‘বাজেটে বৈষম্যের গন্ধ’: এফআইসিসিআই’র সতর্ক বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৩ ২১:০৯:৫১
‘বাজেটে বৈষম্যের গন্ধ’: এফআইসিসিআই’র সতর্ক বার্তা

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পদক্ষেপ থাকলেও কয়েকটি কর নীতির কারণে ব্যবসা পরিবেশে অনিশ্চয়তা ও বৈষম্যের শঙ্কা প্রকাশ করেছে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (FICCI)। সংস্থাটি বলছে, এসব প্রস্তাব সৎ করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং বিনিয়োগ সম্প্রসারণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।

সোমবার (২ জুন) রাতে বাজেট পর্যালোচনার পর এক বিবৃতিতে এফআইসিসিআই এসব উদ্বেগের কথা জানায়।

চেম্বারটি জানায়, পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির ওপর প্রস্তাবিত অতিরিক্ত ৭.৫ শতাংশ কর ব্যবসায়িক অঙ্গনে বৈষম্য তৈরি করবে। ব্যাংকিং মাধ্যমে লেনদেনকে উৎসাহিত করতে পূর্বে যে কর ছাড় দেওয়া হতো, তা বাতিল করাও নীতিগতভাবে পশ্চাদপদ সিদ্ধান্ত।

কর হার ২৭.৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব বাংলাদেশকে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি। তারা বলছে, এই হার ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থনীতির তুলনায় বেশি, যা বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত কর কাঠামোতে মধ্যম ও বেতনভোগী শ্রেণির ওপর কর বোঝা বাড়বে, যদিও প্রাথমিক করমুক্ত আয়ের সীমা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।

অনলাইন বিক্রিতে ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করায় ই-কমার্স খাত হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এফআইসিসিআই। এটি ডিজিটাল ব্যবসার প্রসার ও উদ্যোক্তাদের অনুৎসাহিত করতে পারে বলে মত সংস্থাটির।

তবে বাজেটে কিছু ইতিবাচক দিকও তুলে ধরেছে তারা। যেমন:

নির্মাণ খাত ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে উৎস কর হ্রাস

যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশে উৎস কর অব্যাহতি

এসব পদক্ষেপকে বাস্তবমুখী ও শিল্পবান্ধব হিসেবে আখ্যা দিয়েছে এফআইসিসিআই।

চেম্বারটি আশাবাদী, সরকারের সঙ্গে সক্রিয় সংলাপের মাধ্যমে বাজেট প্রস্তাবগুলোর পরিমার্জন ঘটিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক কর কাঠামো নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

ট্যাগ: বাজেটে FICCI

আজ রাতে দেখা যাবে বছরের প্রথম সুপারমুন ‘হার্ভেস্ট মুন’

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৭:২৬:২২
আজ রাতে দেখা যাবে বছরের প্রথম সুপারমুন ‘হার্ভেস্ট মুন’
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের প্রথম সুপারমুন আজ (মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর) রাতে দেখা যাবে। এদিন চাঁদ তার কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে পৌঁছাবে। ফলে স্বাভাবিক পূর্ণিমার তুলনায় চাঁদকে বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে। গত বুধবার (১ অক্টোবর) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

হার্ভেস্ট মুন: কেন এটি বিশেষ?

জ্যোতির্বিদদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সুপারমুনকে বলা হয় ‘হার্ভেস্ট মুন’। এটি প্রতি বছর শরৎ ঋতুর শুরুতে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাধারণত পূর্ণিমার চাঁদ রাতভর ওঠে না, তবে হার্ভেস্ট মুনের সময় চাঁদ স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত ওঠে এবং একাধিক রাত ধরে আকাশে দৃশ্যমান থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময়ে এটি আরও উজ্জ্বল দেখায়।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, চলতি বছর মোট তিনটি সুপারমুন উপভোগ করার সুযোগ মিলবে, যার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে অক্টোবরের এই হার্ভেস্ট মুন।

কোথা থেকে দেখা যাবে?

পাকিস্তান স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশন (SUPARCO) জানিয়েছে, পাকিস্তান ছাড়াও বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশ থেকেই সুপারমুন দেখা যাবে। আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশ থেকে এটি খালি চোখে উপভোগ করা যাবে।

সুপারকো কর্মকর্তাদের মতে, আজকের সুপারমুন গড় পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ উজ্জ্বল হবে। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২,২৪,৫৯৯ মাইল (৩,৬১,৪০০ কিলোমিটার) দূরে থাকবে। সুপারমুন দেখার জন্য কোনো বিশেষ যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। খোলা আকাশে দিগন্ত বরাবর তাকালেই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যাবে।


বিপদের এলাকা’য় প্রবেশ করতে আর দেরি নেই, জানালেন শহিদুল আলম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৬:৩২:১২
বিপদের এলাকা’য় প্রবেশ করতে আর দেরি নেই, জানালেন শহিদুল আলম
ছবি: সংগৃহীত

ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের অংশ হিসেবে গাজা অভিমুখী কনশেনস জাহাজটি আগামীকাল বুধবার (৮ অক্টোবর) ভোর নাগাদ ‘রেড জোন’ তথা বিপজ্জনক অঞ্চলে পৌঁছে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই তথ্য জানান।

শহিদুল আলম ‘রেড জোন’ বলতে সেই অঞ্চলকে বুঝিয়েছেন, যেখানে ইসরায়েলি সেনারা সম্প্রতি সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে আটকে অধিকারকর্মীদের আটক করেছিলেন।

ধীরগতির কারণে বিলম্ব

শহিদুল আলম লিখেছেন, “আমরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছি। কারণ ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস’ নৌবহরে থাকা ছোট ও ধীরগতির নৌযানগুলো যেন পেছনে পড়ে না যায়, তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।” তিনি জানান, এসব জাহাজও এফএফসির (ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন) অংশ।

তবে তিনি উল্লেখ করেন, তাদের জাহাজ সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের চেয়ে অনেক দ্রুত এগিয়েছে। ওই নৌবহর প্রচণ্ড বাতাস ও ঝড়ের কারণে সাময়িকভাবে থেমে গিয়েছিল।

শহিদুল আলম আরও লেখেন, “ধীরগতির নৌযানগুলো এখন আমাদের সমকাতারে এসেছে। আমরা এখন ‘রেড জোন’ থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে আছি। এটি সেই অঞ্চল যেখানে আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী অবৈধভাবে ফ্লোটিলার নৌযানগুলোকে আটক করেছিল।”


টানা কমছে এলপিজি’র দাম: ১২ কেজি সিলিন্ডারের নতুন মূল্য কত?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৫:৫২:৫২
টানা কমছে এলপিজি’র দাম: ১২ কেজি সিলিন্ডারের নতুন মূল্য কত?
ছবি: সংগৃহীত

ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি খাতের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম আবারও কমানো হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)-এর নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, চলতি অক্টোবর মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত মাসে এই দাম ছিল ১ হাজার ২৭০ টাকা।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দাম কমানোর এই নতুন ঘোষণা দিয়েছে বিইআরসি। সংস্থাটি জানিয়েছে, এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।

ধারাবাহিকভাবে কমছে দাম

বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে নির্ধারিত ১ হাজার ২৭০ টাকা থেকে এবার ২৯ টাকা কমিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

তারও আগে আগস্ট মাসে ৯১ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৭৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে অটোগ্যাসের দামও ৪ টাকা ১৮ পয়সা কমিয়ে ৫৮ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

জুনে ১২ কেজি সিলিন্ডারের মূল্য ২৮ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪০৩ টাকা এবং ২ জুলাই তা ৩৯ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৩৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।


এবারের নির্বাচনকে জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি: সিইসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৪:০৭:০৪
এবারের নির্বাচনকে জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি: সিইসি
ছবি: সংগৃহীত

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, এবারের নির্বাচনকে তিনি তার জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন এবং ‘জাতিকে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চান’। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

সহযোগিতার আহ্বান ও চ্যালেঞ্জ

সিইসি বলেন, “দেশের জন্য কিছু করতে এবারের নির্বাচন জীবনের শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতার বিকল্প নেই।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন নির্বাচনে কোথায় কোথায় কী কী সমস্যা হয়, কোথায় কোথায় কী কী গ্যাপ রয়েছে। আপনাদের সুচিন্তিত মতামতগুলো বিবেচনা করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই।”

সিইসি জানান, ইসি অনেকগুলো নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, যার মধ্যে রয়েছে:

নতুন চ্যালেঞ্জ: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-এর অপব্যবহার মোকাবিলা করা।

ভোটাধিকার: প্রবাসী ভোটার, সরকারি কর্মকর্তা ও কয়েদিদের ভোটের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অন্যান্য সংস্কার: ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নারী-পুরুষ ভোটারের পার্থক্য কমানো হয়েছে এবং একটি হাইব্রিড পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

বয়স ও লক্ষ্য

সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, “আমার বয়স ৭৩ বছর। আর চাওয়ার কিছু নেই। শুধু সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া লক্ষ্য।” এই লক্ষ্য পূরণের জন্য তিনি সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।

সংলাপে ইসির সাবেক সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. জকরিয়া, সাবেক যুগ্মসচিব খন্দকার মিজানুর রহমান, নূরুজ্জামান তালুকদার, এবং নারী নেত্রী মাহফুজা আক্তার, মুনিরা খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


“ন্যায়সঙ্গত নির্বাচনই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত”—তারেক রহমান

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১১:০৮:২৪
“ন্যায়সঙ্গত নির্বাচনই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত”—তারেক রহমান
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তাঁর দল আশা করে—বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে। পাশাপাশি সরকার যেন ন্যূনতম কিছু প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করে নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করে।

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করা। সেই প্রক্রিয়ায় তারা যদি প্রয়োজনীয় সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে তা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক হবে।”

তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের নির্বাচন আয়োজনের দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাই ভবিষ্যতে সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের ধরন নির্ধারণ করবে। অর্থাৎ, বর্তমান প্রশাসন কতটা সফলভাবে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে, সেটিই হবে রাজনৈতিক পারস্পরিক আস্থার নির্ধারক।

বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের এই নেতা তাঁর দলের অবস্থান ও প্রত্যাশা তুলে ধরেন বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে। সাক্ষাৎকারটির দ্বিতীয় পর্ব মঙ্গলবার সকালে অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে।

বিবিসি বাংলার সম্পাদক মীর সাব্বির ও সিনিয়র সাংবাদিক কাদির কল্লোলের সঙ্গে আলাপচারিতায় তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি চায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় এমন এক ন্যায়সঙ্গত পরিবেশ সৃষ্টি করুক, যেখানে সব দলের জন্য সমান সুযোগ থাকবে এবং জনগণ তাদের মতামত অবাধে প্রকাশ করতে পারবে।”

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা

তারেক রহমানের এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখছেন একধরনের ‘শর্তাধীন আস্থা প্রকাশ’ হিসেবে। তিনি সরাসরি সরকারের সমালোচনা না করে বরং একটি স্পষ্ট প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন—সরকার যেন অন্তর্বর্তী সময়ের লক্ষ্যচ্যুত না হয় এবং ন্যায্য নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি নিশ্চিত করে।

অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে রাজনৈতিক মেরুকরণ, নির্বাচনী কাঠামো এবং প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি নেতার এমন অবস্থান আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, বিশেষ করে যেসব দেশ বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের অগ্রগতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, তারেক রহমানের বক্তব্য একদিকে সরকারের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা বহন করছে—যে, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার একমাত্র পথ, অন্যদিকে এটি বিএনপির গণতান্ত্রিক অবস্থান ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিতও দেয়।

বিএনপির প্রত্যাশা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্ক

তারেক রহমানের বক্তব্যে উঠে এসেছে এক বাস্তবধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি—অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক ‘আচরণনির্ভর’ হবে, অর্থাৎ সরকারের কার্যক্রম ও নির্বাচন প্রস্তুতির মানের ওপর নির্ভর করবে পারস্পরিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ।

তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা চাই এই সরকার তাদের দায়িত্ব পালনে সফল হোক। যদি তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে পারে, তাহলে সেটি দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে।”

এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বিএনপির পক্ষ থেকে একদিকে যেখানে সরকারের প্রতি সংযমী প্রত্যাশা প্রকাশ করা হয়েছে, অন্যদিকে ভোটার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছেছে—যে বিএনপি সংঘাত নয়, বরং ন্যায়ভিত্তিক রাজনৈতিক পুনর্গঠনের পথে আগ্রহী।

-এম জামান


সিঙ্গাপুরে প্রধান উপদেষ্টার দূতের ব্যস্ত সফর: বিনিয়োগ ও সহযোগিতায় নতুন গতি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১০:০৯:২৮
সিঙ্গাপুরে প্রধান উপদেষ্টার দূতের ব্যস্ত সফর: বিনিয়োগ ও সহযোগিতায় নতুন গতি
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী ও ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন।

তিনি সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অং ইয়ে কুং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান এবং শ্রম ও মানবসম্পদবিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী দিনেশ বাসু দাশের সঙ্গে তাঁদের নিজ নিজ দপ্তরে বৈঠক করেন। আলোচনায় বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়।

সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য সম্পর্কবিষয়ক মন্ত্রী গ্রেস ফু-এর আমন্ত্রণে লুতফে সিদ্দিকী ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিঙ্গাপুর গ্র্যান্ড প্রিক্স উপলক্ষে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের নৈশভোজে যোগ দেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুরের শ্রম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ড. তান সি লেং, পররাষ্ট্রবিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যান সিও হুয়াং এবং পরিবহনবিষয়ক জ্যেষ্ঠ রাষ্ট্রমন্ত্রী মুরালি পিল্লাই।

একই অনুষ্ঠানে তিনি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী লি সিয়ান লুং, উপপ্রধানমন্ত্রী গ্যান কিম ইয়ং, প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের মন্ত্রী ইন্দ্রাণী রাজাহ এবং জাতীয় উন্নয়নবিষয়ক রাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালভিন তানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসব বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বিনিয়োগের পরিবেশ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ তুলে ধরেন।

এ সময় লুতফে সিদ্দিকী বিশ্বব্যাপী শীর্ষ বেসরকারি খাতের নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ রে ডালিও, গ্র্যাব-এর প্রধান নির্বাহী অ্যান্থনি তান, অ্যান্টলারের প্রধান নির্বাহী ম্যাগনাস গ্রিমেল্যান্ড, জিআইসি-এর প্রধান নির্বাহী লিম চাউ কিয়াত, সিঙ্গাপুর স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী লোহ বুন চাই, এভারকোর-এর এশিয়া চেয়ারম্যান কিথ ম্যাগনাস এবং ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য মণ্ডলীর চেয়ারম্যান অনিন্দ্য বকরি।

তার সফরের শেষ দিনে লুতফে সিদ্দিকী এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুরের চেয়ারম্যান লি চুয়ান টেক, পিএসএ (বন্দর কর্তৃপক্ষ)-এর আঞ্চলিক প্রধান ভিনসেন্ট এনজি এবং পেপ্যালের আঞ্চলিক প্রধান আমির ভ্যালিয়ানির সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে উভয় দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতে সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনা অনুসন্ধান করা হয়।

বাংলাদেশে চলমান সংস্কার কার্যক্রম ও বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে তিনি প্রত্যক্ষভাবে বিভিন্ন পক্ষকে অবহিত করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের বহুমাত্রিক সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ দূতের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, “তরুণ ও পরিশ্রমী জনগোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করছে, সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল উদ্ভাবন ও যোগাযোগ অবকাঠামোয় বিনিয়োগ আকর্ষণ করছে। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশকে তার পরবর্তী প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের ধাপে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।”

এ সফরে লুতফে সিদ্দিকী চ্যানেল নিউজ এশিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নির্বাচনের আগে অনলাইন বিভ্রান্তিমূলক তথ্যপ্রবাহের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেন এবং সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

তিনি সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা ও প্রবাসী কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেবা কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। বর্তমানে ই-পাসপোর্ট বায়োমেট্রিকের জন্য আবেদনকারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সময় পাচ্ছেন, যেখানে কয়েক মাস আগেও অপেক্ষা করতে হতো চার মাসের বেশি। সেই সঙ্গে ১২ হাজারেরও বেশি আবেদন বকেয়া ছিল।

এ ছাড়া, কাজের ভিসা (IPA) হাইকমিশনে গিয়ে শারীরিকভাবে অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা বাতিল করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি শ্রমিক ও নিয়োগকর্তা উভয়ের জন্যই বড় স্বস্তি এনেছে।

উল্লেখ্য, এসব বিষয় সমাধানে লুতফে সিদ্দিকী স্বরাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও প্রবাসীকল্যাণবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।

-নাজমুল হোসেন


৫০ বছরের সম্পর্ক: সৌদি আরবে সাধারণ কর্মী নিয়োগে ঐতিহাসিক চুক্তি সই

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৬ ১৮:৪১:৪০
৫০ বছরের সম্পর্ক: সৌদি আরবে সাধারণ কর্মী নিয়োগে ঐতিহাসিক চুক্তি সই
সাধারণ কর্মী নিয়োগে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি সই/ছবি: সংগৃহীত

বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সাধারণ কর্মী নিয়োগসংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) রিয়াদে এই ঐতিহাসিক চুক্তি সই হয়।

বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং সৌদি আরবের পক্ষে মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী চুক্তিতে সই করেন।

৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথম

রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, সৌদি আরব-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের দীর্ঘ ৫০ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম সাধারণ কর্মী নিয়োগসংক্রান্ত কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হলো। ১৯৭৬ সাল থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে কর্মী নিয়োগ শুরু হলেও, সাধারণ কর্মী নিয়োগসংক্রান্ত কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল না। ২০১৫ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ এবং ২০২২ সালে দক্ষতা যাচাই সংক্রান্ত দুটি বিশেষ চুক্তি সই হয়েছিল।

নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় দক্ষ কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মী ও নিয়োগকর্তার অধিকার ও স্বার্থ অধিকতর সুরক্ষিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এটি ভ্রাতৃপ্রতিম উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও শর্ত

চুক্তি সইয়ের আগে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সৌদিতে কর্মীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নিয়োগ চুক্তি যেন সঠিক হয়, ইকামা (কাজের অনুমতিপত্র) নবায়নের দায়িত্ব যেন নিয়োগকর্তা পালন করেন এবং দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা যেন স্বল্পতম সময়ে প্রস্থান ভিসা পান।

সৌদি মন্ত্রী বিষয়গুলো দ্রুত সমাধানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন এবং বাংলাদেশকেও নিরাপদ ও সুষ্ঠু অভিবাসন নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ এবং প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

এ সময় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দেলওয়ার হোসেনসহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


নির্বাচনী আয়োজনে নতুন পদক্ষেপ, ভোটারদের বিশেষ অধিকার ফিরিয়ে দিচ্ছে ইসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৬ ১৪:২০:২৯
নির্বাচনী আয়োজনে নতুন পদক্ষেপ, ভোটারদের বিশেষ অধিকার ফিরিয়ে দিচ্ছে ইসি
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দায়িত্ব পালন করা প্রায় ১০ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, এই পদক্ষেপ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনবে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সিইসি এই তথ্য জানান। সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বচ্ছতা ও চ্যালেঞ্জ

সিইসি জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদে ২১ লাখ মৃত ভোটার চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের অনেকেই আগে ভোট দিয়ে যেত।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, “নির্বাচন কমিশন জাতির কাছে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তিনি গণমাধ্যমকে এআই-এর অপব্যবহার রোধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান এবং বলেন:

“প্রবাসী, নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেন, সেসব সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটের ব্যবস্থা আমরা করবো। প্রায় ১০ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে ভোটের আওতায় নিয়ে আসা হবে এবার। সবাইকে সাথে নিয়ে স্বচ্ছভাবে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চাই। আয়নার মতো স্বচ্ছ করে এই নির্বাচন করতে চাই।”

সংলাপ ও কর্মপরিকল্পনা

নির্বাচন কমিশন দুই দফায় গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসছে। আজ সকালে টিভি মিডিয়া এবং দুপুর আড়াইটায় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে সংস্থাটির আলোচনা করার কথা রয়েছে। দু'দফায় প্রায় ৫০ জন গণমাধ্যম প্রতিনিধির সংলাপে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

আগামীকাল ৭ অক্টোবর নারী নেত্রী ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার কথা রয়েছে। এরপর জুলাই যোদ্ধা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বসবে ইসি। সিইসি আগেই বলেছেন, সংলাপে উঠে আসা মতামত তার কমিশন বাস্তবায়ন করবে।


আঞ্চলিক সহযোগিতায় নতুন দিগন্তে বাংলাদেশ–মালদ্বীপ সম্পর্ক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৬ ১১:২৬:৫২
আঞ্চলিক সহযোগিতায় নতুন দিগন্তে বাংলাদেশ–মালদ্বীপ সম্পর্ক
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ বিদ্যমান ঘনিষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী ও বহুমাত্রিক সহযোগিতার পরিসর বিস্তারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। মালদ্বীপে নবনিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মো. নজমুল ইসলাম ৫ অক্টোবর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুইজ্জুর কাছে তাঁর পরিচয়পত্র (লেটার অব ক্রেডেন্স) পেশ করেন।

স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের রিপাবলিক স্কয়ারে পৌঁছালে মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের (MNDF) একটি চৌকস দল হাইকমিশনারকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। তাঁকে স্বাগত জানান প্রেসিডেন্টের চিফ ও ডেপুটি চিফ অব প্রোটোকল। আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনারের পর তাঁর সম্মানে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য মালদ্বীপীয় ঐতিহ্যবাহী বোদু বেরু সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী।

পরে ড. নজমুল ইসলাম প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে যান এবং অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এরপর প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের গাজি হলে এক অনাড়ম্বর অথচ মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর পরিচয়পত্র আনুষ্ঠানিকভাবে পেশ করেন। এ সময় মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরিচয়পত্র গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ও হাইকমিশনার ড. নজমুল ইসলামের মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিটের এক সৌজন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন, উচ্চশিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় অব্যাহত সহায়তার প্রশংসা করেন। তিনি দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও বোঝাপড়া আরও গভীর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, “বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সবসময়ই চমৎকার। আমি আশাবাদী, ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।”

এর জবাবে হাইকমিশনার ড. নজমুল ইসলাম মালদ্বীপে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিককে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য মালদ্বীপ সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশি শ্রমিকরা দুই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। এই বন্ধন মানবিক ও অর্থনৈতিক— দুই ক্ষেত্রেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”

দুই পক্ষই বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা সম্প্রসারণে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে। আলোচনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালদ্বীপের বন্দর হয়ে বাংলাদেশের পণ্য ট্রান্সশিপমেন্ট বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিও বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া বৈঠকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো, কৃষি উন্নয়নে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা মালদ্বীপে কাজে লাগানোর সুযোগ এবং প্রতিরক্ষা, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত করার বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়।

হাইকমিশনার ড. নজমুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের উষ্ণ শুভেচ্ছা মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কাছে পৌঁছে দেন এবং সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই সম্পর্ক পারস্পরিক আস্থা, সহযোগিতা ও আঞ্চলিক বন্ধুত্বের ভিত্তিতে ক্রমেই শক্তিশালী হয়েছে।

নবনিযুক্ত হাইকমিশনার ড. মো. নজমুল ইসলাম একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিজ্ঞানী, সংসদীয় কূটনীতিক ও শিক্ষাবিদ। তিনি এক দশকেরও বেশি সময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করেছেন। মালদ্বীপে দায়িত্ব গ্রহণের আগে তিনি ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (OIC), তুরস্কের জাতীয় সংসদ (TBMM), যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউট (FSI) এবং আঙ্কারার ইয়িলদিরিম বেয়াজিত বিশ্ববিদ্যালয়ে এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তত্ত্ব ও কৌশলগত অধ্যয়নে তাঁর বিশেষজ্ঞতা, পাশাপাশি ‘নন-ওয়েস্টার্ন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস অ্যান্ড সফট পাওয়ার স্ট্র্যাটেজিস’ বিষয়ে তাঁর গবেষণাকর্ম বাংলাদেশ–মালদ্বীপ সম্পর্ককে আরও কৌশলগত ও গতিশীল রূপ দিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

-আলমগীর হোসেন

পাঠকের মতামত: