন রনি। তিনি উল্লেখ করেন, ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগত অতিথিরাও হোটেলের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকছেন।

এই ঘটনাগুলো একদিকে যেমন সরকারের কূটনৈতিক প্রস্তুতির ঘাটতি তুলে ধরছে, অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টার জনসমর্থনের প্রশ্নেও নতুন করে বিতর্ক উত্থাপন করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি সরকার ও অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার বৈধতা এবং কার্যকারিতা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নেতিবাচক বার্তা পাঠাতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, এমন এক সময়ে যখন বাংলাদেশ একটি অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে রয়েছে, তখন প্রধান উপদেষ্টার বিদেশ সফরের এহেন চিত্র শাসন কাঠামোর ভঙ্গুরতা ও জনআস্থার সংকটকে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।