তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!

যেখানে বিশ্বের অনেক দেশে আর্থিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় আস্থার সংকট এবং আমানতকারীদের বিমুখতা প্রকট হয়ে উঠছে সেখানে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে ভিন্নতর এক দৃশ্যপট দেখা যাচ্ছে। ২০২৫ সালের মার্চ প্রান্তিক পর্যন্ত মাত্র তিন মাসে দেশের ১০টি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের এক ইতিবাচক নির্দেশক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি মূলত তুলনামূলকভাবে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল এবং ঝুঁকিমুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ব্যাংকারদের মতে, এসব প্রতিষ্ঠান তারল্য ও আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম হওয়ায় আমানতকারীরা আগ্রহের সঙ্গে তাদের প্রতি ঝুঁকছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা হ্রাস পাওয়া এবং আর্থিক বাজারে নীতিগত স্থিতিশীলতা বজায় থাকার ফলে ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে।
কোন ব্যাংকে কত আমানত বৃদ্ধি?
প্রান্তিকভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, আমানত বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক, যারা মাত্র তিন মাসে ৭,৬৫৭ কোটি টাকা নতুন আমানত সংগ্রহ করেছে। এর ফলে ব্যাংকটির মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০,২৪৫ কোটি টাকা।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে:
ব্র্যাক ব্যাংক: ৫,৬২৮ কোটি টাকা বৃদ্ধি (মোট আমানত: ৭৬,০৫৩ কোটি)
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ: ৪,২২০ কোটি টাকা বৃদ্ধি (মোট: ১,৬২,৬৫৫ কোটি)
সিটি ব্যাংক: ২,৬৯৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি (মোট: ৫৪,৪৪১ কোটি)
পূবালী ব্যাংক: ২,৪৯৩ কোটি টাকা
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (UCB): ২,৩৪৯ কোটি টাকা
IFIC ব্যাংক: ২,০৮৩ কোটি টাকা
যমুনা ব্যাংক: ১,৮৪৪ কোটি টাকা
ইস্টার্ন ব্যাংক (EBL): ১,৩৯৪ কোটি টাকা
এই ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগকারীরা তাদের শক্তিশালী সম্পদ গুণমান, কঠোর নিয়ন্ত্রক পরিপালন এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য আলাদা করে বিবেচনা করছেন।
ব্যাংকিং খাতের সামগ্রিক চিত্র
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং খাতে (সরকারি ও আন্তঃব্যাংক বাদে) মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। এটি এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮.২১ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই অঙ্ক ছিল ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত নির্বাচন এবং পরবর্তী শান্তিপূর্ণ প্রশাসনিক হস্তান্তরের প্রেক্ষিতে দেশের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণ ও বাজার পরিবেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। এতে করে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যা আমানত প্রবাহ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ব্যাংকার এবং অর্থনীতিবিদরা আশাবাদী যে, যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তবে দেশের ব্যাংকিং খাত শুধু স্থিতিশীল নয়, বরং প্রতিযোগিতামূলক এবং বিনিয়োগবান্ধব ব্যবস্থায় পরিণত হবে। এছাড়া সুদের হার ও তারল্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যথাযথ ভারসাম্য বজায় রাখলে ব্যাংকগুলোর উপর নির্ভরশীলতা আরও বাড়বে।
-রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- কবে থামবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিভেদের রাজনীতি?
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- ২০২৬ সালের এপ্রিলেই জাতীয় নির্বাচন: জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা
- নির্বাচনের ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া: বিএনপি অসন্তুষ্ট, জামায়াত সন্তুষ্ট, এনসিপি শর্তসাপেক্ষে সমর্থন
- রোজা, পরীক্ষা ও বাজেটের মাঝে নির্বাচন অযৌক্তিক: বিএনপি
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- দ্বিতীয় দিনেও চলছে কোরবানি, কসাই না পাওয়ায় আজ জবাই অনেকের
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক-ইউনূস বৈঠক: উত্তপ্ত রাজনীতিতে সম্ভাব্য টার্নিং পয়েন্ট?
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষোভ কি ভারতের কেন্দ্রীয় কূটনীতি পাল্টাবে?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- আবদুল হামিদের দেশে ফেরা: স্বপ্ন না বাস্তব? সারজিস আলম যা বললেন
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?